প্রশ্ন সমাধান: বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থান ও এর গুরুত্ব/সুবিধাবলি বর্ণনা করুন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য,বাংলাদেশের ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য,বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের গুরুত্ব, বাংলাদেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব
বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান
বাংলাদেশ অবস্থানঃ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এটি এশিয়া মহাদেশের দক্ষিনাংশে দক্ষিন এশিয়ায় অবস্থিত। এর অবস্থান ২০°৩৪” উত্তর হতে ২৬°৩৮” উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°১” পূর্ব ৯২°৪১” পূর্ব দাঘ্রিমাংশে। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে গেছে কর্কটক্রান্তিরেখা (ট্রপিক অব ক্যান্সার)। ঢাকার প্রতিপাদ স্থান – চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসগরে। প্রতিপাদ স্থানের সাথে সময়ের পার্থক্য ১২ ঘন্টা। প্রতিপাদ স্থানের সাথে স্থানের সাথে সেই স্থানের দাঘ্রিমার ব্যবধান ১৮০°।
আয়তনঃ বাংলাদেশের আয়তন ১৪৭৫৭০ বর্গ কিঃমিঃ বা ৫৬৯৭৭ বর্গ মাইল। বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল বা রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল, অর্থ নৈতিক অঞ্চল ২০০ নটিক্যাল মাইল বা ৩৭০.৮ কিঃমিঃ, সামুদ্রিক মালিকানা মহীসোপানের শেষ সীমানা পর্যন্ত।
- বঙ্গোপসাগর ৫° উত্তর ও ২২° দক্ষিন এবং ৮০° পূর্ব ও ১০০° পূর্ব দাঘ্রিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। আয়তন প্রায় ২১,৭২,০০০ বর্গকিলোমিটার (৮,৩৯,০০০ মাইল)।সর্ব উত্তর প্রান্তে বাংলাদেশ, দক্ষিনে শ্রীলংকার দন্দ্রা চূড়া থেকে সুমাত্রার উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত।এর পূর্ব প্রান্তে মিয়ানমার উপদ্বীপ থেকে আন্দামান-নিকোবর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং পশ্চিমে ভারত ও শ্রীলংকার পূর্ব উপকূল অবস্থিত।বঙ্গোপসাগরের ঠিক মাঝখানে বিরাজ করছে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। অনেকগুলো বড়ো নদী এই সাগরে এসে মিশেছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য গঙ্গা ও তার প্রধান দুই শাখানদী পদ্মা ও হুগলি, ব্রহ্মপুত্র ও তার উশাখানদী যমুনা ও মেঘনা, ইরাবতী, গোদাবরী, মহানদী, কৃষ্ণা, সুবর্ণরেখা, কাবেরী ইত্যাদি নদীসমূহ। বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলো হল চেন্নাই, চট্টগ্রাম, কলকাতা, হলদিয়া,মোংলা, পারাদীপ, টুটিকোরিন, বিশাখাপত্তনম ও ইয়াঙ্গুন। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এই উপসাগরের তীরে অবস্থিত বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলি হল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চেন্নাই, পুুুরি, বিশাখাপট্টনম, সুুুুন্দরবন(সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন), দিঘা, ফুকে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ত্রিংকোমালি ইত্যাদি।
- বঙ্গোপসাগরের জলসীমা নির্ধারণ ও সমুদ্র সম্পদের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ১৪ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সালে মিয়ানমারের বিপক্ষে জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত সমুদ্র আইন বিষয়ক ট্রাইব্যুনালে এবং ভারতের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত সালিশ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১৪ই মার্চ, ২০১২ সালে বাংলাদেশ – মিয়ানমার মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশের ন্যায্যভিত্তিক দাবির পক্ষে ঐতিহাসিক রায় দেয়। এ রায়ের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে উপকূলীয় বেজলাইন ধরে ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রাধীন সমুদ্র এলাকা এবং ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল পায়। এর ফলে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সাগরের তলদেশ বাংলাদেশের মহীসোপানে রয়েছে।
- বাংলায় সুন্দরবন-এর আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমি। সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে।সুন্দরবন ৮৯° ও ৮.৫৫° পূর্ব দাঘ্রিমাংশ এবং ২১.৩০° ও ২৩.২৩° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে।
সীমাঃ বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় পূর্বে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা,মিজোরাম এবং মিয়ানমার। দক্ষিনে বঙ্গপোসাগর এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪৭১১ কিঃমিঃ[সূত্র : মাধ্যমিক ভূগোল] এবং ৫১৩৮ বর্গ কি: মি: [সূত্র :বর্ডার গার্ড বাংলাদশে]। এর মধ্যে স্থলসীমা ৩৯৯৫ বর্গ কি:মি: [সূত্র : মাধ্যমিক ভূগোল] বা ৪৪২৭ বর্গ কি:মি: [সূত্র :বর্ডার গার্ড বাংলাদশে]।ভারতের সাথে সীমান্ত দৈর্ঘ্য ৩৭১৫ কি:মি:[সূত্র : মাধ্যমিক ভূগোল] ও ৪১৫৬ কি:মি:[সূত্র :বর্ডার গার্ড বাংলাদশে]।আর মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত দৈর্ঘ্য ২৮০কি:মি:[সূত্র : মাধ্যমিক ভূগোল] এবং ২৭১কি:মি:[সূত্র :বর্ডার গার্ড বাংলাদশে]।বাংলাদেশের উপকূলের দৈর্ঘ্য ৭১৬ বর্গ কি:মি:[সূত্র : মাধ্যমিক ভূগোল] এবং ৭১১ বর্গ কি:মি:[সূত্র :বর্ডার গার্ড বাংলাদশে]। বাংলাদেশের দক্ষিন- পশ্চিমে হাড়িয়াভাঙ্গা নদী বাংলাদেশ – ভারত এবং দক্ষিন- পূর্বে নাফ নদী বাংলাদেশ – মিয়ানমার সীমান্ত নির্দেশ করে।
বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। বাংলাদেশের প্রায় সমগ্র অঞ্চল বিস্তীর্ণ সমভূমি।সামান্য পরিমাণে উচ্চভূমি আছে।ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
১) টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ
২) প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ
৩) সাম্প্রতিকালের প্লাবন সমভূমি
১। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহঃ বাংলাদেশের দক্ষিন – পূর্ব, উত্তর, উত্তর- পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূ এ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় এসব পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো টারশিয়ারি যুগের পাহাড় নামে খ্যাত। পাহাড়গুলো আসামের লুসাই এবং মিয়ানমারের আরাকান পাহাড়ের সমগোত্রীয়। বেলেপাথর, শেল ও কর্দম দ্বারা গঠিত। এ পাহাড়গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
ক) দক্ষিন – পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ
খ) উত্তর – পূর্বাঞ্চলের পাহারসমূহ
ক) দক্ষিন – পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহঃ রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ এ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিন -পূর্বের এ পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পর্বত শৃঙ্গ বান্দরবানের তাজিনডং (বিজয়) এবং উচ্চতা ১২৩১ মিটার।কিত্তক্রাডং হলো ১২৩০ মিটার।
খ) উত্তর ও উত্তর – পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহঃ ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উত্তরাংশ, সিলেট জেলার উত্তর ও উত্তর – পূর্বাংশ এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিনের পাহাড়গুলোর উচ্চতা ২৪৪ মিটারের বেশিনা। উত্তরের পাহাড়গুলো স্থানীয়খাবে টিলা নামে পরিচিত। এগুলোর উচ্চতা ৩০ থেকে ৯০ মিটার।
২। প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহঃ আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলে। উত্তর – পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড় বা উচ্চভূমি এ অঞ্চলের অন্তভুক্ত। নিচে এসব উচ্চভূমি বর্ণনা দেওয়া হলোঃ
