পানি বিশুদ্ধকরণ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি লিখে উপস্থাপন কর, গ্লাসে তৈরিকৃত দূষিত পানি বিশুদ্ধ না করে পান করলে তােমার কী কী সমস্যা হতে পারে? বিশ্লেষণ কর।

9s5

উপরের গ্লাসের পানিতে কয়েকটি দৃষক পদার্থ (যেমনঃ অদ্রবণীয় ময়লা-আবর্জনা, বালি, লবণ ইত্যাদি) মেশাও; এখন এই দূষিত পানিকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে বিশুদ্ধ কর।

ক) পানি বিশুদ্ধকরণ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি লিখে উপস্থাপন কর।

খ) গ্লাসে তৈরিকৃত দূষিত পানি বিশুদ্ধ না করে পান করলে তােমার কী কী সমস্যা হতে পারে? বিশ্লেষণ কর।

এই চারটি চিত্র অংকন করে কোনটি কায়িক শ্রম ও কোনটি মেধাশ্রম এবং কেন?

নির্দেশনাপাঠ্যবইয়ের সহায়তা নিতে পারে। পরীক্ষণ কাজে সাবধানতা অবলম্বন করবে। দূষিত পানি পরীক্ষণের নিমিত্তে পান করা যাবে না।

উত্তর সমূহ:

১নং প্রশ্নের উত্তর (ক) 

পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়াসমূহ:

ভূপৃষ্ঠে যে পানি পাওয়া যায় তাতে নানারকম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, এমনকি রােগ সৃষ্টি করতে পারে এরূপ জীবন ধ্বংসকারী জীবণু রয়েছে ।

তাই ব্যবহারের আগে পানি বিশুদ্ধ করে নিতে হয় । ভূগর্ভের পানি সাধারণত রােগ জীবাণু মুক্ত, কিন্তু এই পানিতে আর্সেনিকের মতাে নানা রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতির কথা এখন আমরা সবাই জানি । পানি কীভাবে বিশুদ্ধকরণ করা হবে, সেটি নির্ভর করে এটি কোন কাজে ব্যবহার করা হবে, তার ওপর। স্বাভাবিকভাবেই খাওয়ার জন্য অত্যন্ত বিশুদ্ধ পানি লাগলেও জমিতে সেচকাজের জন্য তত বিশুদ্ধ পানির দরকার হয় না। সাধারণত যেসব প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধ করা হয়, সেগুলাে হলাে পরিস্রাবণ, ক্লোরিনেশন, ফুটন, পাতন ইত্যাদি। নিচে এই প্রক্রিয়াগুলাে বর্ণনা করা হলাে :

১. পরিস্রাবণ : পরিস্রাবণ হলাে তরল আর কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে কঠিন পদার্থকে আলাদা করার একটি প্রক্রিয়া । পানিতে অদ্রবণীয় ধুলা – বালির কণা থেকে শুরু করে নানারকম ময়লা আবর্জনার কণা থাকে । এদেরকে পরিস্রাবণ করে পানি থেকে দূর করা হয় । এটি করার জন্য পানিকে বালির স্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয় , তখন পানিতে অদ্রবণীয় ময়লার কণাগুলাে বালির স্তুরে আটকে যায় । বালির স্তর ছাড়াও খুব সূক্ষ্মভাবে তৈরি কাপড় ব্যবহার করেও পরিস্রাবণ ক যায় । বর্তমান সময়ে আমাদের অনেকের বাসায় আমরা যেসব ফিল ব্যবহার করি, সেখানে আরাে উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে পরিস্রাবণ করা হয় ।

২. ক্লোরিনেশন : যদি পানিতে রােগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থাকে, তবে তা অবশ্যই দূর করতে হবে এবং সেটি করা হয় জীবাণুনাশক ব্যবহার করে। নানারকম জীবাণুনাশক পানি বিশুদ্ধ করার কাজে ব্যবহার করা হয় । এদের মাঝে অন্যতম হচ্ছে ক্লোরিন গ্যাস (Cl2) । এছাড়া ব্লিচিং পাউডার [(Ca(OCl)cl] এবং আরও কিছু পদার্থ, যার মাঝে ক্লোরিন আছে এবং জীবাণু ধ্বংস করতে পারে, সেগুলাে ব্যবহার করা হয় । আমাদের দেশে বন্যার সময় পানি বিশুদ্ধ করার জন্য যে ট্যাবলেট বা কিট ব্যবহার করা হয়, সেটি হলাে মূলত সােডিয়াম হাইপােক্লোরাইড ( Naocl),

এর মাঝে যে ক্লোরিন থাকে, সেটি পানিতে থাকা রােগ জীবাণুকে ধংস করে ফেলে । ক্লোরিন ছাড়াও ওজোন (63) গ্যাস দিয়ে অথবা অতিবেগুনি রশ্মি দিয়েও পানিতে থাকা রােগ জীবাণু ধ্বংস করা যায় । বােতলজাত পানির কারখানায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করে পানিকে রােগ – জীবাণুমুক্ত করা হয় ।

৩. ফুটন : পানির ফুটন প্রক্রিয়ায় পানিকে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব । পানিকে খুব ভালােভাবে ফুটালে এতে উপস্থিত জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায় । ফুটন শুরু হওয়ার পর ১৫-২০ মিনিট ফুটালে সেই পানি জীবাণুমুক্ত হয় । বাস – বাড়িতে খাওয়ার জন্য এটি একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া ।

৪. পাতন : যখন খুব বিশুদ্ধ পানির প্রয়ােজন হয়, তখন পাতন প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধ করা হয় । যেমন : ঔষধ তৈরির জন্য, পরীক্ষাগারে রাসায়নিক পরীক্ষা – নিরীক্ষার জন্য পুরােপুরি বিশুদ্ধ পানির প্রয়ােজন হয় । এই প্রক্রিয়ায় একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাপ দিয়ে সেটাকে বাষ্পে পরিণত করা হয় । পরে ঐ বাম্পকে আবার ঘনীভূত করে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা । হয় । এই প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ করা পানিতে অন্য পদার্থ থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: Md Rakib Hossain Sojol (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

১নং প্রশ্নের উত্তর (খ) :

গ্লাসে তৈরিকৃত দূষিত পানি বিশুদ্ধ না করে পান করলে আমার যেসব সমস্যা হতে পারে তা নিম্নে আলােচনা করা হলাে:
আমার শরীরে নানা ধরনের রােগ হতে পারে ) দূষিত পানি পান করার ফলে সম্প্রতি ভয়াবহ হারে বেড়ে গেছে পানিবাহিত রােগের প্রকোপ । দূষিত পানি পানেই এসব রােগের উৎপত্তি হয় । ময়লা-গন্ধযুক্ত পানি পান করলে নানা জটিল রােগের

হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিসের মতাে মারাত্মক ব্যাধির উৎস এই দূষিত পানি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অভিমত, এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন পান করতে থাকলে আরাে জটিল রােগ, এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারও হতে পারে। কিডনি রােগ, আলসার, রক্তচাপ, অ্যাজমা, যক্ষ্মা ইত্যাদি রােগের প্রকোপ বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা দিতে না পারলে জনস্বাস্থ্যকে সম্পূর্ণভাবে হুমকি মুক্ত  আর তাই গ্লাসে তৈরিকৃত দূষিত পানি বিশুদ্ধ না করে পান করলে আমার উল্লিখিত সমস্যাগুলাে হতে পারে ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: Md Rakib Hossain Sojol (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment