ইক্যুইটি মূলধনের সংজ্ঞা দাও,ইক্যুইটি মূলধনের বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর,মালিকের মূলধনের সংজ্ঞা দাও
ইক্যুইটি মূলধন/মালিকের মূলধনের সংজ্ঞা দাও ।
একটি ব্যবসায়ের মূল জীবনীশক্তি হলো মূলধন । মূলধন ছাড়া কোনো ব্যবসায় স্থাপন পরিচালনা করা যায় না। এক মালিকানা কারবারে মালিক বা উদ্যোক্তা নিজেই মূলধন সরবরাহ করে। অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে অংশীদারগণ এবং যৌথ মূলধনী কোম্পানির ক্ষেত্রে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ার ও ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সরবরাহ করে ।
সাধারণ অর্থে, যেকোনো ব্যবসায় শুরুর জন্য উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত মূলধন, পরবর্তীতে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ এবং সংরক্ষিত আয়ের সমষ্টিকে ইক্যুইটি বা মালিকের মূলধন বলে ।
ব্যাপক অর্থে, কোম্পানির মোট মূলধন থেকে সকল প্রকার দায়-দেনা পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে অথবা যে অংশের উপর শুধুমাত্র শেয়ার মালিকদের আইনগত অধিকার জন্মায় ঐ অংশকে ইক্যুইটি মূলধন/মালিকের মূলধন বলে।
মালিকের মূলধনের নিম্নলিখিত দফাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয়। যেমন- ১. শেয়ার মূলধন, ২. শেয়ার অধিহার, ৩. সংরক্ষিত আয়, ৪. নিমজ্জিত তহবিল, ৫. বিভিন্ন প্রকার অবণ্টিত মুনাফা ও ৬. বিভিন্ন প্রকার সঞ্চিতি । ইক্যুইটি মূলধনকে নিম্নোক্ত সূত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় । মালিকানা স্বত্ব = মোট সম্পত্তি – মোট দায়
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি হতে মোট দায় দেনা পরিশোধ করার পর যে পরিমাণ মূলধন অবশিষ্ট থাকে, তাকে ইস্যুইটি মূলধন বলে ।
ইক্যুইটি মূলধনের বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা কর।
একটি ব্যবসায় অর্থায়নের প্রধান উৎস হচ্ছে মালিকের ইক্যুইটি বা মূলধন। আর অপরটি হচ্ছে ঋণকৃত ইক্যুইটি বা মূলধন । ইক্যুইটি মূলধনে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষ করা যায়–
১. শেয়ার মালিক কর্তৃক প্রদত্ত : কোম্পানির প্রথম ও প্রধান * মূলধনের উৎস হচ্ছে মালিক কর্তৃক প্রদত্ত মূলধন। পরবর্তীতে : কোম্পানি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে তার মূলধন বৃদ্ধি করে থাকে ।
২. অবণ্টিত মুনাফা ও সংরক্ষিত তহবিল : কোম্পানি পরিচালনার ফলে যে মুনাফা হয় তা সহ অন্যান্য যাবতীয় তহবিল (লাভ-ক্ষতি হিসাবের ক্রেডিট উদ্বৃত্ত, সাধারণ সঞ্চিতি, লভ্যাংশ সমতাকরণ T তহবিল ইত্যাদি) ইক্যুইটি মূলধনের অন্তর্ভুক্ত ।
৩. অবশিষ্টাংশ : ইক্যুইটি মূলধনের উপর কেবলমাত্র সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অধিকার জন্মায় যা তাদেরকে কোম্পানি নিয়ন্ত্রক করে তোলে ।
৪. লাভ-লোকসান দ্বারা পরিবর্তন : ইক্যুইটি মূলধনের পরিমাণ ব্যবসায়/ কোম্পানির লাভ-লোকসান দ্বারা প্রভাবিত হয় । ব্যবসায় লাভ হলে ইক্যুইটি মূলধন বৃদ্ধি পায় এবং লোকসান বা জাত হলে ইক্যুইটি মূলধন হ্রাস পায়।
৫. কম মূলধন ব্যয় : কোম্পানি সকল মূলধনের মধ্যে ইক্যুইটি মূলধনের খরচ তুলনামূলকভাবে কম। কারণ মালিকগণ নিজেরাই এই মূলধন সরবরাহ করে বিধায় কোনো প্রকার সুদ প্রদান করতে হয় না ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইক্যুইটি মূলধনের উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণেই এ মূলধনকে ব্যবসায়ের প্রাণ বলা হয় ।
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।