জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স বিস্তারিত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স নিয়মিত কোর্স এবং মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সের মধ্যে পার্থক্য 2024 নিয়ে আজ আলোচনা করা হবে। এডুকেশন্স ইন বিডির এই পোস্টে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত মাস্টার্স ও প্রাইভেট মাস্টার্স প্রাইভেট পার্থক্য ।
মাস্টার্স নিয়মিত এবং মাস্টার্স প্রাইভেট এর মধ্যে পার্থক্য কি কি? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পাশ করা ও ডিগ্রীর প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স পাশ করা শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স ভর্তি নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সে ব্যাপক প্রতিযোগিতা হয়৷ মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সের আসন সংখ্যা তুলনামূলক কম। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ভালো সিজিপিএ থাকা সত্ত্বেও মাস্টার্স নিয়মিত ভর্তির মেধা তালিকায় স্থান পায়না।
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
যারা মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সের মেধা তালিকায় স্থান পাননি তারা মাস্টার্স (প্রাইভেট) কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট কোর্সের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই এবং সনদের মান একই সুতরাং যারা নিয়মিত কোর্সে চান্স পাননি নির্দ্বিধায় ভর্তি হয়ে যান। মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে চান্স পাইতেও হয়না সরাসরি ভর্তি। আর ক্লাসও করতে হবে না। ৬১টি সরকারি কলেজে মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্স রয়েছে। প্রাইভেট লেখা দেখে ভাবেননা খরচ অনেক খরচ নিয়মিত কোর্সের মতো।
এখানে আপনাদের সামনে তুলে ধরব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স নিয়মিত কোর্স ও মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সের মধ্যে কি ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান, মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট ভর্তির যোগ্যতা, মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট ডিগ্রী প্রাপ্তির যোগ্যতা, মাস্টার্স নিয়মিত ও মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে পরীক্ষা পদ্ধতি ও পাশের যোগ্যতা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স ভর্তি সম্পর্কিত তথ্য
মাস্টার্স নিয়মিত প্রোগ্রামে ভর্তির যোগ্যতাঃ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (সম্মান) অনার্স ও প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স (নিয়মিত) পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৪৫% নম্বর অথবা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে ন্যূনতম সিজিপিএ ২.২৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।
মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে ভর্তির যোগ্যতাঃ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (সম্মান) অনার্স ও প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স (নিয়মিত/প্রাইভেট) পরীক্ষায় সনাতন পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৪৫% নম্বর অথবা গ্রেডিং ও ক্রেডিট পদ্ধতিতে ন্যূনতম সিজিপিএ ২.২৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। এছাড়াও বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য প্রয়ােজনীয় যােগ্যতা থাকা সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবে।
মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট সম্পর্কিত তথ্য
টার্ম-পেপার, ব্যবহারিক ও মাঠকর্ম আছে এমন বিষয়ে প্রাইভেটের শিক্ষর্থীরা অংশগ্রহন করতে পারবে না বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে ভর্তির সুযোগ নেই।
• প্রাইভেট কোর্সের অনুমোদিত বিষয়সমূহ : বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, আরবী, ইসলামিক স্টাডিজ, সংস্কৃত, পালি, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং।
• মাস্টার্স প্রাইভেটের শিক্ষর্থীদের মৌখিক পরিক্ষা ৪ ক্রেডিটের হয়ে থাকে।
• মাস্টার্স নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরিক্ষা হবে ২ ক্রেডিটের ও টার্ম-পেপার ২ ক্রেডিটের।
