ইজারা অর্থায়নে এর চেয়ে ঋণকৃত অর্থায়ন সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা কর

ইজারা অর্থায়নে এর চেয়ে ঋণকৃত অর্থায়ন সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা কর

ইজারা অর্থায়নে এর চেয়ে ঋণকৃত অর্থায়ন সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা কর

ইজারা অর্থায়ন বনাম ঋণকৃত অর্থায়ন

ইজারা অর্থায়ন (Lease Financing) এবং ঋণকৃত অর্থায়ন (Debt Financing) উভয়ই একটি প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ব্যবহারের জন্য অর্থায়নের পদ্ধতি। তবে এই দুই পদ্ধতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে এবং ঋণকৃত অর্থায়ন কিছু ক্ষেত্রে ইজারা অর্থায়নের চেয়ে সুবিধাজনক হতে পারে।


ঋণকৃত অর্থায়নের সুবিধা:

1. সম্পত্তির মালিকানা অর্জনের সুযোগ:

  • ঋণ নিয়ে সরাসরি সম্পত্তি কিনলে মালিকানা লিজগ্রহীতার হাতে থাকে।
  • ইজারার ক্ষেত্রে, মালিকানা সাধারণত লিজদাতার কাছে থাকে, যা ব্যবসার সম্পদ হিসেবে দেখানো সম্ভব নয়।

2. দীর্ঘমেয়াদে খরচ কম:

  • ঋণের মাধ্যমে সম্পত্তি কিনলে একবার ঋণ শোধ করার পর সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করা যায়, কোনো অতিরিক্ত ভাড়া প্রদানের প্রয়োজন হয় না।
  • ইজারায় নিয়মিত ভাড়া প্রদানের ফলে দীর্ঘমেয়াদে খরচ বেশি হয়।

3. কর সুবিধা:

  • ঋণের সুদ প্রদানের অর্থ কর ছাড়ের আওতায় আসতে পারে। ফলে করযোগ্য আয় কমে যায়।
  • যদিও ইজারাতেও কর সুবিধা পাওয়া যায়, তবে সুদ ছাড়ের সুযোগ তুলনামূলক বেশি কার্যকর।

4. সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ:

  • ঋণ নিয়ে কেনা সম্পত্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা থাকে না। এটি ব্যবসার প্রয়োজন অনুসারে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • ইজারার ক্ষেত্রে লিজ চুক্তি অনুসারে ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।

5. মূল্যায়নের স্থায়িত্ব:

  • সম্পত্তি কিনে নিলে তার অবচয় (depreciation) মূল্যে ব্যবসার খরচ হিসেবে দেখানো যায়।
  • ইজারার ক্ষেত্রে এটি সম্ভব হয় না, কারণ মালিকানা লিজদাতার হাতে থাকে।

6. চুক্তি ভাঙার সীমাবদ্ধতা নেই:

  • ঋণ নিয়ে সম্পত্তি কিনলে তা বিক্রি করে অন্য সম্পদে বিনিয়োগ করা সহজ।
  • ইজারার ক্ষেত্রে চুক্তি ভাঙতে জরিমানা বা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

7. লোণ পরিশোধের সময়কাল:

  • ঋণ শোধের নির্দিষ্ট সময় এবং পেমেন্টের গঠন ব্যবসার সুবিধামতো নির্ধারণ করা যায়।
  • ইজারার ক্ষেত্রে সময়কাল ও শর্তাবলী লিজদাতার দ্বারা নির্ধারিত হয়।

8. সম্পদের মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ:

  • ঋণ নিয়ে কেনা সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধি হলে তা ব্যবসার মোট সম্পদের মূল্য বাড়ায়।
  • ইজারার ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাওয়া যায় না, কারণ মালিকানা লিজদাতার হাতে থাকে।

উদাহরণ:

  1. ইজারা অর্থায়ন:
    একটি কোম্পানি নতুন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য ইজারা নেয় এবং প্রতি মাসে নির্ধারিত ভাড়া প্রদান করে। চুক্তির শেষে যন্ত্রপাতি কোম্পানির মালিকানায় আসে না।
  2. ঋণকৃত অর্থায়ন:
    একই কোম্পানি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যন্ত্রপাতি কিনে। ঋণ পরিশোধের পর সম্পত্তি কোম্পানির নিজস্ব সম্পদ হয়ে যায়, যা ভবিষ্যতে বিক্রি বা ব্যবহার করা যায়।

কোন পদ্ধতি বেছে নেওয়া উচিত?

  • ইজারা অর্থায়ন উপযোগী:
    • যদি প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক নগদ অর্থের অভাব থাকে।
    • যদি স্বল্পমেয়াদী ব্যবহারের জন্য সম্পদ প্রয়োজন হয়।
    • কর সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য।
  • ঋণকৃত অর্থায়ন উপযোগী:
    • যদি দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ ব্যবহার এবং মালিকানা নিশ্চিত করতে হয়।
    • ব্যবসার উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং স্থায়ী সম্পদ দেখানোর প্রয়োজন হয়।
    • ভবিষ্যতে সম্পদের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা থাকে।

উপসংহার:

ঋণকৃত অর্থায়ন ইজারা অর্থায়নের তুলনায় দীর্ঘমেয়াদে বেশি লাভজনক এবং সম্পত্তির উপর নিয়ন্ত্রণ ও মালিকানা নিশ্চিত করে। তবে নির্দিষ্ট পরিস্থিতি ও ব্যবসার চাহিদার ভিত্তিতে সঠিক পদ্ধতি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার : ইজারা অর্থায়নে এর চেয়ে ঋণকৃত অর্থায়ন সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা কর

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ ইজারা অর্থায়নে এর চেয়ে ঋণকৃত অর্থায়ন সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা কর

Leave a Comment