ঠান্ডায় নাক বন্ধ থাকলে যে খাবার গুলো খাবেন, ঠান্ডায় নাক বন্ধ থাকলে করণীয়

শীত এলেই আমাদের শরীরে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে শুরু করে। ঠাণ্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় কম-বেশি সবারই ভুগতে হয়।বন্ধ নাকে কোনো কাজেই মন বসে না। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, অস্বস্তি বোধ হয়। এই সমস্যার সঙ্গে সর্দি দেখা দিতে পারে, নাও পারে।

বাড়িতেই হাতের কাছে থাকা কিছু উপাদান দিয়ে বন্ধ নাকের সহজ চিকিৎসা হতে পারে।  

নানান রকম খাবারে থাকা উপাদান নাক বন্ধ থাকার সমস্যা উপশম করতে পারে। শীতকালে ঠাণ্ডা, কাশির পাশাপাশি নাক বন্ধের সমস্যাও দেখা দেয়। এর মাত্রা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হয়। তবে নাক বন্ধের সমস্যা দূর করতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উপকারী।

ঠান্ডায় নাক বন্ধ থাকলে যে খাবার গুলো খাবেন, ঠান্ডায় নাক বন্ধ থাকলে করণীয়, নাক বন্ধের সমস্যা সমাধানে উপকারী খাবার

আর এ রকম খাবারের সংখ্যাও কম নয়। যদিও নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা কয়েক দিনের মধ্যে নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আরাম লাগে আর দ্রুত সেরে ওঠে।

ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সব থেকে ভালো কাজ করে। ভিটামিন সি প্রতিদিন খাবার তালিকায় যোগ করা উপকারি। যুক্তরাষ্ট্রের টাটকা সবজি বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রেশ কমিউনিকেশন্স’র নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এমি ডেভিস বলেন, ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো কাজ করে প্রদাহ কমায় এবং নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা দূর করে।

ব্রোমেলেইন: এমন একটি এনজাইম যা সহজে হজমের সহায়তা করে ও রান্নায় মাংসকে নরম করে। ডেভিস বলেন, শরীরের ব্যথা, ফোলা ভাব কমাতে এবং নাকের গহ্বরে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা ভাঙতে সহায়তা করে ব্রোমেলেইন।

আরো পড়ুন: সন্তান জন্মদানের পর সহবাস

উদ্ভিজ্জ যৌগ: ভিটামিন ও খনিজের পাশাপাশি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলো উপকারী যৌগ হিসেবে কাজ করে। উদ্ভিদের যৌগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে মূল ভূমিকা রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের প্রদাহ কমায় এবং উন্মুক্ত রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে। অক্সিডেটিভ অণুগুলো দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে শুরু করে সাইনাসের চাপ ও নাক বন্ধের মতো সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড: প্রদাহ বিরোধী উপাদান সমৃদ্ধ এবং এটি শ্লেষ্মা ভেঙে নাক পরিষ্কার করতে সহায়তা করে- বলেন ডেভিস। অনেকেই ব্রণের সমস্যা দূর করতে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্যবহার করে থাকেন। এটা প্রাকৃতিক ভাবে খাবারে পাওয়া যায়।

সিস্টিইন: একটি অ্যামিনো অ্যাসিড বা প্রোটিনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা যায়, এটি একটি ‘মিউকোলাইটিক এজেন্ট-টু’ বা এমন কিছু যা শরীরে শ্লেষ্মা ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। আর নাকের নাকবন্ধ ভাব দূর করতে পারে।

আরো পড়ুন: পুরুষাঙ্গের বড় করার ব্যায়াম

পানি: আরোগ্য লাভে সহায়তা করে, বিশেষ করে যখন নাক বন্ধ থাকে। ডেভিস ব্যাখ্যা করেন, প্রচুর পানি ও গরম চা পান করে আর্দ্র থাকা যায়। এটা শ্লেষ্মা পাতলা করে এবং সাইনাসের চাপ প্রতিরোধ করতে পারে।

আরো পড়ুন: শরীরের ভেতর কনডম আটকে গেলে কী করবেন?

নাক বন্ধের সমস্যা সমাধানে কাজ করে এমন কয়েকটি খাবার হলো-

আনারস: আনারস প্রাকৃতিক ব্রোমেলেইন ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এটা সাইনাসে জমাটভাব কমাতে সহায়তা করে। হিমায়িত এবং টিনজাত আনারস খাওয়াও উপকারি। তবে খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন বাড়তি চিনি যোগ করা না থাকে।

হিমায়িত ও টিনজাত আনারসে প্রক্রিয়াজাত চিনি ব্যবহার করা হয় যা প্রদাহকে আরও খারাপ করতে পারে।

আরো পড়ুন: মাথা ব্যথার দোয়া,মাথা ব্যথা দূর করার দোয়া

রসুন: খাওয়া নাক বন্ধ ভাব কমাতে সহায়তা করে। এতে আছে শক্তিশালী প্রদাহনাশক উপাদান, ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসবিরোধী উপাদান, যা নাক বন্ধের মূল কারণ খুঁজে সমাধানে সহায়তা করে।

মুরগির সুপ: কিছু খাবার গরম খেতে ভালো লাগে, মুরগির সুপ এমন একটি খাবার যা এই মৌসুমে খেতে বেশ মজা। মুরগির সুপ সম্পূর্ণ পানি ভিত্তিক এবং এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ‘সিস্টিইন’, ভাপ উৎপাদন করে বন্ধ নাকের সমস্যা সমাধান করে থাকে।

‘চেস্ট’ সাময়িকীতে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হসপিটালের করা গবেষণায় দেখা গেছে, মুরগির সুপ নাসিকার শ্লেষ্মা গরম পানির তুলনায় দ্রুত অপসারণে ভূমিকা রাখে।

আরো পড়ুন: মেয়েদের যৌন চাহিদা বাড়ানোর ওষুধ

মধু: প্রাকৃতিক মিষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রদাহ, ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া বিরোধী উপাদান। আরও আছে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যা নাক বন্ধের সমস্যা দূর করে।

২০২১ সালের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মধু শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ কমাতে এবং নাক বন্ধ হওয়া দূর করতে পারে।   

সামুদ্রিক খাবার: নাক বন্ধের সমস্যা কমাতে বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক খাবার খাওয়া উপকারী যেমন- শামুক ও কাঁকড়ার মতো খাবারে রয়েছে জিংক। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছও উপকারী।

আরো পড়ুন: ধাতু দূর্বলতার সমস্যা ও সমাধান

আদা: ডেভিস বলেন, উষ্ণ গরম পানিতে আদা মিশিয়ে গ্রহণ করলে নাক পরিষ্কার হয় এবং গলা ব্যথা কমে। এতে রয়েছে উদ্ভিজ্জ যৌগ, যা প্রদাহ কমায়। আদাতে অ্যান্টি-হিস্টামিন বেশি থাকে, যা নাক বন্ধের জন্য দায়ী অ্যালার্জি দূর করতে উপকারী।

চা: চায়ের বাষ্প নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নিলে, নাকের শ্লেষ্মা ভেঙে দিতে সহায়তা করে।

গ্রিন টি ও পুদিনার চা উদ্ভিজ্জ যৌগ সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমায়। এছাড়া পুদিনার তেল সাইনাসের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।

জাম্বুরা: সিট্রাস বা টক ধরনের ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহায়ক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। জাম্বুরা উচ্চ স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা নাক বন্ধের সমস্যা দ্রুত নিরসন করে। ফলে আরাম পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন: সকাল বেলার প্রসাবের সাথে বীর্য যাচ্ছে

শীত মৌসুম সিট্রাস ফল খাওয়ার উপযুক্ত সময়। ঠাণ্ডা-কাশি কমাতে ফল ও সবজি উপকারি।

মরিচ: ঠাণ্ডা ও নাক বন্ধের সমস্যা দূর করতে মরিচ উপকারি। এতে থাকা ক্যাপসাইসিন নাক-সম্পর্কিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
 

আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট

স্বাস্থ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ঔষধি গুন গোপন সমস্যা রূপচর্চা রোগ প্রতিরোধ

Leave a Comment