কাঁচা লবণ খেলে শরীরের যেসব ক্ষতি হয়

কাঁচা লবণ খেলে শরীরের যেসব ক্ষতি হয়

কাঁচা লবণ খেলে শরীরের যেসব ক্ষতি হয় রান্না করা খাবারের ওপর কাঁচা লবণ ছিটিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য গবেষকরা। লবণের খনিজ উপাদান শরীরের জন্য উপকারী হলেও মাত্রা বেশি বা কম দুটোই শরীরের জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হলে রক্তচাপ বৃদ্ধি, পেটে ক্যান্সার, স্থূলতা এমনকি হাঁপানির সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হলে হার্ট ও কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের ও পরেও খারাপ প্রভাব ফেলে কাঁচা লবণ। রান্না করা খাবারে লবণ ছিটিয়ে খেলে ক্ষতি বেশি। ফলে শরীরে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। কম লবণও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও থাকে।

সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা ও স্বাস্থ্যকর প্লাজমা তৈরি করার জন্য লবণ খাওয়া অপরিহার্য। আমরা যেসব খাবার তৈরি করি তাতে লবণ যোগ করা হয় আবার কিছু প্রসেসড খাবার বা প্যাকেটজাত খাবারেও লবণ দেওয়া থাকে। তাই খাবার খাওয়ার সময় তাতে কতটুকু লবণ আছে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা বলছে, একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের প্রতিদিন ৯-১২ গ্রাম লবণ খাওয়া উচিত।

কাঁচা লবণ খেলে কি হয়,কাঁচা লবণ খেলে কি হয়,

রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে 

লবণ খাওয়ার পরিমাণে যদি নিয়ন্ত্রণ আনা না যায়, তা হলে ব্লাডপ্রেশার মারাত্মক বাড়তে শুরু করে। এমনটি হলে বাড়ে হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কাও। লবণ মানেই সোডিয়াম, আর এই খনিজটির মাত্রা রক্তে যত বাড়ে, তত পটাশিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে। যে কারণে ব্লাড ভেসেলের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। যে কারণে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে।

কাঁচা লবণ খেলে যে ক্ষতি হয়

স্ট্রোক 

মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কমতে শুরু করলে ব্রেনের অন্দরে অক্সিজেনের অভাব ঘটতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে ব্রেন সেলেরা মরতে থাকে। এমনটি হলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। এখন প্রশ্ন হলো– মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ বন্ধ হয় কেন? আসলে শরীরে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ বাড়তে থাকে। আর ব্লাডপ্রেশার বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে। আর একবার যদি ছোট ছোট স্ট্রোক হতে শুরু করে, তা হলে ব্রেনে রক্তের সরবরাহ কমতে শুরু করে।

জেনে নিন শরীরের যেসব ক্ষতি হয় কাঁচা লবণ খেলে !

হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে 

হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়বে না কমবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে রক্তচাপের ওপর। ব্লাডপ্রেশার যদি বাড়তে থাকে, তা হলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করে, আর এমনটি হলে স্বাভাবিকভাবেই করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বাড়ে হঠাৎ করে হার্টঅ্যাটাকের আশঙ্কাও। আসলে রক্তচাপ বাড়তে থাকলে হার্টে ঠিকমতো অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছাতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে হার্টের পেশিরা শক্ত হতে শুরু করে। যে কারণে হার্টের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

অতিরিক্ত লবণ খেলে কি হয়,অতিরিক্ত লবণ খেলে কি হয় ?

পানির পিপাসা

অতিরিক্ত লবণ-জাতীয় খাবার খাওয়া মুখ শুষ্ক করে ফেলে। তাই তেষ্টা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হল, দেহ সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে পানির ঘাটতি অনুভব করে।

শুধু নোনতা খাবার খাওয়াই না বরং লবণ ও গরম পানি দিয়ে ‘গারগল’ করা হলেও কয়েক মিনিট পরে মুখে শুষ্ক অনুভব হয়।

স্টমাক ক্যান্সারে ঝুঁকি বাড়ায় 

দেহে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে নানা কারণে শরীরে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক একটি জীবাণুর মাত্রাও বাড়তে শুরু করে, যা দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে স্টমাকের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে শরীরের এই অংশে ক্যান্সার কোষ জন্ম নেয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই এমন মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচতে রোজের ডেয়েটে লবণের পরিমাণ যতটা সম্ভব কমান।

 হাড় দুর্বল করে

বেশি মাত্রায় লবণ খেলে হাড়ের ক্যালসিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এতে হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি মাসিক বন্ধের পর, যখন নারীদের হাড়ের ক্যালসিয়াম কমে যায়, তখন বেশি লবণ খাওয়া পরিহার করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।

অস্টিওপোরোসিস 

শরীরে লবণের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড়ের ক্ষমতা কমতে থাকে। কারণ হাড়ের খাবার হলো ক্যালসিয়ামে। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় জয়েন্ট পেনও।

ওজন বৃদ্ধি পায় 

গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে ওবেসিটি সমস্যা চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে, যে কারণে বেড়েছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হার্টের রোগ এবং ব্লাডপ্রেশারের মতো মারণ রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও। শরীরে লবণের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে জল তেষ্টা খুব বেড়ে যায়, আর আজকের প্রজন্ম তেষ্টার সময় জলের পরিবর্তে ঠাণ্ডা পানীয় খেতেই বেশি ভালোবাসে। ফলে কোলড্রিংক খাওয়ার পরিমাণ বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে শরীরে ক্যালোরি প্রবেশের মাত্রাও। ফলে ওজন বাড়তে সময় লাগে না।

যেসব খাবারে লবণ বেশি থাকে

সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকানরা যত লবণ গ্রহণ করে থাকে, তার ৪০ শতাংশের বেশি আসে নীচের খাবারগুলো থেকে:

মাংসের স্যান্ডউইচ

পিৎজা

ট্যাকোস

সুপ

চিপস, ক্র্যাকার্স, পপকর্ন

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিকেন ফ্রাই

পাস্তা

বার্গার

কিন্তু এসব খাবারেও বিভিন্ন স্থানে লবণের মাত্রার কমবেশি হতে পারে। তবে লবণ ছাড়াও বেকিং সোডা, মনো-সোডিয়াম গ্লুটামেট, সোডিয়াম নাইট্রেটের মাধ্যমেও মানুষের দেহে সোডিয়াম প্রবেশ করে। সব মিলিয়ে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলেও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হয়।

পরিশেষে : বেশি লবণ খেলে কি হয়,ভাতের সাথে কাঁচা লবণ খেলে কি ক্ষতি হয়?,অতিরিক্ত লবণ খেলে কি ঘটে

আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট

স্বাস্থ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ঔষধি গুন গোপন সমস্যা রূপচর্চা রোগ প্রতিরোধ

Leave a Comment