বরেন্দ্রভূমিঃ দেশের উত্তর – পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৯৩২০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বরেন্দ্রভূমি বিস্তৃত। প্লাবন সমভূমি হতে এর উচ্চতা ৬ থেকে ১২ মিটার। মাটি ধূসর ও লাল বর্ণের।
মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়ঃ টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় মধুপুর এবং ভাওয়ালের গড় গাজীপুর জেলায়। আয়তর প্রায় ৪১০৩ বর্গকিলোমিটার। সমভূমি হতে ৩০ মিটার উঁচু। মাটি লালচে ও ধূসর।
লালমাই পাহাড়ঃ কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিঃমিঃ পশ্চিমে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত এ পাহাড়টি বিস্তৃত। এর আয়তন প্রায় ৩৪ বর্গকিঃমিঃ এবং গড় উচ্চতা ২১ মিটার।
৩। সাম্প্রতিককালের প্লাবান সমভূমিঃ টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। এ প্লাবন সমভূমির আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার।
বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদী
বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ নদ-নদী আছে। মোট নদী দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,১৫৫ বর্গকিলোমিটার।
পদ্মাঃ পদ্মা নদীর পূর্বনাম কীর্তিনাশা। এই নদী হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রাজবাড়ির গোয়ালন্দে যমুনার সাথে মিলিত হয়েছে পদ্মা নিয়ে চাঁদপুরে মেঘনার সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নাম ধারন করে বঙ্গপোসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশে গঙ্গা – পদ্মা বিধৌত অঞ্চল ৩৪,১৮৮ বর্গকিলোমিটার। শাখানদী কুমার, মাথাভাঙা, ভৈরব, গড়াই, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি। উপনদী হল পুনর্ভবা, নাগর, পাগলা, কুলিক ও ট্যাংগন, মহানন্দা ইত্যাদি।
ব্রহ্মপুত্রঃ এ নদ হিমালয় কৈলাস শৃঙ্গের নিকট মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে তিব্বতের উপর দিয়ে পূর্ব দিকে ও পরে আসামের ভিতর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রভাহিত হয়েছে। এরপর ব্রহ্মপুত্র কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এটি ভৈরব বাজারে মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে। ধরলা ও তিস্তা প্রধান উপনদী এবং বংশী ও শীতলক্ষ্যা প্রধান শাখানদী।
মেঘনাঃ আসামের বরাক নদী নাগা- মণিপুর অঞ্চল হতে উৎপন্ন হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নাম নিয়ে সিলেট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।আবার আজমিরিগঞ্জ গিয়ে মিলিত হয়ে কালনী নাম নিয়ে কিছুদূর গিয়ে আবার মেঘনা নাম ধারন করেছে। ভৈরববাজারে পুরাতন ব্রহ্মপত্রের সাথে মিলিত হয়ে আবার চাঁদপুরে পদ্মার সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গপোসাগরের পড়েছে।
কর্ণফুলীঃ আসামের লুসাই পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে রাঙ্গামাটি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উপনদী কাসালং, হালদা এবং বোয়ালখালী। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এই নদীর তীরে।
জলবায়ু
বাংলাদেশের জলবায়ু সমভাবাপন্ন। কর্কটক্রান্তিরেখা দেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে অতিক্রম করায় ক্রান্তীয় জলবায়ু বিরাজ করে।মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বেশি বলে ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু নামে পরিচিত।
- বাংলাদেশের বার্ষিক গড় বায়ু ২৬.০১° সেলসিয়াস।
- গড় বৃষ্টিপাত ২০৩ সেন্টিমিটার ।
- সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
- বাংলাদেশে মার্চ থেকে মে মাস (ফাল্গুন – জৈষ্ঠ ) পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৪° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২১° সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের মোট ২০ ভাগ গ্রীষ্মকালে হয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫১ সেন্টিমিটার।
