দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ এবং টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার ভিত্তি গড়ে তুলতে কৃষিখাতের উন্নয়নের বিকল্প নেই।
সরকার কৃষিখাতের উন্নয়নের জন্যে বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার কৃষিখাতে সার, ডিজেল, পাটের আঁশ ছাড়ানোর জন্যে রিবনার ক্রয় ইত্যাদি খাতে ভর্তকি সুবিধা দিচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার প্রদত্ত ভর্তুকিসমূহ ব্যাংকের মাধ্যম সহজে প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে নগদ মাত্র ১০ টাকা জমা গ্রহণ করে এ পর্যন্ত ৯৬ লক্ষাধিক কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়েছে। এসব একাউন্টে এখন থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির উপর কোনো আবগারি শুল্ক কর্তন করা হবে না। কৃষক পর্যায়ে সময়মত ও দ্রুততার সঙ্গে কৃষিঋণ পৌঁছনো অব্যাহত রাখার জন্যে ১.৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলির সিআইবি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০-১১ অর্থবছরের জন্যে অধিকতর বিস্তৃত কৃষি/পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচী প্রণয়ন করেছে, যেখানে ১২.৬০০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে অর্জন, কৃষকেরা যেন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, হয়রানিমুক্তভাবে এবং সময়মতো কৃষিঋণ পেতে পারেন তার জন্যে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
কৃষিঋণ নীতিমালায় প্রচলিত খাতের পাশাপাশি নতুন নতুন খাত যেমন- কমলা, আগর, স্ট্রবেরি, পান, মধু চাষ, টিস্যু কালচার, উচ্চমূল্য ফসল ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদানের জন্য দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, প্রান্তিক, ক্ষুদ্র কৃষক ও বর্গাচাষিদেরকে সহজ পদ্ধতিতে ঋণ প্রদান, সৌরশক্তি চালিত সেচযন্ত্র ক্রয়, সমন্বিত গরু পালন ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন খাতে ঋণ প্রদানের জন্যেও ব্যাংকগুলিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশে ডাল, তৈলবীজ, মসলা জাতীয় ফসল ও ভূট্টার প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ও ফসলগুলোর উৎপাদন যথেষ্ট নয়। ফলে এ সব পণ্য আমদানি করতে প্রতি বছর আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। গত অর্থবছরেও এ খাতে প্রায় ১২,৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করা হয়েছে। এজন্যে আমদানি বিকল্প এসব চাষের জন্যে কৃষকগণকে ২ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে ১০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ ঋণ সুবিধা সম্পর্কে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাপক প্রচারপ্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
বর্গাচাষিদের প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের জন্যে ৫০০ কোটি টাকার একটি ঘূর্ণায়মান পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করা হয়েছে। এ স্কিম থেকে অক্টোবর ২০১৩ পর্যন্ত ৭ লাখ ২৭ হাজার বর্গাচাষিকে ১০২৭ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় আয়োজিত একটি বিশাল সম্মেলনে বর্গাচাষিদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের মোট জনংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। কৃষি ও কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত আয়-উৎসারী কর্মকান্ডে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গ্রামের দারিদ্র মহিলাদেরকে শস্য উৎপাদন, ছোট ছোট আকারে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষি সম্পর্কিত ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক কর্মকান্ড, বাগান করা, নার্সারি, শস্য উত্তোলন পরবর্তী কর্মকান্ড, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ, মৌমাছি পালন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, মৎস্য, পশুসম্পদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানের জন্যে ব্যাংকগুলিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ নির্দেশনার আলোকে আজকে ন্যাশনাল বাংকের মাধ্যমে কৃষাণী বোনেরা কৃষিঋণ পেতে যাচ্ছেন, এটা সত্যিই খুশির বিষয়। কৃষির পরেই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে এসএমই। ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাসহ সামগ্রিকভাবে এসএমই খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলে দিতে হলে নারী কৃষ ও নারী উদ্যোক্তাদের কৃষি ও এসএমই খাতে অধিকতর ঋণ প্রদান করতে হবে। এ বিষয়টি সামনে রেখে আমরা তাঁত, হস্তশিল্প, বুটিক ইত্যাদি ক্লাস্টারে ঋণ দানের আহ্বান জানিয়েছি। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যাংকগুলি যশোর, বান্দরবান, সিলেট ও মৌলভীবাজারের মণিপুরী সম্প্রদায়, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি এমনতর নানান জায়গায় ঋণ প্রদান করছে।
যাঁরা ঋণ নিচ্ছেন তারা যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করলে ভবিষ্যতে ন্যাশনাল ব্যাংক গ্রাহকদের আরও বেশি ঋণ প্রদান করতে পারবে। বাংলাদেশ অপার সম্ভবনার দেশ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শত দুঃখ, কষ্ট ও বেদনার মাঝেও আমাদের অকুতোভয়, সাহসী কৃষক ভাইয়েরা যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন তা সত্যিই অতুলনীয়। কৃষক সন্তানের রক্ত ও ঘামে ভেজা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি।
ফলে, অর্থনৈতিক মুক্তি আনার লক্ষ্যে কৃষক ভাই-বোনদের বিভিন্নমুখী সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রতি আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
H.S.C
- ঝুঁকির প্রকারভেদ বর্ণনা কর, কিভাবে জীবন বীমার দাবি আদায় করা হয় বর্ণনা কর।
- বীমা বলতে কী বোঝায়? বাজি চুক্তি ও বীমা চুক্তির মধ্যে পার্থক্য লিখ
- বিনিময় বিলের সংজ্ঞা দাও, প্রত্যয়ন পত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
- বিভিন্ন প্রকার ব্যাংক হিসাবের বর্ণনা দাও? চেক কী?
- কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বানিজ্যিক ব্যাংক কী ভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে আলােচনা কর
- কোভিড ১৯ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের কার্যাবলী গতিশীলতা আনায়নে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে?
- এইচএসসি ডিপ্লোমা ইন কমার্স ব্যাংকিং ও বীমা (১৭১৫) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
- এইচএসসি ভোকেশনাল রসায়ন অ্যাসাইনমেন্ট নির্ভুলভাবে ১০০% HSC Chemistry Assignment Vocational
- খাদ্য লবণ বা অবিশুদ্ধ সােডিয়াম ক্লোরাইড থেকে বিশুদ্ধ সোডিয়াম ক্লোরাইড কেলাস প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা কর
- N2+3H; 5 ? + 92.2 KJ/mol বিক্রিয়াটি পূর্ণ করবে
3 thoughts on “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি ব্যাংকের গুরুত্ব আলোচনা কর”