ডিজিটাল আসক্তি রোধে আমাদের করণীয়
আধুনিক সভ্য জগতে ইন্টারনেটের অবদান অনস্বীকার্য। এটি শিক্ষার্থীদের বিকাশে বড় ভূমিকা রাখে। কম্পিউটার ও মোবাইলফোন-নির্ভর ইন্টারনেট প্রযুক্তি বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির নানামুখী ব্যবহার করা সম্ভব।
এর উল্লেখযোগ্য হলো মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরীক্ষার ফল জানা যায়। কভিডকালে যখন ঘরের বাইরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, তখন অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়া যায়। মানবজীবনেও রয়েছে এর বহুমুখী ব্যবহার। যেমন- ইন্টারনেট সংবলিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা পাঠানো এবং গ্রহণ করা যায়।
ইন্টারনেটের সহায়তায় সব পত্রিকা (যা ইন্টারনেটে থাকে) পড়া যায়। ই-বুক পড়া যায়। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেমসে আসক্তি শিক্ষার্থীদের বিকাশে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: সাথি (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
স্মার্টফোন আর সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে বিজ্ঞানীরা লক্ষ করছেন। পশ্চিমা দুনিয়ায় বলা হচ্ছে, অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে ‘স্ক্রিন অ্যাডিকশন’ দেখা দিয়েছে এবং তা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। অ্যাডিকশন মানে আসক্তি। কথাটা মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। এখন ইউরোপ–আমেরিকার লোকজন বলাবলি শুরু করেছেন, পর্দার প্রতি আসক্তি কোকেনের প্রতি আসক্তির মতোই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখে যাচ্ছে, অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা দিনে পাঁচ থেকে আট ঘণ্টা ডিজিটাল যন্ত্র নিয়ে মেতে থাকছে। বাইরে বেড়াতে যাওয়া, খেলাধুলা করা, মুখোমুখি বসে আড্ডা দেওয়া ইত্যাদি সব ধরনের ফেস–টু–ফেস ইন্টার–অ্যাকশনে আগ্রহ কমে যাচ্ছে।
এ রকম ক্ষতিকর প্রবণতার আশঙ্কা সবার আগে জেগেছিল প্রযুক্তি জগতের বড় বড় লোকদের মনে। কয়েক বছর আগেই তাঁরা এ বিষয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। এখন আমরা অনেকেই জানি, বিশ্বখ্যাত ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্টিভ জবস তাঁর সন্তানদের নিজের প্রতিষ্ঠানের তৈরি আইপ্যাড ব্যবহার করতে দেননি। তিনি একবার নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার কাছে মন্তব্য করেছিলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আক্ষরিক অর্থেই সমাজের সঙ্গে ব্যক্তির, ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সম্পর্ক বদলে দিচ্ছে। আর আমাদের ছেলেমেয়েদের মস্তিষ্কের যে কী ক্ষতি হচ্ছে, তা শুধু ঈশ্বরই জানেন।’
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: সাথি (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
ইন্টারনেটের ব্যবহার থেকে পিছিয়ে থাকা মানে যোগ্যতা ও যোগাযোগে পিছিয়ে থাকা। তাই বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তও থাকার কথা কল্পনা করা যায় না। তবে অপরিহার্য ইন্টারনেটও শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। একজন শিক্ষার্থীর প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে পড়ালেখা। কিন্তু সারাক্ষণ মোবাইল ফোনে পড়ে থাকায় তার বড় ক্ষতি হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
অ্যাপলের বর্তমান চিফ অপারেটিং অফিসার টিম কুক গার্ডিয়ান পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি জানেন যে একটা পর্যায়ে তাঁর ছেলেমেয়েদের স্মার্টফোন দিতেই হবে, তবে তিনি চেষ্টা করছেন যতটা সম্ভব দেরি করে দেওয়া যায়।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত ফোন ব্যবহার করতে দেননি।
