অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘পাংখোয়া’
পাংখো বা পাংখোয়া হলো বাংলাদেশ ও ভারতে বসবাসকারী ক্ষুদ্রজাতি। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে এবং ভারতের মিজোরামে এরা বসবাস করে। রাঙামাটি সদর থানার কর্ণফুলী নদীর পূর্ব পারে ১৬১০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট বসন্তমোনে অবস্থিত পাংখোয়া পাড়াটি সবচেয়ে পুরনো।
২০০ বছর আগে তারা এখানে বসতি স্থাপন করে। আদমশুমারি ও গৃহ গণনা-১৯৯১ অনুসারে বাংলাদেশে পাংখোয়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা তিন হাজার ২২৭ জন। তবে বর্তমানে পাংখোয়াদের মোট জনসংখ্যা চার হাজারের বেশি হতে পারে বলে পাংখোয়ারা মনে করে। এদের আদি নিবাস সম্ভবত ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার)। সেখান থেকে কোনো কারণে বিতাড়িত হয়ে কয়েক শ বছর আগে তারা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে।
পাংখোয়া জনগোষ্ঠী নিজেদের ধর্মবিশ্বাসে বৌদ্ধ বলে দাবি করে থাকে। তবে একাধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো প্রকৃতি উপাসনাও পাংখোয়া সমাজে প্রচলিত। তাদের সৃষ্টিকর্তার নাম ‘পত্যেন’, যেমন লুসেইদের ‘পুথিয়ান’।
সৃষ্টিকর্তা ‘পত্যেন’-এর পরই তাদের প্রধান উপাস্য দেবতার নাম ‘খোজিং’। অরণ্যের কর্তা এই দেবতা জুমচাষের ভালো-মন্দও নিয়ন্ত্রণ করেন বলে এর উদ্দেশ্যেই বেশির ভাগ পূজা-পার্বণ ও ব্রত অনুষ্ঠান পালন করা হয়। খোজিং পূজা শ্রাবণ মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই পূজা পাংখোয়া সমাজে সবচেয়ে বড় উৎসব।
পাহাড়ে জুমচাষ ও অরণ্যে শিকার—এই দুইয়ের ওপর এদের জীবন নির্ভরশীল। জুমচাষের পদ্ধতি এদের মধ্যে এখনো ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ধান এবং অন্যান্য শস্য ফলানো পাংখোয়াদের কৃষিকাজের মূল উদ্দেশ্য। হাট-বাজার মূলত মেয়েরাই করে থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই পাংখোয়া নারীরা কোমর-তাঁতের মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজনীয় বস্ত্র বুনে আসছে।
পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে পাড়া ও প্রতিবেশীদের কাছে বিক্রি করে কিংবা বিনিময় প্রথার বাইরে সংসারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করে। পাংখোয়াদের বাঁশ ও বেত শিল্প সর্বজন সমাদৃত। বাঁশ ও বেতের তৈরি এসব সামগ্রীতে তাদের শৈল্পিক নৈপুণ্য ফুটে ওঠে।
পাংখোয়া সমাজে পিতাই পরিবারের প্রধান। পিতার মৃত্যুর পর পুত্রসন্তানরা পারিবারিক বিষয়-আশয়ের উত্তরাধিকারী হয়ে থাকে। পাংখোয়া জনগোষ্ঠী দুটি গোত্রে বিভক্ত পাংখোয়া ও ভানজাঙ।
গোত্রান্তরে বিয়েতে কোনো বাধা নেই। পরিণত বয়সে পিতা-মাতার মতামত অনুযায়ী ছেলে ও মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। পাংখোয়াদের মধ্যে বাল্যবিয়ের প্রচলন নেই। পাংখোয়া জনগোষ্ঠীতেই মৃতদেহ কবর দেওয়ার রীতি প্রচলিত।
.S.C
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘মৌজা’র
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ব্লিচিং পাউডার’-এর কথা উল্লেখ আছে
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ধৈঞ্চা’
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘রাজবংশী’র
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘চিড়া’র কথা
- ২০২১ সালের জেডিসি সিলেবাস
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘মুন্ডা’র
- ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘ওঁরাও’
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের নবম অধ্যায়ে ‘জনসংখ্যানীতি
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের নবম অধ্যায়ে ‘মাথাপিছু আয়’