বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হলো। মহাকাশ জয় হলো ছোট্ট এই দেশটির। যা বাংলাদেশের ইতিহাসের খাতায় লেখা হয়ে থাকবে যুগ যুগ ধরে।
বলছিলাম বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের কথা। এটি বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের জানার আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষা, বিসিএস, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির পরীক্ষায়ও স্যাটেলাইটটি নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। তাই স্যাটেলাইটটির খুঁটিনাটি বিষয় জানা থাকা দরকার। এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিচিতি : নাম : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এটি একটি কৃত্রিম উপগ্রহ। জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইট বা ভ‚স্থির উপগ্রহ। ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। তবে জেনে রাখা ভালো যে, বাংলাদেশে প্রথম স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালে। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ২০০৯ সালে জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালায় রাষ্ট্রীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিষয়টি যুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট কোম্পানি : মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পরিচালনার জন্য ‘বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়।
নির্মাণ : বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। এটির নির্মাণ শেষ হয় ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ। নির্মাণ, পরীক্ষা, পর্যালোচনা ও হস্তান্তর শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে করে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ সাইটে পাঠায় থ্যালেস অ্যালেনিয়া। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর ওজন তিন হাজার কেজি।
অর্থায়ন : শুরুতে বাজেট ধরা হয় ২৯৬৭.৯৫ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২৭৬৫ কোটি টাকায় এ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। এর মধ্যে ১৩১৫ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আর ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে হংক সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (এইচএসবিসি)ব্যাংক। এটি একটি বহুজাতিক ব্যাংক।
যা আছে : এই স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার আছে। যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। আর বাকি ২০টি ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
কক্ষপথ কেনা : স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ এবং তা কক্ষপথে রাখার জন্য রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনা হয়। মহাকাশে এই কক্ষপথের অবস্থান ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সম্পাদিত চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য এই কক্ষপথ কেনা হয়।
স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট বা কভারেজ হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায়। এর মধ্যে গাজীপুরের তেলীপাড়ায় টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রাইমারি গ্রাউন্ড স্টেশনটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। এটিই মূল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের। আর রাঙ্গামাটির গ্রাউন্ড স্টেশনটি গাজীপুরে স্থাপন করা গ্রাউন্ড স্টেশনের বিকল্প।
[ বি:দ্র:এই সাজেশন যে কোন সময় পরিবতনশীল ১০০% কমন পেতে পরিক্ষার আগের রাতে সাইডে চেক করুন এই লিংক সব সময় আপডেট করা হয় ]
উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান ও উৎক্ষেপণকারী রকেট : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানোর কাজ করে মার্কিন রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্স। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিয়ে উড়াল দেয় ‘ফ্যালকন-৯’ রকেট।
মহাকাশে বাংলাদেশ : স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ স্থগিত : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রথমে ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণের কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইরমার কারণে এর উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১০ মে (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু উৎক্ষেপণের ৪২ সেকেন্ড আগে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়। স্পেসএক্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রকেট ও পে লোড ভালোই আছে। কিন্তু কিছু কারিগরি ত্রুটির কারণে তা উৎক্ষেপণ করা যায়নি। পরে ব্যাকআপ ডেতে (পরের দিন) উৎক্ষেপণের দিন নির্ধারণ করা হয়।
