দক্ষ বাজার অনুকল্পের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আলোচনা কর, দক্ষ বাজার অনুকল্পের অন্তর্নিহিত প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর
উত্তর : আমরা ইতোমধ্যে দক্ষ বাজার অনুকল্পের বাস্তব পরীক্ষাসমূহ আলোচনা করেছি। আবার বিভিন্ন বাজার দক্ষতার ক্ষেত্রে এর সমর্থনও খুঁজে পাওয়া গেছে। তাই এবার বিভিন্ন বিশ্লেষণ ও অবস্থার প্রেক্ষিতে দক্ষ বাজার অনুকল্পের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আলোচনা করা প্রয়োজন।
নিম্নে দক্ষ বাজার অনুকল্প ব্যবহার করে বিনিয়োগকারী কিভাবে সিকিউরিটি বিশ্লেষণ ও নির্বাচন করে পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনায় সফল হবেন তা বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে আলোচনা করা হলো :
১. কৌশলগত বিশ্লেষণ ও দক্ষ বাজার অনুকল্প : কৌশলগত বিশ্লেষণ ও দক্ষ বাজার অনুকল্প একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক যা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি। কৌশলগত বিশ্লেষণ অনুযায়ী। সিকিউরিটি মূল্য এক ধরনের ঝোঁক (Trend ) প্রদর্শন করে যা সময়ের প্রেক্ষিতে অটল থাকে। যেখানে দুর্বল দক্ষ বাজার অনুকল্প সিকিউরিটি মূল্যের মধ্যে তথ্যের প্রতিফলন প্রদর্শন করে। দক্ষ বাজার অনুকল্পের প্রবক্তা বা সমর্থকরা বিশ্বাস করে যে, তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সিকিউরিটি মূল্য সমন্বিত হয়। যদি মূল্য সকল তথ্যের প্রতিফলন ঘটায় তাহলে কৌশলগত বিশ্লেষণের তত্ত্ব ও অতীত তথ্যের ব্যবহার অকার্যকর হবে। আবার বিভিন্ন ব্যাখ্যার কারণে কৌশলগত বিশ্লেষণগত খণ্ডন করা না গেলেও দুর্বল বাজার দক্ষতা পরীক্ষার ক্ষেত্রে এর কৌশলগুলো প্রশ্নের সম্মুখীন হয় ।
২. মৌলিক বিশ্লেষণ ও দক্ষ বাজার অনুকল্প : মৌলিক বিশ্লেষণের জন্য দক্ষ বাজার অনুকল্পের কিছু অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বা নির্দেশনা রয়েছে যা সিকিউরিটির অন্তর্নিহিত মূল্য নির্ধারণে সাহায্য করে এবং বাজার মূল্য অন্তর্নিহিত মূল্যের কম না বেশি তার উপর ভিত্তি করে ক্রয় অথবা বিক্রয় সিদ্ধান্ত প্রদান করে।
যদি আধা- শক্তিশালী দক্ষ বাজার অনুকল্প সঠিক হয় তাহলে জনসাধারণের নিকট প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিকিউরিটি বিশ্লেষণ কার্যকরী হবে। এই অবস্থায়, যেহেতু সিকিউরিটি মূল্য সাধারণের নিকট প্রকাশিত সকল তথ্যের প্রতিফলন ঘটায় সেহেতু যারা ইতোমধ্যে তথ্য গ্রহণের সুবিধা ভোগ করেছে তারা আর লাভবান হবেন না। তাই দেখা যায় যে, আধা-শক্তিশালী দক্ষ বাজার অনুকল্প মৌলিক বিশ্লেষণকে অস্বীকার করে।
৩. অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ বাজার অনুকল্প : যদি বাজার দক্ষ হয় তাহলে পেশাজীবী অর্থ ব্যবস্থাপককে একক সিকিউরিটি বিশ্লেষণে নির্ভরতা কমিয়ে পরোক্ষ কৌশল অবলম্বন করা উচিত হবে এবং নিম্নোক্ত পন্থা অনুসরণ করতে হবে ।
(i) বৈচিত্র্যকরণ : একজন ব্যবস্থাপক এই অবস্থায় মৌলিক উপায় অবলম্বনে পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার প্রতি দৃষ্টি দিবেন। ব্যবস্থাপককে অবশ্যই যথাযথ অর্থ ব্যবহার করে সঠিক মাত্রার বৈচিত্র্যকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
(ii) পোর্টফোলিও ঝুঁকি : পোর্টফোলিওর ধরন ও উদ্দেশ্য বিবেচনা করে ব্যবস্থাপককে সংশ্লিষ্ট পোর্টফোলিওর যথাযথ ঝুঁকি গ্রহণ ও এর মাত্রা প্রত্যাশিত স্তরে সংরক্ষণ করতে হবে ।
(iii) কর : বিনিয়োগকারীগণ কর পরবর্তী আয়ের প্রতি বেশি আগ্রহী। একইভাবে তাদের বিভিন্ন বিনিয়োগ বিকল্পের কর পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত কেননা করমুক্ত পোর্টফোলিও সবসময় প্রত্যাশিত ।
(iv) লেনদেন খরচ : পোর্টফোলিওর চূড়ান্ত কার্যদক্ষতা বা সাফল্যের উপর লেনদেন খরচের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবস্থাপককে অবশ্যই লেনদেন ব্যয় সম্ভাব্য মাত্রায় কমিয়ে আনতে হবে।
৪. ব্যক্তিক বিনিয়োগকারী ও দক্ষ বাজার অনুকল্প : বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের জন্য দক্ষ বাজার অনুকল্পের গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য রয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীকে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
যদি বাজার দক্ষ হয় তাহলে পরোক্ষা বা প্রত্যক্ষ পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করতে হবে। যদি বাজার দক্ষ হয় তাহলে পরোক্ষ কৌশল অনুসরণ করা উচিত।
পরোক্ষ কৌশলের অংশ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদের জন্য সিকিউরিটি ক্রয় করে সংরক্ষণ করা বাঞ্চনীয়। অপরপক্ষে, বাজার অদক্ষ হলে প্রত্যক্ষ কৌশল অবলম্বন করা উচিত।
পরোক্ষ কৌশলের অংশ হিসেবে অপর বিনিয়োগকারীর চেয়ে সিকিউরিটি বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে অধিক দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ঝুঁকি সমন্বিত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত আদর্শ পোর্টফোলিওর চেয়ে বেশি সাফল্য অর্জনের উদ্দেশ্য থাকা বাঞ্চনীয়।
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।