ঘরে বসে মিষ্টি দই বানানোর ঝটপট সহজ উপায় রেসিপি

ঘরে বসে মিষ্টি দই বানানোর ঝটপট সহজ উপায়
রেসিপি

আমি যখন ঘরে দই বানাতাম না তখন রেগুলাই দই কিনতে হত, কেননা আমার স্বামীর দই ছাড়া চলেই না,সে দইয়ের মহা ভক্ত,কিন্তু যেই আমি ঘরে দই বানানো শুরু করলাম সে আমারই মহাভক্ত হয়ে গেল 😀 হা হা হা কেননা ঘরের দই আর বাইরের দইয়ের স্বাদে রয়েছে আকাশ পাতাল পার্থক্য, ঘরের দইয়ের মত সুস্বাদু আর নির্ভেজাল দইই হয়না আসুন জেনে নিন ঘরে বসে মিষ্টি দই বানানোর ঝটপট সহজ উপায়।

উপকরনঃ

দুধ – ১ লিটার
চিনি – আপনার রুচি অনুযায়ী
পুরনো দই (টক বা মিষ্টি) – ৩ টেবিল চামচ
পাউডার দুধ – ২/৩ টেবিল চামচ(আপনার ইচ্ছা, আমি দেই)

দই বানানোর পদ্ধতিঃ

প্রথমে দুধ ও পাউডার দুধ প্যানে নিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল দিতে থাকুন।বলক আসলে চিনি দিয়ে দিন( চিনি যখন দিবেন তথনই ক্যারামেল দিবেন, যারা ক্যারামেল দিতে ইচ্ছুক, ক্যারামেলের কথা কেন বললাম তা জানার জন্য রেসিপি পুরোটা ভালো করে পড়তে হবে) আপনার ইচ্ছানুযায়ী, মাঝে মাঝে চামচ দিয়ে নাড়তে হবে, নইলে দুধ পাতিলের নিচে জমা হয়ে পুড়ে যেতে পারে।

দুধ হাফ লিটার হলে চুলা থেকে নামিয়ে দুধকে ঠাণ্ডা হতে দিন।দু্ধ পুরো ঠান্ডা হবার আগে আঙ্গুল দিয়ে পরখ করে দেখুন। কুসুম গরম থাকা অবস্থায়( যে গরম আঙ্গুল সহ্য করতে পারে) ওতে পুরনো দই মিক্স করুন।

ভালোভাবে মিশাতে হবে হ্যান্ড বিটার বা কাটা চামচ দিয়ে,মিক্স করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ফেনা বেশি না উঠে যায়। এবার যে পাত্রে দই বানাবেন তাতে আপনার দইয়ের মিশ্রণটি ঢেলে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।

মোটা টাওয়াল/কাপড় গরম করে ৮/১০ ঘন্টা দই ঢেকে রাখুন। ৮/১০ ঘন্টা পর দই জমে গেলে ফ্রিজে রাখুন,খুব ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন এ্যান্ড এনজয় 😀

আমাকে কিছু আপু দই বিষয়ক প্রশ্ন করেছেন আমি ওই সব প্রশ্নের উত্তর আর নিজ থেকে কিছু টিপস দিচ্ছি যা দই বানাতে গেলে অবশ্যই মনে রাখবেন:

দুধ যত বেশি ঘন হবে দই তত বেশি মজা হবে, তাই দই মজা করতে চাইলে আমি বলবো কিছু পাউডার দুধ মিশান। তবে পরিমানের চেয়ে বেশি ঘন করলে তা আর দই থাকবে না পনির পনির টেস্ট করবে।

দুধ বেশি গরম অবস্থায় পুরনো দই মেশালে ওই দই আর জমবে না।

খেয়াল রাখবেন পুরনো দই যেটা ব্যবহার করবেন তাতে যেন পানি না থাকে তাহলে আপনার বানানো দই ও অল্প সময়ে পানি ছেড়ে দিবে, আল্লাহর রহমতে আমার বানানো দইয়ে কোনদিন ও পানি ছাড়ে নাই সেটা আমি যত আস্তে আস্তেই খেয়েছি না কেন।

দই পাতার জন্য মাটির পাত্র ব্যবহার করাই উত্তম 🙂 কিন্তু ধরাবাধা কোন নিয়ম নাই যে মাটির পাত্রই ব্যবহার করতে হবে, হাতের কাছে থাকা কাচঁ/প্লাস্টিক যে কোন কিছুতেই দই পাতা যাবে।

দই জমতে দেবার পর নির্দিষ্ট সময়ের আগে দই ঢাকনা খুলে চেক করতে যাবেন না বা নাড়া লাগাবেন না। সবচেয়ে ভালো হয় যদি দই রাতে জমতে দিন আর সকালে জমার পর ফ্রিজ এ রাখুন।

গরম জায়গায় দই পাততে দিলে সুবিধা এক্ষেত্রে ওভেন সবচেয়ে সেফ জায়গা। ওভেন অন করবেন না শুধু ওভেনের ভিতরে রাখার কথা বলেছি গরম কাপড় দিয়ে 🙂

বগুড়ার দইয়ের রং করতে চাইলে দুধে ২/৩ চামচ ক্যারামেল দিতে পারেন,( চিনি যখন দিবেন তথনই ক্যারামেল দিবেন) তাহলে রং সুন্দর আসবে। জর্দা রং, জাফরান ব্যবহার করলে ও ‍সুন্দর রং আসবে। আমি কোনটাই করি না দুধ বেশি দেই এতেই সুন্দর রং চলে আসে 🙂

টক দই ঠিক উপরের নিয়মেই করবেন শুধু চিনি এ্যাড করবেন না।

গোলাপ জল বা অন্য কোন ফ্লেভার দিয়ে দেখতে পারেন শুধু খেয়াল রাখবেন দুধ যেন না ফাটে, তবেই যে কোন সুগন্ধি এ্যাড করতে পারবেন।

টাওয়াল গরম করবেন যেভাবে হা হা হা 😀 😀 😀 টাওয়াল কে জ্বলন্ত চুলার উপর ধরে রাখুন ৫মিনিট বা আয়রন দিয়ে টাওয়াল ভালো করে আয়রন করুন।

ভিনেগার দিলে হবে না পুরনো দইই লাগবে, কেননা ওতে আছে কোটি কোটি উপকারি ব্যাকটেরিয়া যারা দই তৈরিতে সাহায্য করে,এটাই দই বীজ। 🙂 বাজার থেকে দই কিনে আনুন।

ক্যারামেল তৈরী : পাত্রে ৫/৬ চামচ চিনিতে ২/৩ চামচ পানি দিয়ে চুলায় দিন তারপর যতক্ষণ চিনি বাদামী রঙ না হয় সে পর্যন্ত নাড়তে থাকুন বাদামী রঙ হলে নামিয়ে নিন এটাই ক্যারামেল হা হা হা 🙂 🙂 🙂

অবশ্যই শীতের দিনেও দই পাতা যায়/দই পাতা হয় 🙂

পুরনো দই না থাকলে দই বাজার থেকে কিনে আনুন তারপর সেখান থেকে দই নিয়ে বীজ হিসেবে ব্যবহার করুন।

সব কমেন্ট গুলো একটু কষ্ট করে পরুন প্লিজ তাহলে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন 😀

দই বানানোর পর অবশ্যই আমার পেজের সাথে শেয়ার করুন আপনার দইয়ের ছবি 🙂

পোস্টটি লাইক এবং শেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন এতেই আমার লেখার স্বার্থকতা, আপনাদের লাইক,কমেন্ট ও শেয়ার আমাকে আরো রেসিপি লেখার অনুপ্রেয়না জোগায়, ধন্যবাদ 🙂

ভালো থাকুন,খুব ভালো

1 thought on “ঘরে বসে মিষ্টি দই বানানোর ঝটপট সহজ উপায় রেসিপি”

Leave a Comment