জাহেলিয়া যুগে আরবের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক অবস্থা একটি পর্যালােচনা, আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সামাজিক অবস্থা, আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে রাজনৈতিক,আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে ধর্মীয় অবস্থা,আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সাংস্কৃতিক অবস্থা

শ্রেণি: আলিম / HSC/2022 বিষয়: ইসলামের ইতিহাস এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2022
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 01 বিষয় কোডঃ 209
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ জাহেলিয়া যুগে আরবের সামাজিক , সাংস্কৃতিক , অর্থনৈতিক ও নৈতিক অবস্থা একটি পর্যালােচনা

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • ক. আইয়ামে জাহেলিয়া, সিরাতে রাসূল, খােলাফায়ে। রাশেদীন।
  • প্রথম অধ্যায়: আইয়ামে জাহেলিয়া
  • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: জাহেলিয়া যুগের বিবরণ।

নির্দেশনা :  

  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সামাজিক অবস্থা,
  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে রাজনৈতিক,
  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে ধর্মীয় অবস্থা,
  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সাংস্কৃতিক অবস্থা,

উত্তর সমূহ:

  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সামাজিক অবস্থা,

উত্তর: :

আল্লাহ সুবাহানাওতায়ালা বলেন,“তারা কি জাহেলিয়াতআমলের ফয়সালা কামনা করে”? [মায়িদাঃ৫০]আইয়্যামে জাহেলিয়াত হল এক চরম অন্ধকারাচ্ছন্ন এক যুগ।এ সময় আরব সমাজে যোগ্য শাসক বলতে কেউই ছিল না।তাদের ভিতর নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছুই ছিল না।এক চরম বিশৃংখলাময়ী জীবন-যাপন আরব দেশের লোকেরা অতিবাহিত করত।সেই সময়ের সামাজিক এবং ধর্মীয় অবস্থা

১.বৈবাহিক জীবনঃ
তৎকালীন আরবদেশের বৈবাহিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল।স্বাভাবিকভাবে বিবাহ সম্পাদন করে স্বামী-স্ত্রীর ভিতর জীবন-যাপন করার সংখ্যা ছিল অত্যন্ত নগণ্য।বিবাহ ছাড়াই একজন নারী কিংবা পুরুষ অসংখ্য সন্তানের জনক-জননী হত।কখন দেখা যেত যে,একজন নারী প্রায় দশ পুরুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করত এবং সবার সাথে মিলনেরপর একজন সন্তান জন্ম নিলে কখনও স্ত্রী কিংবা কখনও কোন বিশেষজ্ঞ তাদের সন্তানের প্রকৃত পিতাকে চিহ্নিত করত।আবার পুরুষেরাও একসাথে প্রায় দশ কিংবা তা অধিক স্ত্রী শর্তহীনভাবে গ্রহণ করতে পারত।সেখানকার পুরুষেরা যেকাউকে বিবাহ করতে পারত।কারও পিতা মারা গেলে তার স্ত্রীকে অর্থাৎ, সৎ মাকে তার ছেলে বিবাহ করতে পারত।তারা তাদের খালা,ফুফুদের বিবাহ করতে কার্পণ্য বোধ করতে পারত না। এ ব্যাপারে কুরআনে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।আল্লাহ পাক বলেন, “যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদেরবিবাহ করো না। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।”[নিসাঃ২২] আবূ বকর জাসসাস(রঃ) বলেন, “পিতার স্ত্রীকে অর্থাৎ সৎ মাকে বিবাহ করার প্রচলন ব্যাপক ছিল।”

২. ব্যভিচারের প্রাদুর্ভাবঃ
প্রাক ইসলামী যুগে আরব দেশে ব্যভিচারের প্রাদুর্ভাব সব জায়াগায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।পতিতাবৃত্তি সমাজে স্বীকৃতি লাভ করে।যৌন ব্যভিচার সমাজ কোন নিন্দনীয় বিষয় ছিল না।যারা এসকল অন্যায়-অবৈধ কাজে নিজেদের যতবেশী সম্পৃক্ত রাখতে পারত সমাজে তাদের মর্যাদা সবচেয়ে বেশী ছিল।এভাবে করে তারা নীতিহীন এবং অসামাজিক কাজের মধ্যে নিজেদের নিমজ্জিত করেছিল।এ ব্যাপারে মাওলানা আকরাম খাঁ বলেন, “পুংমৈথুন,স্ত্রীমৈথুন এবং পশু মৈথুন তাদের ভিতর প্রচলিত ছিল এবং তা তারা স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করত”।