সফল উৎক্ষেপণ : উৎক্ষেপণের তারিখ হচ্ছে-১২ মে ২০১৮। বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৪ মিনিট।
উৎক্ষেপণ স্থান : যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সুবিধাসমূহ : বর্তমানে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালুর ফলে অনেকাংশেই কমে আসবে এ ব্যয়। একই সঙ্গে দেশের টাকা থেকে যাবে দেশেই। আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।
টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে।
যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে।
এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-রিসার্চ, ভিডিও কনফারেন্স প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ভালো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে।
এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে নেপাল, মিয়ানমার, ভুটান ও অন্যান্য দেশের কাছে সেবা ভাড়া দিতে পারবে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা যাবে।
সাজেশন সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট – ১ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
* উৎক্ষেপন স্থান- কেফ কেনেডি, ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র।
*তারিখঃ- ১২ মে ২০১৮
*সময়ঃ- ২.১৪ am
* গ্রাউন্ড স্টেশন- গাজীপুর ও বেতবুনিয়া
* কক্ষপথে পৌছার সময়:- ৮ থেকে ১১ দিন
* কক্ষপথ দূরত্ব:- আর্থ স্টেশন থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার
* বাজেট: ২৯৬৭.৯৫ কোটি টাকা
* প্রকল্প ব্যায়:- ২৭৬৫ কোটি টাকা
* বাংলাদেশি অর্থায়ন:- ১৩১৫ কোটি টাকা
* অায়ু:- ১৫ বছর
* ওজন:-৩.৭ টন
* ডিজাইন ও তৈরি:- থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস, ফ্রান্স
* রকেট:- যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স এর ফ্যালকন ৯
* অবস্থান:- ১১৯.১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে
* ট্রান্সপন্ডার:- ৪০টি
* ব্যান্ডউইথ:- ১৬০০ মেগাহার্জ
* ফুটপ্রিন্ট/কভারেজ:- ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত
* ভাড়া দিয়ে বছরে অায়:- ১.৪০ কোটি ডলার
* প্রধান কাজ:- টিভি চ্যানেলগুলোর স্যাটেলাইট সেবা নিশ্চিত করা, ইন্টারনেট সেবাদান কারি প্রতিষ্ঠান, ভি স্যাট ও বেতার সহ ৪০ ধরেনের সেবা দিবে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৪০ টির মধ্যে কয়েকটি তুলে ধরলাম:-
১। মহাকাশ বা জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা
২। আবহাওয়ার পূর্বাভাস
৩। টিভি বা রেডিও চ্যানেল, ফোন, মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রযুক্তি
৪। নেভিগেশন বা জাহাজের ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনায়
৫। পরিদর্শন – পরিক্রমা (সামরিক ক্ষেত্রে শত্রুর অবস্থান জানার জন্য)
৬। দূর সংবেদনশীল।
৭। মাটি বা পানির নিচে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে।
৮। মহাশূন্য এক্সপ্লোরেশন
৯। ছবি তোলার কাজে (সরকারের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)।
১০। হারিকেন, ঘূর্ণিঝড়, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর পূর্বাভাস।
১১। আজকাল সন্ত্রাসীরা অনেক রিমোট এরিয়া তেও স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছে।
১২। গ্লোবাল পজিশনিং বা জি পি এস।
১৩। গামা রে বারস্ট ডিটেকশন করতে।
১৪। পারমাণবিক বিস্ফোরণ এবং আসন্ন হামলা ছাড়াও স্থল সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য ইন্টিলিজেন্স সম্পর্কে আগাম সতর্কবার্তা পেতে।
১৫। তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিভিন্ন খনির সনাক্তকরণ ইত্যাদি
১৬। ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করা।
[ বি:দ্র:এই সাজেশন যে কোন সময় পরিবতনশীল ১০০% কমন পেতে পরিক্ষার আগের রাতে সাইডে চেক করুন এই লিংক সব সময় আপডেট করা হয় ]
সবার আগে সাজেশন আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন
১ম থেকে ৪৩তম বিসিএস প্রশ্ন ও সমাধান লিংক
Professor Primary Assistant Teacher book লিংক
ইংরেজি
বাংলা
বাংলা ব্যাকরণ
গণিত
সবার আগে Google News আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন
- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সুপার সাজেশন ও উত্তর, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ভিত্তিক সাজেশন,প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সাজেশন,কম সময়ে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লিখিত পরীক্ষার সাজেশন,ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান
- শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার সাজেশন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (EEDMOE) উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ)’ ও ‘ড্রাফটসম্যান’ নিয়োগ পরীক্ষার সাজেশন