পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর
পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিসমূহ
কোনো কোম্পানি যখন জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করে, তখন তা পাবলিক ইস্যু নামে পরিচিত। এতে প্রধানত দুটি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়:
- প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (IPO – Initial Public Offering)
- ফলো-অন পাবলিক অফার (FPO – Follow-on Public Offering)
নিচে এগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (IPO – Initial Public Offering)
যখন কোনো বেসরকারি কোম্পানি প্রথমবারের মতো শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে, তাকে আইপিও বলে।
আইপিওর শেয়ার বিক্রয় পদ্ধতি:
ক) ফিক্সড প্রাইস মেথড (Fixed Price Method)
- কোম্পানি আগে থেকে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করে (যেমন: প্রতি শেয়ার ১০ টাকা)।
- বিনিয়োগকারীরা এই নির্ধারিত মূল্যে আবেদন করে।
- বাংলাদেশে বেশিরভাগ আইপিও এই পদ্ধতিতে হয় (যেমন: রবি আইপিও)।
খ) বুক বিল্ডিং পদ্ধতি (Book Building Method)
- শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য একটি মূল্য ব্যান্ডের (Price Band) মধ্যে রাখা হয় (যেমন: ১০-১২ টাকা)।
- বিনিয়োগকারীরা (বিশেষত ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর) তাদের পছন্দমতো দামে বিড (Bid) দেয়।
- চাহিদা দেখে চূড়ান্ত মূল্য (Cut-off Price) নির্ধারণ করা হয়।
- উন্নত বাজারে (ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এটি বেশি প্রচলিত।
গ) লটারি পদ্ধতি (Lottery System)
- যদি আবেদন বেশি আসে, তাহলে লটারির মাধ্যমে শেয়ার বণ্টন করা হয় (বাংলাদেশে সাধারণ নিয়ম)।
২. ফলো-অন পাবলিক অফার (FPO – Follow-on Public Offering)
ইতিমধ্যে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যদি পুনরায় নতুন শেয়ার ইস্যু করে বা বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা তাদের শেয়ার বিক্রি করে, তাকে এফপিও বলে।
এফপিওর শেয়ার বিক্রয় পদ্ধতি:
ক) রাইটস ইস্যু (Rights Issue)
- বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের তাদের মালিকানার অনুপাতে নতুন শেয়ার কেনার সুযোগ দেওয়া হয় (সাধারণত কম দামে)।
- উদাহরণ: বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক ও কোম্পানি রাইটস ইস্যুর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করে।
খ) প্রাইভেট প্লেসমেন্ট (Private Placement)
- কোম্পানি বড় বিনিয়োগকারী (ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর) বা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে।
- এটি দ্রুত তহবিল সংগ্রহের একটি উপায়।
গ) অফার ফর সেল (OFS – Offer for Sale)
- বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা (প্রোমোটার বা বড় বিনিয়োগকারী) তাদের শেয়ার জনসাধারণের কাছে বিক্রি করে।
- উদাহরণ: ভারতের SEBI-নিয়ন্ত্রিত OFS পদ্ধতি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শেয়ার বিক্রয় পদ্ধতি:
- আইপিও: সাধারণত ফিক্সড প্রাইস ও লটারি বরাদ্দ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় (যেমন: রবি, ঢাকা ব্যাংক)।
- এফপিও: রাইটস ইস্যু বেশি প্রচলিত (যেমন: লাফকো, বিডি অটো কার্স)।
- বুক বিল্ডিং: বাংলাদেশে এখনও সীমিতভাবে ব্যবহার হয় (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউশনাল বিনিয়োগকারীদের জন্য)।
পদ্ধতি নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়:
- বাজার অবস্থা: চাহিদা বেশি থাকলে বুক বিল্ডিং কার্যকর।
- কোম্পানির অবস্থা: নতুন কোম্পানির জন্য আইপিও, তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এফপিও।
- বিনিয়োগকারীর ধরন: রিটেইল বিনিয়োগকারীদের জন্য ফিক্সড প্রাইস, বড় ইনভেস্টরদের জন্য বুক বিল্ডিং।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- আইপিওতে SEC বাংলাদেশ-এর অনুমোদন প্রয়োজন।
- শেয়ার বিক্রয়ের আগে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
পাবলিক ইস্যুর পদ্ধতি কোম্পানির তহবিল সংগ্রহ ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতি নির্বাচন করলে বিনিয়োগকারী ও কোম্পানি উভয়ই উপকৃত হয়।
উপসংহার : পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
আর্টিকেলের শেষ কথাঃ পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন
আরো পড়ুন:
- নতুন আইপিও বাজারের কার্যাবলী আলোচনা কর
- পাবলিক ইস্যুতে শেয়ার বিক্রয়ের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর
- কেন আইপিও অবমূল্যায়ন হয়,আইপিও অধীনে ইস্যুকৃত শেয়ার কেন অবমূল্যায়িত হয়
- আইপিও প্রক্রিয়া বর্ণনা কর, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব প্রক্রিয়া বর্ণনা কর,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং প্রক্রিয়া বর্ণনা কর
- প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বলতে কি বুঝ,ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং বলতে কি বুঝ, আইপিও কি