৩.দাসপ্রথাঃ
তখনকার দিনে অন্যান্য সমাজের ন্যায় আরব সমাজেও দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল।পণ্যদ্রব্যের মত দাস-দাসীও হাটে-বাজারে বিক্রি হত।তাদের দুরবস্থা সম্পর্কে আমীর আলী বলেন, “ভৃত্যি হোক আর ভূমিদাস হোক তাদের ভাগ্যে ক্ষীণ আশা বা এককণা সূর্যরশ্মিও কবরের এদিকে জীবনে জুটত না।” প্রভূরা তাদের উপর খেয়াল-খুশি মত অত্যাচার করত।তারা কখনও দাসীদের উপপত্নী হিসেবে গ্রহণ করত।এক কথায় তাদের জীবন-মৃত্যু নির্ভর করত তাদের প্রভূর উপর।তাদের বিবাহের কোন স্বাধীনতা ছিল না।তখনকার দিনে দাসদের অবস্থা ছিল শোচনীয়।

৪. কণ্যা সন্তানকে জীবিত কবরঃ
তৎকালীন আরব সমাজের নারী জাতির অবস্থা ছিল অত্যন্ত করুন। কণ্যা সন্তান জন্মগ্রহন করলে তাকে জীবিত মাটির নীচে পুতে ফেলা হত।কণ্যা সন্তানকে তারা সর্বদা অভিশাপ মনে করত।আরবেরা কখনো কখনো দারিদ্র্যতার ভয়ে এমন কাজটি সঙ্ঘটিত করত।কিতাবুল আখরাজীর মতে, এ জঘন্য প্রথা কায়স বিন আসিমের মাধ্যমে প্রবর্তিত হয়।কুরআনুল কারীমে এ ব্যাপারে কিছু ইংগিত পাওয়া যায়।আল্লাহ পাক বলেন, “যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপেক্লিষ্ট হতে থাকে”। [নহলঃ১৩৮]

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৫. জুয়াখেলা,মদ্যপানের ব্যাপকতা:
তৎকালীন আরব সমাজে জুয়াখেলা,মদ্যপানের মত জঘন্য অভ্যাস তাদের ভিতর ব্যাপকভাবে লক্ষ্যকরা যেত।সেসময় তারা মদপান করত আর তা করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কাজের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করত।মদ যে যত বেশী পান করতে পারত সে নিজেকে নিয়ে তত বেশী গর্ববোধ করতে পারত।তাদের এই অভ্যসের কথা আল্লাহ পাক কুরআন মাজীদে উল্লেখ করেছেন। এজন্য ঐতিহাসিক খোদাবক্স বলেন, “War,woman and wine were there observing passions of the Arabs.” অন্যদিকে তারাজুয়াখেলাও দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে স্ত্রী কণ্যাকেও বাজি ধরত।সৈয়দ আমীর আলী বলেন, “জুয়াখেলা আরবসমাজের অবসর বিনোদনের একটি বিশেষ মাধ্যম ছিল।”কুরআনে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, “হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও”। [মায়িদাঃ৯০]

  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে রাজনৈতিক,

উত্তর:

, শতকরা নব্বইজন মুসলমানের দেশে আরবি শব্দ আইয়ামে জাহেলিয়াত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের কাছেও সুপরিচিত। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম এবং কুরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াসকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা চালুর আগে জাজিরাতুল আরবে যে ভয়ঙ্কর, নোংরা এবং অমানবিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজমান ছিল সেগুলোর নিকৃষ্টতা বুঝানোর জন্য আইয়ামে জাহেলিয়াত শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ওই আমলের বেশির ভাগ আরব অধিবাসীর মন-মানসিকতা, চরিত্র, আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা ও রাজনীতি ছিল যুদ্ধকেন্দ্রিক। তাদের বিয়েশাদি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভোগ-বিনোদন, যৌনতাড়না, প্রেম-বিরহ, শিল্প-সাহিত্য-কবিতা ইত্যাদি সব কিছুর মূলেই ছিল যুদ্ধের তাড়না।

