গদ্য : জীবন ও বৃক্ষ, “জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?

গদ্য : জীবন ও বৃক্ষ

০১। জীবন ও বৃক্ষ একসুত্রে গাঁথা। বৃক্ষের কাছ থেকে মানবজীবনের অনেক শিক্ষা রয়েছে। “জীবন ও বক্ষ পড়ি। অত্যন্ত জীবন ঘনিষ্ট। মানবজীবনের সত্যিকার আদর্শ কী হওয়া উচিৎ তা এখানে সুন্দর-সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে। প্রবন্ধটিতে জীবনের অনিবার্য ও দুর্দান্ত সত্যকে এক অনুপম শিল্পরূপ প্রদান করা হয়েছে ।

(ক) “জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?

উত্তর: মোতাহের হোসেন চৌধুরীর “জীবন ও বৃক্ষ” প্রবন্ধটি তাঁর “সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে।

(খ) প্রাবন্ধিক বার বার বৃক্ষের দিকে তাকাতে বলেছেন কেন?

উত্তর: যাকে বলা হয় গোপন ও নীরব সাধনা তা বৃক্ষেই অভিব্যক্তি, নদীতে নয়। তাছাড়া বৃক্ষের সার্থকতার ছবি যত সহজে উপলব্ধি করতে পারি, নদীর সার্থকতার ছবি তত সহজে উপলব্ধি করা যায় না।

নদী সাগরে পতিত হয় সত্য, কিন্ত তার ছবি আমরা প্রত্যহ দেখতে পাই না। বৃক্ষের ফুল ও ফল ধরানোর ছবি কিন্তু প্রত্যহ চোখে পড়ে। দোরের কাছে দাঁড়িয়ে থেকে সে অনবরত নতি, শান্তি ও সেবার বাণী প্রচার করে।

(গ) বৃক্ষের কাছ থেকে মানবজীবনের কী কী শিক্ষা রয়েছে? এ বিষয়ে তােমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা কর।

উত্তর: লেখক মানুষের জীবন কাঠামোকে তুলনা করেছেন বৃক্ষের সঙ্গে।তিনি
দেখিয়েছেন- বৃক্ষ সাধনার প্রতীক। বৃক্ষের বিকাশ,পরিপূর্ণতা ও সার্থকতার পেছনে রয়েছে তার নীরব সাধনা।

বৃক্ষ যেমন করে ফুল ফলে পরিপূর্ণতা পায়, আর সে-সব অন্যকে দান করে সার্থতকতার উজজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে, মানব- জীবনের সার্কতার জন্য তার নিজের সাধনাও তেমনি হওয়া উচিত।

তাহলেই স্বার্থপর, অহংকারী, বিবেকহীন নিষ্ঠুর জবরদস্তি প্রিয় মানুষের জায়গায় দেখা দেবে প্রেমে, সৌন্দর্যে,সেবায় বিকশিত বিবেকবান পরিপূর্ণ ও সার্থক মানুষ।

(ঘ) বৃক্ষ ও জীবন একসূত্রে গাঁথা।’ উক্তিটি ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের আলােকে তােমার মতামত ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: মোতাহের হোসেন চৌধুরী তাঁর ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে বৃক্ষকে পরার্থে আত্মনিবেদনের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন।

তিনি দেখিয়েছেন, বৃক্ষের বৃদ্ধি, গতি, বিকাশ ও ফুলে-ফলে পরিপূর্ণ হওয়ার এক সার্থক ও সুন্দর চিত্র। বৃক্ষ তার ফুল-ফলকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে যুগপত্ প্রাপ্তি ও দানের আদর্শ সৃষ্টি করে। বৃক্ষের এই উন্মেষ, পূর্ণতা ও সার্থকতার পেছনে রয়েছে নীরব সাধনা।

উদ্দীপকে দেখা যায়, বৃক্ষ থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে। বৃক্ষ নীরব ভাষায় আমাদের তার সার্থকতার গান গেয়ে শোনায়। তার আদর্শ, শৃঙ্খলা, শিক্ষা, নম্রতা, সেবাপরায়ণতা আমাদের আত্মসমর্পণের উত্সাহ জোগায়। বিনিময়ে সে আমাদের কাছ থেকে কোনো কিছুই প্রত্যাশা করে না।

কিন্তু মানুষ অর্থশালী হলেই আত্মম্ভরি হয়ে ওঠে। আবার অর্থহীন হলে নিজেকে মনে করে হেয়, যা মোটেই ঠিক নয়। আমাদের উচিত বৃক্ষ থেকে শিক্ষা নেওয়া।

‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধে এবং উদ্দীপকে বৃক্ষের দানের মাধ্যমে তার সার্থকতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। বৃক্ষ অঙ্কুরোদগম থেকে ফুলে-ফলে বিকশিত হওয়া পর্যন্ত তার কাছ থেকে শেখার শেষ নেই। এই শিক্ষালাভ করলে স্বার্থপর, অহংকারী, বিবেকহীন, নিষ্ঠুর জবরদস্তিপ্রবণ মানুষের জায়গায় দেখা দেবে প্রেমে, সৌন্দর্যে, সেবায় বিকশিত বিবেকবান পরিপূর্ণ ও সার্থক মানুষ। সুতরাং আমার মতে, শিক্ষা গ্রহণের দিক থেকে উদ্দীপকের ‘বৃক্ষ’ এবং ‘জীবন ও বৃক্ষ’ প্রবন্ধের বৃক্ষ একসূত্রে গাঁথা।

H.S.C

Leave a Comment