জাতীয় শিশু নীতির বাস্তবায়ন কৌশল সমূহ আলোচনা কর, জাতীয় শিশু নীতি ২০১১, শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি ২০১৩, জাতীয় শিশু নীতির- ২০১৩ এর শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আলোচনা কর
শিশু জাতির ভবিষ্যৎ। অথচ বাংলাদেশের শিশুদের সার্বিক অবস্থার দিকে দৃষ্টি রাখলে একটি হতাশাজনক চিত্র ফুটে উঠে। বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিশু মৃত্যুর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এছাড়াও অপুষ্টি, স্বাস্থ্যহীনতা এবং আশ্রয়হীনতাসহ নানা রকমের সমস্যায় জর্জরিত আমাদের দেশের শিশুরা। পৃথিবীর সকল শিশুকে তাদের প্রাপ্য অধিকার এবং প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করে। শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে জাতীয় শিশু নীতি প্রণয়ন করে।
জাতীয় শিশু নীতির বাস্তবায়ন কৌশল ঃ জাতীয় শিশুনীতি বাস্তবায়নের জন্য সরকার কিছু বিশেষ কৌশলের নাম উল্লেখপূর্বক তাদের ভূমিকা তুলে ধরেছেন সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো :
→ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ঃ
১. শিশুদের জন্য ন্যায়পাল : জাতীয় পর্যায়ে আইনের মাধ্যমে শিশুদের জন্য ন্যায়পাল’ (Ombudsman for Children) নিয়োগ দেয়া হবে। শিশুদের জন্য ন্যায়পাল’ জাতীয় কর্মসূচিতে শিশুদের অধিকার ও কল্যাণ অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এবং জাতিসংঘ সনদ বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে ভূমিকা পালন করবে।
২. জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন ৪ শিশু অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি থাকবে। এ কমিটির মাধ্যমে মা ও শিশুর জন্য সর্বোত্তম উন্নয়ন ও সুরক্ষা, শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়ন এবং এতদসংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধানের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
৩. অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঃ শিশুর উন্নয়ন ও অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহের অবকাঠামোর উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
৪. জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন ৪ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি সমূহকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের পাশাপাশি শিশুর অধিকার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ সুশীল সমাজ ও শিশু উন্নয়নে নিয়োজিত এনজিও সমূহের প্রতিনিধি উক্ত কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
৫. মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের ফোকাল পয়েন্টসঃ প্রতে ক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, উপসচিব ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাদের শিশু বিষয়ক কার্যক্রম বিষয়ে সমন্বয়ের ায়িত্ব প্রদান করা হবে। এরূপ কর্মকর্তার কাজ হবে তাদের নিজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কর্তৃক গৃহীত শিশু বিষয়ক কার্যক্রমের সমন্বয়সাধন এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম রূপে কাজ করা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রতি তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিল করা।
[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৬. সরকারি ও বেসরকারি কর্মকাণ্ডের সমন্বয় ঃ শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারি উদ্যোগে সুসংহত ও আরও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থাসমূহের সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা হবে। নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকাণ্ডে সমন্বয় নিশ্চিত করা হবে।
৭. উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে শিশু নীতির প্রাধান্য : মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তরসমূহে সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জাতীয় শিশু নীতি বিবেচনার রাখা হবে যাতে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জাতীয় শিশুনীতি সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শিশু বান্ধব ও শিশু উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
৮. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ঃ শিশু উন্নয়ন ও অধিকার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ এবং কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন করা হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শিশু বিষয়ক তথ্যাদির প্রয়োজনীয় ম্যাপিংসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেইজ প্রস্তুত, সংরক্ষণ এবং নিয়মিত হালনাগাদ করা হবে।