যুদ্ধজয়ের প্রবল তাড়না অথবা পরাজিত হওয়ার নিদারুণ আতঙ্ককে ঘিরেই তাদের দৈনন্দিন জীবনের সব কিছু রচিত হতো। আধুনিক যুগের যুদ্ধ অথবা মধ্যযুগ কিংবা প্রাচীনকালের যুদ্ধের মতো আইয়ামে জাহেলিয়ার যুদ্ধ পরিচালিত হতো না। অমানবিকতার সর্বনিকৃষ্ট এক জটিল রসায়নে প্রভাবিত হয়ে আরবরা জাহেলিয়াতের যুগে কেন এবং কিভাবে যুদ্ধ করত তা নিয়েই আজকের নিবন্ধে সাধ্যমতো আলোচনার চেষ্টা করব।

আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুদ্ধের ধরন-ধারণ বুঝতে হলে আমাদের শব্দ দু’টির মর্মার্থ বুঝতে হবে। আইয়াম শব্দের অর্থ হলো যুগ, সময় বা কাল। অন্য দিকে, জাহেলিয়াত অর্থ অন্ধকার, কুসংস্কার, নির্বুদ্ধিতা ইত্যাদি বুঝালেও সে যুগের মানুষকে কোনো অবস্থায়ই বোকাসোকা অথবা নির্বোধ বলা যাবে না। ইসলাম আবির্ভাবের আগে মোটামুটি এক শ’ থেকে দেড় শ’ বছর সময়কালকে অনেকে জাহেলিয়াতের যুগ বলে থাকেন। যখন আসলে তামাম দুনিয়াতেই জাহেলিয়াত চলছিল। ইউরোপের প্রভাবশালী পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্য ভেঙে পড়েছিল এবং বর্বর ভাণ্ডালদের আক্রমণে ইউরোপজুড়ে শুরু হয়েছিল আরব দেশের চেয়েও মর্মান্তিক এক জাহেলিয়াত যুগের। পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের অধীন রাজ্যগুলো বিশেষ করে সিরিয়া, মিসর, জেরুসালেম, লেবানন প্রভৃতি এলাকায় চলছিল মারাত্মক গৃহযুদ্ধ। অন্য দিকে তাদের চিরশত্রু পারস্য সাম্রাজ্যে শুরু হয়েছিল বিশৃঙ্খলা। সাসানিদ সম্রাট প্রথম খসরুর মৃত্যুর পর পুরো সাম্রাজ্যে যে বিভীষিকা আরম্ভ হয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। একইভাবে ভারতবর্ষ এবং চীনেও চলছিল মারাত্মক রাজনৈতিক সঙ্কট, হানাহানি, গৃহযুদ্ধ এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা।

আরব ভূমি নিয়ন্ত্রণকারী পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য ও পারস্য সাম্রাজ্যের প্রভাব ছাড়াও ব্যবসাবাণিজ্যের জন্য চীন, ভারত ও উত্তর আফ্রিকার ওপর আরবদের নির্ভর করতে হতো। ফলে ওইসব অঞ্চলে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দিলে মূল জাজিরাতুল আরব যথা হেজাজ, নজদ ও নুফুছেও শুরু হয় বিশৃঙ্খলা, যার আরবি নাম আইয়ামে জাহেলিয়াত। বিশ্ববিখ্যাত বাণিজ্যিক পথ সিল্ক রুটের আরব অংশটি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। আরবের সাথে সিরিয়া, পারস্য, ফিলিস্তিন, ইয়েমেনের সানা ও হাদ্রামউত, জর্ডানের আকাবা, ইথিওপিয়া (আবিসিনিয়া), মাগারব, লিবিয়া, মিসর প্রভৃতি অঞ্চলের ব্যবসাবাণিজ্য ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। ফলে আরববাসী তাদের অনাদিকালের পেশা পরিবর্তন করে জাহেলি যুগের চোর-ডাকাত, গুণ্ডা-বদমাস, টাউট-বাটপার ও প্রতারকের পেশায় নাম লেখায়। এভাবে কয়েক যুগ চলার পর তারা ওসব কাজে ততটাই দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে পড়ে যার কারণে তাদের দুর্নাম সমকালীন দুনিয়ার অসভ্যতামিতে এক অন্ধকারময় অধ্যায় সৃষ্টি করে এবং আইয়ামে জাহেলিয়াতরূপে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।