ফেসবুকের সাবেক এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট আথেনা শাভারিয়া বলেছেন মজার কথা: ‘আমি নিশ্চিত, আমাদের ফোনের মধ্যে বাস করে শয়তান, সে ছেলেমেয়েদের মাথা চিবিয়ে খাচ্ছে।’ তিনি তাঁর নিজের ছেলেমেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়ার আগে ফোন ব্যবহার করতে দেননি। এখনো বাড়িতে তাদের ফোন ব্যবহারের সময়সীমা কঠোরভাবে বেঁধে দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, কোনো ক্লাসের সেই ছেলেটি বা মেয়েটিই সবচেয়ে ভালো করবে, যার হাতে ফোন পৌঁছাবে সবার পরে।
ডিজিটাল প্রযুক্তিবিদ, কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও উদ্যোক্তাদের একটা বড় অংশ নিজেদের তৈরি করা ডিজিটাল যন্ত্র ও অ্যাপ থেকে সন্তানদের দূরে রাখার চেষ্টা করছেন। আমেরিকার ‘সিলিকন ভ্যালি’র প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে এ রকম একটা সাধারণ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে শিশু–কিশোরদের শেখার বা জ্ঞান অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ডিজিটাল যন্ত্রের ভূমিকার চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে এসব যন্ত্রের প্রতি তাদের আসক্তির ঝুঁকি। এই আসক্তির ক্ষতিকর ফলাফল ধরা পড়ছে মনোবিজ্ঞানী ও ব্যবহারবিজ্ঞানীদের গবেষণায়: শিশু–কিশোরদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে, তাদের আচরণে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: সাথি (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
ইন্টারনেটে দক্ষ হলে তা কর্মজীবনে এবং প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়ক। তবে এর অপব্যবহার শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। বেশি সময় ইন্টারনটে গেম খেললে তার পড়ালেখাও ব্যাহত হয়। ইন্টারনেটের পুরো বর্জনও যেমন ঠিক নয়, আবার এর অপরিমিত ব্যবহারও ক্ষতিকর। তাই এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়া উচিত।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, শিশুদের হাত থেকে যন্ত্র কেড়ে নিলে সেই শূন্যতা অন্য কিছু দিয়ে পূরণ করতে হবে। মার্কিন ক্লিনিক্যাল চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকোলজিস্ট ড. রবার্ট মায়ার্স মনে করেন, গঠনমূলক ও আনন্দদায়ক বিকল্পের ব্যবস্থা না করে শিশু–কিশোরদের শুধু স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিলে তাদের নিরানন্দ ভাব চলে আসতে পারে, তারা বলতে পারে, কিছুই করতে ভালো লাগে না। তাই তাদের জন্য ইন্টারেস্টিং বিষয়ে বইপত্র পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মা–বাবাকেও তাদের সঙ্গে পড়ায় অংশ নিতে হবে, যা পড়া হলো তা নিয়ে গল্প করতে হবে। প্রতিদিন ক্লাসের বইয়ের বাইরে নানা ধরনের বই পড়তে হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
সর্বপরি, অভিভাবক ও পিতামাতাকে এটি সতর্কতা ও যত্নের সঙ্গে সামাল দিতে হবে। শিশু-কিশোরদের সহপাঠ কার্যক্রম ও সাংস্কৃতিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে প্রতি বছর উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। রাজধানীতে খেলার মাঠগুলোকে শিশু-কিশোরদের ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে হবে। এসব মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়, বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হয়।
শিশুরা যাতে আপন ভুবনে বিভিন্ন আউটডোর খেলা খেলতে পারে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতিমনস্ক ও প্রাণোচ্ছল করে তুলতে সমন্বিত ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করি। শুদ্ধ সংস্কৃতির চর্চা সারাদেশে ছড়িয়ে গেলে তা শিশুদের মনন গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বৈকি। তখন দায়িত্ব ভুলে ইন্টারনেট মোবাইল ফোনে অপ্রয়োজনীয় গেম খেলা থেকেও তারা বিরত থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: সাথি (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
- adult ftp server
- FTP Server
- লিংক শেয়ার করে ইনকাম করুন,লিংক শেয়ার করে কিভাবে আয় করা যায়
- adsterra আর্নিং ট্রিকস, adsterra earning tricks
- telegram থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করবো,telegram দিয়ে টাকা ইনকাম,টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম