ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার উপায় ও সহজ টেকনিক

ভর্তি পরীক্ষার পূর্ব প্রস্ততি নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানান মাজেদুল ইসলাম রাকিব। রাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। রাকিবের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন

বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার জন্য আপনি কীভাবে পড়েছেন, দৈনন্দিন রুটিন কী ছিল?

রাকিব: নির্দিষ্ট কোনো রুটিন ছিল না। টপিকভিত্তিক সময় ভাগ করে ৭-১০ দিনের একটা পরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ী পড়ালেখা করতাম। এভাবেই সিলেবাসকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নেই। তবে অনেক নিজস্ব শটকার্ট তৈরি করেছিলাম।

এবারও ঢাবিতে এমসিকিউ-এর সঙ্গে লিখিতও পরীক্ষা নেবে। এতে ভালো করার উপায় কি?


রাকিব:
 লেখার গুণগত মান ঠিক রেখে প্রাসঙ্গিক বিষয়েই উত্তর দিতে হবে। উপস্থাপনা এবং ডেকোরেশন ঠিক রাখতে হবে। প্রস্তুতির জন্য নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে বারবার প্যারাগ্রাফ লেখার চর্চা করতে হবে। অর্থাৎ ৬ মিনিটে ৮-৯ লাইনের অনুচ্ছেদ লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। ভালো শব্দের ব্যবহার, সঠিক বাক্য, নিয়ম মেনে লিখনীই লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর আনবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার কোনো সহজ টেকনিক আছে?

রাকিব: একমাত্র সহজ টেকনিক হচ্ছে শটকার্ট ফলো করে পড়াশোনা করা। প্রস্তুতি শুরুর প্রথম থেকে ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে। মাঝপথে অনেক কারণে বিষন্নতা আর হতাশা কাজ করবে, তখন পড়াশোনা কমিয়ে দিলেও রিদম হারিয়ে ফেললে চলবে না।

কোচিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ? যাদের কোচিং করার সুযোগ নেই তারা কীভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে? গাইড বই নাকি টেক্সট বই— কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?


রাকিব: কোচিং অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়, প্রস্তুতি নিতে সহজ হয়। তবে যারা কোচিং করে না তাদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। অনলাইনে অনেক প্লাটফর্ম আছে যেগুলোতে ফ্রিতে বা অল্পকিছু ফির বিনিময়ে প্রস্তুতি নেওয়া যায়। তবে টেক্সট বই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গাইড বইয়ের প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে টেক্সট বই না পড়ে গাইড বই পড়ে কোনো লাভ নেই। যেমন বাংলা ২য় পত্রের ক্ষেত্রে আমি শুধু বোর্ড বইটা অনুসরণ করেছি। যেকোন মূল বই পড়ে এরপর তার বিগত বছরের প্রশ্নের সাথে গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলনে গাইড সাহায্য করে, তবে প্রস্তুতির ভিত্তি মূল বই।

যারা একই সাথে একাধিক ইউনিটের প্রস্তুতি নেয়, তাদের জন্য পরামর্শ কি?


রাকিব: ব্যাপারটা একেবারে কঠিন না, তবে সহজও না। একজন শিক্ষার্থী শুধু ‘ঘ’ ইউনিটের প্রস্তুতি নিলে সে অবশ্যই এগিয়ে থাকবে, তবে নিজেকে সেই লেভেলে নিতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে। ভারসাম্য ঠিক রেখে পড়তে হবে।

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণকালে সাধারণত কোন ভুলগুলো শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দেয়?


রাকিব: ভুল দিকনির্দেশনা এবং মোটিভেশনের অভাব। চান্স পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সবসময় সংশয়ে থাকা। অনলাইনে বেশি সময় দেওয়া। অবহেলা করা অর্থাৎ কেয়ারল্যাস মুডে থাকা। সময়ের পড়া সময়ে শেষ না করা। আবার অনেকে কোচিং করতে এসে নতুন পরিবেশ, নতুন বন্ধু-বান্ধব পেয়ে আড্ডায় জমে যায়, ঘুরাঘুরি করতে থাকে। এগুলো তাদের অনেক পিছিয়ে দেয়।

 পরীক্ষা চলাকালীন ১ থেকে দেড় ঘন্টায় কোন ভুলগুলো করা উচিত নয়?

রাকিব: নার্ভাস হওয়া স্বাভাবিক, তবে আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং এতদিনের পরিশ্রম বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে হবে। নিজের উপর কনফিডেন্স ধরে রাখা খুবই জরুরি। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর ২-৩ বার ভালো করে পড়তে হবে। ঢাবি প্রশাসন চায় কিভাবে সহজ প্রশ্নে কঠিন ট্রিক দেয়া যায়, এক্ষেত্রে মনযোগী ও সতর্ক শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পাবে।

প্রথমবার যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তাদের মাঝে ভয় বেশি কাজ করে এবং এর ফলে অনেকেই ব্যর্থ হয়। এই ভয় দূর করার ক্ষেত্রে করণীয় কি?


রাকিব: ভয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ভয় কমানোর জন্য নিজেকে বারবার যাচাই করতে হবে। এক্ষেত্রে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া যায়। যারা আগে চান্স পেয়েছে এরকম সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া যায়।

শিক্ষা

1 thought on “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার উপায় ও সহজ টেকনিক”

Leave a Comment