আইয়ামে জাহেলিয়াতের পর বহু শতাব্দী পার হয়ে গেছে। কিন্তু সেই যুগের দুর্বৃত্ত এবং তাদের দুর্বৃত্তপনার ইতিহাস নিয়ে পৃথিবীব্যাপী যুগ-যুগান্তরে নানাধর্মী গবেষণা চলে আসছে। তারা কি স্বেচ্ছায় জাহেল হয়েছিল, নাকি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর জাহেলিয়াতের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের অধিক জাহেল প্রমাণ করতে গিয়ে একসময় সত্যিকার জাহেলে পরিণত হয়! অথবা প্রত্যেক দেশ-জাতিরই কলঙ্কময় কতগুলো ইতিহাস রয়েছে, যা কালের বিবর্তনে তাদের ভালো কর্মে চাপা পড়ে যায়। কিন্তু আরবের আইয়ামে জাহেলিয়াত কোনো মানুষ ভুলতে পারছে না। কোনো কোনো সমাজবিজ্ঞানী আবার ইসলামের অভ্যুদ্বয় এবং জাহেলিয়াতের ওপর ইসলামী হুকুমাতের বিস্ময়কর সফলতার কারণে উদাহরণ হিসেবে সেই সময়কার কর্মকাণ্ড সামনে চলে আসাকেও দায়ী করেছেন। যা হোক, আমরা আজকের আলোচনায় অতসব তত্ত্বকথা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিবৃতি না দিয়ে শুধু আইয়ামে জাহেলিয়াতের রাজনীতি নিয়েই কথা বলার চেষ্টা করব।

  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে ধর্মীয় অবস্থা,

উত্তর:

আরব্য পুরাণ হলো আরব জাতির একগুচ্ছ প্রাক-ইসলামী প্রাচীন ধর্মবিশ্বাস। ইহুদী খ্রিষ্টানদের এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী হলেও ক্রমেই তারা ধর্মের মূল ভিত্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। ইসলামের আগমনের পূর্বে, মক্কার কাবায় অসংখ্য দৈত্য, জিন, উপদেবতা বা সাধারণ আদিবাসী দেবতা ও অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি ছিল। এগুলি ছিল প্রাক-ইসলামী আরবের বহুদেববাদী সংস্কৃতির প্রতিভূ। আরবের ইতিহাসে পৌত্তলিকদের নাম ধাম বরাবরই আলোচিত। এর কারণ হিসেবের বলা যায় মক্কাকে কেন্দ্র করে পৌত্তলিকরাই স্বার্থের বিচারে এগিয়ে ছিলো। হজ্জ মৌসুমকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক দাপটে আরব ইতিহাসে যথাযথ ভাবে তাদের স্থাপন করে নেয়।

মক্কার উপাসনালয়ের সর্বপ্রথম মূর্তির নাম ছিলো হোবল। 

ধর্মমতাবলম্বী: 

প্রাক ইসলামি যুগে আরব ধর্মীয় দিক থেকে ৫টি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। ১) ইহুদি ২) খ্রিস্টান ৩) প্রকৃতিপূজক ৪) মূর্তিপূজক ৫) হানিফ সম্প্রদায়। 

দেবদেবী ও প্রকৃতি পূজা: 

মহানবি ( সা:) এর আগমনের প্রাক্কালে সমগ্র আরবে পৌত্তলিকতা এক ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ইবনে হিশামের মতে, মেসোপটেমিয়া হতে সর্বপ্রথম আরবে দেবমূর্তির আগমন ঘটান আমর ইবনে লুহাই নামের এক ব্যক্তি। মক্কার উপাসনালয়ের সর্বপ্রথম মূর্তির নাম ছিল হোবল৷ ভবিষ্যৎ গণনার জন্য এ মূর্তির চারপাশে তীর রাখা হত। আল উজ্জাহ, আল লাত ও আল মানাহ ছিল আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেবী। এই তিন দেবীকে তারা ঈশ্বরের কন্যা মনে করত। মানাহ ছিল ভাগ্যের দেবী৷ মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী কুবেদ নামক স্থানে মানাহ দেবীর আলাদা মন্দির ছিল৷ তায়েফের নিকটবর্তী স্থানে ছিল লাত দেবীর মন্দির। আর উজ্জাহ দেবীর মন্দির ছিল মক্কার পূর্বদিকে নাকলা নামক জায়গায়। কুরাইশরা উজ্জাহকে বিশেষ শ্রদ্ধা করত। প্রত্যেক গোত্রের জন্য আলাদা আলাদা দেবদেবীও ছিল। দেবদেবী ছাড়াও চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, পাথর, সাপ, গুহা, কূপ, বৃক্ষরাজিকেও তারা শক্তিরূপে পূজা করতো। ভূত- প্রেত এবং অশরীরী প্রাণীর উপর তাদের অগাধ বিশ্বাস ছিল। 

কাবাগৃহ: 

হযরত ইব্রাহিম (আ) সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপাসনার জন্য কাবাগৃহ নির্মাণ করেছিলেন। কথিত আছে যে, মক্কা বিজয়ের পূর্বে মসজিদুল হারামে ৩৬০টি মূর্তি ছিল। মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার লাঠি দিয়ে মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করেছিলেন। একের পর এক তিনি যখন মূর্তিগুলোকে লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন তখন সেগুলো পড়ে যাচ্ছিল। তারপর তিনি সেগুলোকে মসজিদুল হারামের বাইরে নিয়ে গিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন এবং তা জ্বালিয়ে দেয়া হয়। 

ধর্মীয় কুসংস্কার: 

আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগে জাদু, টোটকা,তন্ত্র-মন্ত্র প্রভৃতি কুসংস্কারে সমগ্র আরব ছেয়ে যায়। “কাহিন” নামে পরিচিত ভাগ্য গণনাকারী ও ভবিষ্যদ্বক্তাগণ তাদের নিকট যথেষ্ট সম্মানিত ছিল। পরকালকে তারা বিশ্বাস করতো না। মৃত্যুকেই তারা জীবনের পরিসমাপ্তি বলে মনে করতো। 

হানিফ সম্প্রদায়: 

আইয়্যামে জাহেলিয়ার যুগেও এক শ্রেণির লোক একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিল। “হানিফ সম্প্রদায়ের” লোকেরা মূর্তি পূজাসহ যাবতীয় কুসংস্কার থেকে বিরত ছিল এবং নিষ্কলুষ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। সংখ্যায় কম ছিল বলে তারা আরবে ব্যাপক কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে নি। ওয়ারাকা-বিন-নওফেল, কবি যুহাইর প্রমুখ ছিলেন এ সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ইবনে কুতাইবার মতে – এ সম্প্রদায়ের ৬ জন লোক ছিল। 

বিভিন্ন বিশ্বাস: 

পরকাল সম্পর্কে আরবদের সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না। কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে কবরের উপর উট বলি দেয়া হতো কিংবা অনাহারে মরতে দেওয়া হতো এই বিশ্বাসে যে, পরকালে জবাইকৃত পশু মৃতের বাহন হিসেবে কাজ করবে। তারা ভাগ্য গণনায় বিশ্বাস করতো। দুর্ভিক্ষ, মহামারী, রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তির আশায় উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক দেবতাদের জন্য রেখে দিতো।

ইহুদি :

ইহুদিরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করলেও ধীরে ধীরে তারা জড়বাদে আসক্ত হয়ে পড়ে। তারা হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও একটি ভেড়ার মূর্তির উপাসনা করতো বলে জানা যায়। এ সময় মদিনায় বনু নাজির,বনু কুরাইজা, বনু কাইনুকা নামে তিনটি ইহুদি গোত্র বসবাস করতো। 

খ্রিস্টান : 

ইহুদিদের মতো তাদেরও একেশ্বরবাদে বিশ্বাস থাকলেও পরে তা বিকৃত হয়ে যায়। উত্তর আরবে সিরিয়া সীমান্তে ঘাসসানি ও লাখমিদ রাজ্যে খ্রিস্ট ধর্মের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তারা Trinity বা ত্রিত্ববাদ অর্থাৎ ঈশ্বর, যিশু এবং মাতা মেরী – এ তিন সত্তায় বিশ্বাস করতো। 

