ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় প্রাচীন গ্রিক দেশে একাধিক রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হত বাঁধাকপির রসকে। বিশেষত কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমাতে গ্রিক চিকিৎসকেরা এই সবজির উপরই মূলত ভরসা করতেন।
একই রকমের চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চলতেন মিসরীয় মানুষরাও। তারাও শরীরে টক্সিনের পরিমাণ কমাতে প্রায় প্রতিদিনই বাঁধাকপি খেতেন।
আধুনিক চিকিৎসায় এই সবুজ গোলাকার সবজিটির প্রবেশ ঘটে ইংরেজদের হাত ধরে। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকে ব্রিটিশরাই সারা বিশ্বে বাঁধাকপির জয়গান গেয়ে বেড়িয়েছে। পুষ্টিগুণে ঠাসা এই সবজিটি খেলে ক্যানসারের মতো মারণ রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। রক্তে সুগাররে মাত্রাকে বেঁধে রেখে ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ থাকার পথকেও প্রশস্ত করে। কমে আরও অনেক রোগের প্রকোপ। কেন জানেন?
১. রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের বিপুল ক্ষমতা রয়েছে এই সবজিতে
বাঁধাকপিতে উপস্থিত ফোটোনিউট্রিয়েন্টস, যেমন পলিফেনল এবং গ্লকোসিনোলেট শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা করনারি আর্টারি ডিজিজ, অর্থাৎ হার্টের রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি ক্যান্সার, অ্যালঝাইমারস এবং ম্যাকিউলার ডিজেনারেশনের মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ‘এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যান্সার প্রিভেনশন’-এ প্রকাশিত একটি স্টাডিতেও একথা প্রমাণিত হয়েছে। তাই বৈজ্ঞানিক দিক থেকে আর কোনও সন্দেহ নেই যে বাঁধাকপি বাস্তবিকই এই সব রোগকে আটকে রাখে।
২. ডায়াবেটিসের প্রকোপ কমায়
২০০৮ সালে এভিডেন্স বেসড কমপ্লিমেনটারি অ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে টানা ৬০ দিন বাঁধাকপি খেয়ে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক লেভেলে চলে আসে। সেই সঙ্গে রেনাল ফাংশনের উন্নতি ঘটে এবং ওজন কমতে শুরু করে। আসেল এই সবজিটিতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হাইপার-গ্লাইসেমিক প্রপার্টিজ রয়েছে, যা ডায়াবেটিসের মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, আরও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বাঁধাকপির এইসব পুষ্টিকর উপাদানের পাশাপাশি ফাইবারও রয়েছে অনেক পরিমাণে। এই উপাদানটি একদিকে যেমন ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে সাহায্য করে, তেমনি নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৩. ভিটামিন সি এবং কে-তে ঠাসা
হাফ কাপ সেদ্ধ বাঁধাকপিতে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, তা সারা দিনের চাহিদার প্রায় ৪৭ শতাংশ পূরণ করে দেয়। আর ভিটামিন কে-এর চাহিদা পূরণ করে প্রায় ১০০ শতাংশ। তাহলে বুঝতে পারছেন তো এইটুকু বাঁধাকপি যদি এত কাজে আসতে পারে, তাহলে এক বাটি খেলে কত উপকারই না হবে!
প্রসঙ্গত, শরীরকে সচল রাখতে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে সংক্রমণকে আটকাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। অন্যদিকে, ভিটামিন কে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি শরীরের প্রতিটি অংশে রক্ত প্রবাহ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে।
৪. ওজন কমায়
বাঁধাকপিতে কী কী রয়েছে সেদিকে একবার নজর ফেরালেই বুঝতে পারবেন কেন এই সবজিটি ওজন কমাতে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ঠিক কী আছে এই সবুজ সবজিটিতে? রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদকে ঝেড়ে ফেলে। অন্যদিকে বাঁধাকপিতে রয়েছে একেবারে কম মাত্রায় ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট। ফলে এটি খেলে ওজন বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।
৫. বুদ্ধি বাড়ে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকায় এই সবজিটি নিয়মিত খেলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে নার্ভের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। ফলে বুড়ো বয়সে গিয়ে অ্যালঝাইমারস সহ একাধিক ব্রেনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
৬. নিমেষে মাথা যন্ত্রণা কমায়
বাঁধাকপির পাতাগুলি ছিঁড়ে নিয়ে একটা কাপড়ে রেখে কপালে বেঁধে দিন। কিছু সময় পরই দেখবেন মাথা যন্ত্রণা একেবারে গায়েব হয়ে গেছে। আর যদি এমনটা করতে না চান, তাহলে আরেকটি ঘরোয়া পদ্ধতি আছে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কী সেই পদ্ধতি? পরিমাণ মতো বাঁধাকপি নিয়ে ২৫-৫০ এম এল জুস বানিয়ে পান করুন। এই ঘরোয়া ওষুধটি ক্রনিক মাথা যন্ত্রণা কমাতে দারুন কাজে আসে।
- যে কারণে পুরুষের গোপন অঙ্গের ক্ষমতা নষ্ট হয়
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- হাঁপানি রোগী জন্য পরামর্শ ও হাঁপানি রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসা উপায়গুলো
- ২০২৫ এর সেরা ১০ জন তারকারা গুগলিং সার্চে করে
- লিভারেজ ইজারা বলতে কি বুঝ বিস্তারিত আলোচনা করো
1 thought on “বাঁধাকপির যত পুষ্টিগুণ”