অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বাদশ অধ্যায় ‘চীনামাটি’
চীনামাটি (Porcelain) বা চায়না ক্লে এক ধরনের মাটি। ধারণা করা হয়, চীন দেশের মানুষ প্রথম এই মাটি ব্যবহার করত বলে একে চীনামাটি বা চায়না ক্লে বলা হয়। এটি প্রধানত সিরামিক শিল্পে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর রাসায়নিক সংকেত Al2O3.2SiO2.2H2O।
কেওলিন নামের প্রাকৃতিক খনিজযুক্ত পদার্থের মিশ্রণকে বৃহৎ চুল্লি বা ভাটিতে ১২০০ থেকে ১৪০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়িয়ে এই মাটি তৈরি করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় পোড়ানোর ফলে চীনামাটির ভেতরে ম্যালাইট নামক খনিজ গঠিত হয়। মৃিশল্পে ব্যবহৃত অন্যান্য উপাদানের তুলনায় চীনামাটি অধিকতর শক্ত, ভারবহ ও স্বচ্ছ হয়ে থাকে। চীনামাটি অভেদ্য, পুরু অবস্থায় শ্বেতবর্ণ ও অনুরণনশীল হয়ে থাকে।
মৃৎ ও প্রস্তর সামগ্রীর চেয়ে চীনামাটির সামগ্রী নির্মাণ অধিকতর কঠিন। শ্বেতশুভ্র রং, কাঠিন্য ও ভঙ্গুরতার জন্য একে সাধারণত উচ্চ মার্গের মৃিশল্প হিসেবে গণ্য করা হয়। এর ওপরে চকচকে প্রলেপ ও রং প্রয়োগ করা সহজ এবং একে সহজেই বিভিন্ন আকৃতি প্রদান করা যায়।
ফলে এটিকে টেবিলের বিভিন্ন সামগ্রী, পাত্র ও ক্ষুদ্রাকার মূর্তি-প্রতিমা নির্মাণে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রযুক্তি ও পণ্যদ্রব্য উৎপাদনের শিল্পক্ষেত্রেও চীনামাটির ব্যবহার আছে। গৃহস্থালি সামগ্রী হিসেবে চীনামাটির তৈরি তৈজসপত্রের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূপৃষ্ঠে অথবা অন্তর্ভূপৃষ্ঠে চীনামাটির সন্ধান পাওয়া গেছে। নেত্রকোনা জেলার বিজয়পুর ও গোপালপুরে, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়, চট্টগ্রামের হাইটগাঁও ও সাতকানিয়া উপজেলার বাইতুল ইজ্জতে চীনামাটির মজুদ রয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়া, বড়পুকুরিয়া ও দীঘিপাড়া এবং নওগাঁ জেলার পত্নীতলায় ভূপৃষ্ঠের নিকটে চীনামাটি মজুদের সন্ধান পাওয়া গেছে।
দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও এর আশপাশের এলাকায় রয়েছে চীনামাটির খনি। খনিজ সম্পদ ব্যুরোর ১৯৫৭ সালের তথ্যানুযায়ী, এই এলাকায় চীনামাটির মজুদ প্রায় ২৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এই চীনামাটি দিয়ে বাংলাদেশের ৩০০ বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব বলে তখন বলা হয়েছিল।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর অনুমতি নিয়ে কয়েকটি বেসরকারি কম্পানি এখানকার চীনামাটি আহরণ করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক মাটি খননের কাজ করছে খনিজ প্রকল্পগুলোতে। এরপর তা পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিরামিক শিল্পের কারখানায়।
চীনামাটির এসব টিলা বা পাহাড় দেখতে খুবই মনোমুগ্ধকর। বাহারি এর মাটির রং। লাল, সাদা, নীলাভ। এ যেন প্রকৃতির আরেক নিসর্গ।
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায়ে ‘পাংখোয়া’
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘মৌজা’র
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ব্লিচিং পাউডার’-এর কথা উল্লেখ আছে
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ধৈঞ্চা’
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘রাজবংশী’র
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘চিড়া’র কথা
- ২০২১ সালের জেডিসি সিলেবাস
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘মুন্ডা’র
- ৮ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘ওঁরাও’
- অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের নবম অধ্যায়ে ‘জনসংখ্যানীতি
4 thoughts on “অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বাদশ অধ্যায় ‘চীনামাটি’”