কোরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া,কোরবানির পশু জবাই করার নিয়ম,কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া

আজকের বিষয়: কোরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া,কোরবানির পশু জবাই করার নিয়ম,কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ তাকওয়া সমৃদ্ধ ইবাদত। এটি আল্লাহ তাআলার নামে পশু জবেহ করার মাধ্যমে আদায় করতে হয়। অনেকেই কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম ও দোয়া জানেন না। হাদিসে এ সম্পর্কে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা।

গোশত খাওয়া হালাল এমন স্থলচর পশু বিশেষ করে কুরবানির জন্য প্রযোজ্য গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট ও দুম্বা ইত্যাদি পশুর কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী এবং উভয় পাশের দু’টি রগ অথবা একটি রগ কাটার মাধ্যমে জবাই বা নহর সম্পন্ন হয়।

হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজের কোরবানির পশু তার নিজ হাতে জবাই করেছেন।

নিজের কুরবানির পশু নিজেই জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজের দ্বারা জবাই সম্ভব না হয় তবে অন্যের দ্বারা জবাই করানো। এক্ষেত্রে জবাইয়ের সময় কুরবানি দাতা সামনে থাকা উত্তম।

কুরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া প্রিয় পাঠকের কাছে আজ আমি তুলে ধরলাম।

জবাই বা নহরের পদ্ধতি-

জবাই করার সময় পশু ক্বিবলামুখী করে শোয়ানো। অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা।

ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ বলা পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলবশত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া বৈধ।

জবাই করার সময় কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী, এবং উভয় পাশের দুটি রগ অর্থাৎ মোট চারটি রগ কাটা জরুরি। কমপক্ষে তিন যদি তিনটি রগ কটা হয় তবে কুরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দু’টি রগ কাটা হয় তবে কুরবানি দুরস্ত হবে না। (হিদায়া)

জবাই করার সময় ছুরি ভালভাবে ধার দিয়ে নেয়া, যাতে জবাইয়ের সময় পশুর অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। যেমন- এক ছুরি দিয়ে জবাই শুরু করে চামড়া কিছু কাটার পর আর না কাটা অতপর আবার ছুরি পরিবর্তন করে জবাই করা ইত্যাদি।

কোনো ব্যক্তি জবাই করার সময় জবাইকারীর ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তবে তাকেও বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


কুরবানির পশু জবেহের দোয়া-

কুরবানির পশু জবাই করার সময় মুখে (উচ্চ স্বরে) নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত এ নিয়ত করা যে, ‘আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানি আদায় করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম।

কুরবানির পশু ক্বিবলার দিকে শোয়ানোর পর এ দোয়া পাঠ করা-

উচ্চারণ- ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। কুল ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা আওয়ালুল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।

অতঃপর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে কুরবানির পশু জবাই করা।

কুরবানির পশু জবাই করে এ দোয়া পড়া-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়া খালিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাতা ওয়াস সালাম।

লক্ষ্যণীয় হলো- যদি কেউ একাকি কুরবানি দেয় এবং নিজে জবাই করে তবে বলবে মিন্নি; আর অন্যের কুরবানির পশু জবাই করার সময় ‘মিন’ বলে যারা কুরবানি আদায় করছে তাদের নাম বলা।

মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত নিয়মে কুরবানি আদায় করার তাওফিক দান করুন। সবার কুরবানিকে কবুল করুন, আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখকঃ বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও গবেষক হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।

Leave a Comment