প্রশ্ন সমাধান: নারীর দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের প্রভাব কিরূপ?, নারীর দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের প্রভাব আলোচনা কর।, নারীর দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক তুলে ধর।
বিশ্বায়ন বর্তমান সময়ের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রধান ধারা। তবে তা শুধু পুঁজিবাজারের সাথে সম্পর্কিত নয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্র নির্মাণে বিশ্বায়নের ভূমিকা রয়েছে। তবে সকল নারীর দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের প্রভাব একই রকম নয়, সমাজ ও অঞ্চল ভেদে পার্থক্য রয়েছে। নারীর
দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করে।
ইতিবাচক প্রভাব : নারী দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের ইতিবাচক প্রভাবগুলো হলো :
১. শিক্ষার প্রসার : বিশ্বায়নের ফলে সারা বিশ্বেই শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে আফ্রো-এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোতে নারী শিক্ষার হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৮০ এর দশকে বাংলাদেশে নারী শিক্ষার হার ছিল ২০% এর নিচে। ২০০১ সালে তা দাঁড়ায় ৪৯% এ। ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, কেনিয়াসহ আফ্রো-এশিয়ার সব রাষ্ট্রেই নারী শিক্ষা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি : বিশ্বায়ন নারীর কর্মসংস্থানে বিশেষভাবে সাহায্য করছে। ASEAN ভুক্ত অনেক রাষ্ট্রে দাতাগোষ্ঠী শিল্প কারখানায় নারী শ্রমিকদের কোটা নির্ধারণ করেছে। বিশ্বায়নের ফলে পণ্য ও পুঁজির যে প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে তার ফলেই বাংলাদেশ সহ তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোতে গড়ে উঠছে ইপিজেড, গার্মেন্টস শিল্প প্রভৃতি যা এসব অঞ্চলের নারীদের কর্মসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
৩. নারীর অবকাঠামোগত উন্নয়ন : বিশ্বায়নের ফলে পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, যোগাযোগ পরিবহন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। সমাজের সর্বস্তরের মহিলারা পুরুষের পাশাপাশি উচ্চতর পদসমূহ দখল করছে। বিশ্বায়নের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে নারীদের কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গতিশীলতা ও সচেতনতা উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরো ও সাজেশন:-
নেতিবাচক প্রভাব : নারীর দৈনন্দিন জীবনে বিশ্বায়নের নেতিবাচক প্রভাবগুলো হলো :
১. অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ : বিশ্বায়ন জাতীয় সীমানা পেরিয়ে একই বিশ্বব্যবস্থা সৃষ্টি করছে। দেশীয় সংস্কৃতির সাথে নারীর এক ধরনের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। কেননা সন্তান জন্মদান থেকে শুরু করে লালনপালনও সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে নারীই বেশি ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বহু সংস্কৃতি নারীকে উভয় সংকটে ফেলে দেয়। এভাবে সাংস্কৃতিক বিশ্বায়ন নারীকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
২. কুটিরশিল্পের ধ্বংস : বিশ্বায়নের মূলকথা ‘মুক্ত বাজার’ অর্থনীতির কারণে রাষ্ট্রের কার্যাবলি ও ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে হ্রাস পাচ্ছে এবং সিভিল সমাজের ভূমিকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে গ্রামগুলোর স্বতন্ত্র ও স্বীয় বৈশিষ্ট্য বিলুপ্ত হচ্ছে। গ্রামীণ মানুষ কাজের সন্ধানে শহরমুখী হচ্ছে। নারীরা গ্রামে ক্ষুদ্র কুটিরশিল্প, হাঁস মুরগি পালন, গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে এক ধরনের আয়ের উৎস খুঁজে পেত। কিন্তু বিশ্বায়নের ফলে কুটিরশিল্পের ধ্বংস হচ্ছে এবং কর্মসংস্থান ও আয় উৎস হারাচ্ছে।
৩. পতিতাবৃত্তির বিস্তার : বিশ্বায়ন নারীকে শুধু গ্রাম ছাড়াই করছে না বরং নারীর জীবনকেও নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলছে। নারী যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এক পর্যায়ে নারী তার জীবন সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে এবং স্বল্প সময়ে বেশি আয়ের দেশ থেকে হাজার হাজার নারী ও শিশু পাচার হচ্ছে। এদের অধিকাংশই বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তির মতো পেশা গ্রহণ করছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বায়ন এমন একটি প্রক্রিয়া যা থেকে মুক্ত হওয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়। নারীর পক্ষে বিষয়টি আরো দুরূহ ব্যাপার। সর্বোপরি বলা যায়, বিশ্বায়নের ফলে সমাজে ধন বৈষম্য বৃদ্ধি পাবার কারণে জেন্ডার বৈষম্যও আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। যা নারীকে দাঁড় করিয়েছে এক হতাশাজনক ও দুর্যোগপূর্ণ প্লাটফরমে।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- সোয়াপ (SWAP) কাকে বলে? , সোয়াপ (SWAP) কতো প্রকার বিস্তারিত আলোচনা করো
- ব্যবসায়িক ঝুকি বলতে কি বুঝায় উদাহরণ সহ আলোচনা করো
- বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রেডিং ব্যবস্থা আলোচনা করো
- খিলাফত রাষ্ট্র ও আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য । খিলাফত রাষ্ট্র vs আধুনিক মুসলিম রাষ্ট্র পার্থক্য
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
- Describe the barriers to effective communication in business organization