আথিক ঝুঁকি হ্রাসের পদ্ধতি,আর্থিক ঝুঁকি কিভাবে কমানো যায়?
কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ঝুঁকি সেই প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যবহৃত ঋণের পরিমাণের উপর নির্ভরশীল। যে প্রতিষ্ঠান যত বেশি অর্থ ঋণ হিসেবে গ্রহণ করবে, সেই প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকির পরিমাণও তত বেশি হবে। যে সব উপায়ে আর্থিক ঝুঁকির পরিমাণ হ্রাস করা যায়, নিচে সে সব নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. মূলধন সংরক্ষণ: আর্থিক ঝুঁকি কমানোর জন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে মূলধন সংরক্ষণের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকৃত অর্থ যাতে যথাসময়ে ফেরত দেয়া সম্ভবপর হয়, সেদিকে ব্যবস্থাপনার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
২. মানবীয় অনিশ্চয়তা দূরীকরণ: মানবীয় অনিশ্চয়তা বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে থাকে। এ অনিশ্চয়তা হতে যে সকল বিপদের সৃষ্টি হতে পারে, তা দূর করার জন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
৩. পরিপূরক ব্যবস্থা: আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য পরিপূরক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এ ব্যবস্থায় এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হয়, যাতে একটি দ্রব্য ক্রয়ের ফলে প্রতিষ্ঠানের যে ক্ষতি হয় বিক্রয়ের মাধ্যমে যেন উক্ত ক্ষতিপূরণ করা যায়।
৪. বাজার বিশ্লেষণ: বাজার বিশ্লেষণের মাধ্যমে আর্থিক ঝুঁকি এড়ানো যায়। যেমন – বাজার বিশ্লেষণ করে ক্রেতাদের রুচি, চাহিদা, অভ্যাস, ফ্যাশন, বাণিজ্যচক্র ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় এবং সে অনুযায়ী দ্রব্য প্রস্তুত করা যায়, যা ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।
৫. অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা হ্রাস: অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা হতে আর্থিক ঝুঁকির উদ্ভব হয়। কাজেই আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা হ্রাস করতে হবে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য কোনো একটি গোষ্ঠী দ্বারা সমবায় ভিত্তিতে পণ্য দ্রব্য উৎপাদন করতে হবে।
আরো ও সাজেশন:-
৬. শ্রমিকদের সহযোগিতা: শ্রমিকদের ভালো সম্পর্ক থাকলে ধর্মঘট বা লক আউটের ফলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়নে আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।
৭. সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ: বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা যেমন – অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি চালু, সম্পত্তির সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আর্থিক ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়।
[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৮. প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তা দূরীকরণ: প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তা হতেও আর্থিক ঝুঁকির উদ্ভব হয়। তাই আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করতে হলে প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। বীমা পলিসি ক্রয়ের মাধ্যমে প্রাকৃতিক অনিশ্চয়তা দূর করা যায়।
৯. সমবায়ের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ: একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা প্রত্যাহার করে সমবায়ের ভিত্তিতে পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করলে আর্থিক ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়।
১০. নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ: উপযুক্ত অভ্যন্তরীণ নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ঝুঁকি এড়ানো যায়। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থা আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, আর্থিক ঝুঁকি ব্যবসায়ের ঋণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বিনিয়োগ হতে ঋণের সুদ, ঋণ পরিশোধ এবং মুনাফার ব্যবস্থা করার মতো নগদ প্রবাহ না পাওয়ার সম্ভাবনাকে আর্থিক ঝুঁকি বলে। আর এই আর্থিক ঝুঁকি কমাতে হলে উপর্যুক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে।