জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের কি কি প্রভাব পড়তে পারে?, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশে প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশে, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব, পরিবেশ নিয়ে বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে জলবায়ু
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের কি কি প্রভাব পড়তে পারে:
অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বর্তমান বিশ্ব প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরিবেশগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জানুয়ারী ২০০৮-এ প্রকাশিত Climate of Disaster এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে “পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে এই গ্রহের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ১৯৮০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত আইপিসির গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুরু করে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থান এশিয়া মহাদেশে হবার কারণে আমাদের শংকিত হবার যথেষ্ট কারণ আছে।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ নিমােক্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উষ্ণায়ন বেড়ে যাবে যা সমুদ্রের আয়তন ও পরিধিকে বাড়িয়ে তুলবে।
উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়সহ অন্যান্য পর্বতচূড়ায় জমে থাকা বরফ গলে যাবে এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর গ্রীনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকাসহ অন্যান্য ভূ-ভাগের ব্রফ গলে যাবে, যা সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলবে।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ, যেখানে অসংখ্য নদ-নদী বয়ে চলছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের ১৯ শতাংশ ভূমি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে-এর ফলে ৫৫ মিলিয়ন লােক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
১. মরুকরণ বৃদ্ধি পাবে: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ভূ-পৃষ্ঠে পানির পরিমাণ ক্রমাগত হাস পাবে। ফলে সমগ্র ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হবে এর ফলে কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে।
২. বন্যার সৃষ্টি: জলবায়ু পরিবর্তিত হলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং নদ-নদীর পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীর উৎস দেশের বাইরে ভারত ও নেপাল। তাই একদিকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি অপরদিকে ব্যাক ওয়াটার ইফেক্ট যুক্ত হয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করবে।
৩. লবণাক্ততা বৃদ্ধি: বর্তমানে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ও দূরবর্তী দ্বীপসমূহের প্রায় ১.৪ মিলিয়ন হেক্টর এলাকায় লােনা পানি প্রবেশ করায় উন্মুক্ত জলাশয় ও ভূগর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষত নদ-নদীর মােহনায় অবস্থিত দ্বীপ ও তৎসংলগ্ন এলাকার অধিক পরিমাণ লােনা প্রবেশ করবে। ভূ-গর্ভস্থ পানি মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি উপকূলীয় পরিবেশকে সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৪. ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ঋতুচক্রের উপর প্রচন্ড প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলােচ্ছ্বাস, টর্নেডাে ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ও জলােচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।
আরো ও সাজেশন:-
৫. বস্তুগত সম্পদের ক্ষতি: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে প্লাবনের তীব্রতা বাড়বে এবং অবকাঠামােগত ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে। IPCC এর সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে বনজনিত কারণে বস্তুগত সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২৪২ মিলিয়ন টাকা।
৬. নদীর গতিপথ পরিবর্তিত: নদীর পানি শুকিয়ে গেলে বাংলাদেশের নৌ চলাচলসহ সেচের পানির অভাবে কৃষি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অনেক নদ-নদী শুকিয়ে যাবে এবং সেগুলাের গতিপথের পরিবর্তন হবে। নদীর পানি শুকিয়ে গেলে এগুলাের গতিপথের পরিবর্তন হবে।
৭. রােগের প্রকোপ বৃদ্ধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সূর্যের আলট্রাভায়ােলেট রশ্মির অনুপ্রবেশে মানুষের স্কিন ক্যান্সার ও চোখে ছানি পড়া রােগ বৃদ্ধি পাবে। খাদ্য শস্যে তেজস্ক্রিয়তা বেড়ে যাবে যা গ্রহণে মানবদেহে বিভিন্ন রােগ সৃষ্টি করবে। অপুষ্টির হার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন শিশুরােগের সৃষ্টি হবে। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন রােগ যেমন- হেপাটাইটিস বি, ফাঙগাল সংক্রমণ, মেনিনজাইটিস, পােলিও, কলেরা ইত্যাদি রােগ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Stories | উত্তর লিংক |
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক |
৮. প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থার ওপর প্রভাব: প্রচলিত ফসলের জাত, শস্যপর্যায় ও সর্বোপরি কৃষি ব্যবস্থার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাপমাত্রার আর্দ্রতা পরিবর্তনের ফলে কিছু ফসল কম ফলন দিচ্ছে বা একেবারে হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে নতুন ফসলের জাতি উদ্ভাবন বা প্রচলিত শস্য পর্যায়ের পরিবর্তে নতুন শস্যপর্যায়ে উন্নয়ন করা প্রয়ােজন। কার্বন ডাই-অক্সইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ধানগাছ বর্তমানের চেয়ে আরও শক্ত হবে কিন্তু লৌহ ও দস্তা যা মানবদেহের জন্য উপকারী তার পরিমাণ কমে যাবে। এছাড়া ধানের দানায় প্রােটিনের পরিমাণ কমে যাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে গেলে গাছ নাইট্রোজেন কম গ্রহণ করে। অতিরিক্ত তাপ ও আর্দ্রতা গাছে ছত্রাক রােগ বাড়াতে
সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং একইভাবে পােকামাকড় ও বিভিন্ন রােগের বাহক পােকার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয় এবং ফসলের রােগের আক্রমণ বেড়ে যায়।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- সোয়াপ (SWAP) কাকে বলে? , সোয়াপ (SWAP) কতো প্রকার বিস্তারিত আলোচনা করো
- ব্যবসায়িক ঝুকি বলতে কি বুঝায় উদাহরণ সহ আলোচনা করো
- বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রেডিং ব্যবস্থা আলোচনা করো
- খিলাফত রাষ্ট্র ও আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য । খিলাফত রাষ্ট্র vs আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
- Describe the barriers to effective communication in business organization