হজ পালন :

ইসলাম পূর্ব আরবে হজ পালন ছিল একটি পুণ্যের কাজ। আরববাসী উমরাহ, তাওয়াফ পালন করতেন। নারী পুরুষ উভয়েই উলঙ্গ হয়ে কাবা তাওয়াফ করতো। 

পবিত্র কোরআন এ বিষয়টি উল্লেখ করেছে,

“হে আরব জাতি! (ইসলাম ধর্মে তোমাদের দীক্ষিত ও বিশ্বাস স্থাপনের পূর্বে) তোমরা জাহান্নামের আগুনের নিকটে ছিলে। অতঃপর মহান আল্লাহ্ তোমাদেরকে (ইসলামের মাধ্যমে) মুক্তি দিয়েছেন।” (সূরা আলে ইমরান : ১০৩)

প্রাক ইসলামি যুগের আরবের সাংস্কৃতিক অবস্থা :

আরবদের অসাধারণ স্মৃতিশক্তির ফলে প্রাক ইসলামি আরবের লোক-গাঁথা, প্রবাদ, লোকশ্রুতি সংরক্ষিত হয়। তারা স্মৃতিশক্তিবলে এক লক্ষের অধিক কবিতা সংরক্ষিত করে রাখে। তাদের সৃজনশীল প্রতিভার স্বাক্ষর পাওয়া যায় বক্তব্যে, কবিতা রচনায়, কুলজী সংরক্ষণে।

  • আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে সাংস্কৃতিক অবস্থা,

উত্তর:

সাহিত্য চর্চা :

প্রাক ইসলামি যুগে কাসীদা বা গীতিকবিতা রচনা করে অশেষ কৃতিত্ব অর্জন করে। বাগ্মিতা ও গীতিকাব্য রচনায় আরবগণ সৃজনশীল মননশীলতার পরিচয় দেয়। 

প্রবাদ বাক্য ও গদ্য রচনা গীতিকাব্যের তুলনায় অপ্রতুল ছিল। তৎকালে বহু আরবি প্রবাদ সংগৃহীত ও সংরক্ষিত হয়েছিল। যেমন – “মানুষের সৌন্দর্য তার জিহবার বাচনশীলতার মধ্যে নিহিত”। ” বুদ্ধিমত্তা তিনটি বস্তুর উপর নিপতিত হয়েছে – ফরাসিদের মগজে, চীনাদের হস্তে এবং আরবিদের জিহবায়। “

প্রাচীন আরবি গীতিকাব্য অথবা কাসীদা সমসাময়িক কালের ইতিহাসে অতুলনীয় সম্পদ। এর বিষয়বস্তু ছিল নিম্নরূপ – বংশ-গৌরব, বীরত্বপূর্ণ কাহিনি, যুগের বিবরণ, যুদ্ধের ঘটনা, উটের গুণাবলি, নারী,প্রেম ইত্যাদি।

বিখ্যাত কবি: 

প্রাক ইসলামি যুগে আল খানসা আরবের শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন। তার কিছু কবিতা স্বরূপ: 

“হে আমার দুই চোখ, উদার হও, কার্পণ্য করোনা।”

প্রাক ইসলামি যুগে ইমরুল কায়েস ছিলেন আরেকজন বিখ্যাত কবি। তিনি ছিলেন ইয়ামেনি বংশোদ্ভুত, তবে তার জন্ম হয় নজদে। তিনি প্রচুর কাব্য রচনা করেছেন। তার কবিতায় প্রকৃতি, প্রেম ও ভালোবাসার কথা বিবৃত হয়েছে। ইবনু কুতাইবা বলেন, ইমরুউল কাইসের কবিতায় যে প্রকৃতির বর্ননা দেয়া হয়েছে তা মূলত তার বনু আসাদের এলাকার বর্ননা।