• প্রাইভেট মাস্টার্স এর ক্ষেত্রে ক্লাস করতে হয় না।
• মাস্টার্স নিয়মিত ও মাস্টার্স প্রাইভেট উভয় ক্ষেত্রে ইনকোর্স পরিক্ষা দিতে হবে।
• মাস্টার্স নিয়মিত ও মাস্টার্স প্রাইভেট উভয় ক্ষেত্রে ইনকোর্স ২০ নম্বরের এবং লিখিত ৮০ নম্বরের।
• মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট মাস্টার্স উভয় ক্ষেত্রে পরিক্ষা ও রেজাল্ট হবে একই পদ্ধতিতে এবং একই সাথে হয়।
• মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট মাস্টার্স উভয় কোর্সের মেয়াদ হবে এক (০১) বছর।
• নিয়মিত ও প্রাইভেট মাস্টার্স উভয় ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ হবে তিন (০৩) বছর ।
• মাস্টার্স নিয়মিত ও মাস্টার্স প্রাইভেট উভয় ক্ষেত্রে সনদের মান সমান।
• মাস্টার্স প্রাইভেট ও মাস্টার্স নিয়মিত উভয় ক্ষেত্রে পড়াশোনার খরচ একই। ডিপার্টমেন্ট ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
• মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সে ভর্তির জন্য মেধা তালিকায় স্থান পেতে হয় কিন্তু মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায়।
Master’s এর খুটিনাটি
মাস্টার্স নিয়মিত ও মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সে পরীক্ষা পদ্ধতি ও পাশের যোগ্যতাঃ
পরিক্ষার মানবন্টন ও পরিক্ষা পদ্ধতি হবে অনার্স/ডিগ্রীর মতই ৮০ নম্বরের তত্বীয় পরীক্ষা ক, খ, গ বিভাগে বিভক্ত। ইনকোর্স ও লিখিত পরিক্ষায় পৃথক পৃথক ভাবে পাশ করতে হবে না। কিন্তু তত্ত্বীয়, ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরিক্ষায় অংশগ্রহন করা ও পৃথক পৃথক ভাবে পাশ করা বাধ্যতামূলক।
তত্ত্বীয়/লিখিত ১০০ নম্বরের ক্ষেত্রে ইনকোর্স ২০ নম্বরের এবং লিখিত ৮০ নম্বরের পরিক্ষায় প্রাপ্ত মোট যোগফলের ৪০% পেলেই পাশ। CGPA নির্ণয়, গ্রেডিং সিস্টেম, প্রমোশনের নিয়মাবলী এমনকি ইম্প্রুভমেন্ট নিয়মাবলী ও পূর্বের অনার্স/ডিগ্রীর মতই।
প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স সম্পর্কিত তথ্য
মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট ডিগ্রী প্রাপ্তির যোগ্যতাঃ
• সকল কোর্স/বিষয়ে অংশগ্রহন বাধ্যতামূলক।
• সকল কোর্স/বিষয়ে পাশ করতে হবে।
• কোন কোর্স/বিষয়ে F গ্রেড পেলে তাকে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ হবে তিন(০৩) বছরের মধ্যে অবশ্যই পাশ করতে হবে।
মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট কোর্স উভয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ হবে ৩ বছর।
মাস্টার্স নিয়মিত ও প্রাইভেট কোর্সের সিলেবাস, পরীক্ষার মান/মার্কস একই! উভয়ের একইসাথে একই পদ্ধতিতে ফরম পূরণ,পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সের শিক্ষার্থীদের টার্ম-পেপার,সাময়িকী ও নির্বাচনী/টেস্ট পরিক্ষা দিতে হয়। প্রাইভেট কোর্সের শিক্ষার্থীদের টার্ম-পেপার,সাময়িকী ও নির্বাচনী/টেস্ট পরিক্ষা দিতে হয় নাহ। উভয়ক্ষেত্রে অবশ্যই ইনকোর্স এবং ভাইবা পরিক্ষা দিতে হয়।
টার্ম-পেপার, ব্যবহারিক ও মাঠকর্ম আছে এমন বিষয়ে প্রাইভেটের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করতে পারবে না বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোর্সে ভর্তির সুযোগ নেই।
মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সের শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরিক্ষা ৪ ক্রেডিটের হয়ে থাকে এবং মাস্টার্স নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরিক্ষা হবে ২ ক্রেডিটের ও টার্ম-পেপার ২ ক্রেডিটের।
মাস্টার্স প্রাইভেটের এডমিশন ফি সরকারি কলেজে ১৫০০/- এর মধ্যে! মাস্টার্স নিয়মিত কোর্সের এডমিশন ফি ৫ হাজারের মধ্যে হয়! বেসরকারি কলেজে একটু তুলনামূলক বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশের সব কলেজে প্রাইভেট প্রোগ্রাম থাকে না। সারা বাংলাদেশে মাত্র ৬১ টি কলেজে মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সের সুবিধা আছে!
প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্সের শিক্ষার্থীরা কোর্স শেষে মাস্টার্স শেষ পর্ব (প্রাইভেট) প্রোগ্রামে এডমিশন নিতে হবে, মাস্টার্স শেষ পর্ব (নিয়মিত) প্রোগ্রামে সুযোগ নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স বিস্তারিত
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।