আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা কর, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়া বর্ণনা কর,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং প্রক্রিয়া বর্ণনা কর
আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ:
আইপিও (Initial Public Offering – IPO) হলো একটি জটিল প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে একটি বেসরকারি কোম্পানি প্রথমবারের মতো জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। নিচে ধাপে ধাপে আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলো:
১. প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ
- কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় এবং এর সুবিধা-অসুবিধা বিশ্লেষণ করে।
- ব্যবস্থাপনা ও বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের অনুমোদন নেওয়া হয়।
২. আন্ডাররাইটার বা ব্যবস্থাপক নির্বাচন
- কোম্পানি একটি আন্ডাররাইটিং ফার্ম (Investment Bank বা মার্চেন্ট ব্যাংক) নির্বাচন করে, যারা আইপিও প্রক্রিয়া পরিচালনা, শেয়ার মূল্য নির্ধারণ এবং বাজারজাতকরণে সাহায্য করে।
- বাংলাদেশে সাধারণত ইস্যু ম্যানেজার/আন্ডাররাইটার (যেমন: ইস্টার্ন ব্যাংক, IDLC, BRAC EPL) এই দায়িত্ব পালন করে।
৩. ডিউ ডিলিজেন্স ও প্রসপেক্টাস প্রস্তুত
- কোম্পানির আর্থিক, আইনি ও ব্যবসায়িক অবস্থা পরীক্ষা (ডিউ ডিলিজেন্স) করা হয়।
- প্রসপেক্টাস (Offer Document) তৈরি করা হয়, যাতে কোম্পানির বিস্তারিত তথ্য (ব্যবসার মডেল, আর্থিক বিবরণী, ঝুঁকি, শেয়ার মূল্য ইত্যাদি) থাকে।
- বাংলাদেশে এই প্রসপেক্টাস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC)-এর কাছে জমা দিতে হয়।
৪. রেগুলেটরি অনুমোদন
- SEC (বা সংশ্লিষ্ট দেশের রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ) কোম্পানির ডকুমেন্ট যাচাই করে অনুমোদন দেয়।
- বাংলাদেশে SEC-এর পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)-এর তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণ করতে হয়।
৫. শেয়ার মূল্য নির্ধারণ (Pricing)
- আন্ডাররাইটাররা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, বাজার চাহিদা এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে ফ্লোর প্রাইস (নির্ধারিত মূল্য) ঠিক করে।
- বাংলাদেশে সাধারণত ফিক্সড প্রাইস বা বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
৬. বিপণন ও বিনিয়োগকারী আকর্ষণ (Roadshow)
- কোম্পানি ও আন্ডাররাইটাররা রোডশো-এর মাধ্যমে বড় বিনিয়োগকারী (Institutional Investors) ও সাধারণ জনগণকে আইপিও সম্পর্কে উৎসাহিত করে।
- মিডিয়া, বিজ্ঞাপন ও সেমিনারের মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
৭. শেয়ার আবেদন গ্রহণ (Subscription)
- বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক বা স্টক ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে শেয়ারের জন্য আবেদন করে।
- বাংলাদেশে সাধারণত আবেদন ফরম পূরণ করে নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দিতে হয়।
৮. আবেদন বরাদ্দ (Allotment)
- যদি আবেদন বেশি আসে, তাহলে লটারির মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয় (বাংলাদেশের সাধারণ পদ্ধতি)।
- বরাদ্দের পর বিনিয়োগকারীদের কাছে অ্যালটমেন্ট লেটার বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে শেয়ার জমা হয়।
৯. স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তি ও ট্রেডিং শুরু
- শেয়ার বরাদ্দের পর কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে DSE ও CSE-এ তালিকাভুক্ত হয়।
- সাধারণত বিড-অফার (Bid/Ask) পদ্ধতিতে ট্রেডিং শুরু হয়।
১০. তহবিল হস্তান্তর
- কোম্পানি শেয়ার বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল পায় এবং তা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে।
বাংলাদেশে আইপিওর উদাহরণ:
- রবি এজিটিএল (2021)
- ঢাকা ব্যাংক (2023)
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- আইপিওতে বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকতে পারে, তাই প্রসপেক্টাস ভালোভাবে পড়ুন।
- SEC ও DSE-এর ওয়েবসাইট থেকে আইপিওর আপডেট তথ্য পাওয়া যায়।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয় এবং বিনিয়োগকারীরা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে অংশীদারিত্ব পায়।
উপসংহার : আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা কর, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়া বর্ণনা কর,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং প্রক্রিয়া বর্ণনা কর
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
আর্টিকেলের শেষ কথাঃ আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা কর, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়া বর্ণনা কর,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং প্রক্রিয়া বর্ণনা কর
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন
আরো পড়ুন:
- নতুন আইপিও বাজারের কার্যাবলী আলোচনা কর
- পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর
- কেন আইপিও অবমূল্যায়ন হয়,আইপিও অধীনে ইস্যুকৃত শেয়ার কেন অবমূল্যায়িত হয়
- আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা কর, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়া বর্ণনা কর,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং প্রক্রিয়া বর্ণনা কর
- প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বলতে কি বুঝ,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং বলতে কি বুঝ, আইপিও কি