প্রাক ইসলামি যুগের কবিদের মধ্যে যশস্বী ছিলেন সাতটি ঝুলন্ত গীতিকাব্যের রচয়িতাগন। সোনালী হরফে লিপিবদ্ধ এ “সাবা মুয়াল্লাকাত” ছিল প্রাচীন আরব কবিদের অমর কীর্তি। জাহেলিয়া যুগে অসংখ্য গাঁথা ও কাব্য সাহিত্য প্রণীত হয়। এগুলো আরব্য সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ।

ভবিষ্যদ্বাণী :

আরবরা ভবিষ্যদ্বাণী বিদ্যা জানত। ভবিষ্যদ্বাণী দুই ভাগে বিভক্ত ছিলো। প্রথমত পায়ের চিহ্ন দেকে পথচারীর সন্ধান দেওয়া। দ্বিতীয়ত শরীরের অঙ্গ গঠন দেখে বলা সে অমুক বংশের লোক। এ দু ‘ধরণের বিদ্যায় আরবদের গভীর জ্ঞান ছিলো। তাদের স্মরণশক্তি প্রখর ছিলো।

জাহেলীয়াতের যুগে আরবগণ, বিশেষ করে আদনানের বংশধরগণ স্বভাবতঃই দানশীল ও অতিথিপরায়ণ ছিল। তারা স্পষ্টভাষী ছিল। তাদের মাঝে শক্তিশালী ধী ও স্মরণশক্তিসম্পন্ন এমন ব্যক্তিবর্গ ছিল যারা আরবের কবিতা এবং বক্তৃতাসমূহ কণ্ঠস্থ করে রেখেছিল। আরবগণ কাব্যচর্চা এবং বক্তৃতায় সে যুগে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছিল। তাদের সাহস প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। তারা কদাচিৎ আমানতের খিয়ানত করত। তারা প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করাকে ক্ষমার অযোগ্য পাপ বলে গণ্য করত। তারা আকীদা-বিশ্বাসের জন্য আত্মোৎসর্গ করতে কুণ্ঠাবোধ করত না। তারা অশ্বচালনা এবং তীর নিক্ষেপে সিদ্ধহস্ত ছিল। পলায়ন এবং শত্রুর প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকে তারা মন্দ ও গর্হিত কাজ বলে বিবেচনা করত।

প্রাক ইসলামি যুগের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা :

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের সামাজিক ও নৈতিক অবস্থা: 

সমাজের অবস্থা :

মানব জাতি সামাজিক জীবনের দিকে প্রথম যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা ছিল গোত্রীয় জীবন। গোত্র ছিল কতগুলো পরিবার ও আত্মীয়ের সমষ্টি যারা গোত্রের শেখ বা নেতার নেতৃত্বাধীনে জীবনযাপন করত। প্রাক ইসলামি আরবের সামাজিক ও নৈতিক অবস্থা ছিল ভয়াবহ ও জঘন্য। বংশগত ও গোত্রগত আভিজাত্য, অহংকার, ঈর্ষা, বিদ্বেষ, অজ্ঞতা, বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা ও পৈশাচিকতা সমাজকে কলুষিত করে তোলে। প্রতিটি গোত্র যখনই আগ্রাসন ও আক্রমণের শিকার হতো তখন সকল আগ্রাসনকারীকে হত্যা করা তাদের ন্যায্য অধিকার বলে গণ্য হতো। কারণ তারা বিশ্বাস করত যে, একমাত্র রক্ত ব্যতীত অন্য কিছু রক্তকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করতে সক্ষম নয়। আরবদের নিকট তিনটি জিনিস অত্যন্ত প্রিয় ছিল – সুরা( মদ), নারী, যুদ্ধ। সমগ্র আরবদেশ মূর্খতা, বর্বরতায় নিমজ্জিত ছিল। 

আরব জাতি ইসলাম ধর্ম কবুল করার মাধ্যমে গোত্রতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পদার্পণ করে। মহানবী (সা.) বিক্ষিপ্ত আরব গোত্রগুলোকে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম গৌরব ও কৃতিত্ব হচ্ছে, তিনি সকল প্রকার কুসংস্কার, অমূলক চিন্তাভাবনা ও অলীক কল্প-কাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি মানব জাতির বিবেক-বুদ্ধিকে কুসংস্কারের মরিচা ও ধুলোবালি থেকে ধৌত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন। তিনি বলেছেন, “মানুষের চিন্তাশৈলীকে শক্তিশালী করতে এবং সব ধরনের কুসংস্কার, এমনকি যে কুসংস্কার আমার লক্ষ্য অর্জনের পথে সহায়ক সেটিরও বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতেই আমি এসেছি।”

আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে অবাধে চলত অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, অনাচার, ব্যভিচার, চুরি, ডাকাতি, হত্যা ও রক্তপাত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোত্রে বিভক্ত ছিল সমাজ। ছিল না সুবিন্যস্ত কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থা, অবিসংবাদিত কোনো নেতৃত্ব। প্রাত্যহিক উদরপূর্তি, জৈবিক চাহিদা পূরণ বা বৈষয়িক ভোগ-বিলাস ছাড়াও মানবজীবনের যে মহিমান্বিত কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থাকতে পারে সেকথা যেন তারা কল্পনাও করতে পারত না। অনেকগুলো ছোট-বড় গোত্রে বিভক্ত হয়ে তারা জীবনযাপন করত, যেই গোত্রগুলোর মধ্যে না ছিল ঐক্য, না ছিল ভ্রাতৃত্ব, আর না ছিল কোনো জাতীয় চেতনা। মারামারি, কাটাকাটি, রক্তারক্তি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা।

কন্যা সন্তান ও নারীর সামগ্রিক অবস্থা :

মহান আল্লাহ্‌ তৎকালীন নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,

 “আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করা হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, তার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্নগোপন করে। সে চিন্তা করে হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে (কন্যাকে) রেখে দেবে না মাটিতে পুঁতে ফেলবে! সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত নেয় তা কত নিকৃষ্ট”। (সূরা আন-নাহলঃ ৫৮-৫৯)

ইসলাম পূর্ব যুগে নারীরা ভোগের সামগ্রী ও অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হতো। নারীদের দুর্ভোগের কোনো সীমা ছিল না। শিশুকাল থেকেই তারা নির্যাতনের শিকার হতো। আরবদের মধ্যে কতগুলো গোত্রে কন্যা সন্তানদের জীবিত কবর দেওয়ার রেওয়াজ চালু ছিল। তারা এই গর্হিত ও ন্যাক্কারজনক কাজটি করে রীতিমতো গর্ববোধ করত এবং একে তাদের জন্য সম্মানের প্রতীক বলে মনে করত। সমাজে নারীদের কোনো অধিকার বা মর্যাদা ছিল না। একজন পুরুষ যত খুশি বিয়ে করতে পারতো এবং ইচ্ছানুযায়ী পরিত্যাগ করতে পারতো। গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাদের মুখমন্ডল বিবর্ণ হয়ে যেতো। কন্যা সন্তানকে দুটি কারণে আরবরা বোঝা মনে করতো – 

i) সম্মান সংরক্ষণ – অর্থাৎ তারা যদি যুদ্ধে পরাজিত হতো তাহলে শত্রুপক্ষ তাদের কন্যা ও পরিবারের সাথে দাসীর ন্যায় অশোভন আচরণ করতো, দাসী হিসেবে বাজারে বিক্রি করে দিতো।

ii) অভাবের তাড়না, তারা ভাবতো পুত্রসন্তান জন্ম হলে অর্থ উপার্জন করতে পারবে কিন্তু মেয়েরা তা পারবে না।

তবে অভিজাত শ্রেণিতে নারী – পুরুষের সম্পর্ক ছিলো যথেষ্ট উন্নত। এ শ্রেণির নারীদের সম্মান করা হতো এবং নিরাপত্তা দেয়া হতো। 

সমাজে বহুপত্নী গ্রহণের মতো বহুপতি গ্রহণ করার প্রথা প্রচলিত ছিল। বিয়ের বন্ধনে পবিত্রতা না থাকায় ভাইয়ের সাথে বোনের এবং পিতার মৃত্যুর পর বিমাতাকে বিয়ে করা সমাজে আপত্তিকর ছিল না। বস্তুত, সমকালীন ইতিহাসে যে কোনো দেশের তুলনায় আরবে নারী জাতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। 

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল  কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ১১শ-১২শ শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ১ লিংক

এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।

আমাদের YouTube এবং Like Page

Leave a Comment