তোমার সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করো এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো।

অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজঃ তোমার সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করো এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো।

পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত বিষয়বস্তু ও পাঠ নম্বরঃ

১. বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে ধারণা,

২ ও ৩. বাংলাদেশের গ্রাম ও শহরের সংস্কৃতি,

৪. বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি ও এর বিভিন্ন উপাদান,

৫. বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি;

এই নির্ধারিত কাজটি করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে-

১. লোকসংস্কৃতির সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান;

২. প্রচলিত লোকসংস্কৃতির সঠিক উদাহরণ প্রদান;

৩. শিক্ষার্থীর নিজ জীবনের উপর প্রতিফলন এর ব্যাখ্যা প্রদান;

উত্তর সমূহ:

লোকসংস্কৃতির ধারণা

সাধারণ মানুষ ও তার সমাজের সংস্কৃতি নিয়েই তৈরি হয় লোকসংস্কৃতি। লোকসংস্কৃতিকে অনেকে লোকসমাজে সংস্কৃতি বলে থাকেন। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ও তাদের চিন্তায় ও কর্মে লোকসংস্কৃতির জন্ম হয়। এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের ছড়িয়ে পড়ে এই সংস্কৃতি। বাংলাদেশ লোকসংস্কৃতির সূচনা হয়েছে সেই আদিকাল থেকেই। তবে সুস্পষ্টভাবে বললে লোকসংস্কৃতির যাত্রা শুরু হয়েছে গ্রামীণ কৃষিজীবী সমাজের মধ্য দিয়ে। তবে সময়ের সাথে সাথে লোকসংস্কৃতি একটু একটু করে পরিবর্তন হয়েছে।

লোকসংস্কৃতির উপাদানঃ 

যেসব বিষয়ে লোকসংস্কৃতির পরিচয় রয়েছে তাকে লোকসংস্কৃতির উপাদান বলা হয়। এই উপাদান দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমনঃ

ক) বস্তুগত উপাদান ও
খ) অবস্তুগত উপাদান।
 

বস্তুগত উপাদানঃ লোকসংস্কৃতির যেসব উপাদান ধরা যায় ছোঁয়া যায় তা হলো বস্তুগত উপাদান।  যেমন – তাঁতশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, নকশি কাঁথা, মাছ ধরা ইত্যাদি।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অবস্তুগত উপাদানঃ লোকসংস্কৃতির যে সকল বিষয় ধরা বা ছোঁয়া যায় না অর্থাৎ মানুষের চিন্তা থেকে জন্ম নেয় এবং মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে তাকে লোকসংস্কৃতির অবস্তুগত উপাদান বলা হয়। সাহিত্য বস্তুগত উপাদানের প্রধান বিষয়। অবস্তুগত উপাদানের মধ্যে আরও রয়েছে লোকগীতি, খনার বচন, ছড়া, প্রবাদ-প্রবচন ইত্যাদি।

প্রচলিত লোকসংস্কৃতির উদাহরণঃ

আমাদের দেশে বৃহৎ একটি প্রচলিত লোকসংস্কৃতিকে এখনো আঁকড়ে ধরে আছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম লোকসংস্কৃতি বিস্তার লাভ করেছে। আবার কিছু কিছু লোকসংস্কৃতি সময়ের কালের স্রোতে হারিয়ে গেছে। নিচে প্রচলিত লোকসংস্কৃতির কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলঃ

(১) লোকসংস্কৃতির বস্তুগত উপাদান এর বড় একটি অংশ হলো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। গায়ে হলুদ আমাদের সংস্কৃতির বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের আচার-আচরণ ও সংস্কার পালন করা হয়।

(২) বৃষ্টির জন্য অনুষ্ঠান করা লোকসংস্কৃতির অবস্তুগত উপাদান বা বিশ্বাস। দীর্ঘদিনের খরা থেকে মুক্তি লাভের জন্য বৃষ্টিকে আহবান করার নিমিত্তে পালন করা হয় এই অনুষ্ঠান। বৃষ্টি নামার জন্য গ্রামের মেয়েরা খোলা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যায় এবং মুখে বৃষ্টির গান বা ছড়া কাটে। এরপর বাড়ির মেয়েরা খোলার উপর পানি ঢেলে দেয়। তারা বিশ্বাস করে এভাবেই আকাশ থেকে বৃষ্টি নামবে। এভাবে বৃষ্টিকে আহবান করার মূল কারণ হলো খরা থেকে কৃষকদের মুক্তি।

(৩) বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতির অন্যতম একটি উপাদান হলো নকশী কাঁথা। বর্তমানে বাংলাদেশে নকশী কাঁথার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে শুধু তাই নয় বিদেশেও রয়েছে প্রচুর চাহিদা। নকশী কাঁথার বাহারি ও নজর করা নকশা সকলের মনকে আকর্ষিত করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যশোর ও জামালপুর গ্রামে ঘরে ঘরে তৈরি হয় নকশি কাঁথা।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

(৪) লোকসংস্কৃতির যে উপাদানটি শহর এবং গ্রামে সমানভাবে বেশ প্রচলিত তা হল মেলা। বাংলাদেশের সর্বত্রই মেলা প্রচলন দেখা যায়। বিশেষ করে বৈশাখী মেলা শহরে বিশেষ একটি স্থান দখল করে রয়েছে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় অসংখ্য দোকানপাট। যেখানে পাওয়া যায় লোকসংস্কৃতির অনেক অংশ। যেমন নকশি কাঁথা, মাটির তৈরি জিনিস, বাচ্চাদের পুতুল ও খেলনা, নাগরদোলা, বাইস্কোপ, পুতুল নাচ, যাত্রা ইত্যাদি।

আমাদের জীবনে লোকসংস্কৃতির প্রভাবঃ 

আমাদের জীবনে সংস্কৃতির প্রভাব অনেকটাই চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে লোকসংস্কৃতির উপাদানগুলো আমাদের জীবনকে অনেকটাই প্রভাবিত করে। যেমনঃ হলুদের অনুষ্ঠানকে উপলক্ষ করে সকলের মাঝে একটি বন্ধন সৃষ্টি হয়, ভাবের আদান-প্রদান হয়। যা আমদের জীবনে প্রভাবিত করে। তাছাড়া হলুদের অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেমনঃ ডালা, কুলা, ফুল, বিভিন্ন ধরণের  চারুকাজ আমাদের সংস্কৃতের ঐতিহ্যকে বহন করে। লোকসংস্কৃতির মেলা বিশেষ করে গ্রামীণ মেলা আমাদের জীবনে প্রশান্তি বয়ে আনে। বৈশাখী মেলায় বাহারি সব জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা। মেলায় উৎসবের আমেজকে বহুগুনে বৃদ্ধি করে হস্তশিল্পের বিভিন্ন মাটির জিনিস। মেলায় স্থান পায় যাত্রাপালা। প্রাচীন ঐতিহ্যের মধ্যে শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত যে শিল্পটি সমানভাবে তার গুরুত্ব বহন করছে তা হল নকশীকাঁথা। শুধু দেশেই নয় বরং বিদেশেও নকশীকাঁথার চাহিদা রয়েছে। যা আমাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। লোকসংস্কৃতির প্রবাদ-প্রচন, খনার বচন আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। এসব প্রবাদ এততাই শ্রুতিমধুর যে তা এখন আমাদের পাঠ্যবইয়ে স্থান দখল করেছে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল  কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • ২০২১ সালের SSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের ৯ম/১০ শ্রেণি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক

এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।

আমাদের YouTube এবং Like Page

Leave a Comment