প্রশ্ন সমাধান: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের কাকে বলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা কী?, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের কাকে বলে
দেশের সীমানা পেরিয়ে দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে দ্রব্য ও সেবার বিনিময় সম্পন্ন হলে তাকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলা হয়।
স্থান, কাল, অবস্থাভেদে এই বাণিজ্যের মধ্যে তারতম্য দেখা যায়। মূলত কেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সংগঠিত হয়,এর উত্তর খুঁজে বের করার জন্য অর্থনীতিবিদগণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কারণ ব্যাখ্যা করেন, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যতত্ত্ব নামে পরিচিত।
আরো ও সাজেশন:-
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা কী?, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর
অধ্যাপক ওলিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য পৃথক কোনো তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মতামত ব্যক্ত করেন। কিন্তু ক্লাসিক্যাল, নিও-ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদগণসহ অধিকাংশ অর্থনীতিবিদগণই মনে করেন আন্তঃআঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে উৎপাদনের উপাদানসমূহের গতিশীলতার মাত্রায়, ভিন্ন জাতীয় নীতি, ভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা, বাণিজ্যের প্রকৃতি, নিয়ন্ত্রণ, সম্পদের প্রাচুর্যতা, ভিন্ন অর্থনৈতিক পরিবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে দৃশ্যমান পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে এবং এ কারণেই তারা মনে করেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য পৃথক তত্ত্বের প্রয়োজন ।
পৃথক তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে আরো যুক্তিসংগত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদগণ নিম্নোক্ত বিষয়াদির প্রতি ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেছেন। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো-
১. উপাদানসমূহের গতিশীলতা : উৎপাদনের উপাদানসমূহ দেশের অভ্যন্তরে যতটা গতিশীল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ততটা গতিশীল নয়। বিশ্লেষত: শ্রম বিভিন্ন দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় গতিশীল হতে পারে না।
২. ভোক্তা চাহিদা বিশ্লেষণ : দেশের অভ্যন্তরের চাহিদা পছন্দ অনুযায়ী উৎপাদকগণ সহজেই পণ্য সামগ্রীর বাজারজাতকরণের সমর্থ হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভোক্তাগণের চাহিদা ও পছন্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক তারতম্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। ফলে বাজার বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সমস্যা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে ।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৩. পৃথক বাণিজ্য নীতি : আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিটি দেশই পৃথক বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করে থাকে। এক্ষেত্রে স্বকীয় জাতীয়তাবোধ প্রভাবিত করে থাকে। ফলে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাঠামো, বাণিজ্য শর্ত, বিনিয়োগনীতি, উৎপাদন নীতি ইত্যাদির ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা দেয় যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতি ব্যহত করে।
৪. আন্তর্জাতিক নীতি অনুসরণ : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, ঋণনীতি ইত্যাদি অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনা করতে হয়, যা আন্তঃআঞ্চলিক ক্ষেত্রে বিবেচনায় আনতে হয় না ।
৫. বিধিনিষেধ : দেশের অভ্যন্তরে সাধারণত বাণিজ্য ও বিনিময় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বিধি নিষেধ থাকে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি দেশকে বিভিন্ন দেশের বিনিময় সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়ে বাণিজ্য পরিচালনা করতে হয় ।
৬. পরিবেশের প্রভাব : বিভিন্ন দেশের ভিন্ন জলবায়ুগত এবং অর্থনৈতিক পরিবেশের কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বাণিজ্য ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে ।
৭. বিবিধ উপাদান : এছাড়াও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যতায়, মূলধন দ্রব্যের সহজলভ্যতা, পরিবহণ সংক্রান্ত ব্যয়, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব ও স্বাতন্ত্র্যবোধ ইত্যাদির কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে থাকে ।
উপসংহার : উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায় যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে কার্যকর, গতিশীল এবং লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পৃথক তত্ত্বের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য পৃথক বাণিজ্য কাঠামোর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এবং তা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত দিকনির্দেশনাও পাওয়া সম্ভবপর হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত পৃথক মতবাদ বা তত্ত্ব থেকে ।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রেডিং ব্যবস্থা আলোচনা করো
- খিলাফত রাষ্ট্র ও আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য । খিলাফত রাষ্ট্র vs আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
- Describe the barriers to effective communication in business organization
- সমাজদর্শন ও রাষ্ট্র দর্শনের সম্পর্ক, সমাজদর্শ ও রাষ্ট্রদর্শনের সম্পর্ক, Relation between Social Philosophy & Political Philosophy
- দর্শনের বিষয়বস্তুকে প্রধানত কয় ভাগে ভাগ করা যায়?, দর্শনের বিষয়বস্তু হিসেবে অধিবিদ্যা আলোচনা করুন।