- গড় হিসেবে বাংলাদেশে এপ্রিল মাস সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। গড় তাপমাত্রা ২৮° সেলসিয়াস।
- বাংলাদেশে জুন থেকে অক্টোবর মাস (জ্যৈষ্ঠ – কার্তিক) পর্যন্ত বর্ষাকাল। গড় তাপমাত্রা ২৭° সেলসিয়াস। মোট বৃষ্টিপাতের ৮০ ভাগ বর্ষাকালে হয়।
- সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস (কার্তিক – ফাল্গুন ) পর্যন্ত সময়কে শীতকাল বলে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১° সেলসিয়াস। জানুয়ারি সবচেয়ে শীতলতম মাস এবং গড় তাপমাত্রা ১৭.৭° সেলসিয়াস।শীতকালে ১০ সেন্টিমিটারের বেশি হয়না।
- বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯০৫ সালে দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন ১° সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
অবস্থান
বাংলাদেশ ২০⁰ ৩৪′ উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬⁰ ৩৮’ উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮⁰ ০১′ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯২⁰ ৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। কর্কটক্রান্তি রেখা বা ট্রপিক অব ক্যান্সার বাংলাদেশের প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে। পূর্ব থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিস্তৃতি প্রায় ৪৪০ কি.মি. এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে সর্বোচ্চ বিস্তৃতি ৭৬০ কি.মি.।
বাংলাদেশের –
পশ্চিমে | ভারতের পশ্চিমবঙ্গ |
পূর্বে | আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও দক্ষিণ পূর্বে ত্রিপুরা ও মিয়ানমার সীমান্ত |
উত্তরে | পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় |
দক্ষিণে | বঙ্গোপসাগর |
বাংলাদেশের রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর ঢাকা। এর প্রতিপাদ স্থান চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসাগরে।
সমুদ্র
বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল বা রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল এবং অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা বা Exclusive Economic Zone – ২০০ নটিক্যাল মাইল। এছাড়া বাংলাদেশের উপকূলীয় ভূখণ্ড সমুদ্রে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্য্ন্ত যার ভৌগোলিক নাম মহীসোপান।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তি রায়ে ১,০০,০০০ বর্গ কি.মি. এরও বেশি জলসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে ভারতের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তি রায়ে আরও ১৯,৪৬৭ বর্গ কি.মি. জলসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি.মি.। সাগরকন্যা কুয়াকাটা (পটুয়াখালি) সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য ১৮ কি.মি.।
সীমান্ত
বাংলাদেশের সাথে ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে। ভারতের ৫ টি রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। এগুলো হলো: পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়। উল্লেখ্য ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলো হলো – আসাম, মিজোরাম, মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুনাচল ও ত্রিপুরা। এদের মধ্যে ৪টির সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে।
বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা ৪৭১১ কি.মি। বাংলাদেশ-ভারতের সীমারেখা ৩৭১৫ কি.মি বা বিজিবি’র তথ্য মতে, ৪১৫৬ কিলোমিটার। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমারেখা ২৮০ কি.মি. বা বিজিবি’র তথ্য মতে, ২৭১ কিলোমিটার।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা ৩২ টি: ভারতের সাথে ৩০টি এবং মিয়ানমারের সাথে ৩টি জেলার (রাঙামাটি, বান্দরবন ও কক্সবাজার) সীমান্ত রয়েছে। রাঙামাটি জেলায় বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তরেখা পরস্পরকে স্পর্শ করেছে। তাই এটি তিনদেশের সীমান্ত যুক্ত হওয়া একটি সাধারণ জেলা। ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম উভয় রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী সাধারণ জেলাও রাঙামাটি। বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের সাথে কোন দেশের সীমান্ত সংযোগ নেই।
ভারতের রাজ্য | বাংলাদেশের সংলগ্ন জেলা |
---|---|
আসাম | ৪টি (কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজার) |
ত্রিপুরা | ৭টি (ফেনী, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, ব্রহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি) |
মেঘালয় | ৪টি (নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও জামালপুর) |
মিজরাম | ১টি (রাঙ্গামাটি) |
পশ্চিমবঙ্গ | বাকিগুলো |
অপরদিকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের জেলা ৯টি। যথা: মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগোনা, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার ও দার্জিলিং। বাংলাদেশ সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের চিন প্রদেশের মংডু শহর অবস্থিত।
সীমান্তবর্তী উল্লেখযোগ্য স্থানের নাম –
স্থান | জেলা |
---|---|
বেড়ুবাড়ী বাংলাবান্ধা (স্থলবন্দর) | পঞ্চগড় |
বুড়িমারী (স্থলবন্দর) | লালমনিরহাট |
হিলি (স্থলবন্দর) বিরল (স্থলবন্দর) | দিনাজপুর |
সোনামসজিদ (স্থলবন্দর) | চাঁপাইনবাবগঞ্জ |
বেনাপোল (স্থলবন্দর) | যশোর |
হালুয়াঘাট | ময়মনসিংহ |
আখাউরা (স্থলবন্দর) | ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া |
দর্শনা (স্থলবন্দর) | চুয়াডাঙ্গা |
বুড়িচং | কুমিল্লা |
তামাবিল (স্থলবন্দর) | সিলেট |
পানছড়ি | খাগড়াছড়ি |
উখিয়া | কক্সবাজার |
১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের সীমান্ত নতুন কাঠামো পায়।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী: বিজিবি (বাংলাদেশ), বিএসএফ (ভারত) ও বিজিপি (মিয়ানমার)।
আবহাওয়া
বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ২৬.০১⁰ সেলসিয়াস। গড় বৃষ্টিপাত ২০৩⁰ সেন্টিমিটার এবং এপ্রিল উষ্ণতম মাস। দেশের উষ্ণতম স্থান লালপুর, নাটোর এবং শীতলতম স্থান শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় লালাখান, সিলেট এবং সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হয় লালপুর, নাটোর।
ভূ-প্রকৃতি
বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ। আবার বাংলাদেশের বৃহত্তম ব-দ্বীপ হল সুন্দরবন। দেশের প্রায় সমগ্র অঞ্চল এক বিস্তৃর্ণ সমভূমি। তবে সামান্য পরিমাণ উচ্চভূমিও রয়েছে।
ভূমির অবস্থান এবং গঠনের সময়ক্রমিক দিক থেকে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- টারশিয়ারি যুগের পাহাড় সমূহ
- প্লাইস্টেসিনকালের সোপান সমূহ
- সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি
টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ
ভূতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন ভূমিরূপ হচ্ছে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় এসব পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি এলাকার দীর্ঘকালের প্রাকৃতিক ভূমিক্ষয়ের ফলে পাহাড়ি এলাকার উচ্চতা কমে ক্ষয়িত অংশের দ্বারা সংলগ্ন এলাকা ভরাট হয়ে নতুন মৃত্তিকার সমতল ভূমি সৃষ্টি করছে।
রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ অবস্থিত। বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ অবস্থিত। এসকল পাহাড়কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড় সমূহ ও
- উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড় সমূহ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের (রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম) পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার। আসামের লুসাই ও মিয়ানমারের আরাকান এলাকার পাহাড়ের সাথে এদের মিল দেখা যায়। এ সকল পাহাড় বেলে পাথর, স্লেট পাথর ও কর্দমের সংমিশ্রণে গঠিত। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তাজিনডং(বিজয়)-র উচ্চতা ১২৩১ মিটার। এটি বান্দরবন জেলায় অবস্থিত।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায়) ছোট বড় বিচ্ছিন্ন কতগুলো পাহাড় অবস্থিত। এ অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পাহাড় হল সুনামগঞ্জের ছাতক পাহাড়। ছাতক (উপজেলা) শহরের উত্তরে প্রায় ৪০ কি.মি. স্থান জুড়ে এই টিলা পাহাড়টি অবস্থিত। এছাড়া মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত পাহাড়গুলো কোনোরূপ গিরিশ্রেণী গঠন করেনি। এদেরকে ত্রিপুরার পাহাড় বলা হয়।
উল্লেখযোগ্য কিছু পাহাড় –
পাহাড় | অবস্থান |
---|---|
চন্দ্রনাথ পাহাড় | সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম |
চিম্বুক পাহাড় | বান্দরবন |
লালমাই পাহাড় | কুমিল্লা |
তাজিনডং ক্রেওক্রাডং | বান্দরবন |
আলুটিলা পাহাড় | খাগড়াছড়ি |
উল্লেখযোগ্য ভ্যালি বা উপত্যকা –
উপত্যকা | অবস্থান |
ভেঙ্গি ভেলী | কাপ্তাই লেক, রাঙ্গামাটি |
বালিশিরা ভেলী | মৌলভীবাজার |
হালদা ভেলী | খাগড়াছড়ি |
সাজেক ভ্যালী | রাঙামাটি |
সাঙ্গু ভ্যালি | চট্টগ্রাম |
মাইনমুখী ভ্যালি | রাঙামাটি |
প্লাইস্টেসিনকালের সোপানসমূহ
বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ প্রায় ২৫০০০ বছরের পুরোনো। অনুমান করা হয় যে, প্লাইস্টোসিস যুগের অন্তঃবরফগলা পানিতে বন্যার সৃষ্টি হয়ে এ ভূমি গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ৮% জায়গা জুড়ে এ ভূমিরূপ অবস্থিত। এ উচ্চভূমিকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: বরেন্দ্রভূমি, মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং লালমাই পাহাড়।
বরেন্দ্রভূমি
বরেন্দ্রভূমি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এ এলাকার মাটি ধূসর ও লাল। আয়তন ৯৩২০ বর্গ কি. মি.। রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে বরেন্দ্র অঞ্চল। এটি প্লাস্টেসিনকালের সর্বোচ্চ উঁচু ভূমি। বরেন্দ্র এলাকা প্লাবন সমভূমি অঞ্চলের চেয়ে ৬ থেকে ১২ মিটার উঁচু।
মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়
ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত এ অঞ্চল বিস্তৃত যা আয়তনে ৪১০৩ বর্গ কি. মি.। টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে অবস্থিত এ অঞ্চলের উত্তরাংশ মধুপুর গড় এবং দক্ষিণাংশ ভাওয়ালের গড় নামে পরিচিত। বরেন্দ্রভূমির মত এখানেও মাটির রং লাল এবং মাটি কঙ্করময়।
লালমাই পাহাড়
কুমিল্লা শহড়ের ৮ কি. মি. পশ্চিমে অবস্থিত। আয়তন প্রায় ৩৪ বর্গ কি. মি.। এর গড় উচ্চতা ২১ মিটার বা ৭০ ফুট।
সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি
এ অঞ্চলটি প্রধান নদীগুলো দ্বারা পরিবাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত। প্লাবন সমভূমির আয়তন ১, ২৪, ২৬৬ বর্গ কি. মি.। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশের প্রায় ৮০% ভূমি এরূপ ভূমিরূপের। বাংলাদেশের প্লাবন সমভূমিকে নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায় –
- কুমিল্লার (বা ত্রিপুরার) সমভূমি
- সিলেট অববাহিকা
- পাদদেশীয় পলল ভূমি
- গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা প্লাবন সমভূমি
- ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি
- চট্টগ্রামের উপকূলীয় সমভূমি
পাদদেশীয় সমভূমি: পাহাড়ী নদী দ্বারা পর্বতের ঢাল হতে ক্ষয়প্রাপ্ত প্রস্তর ও শিলাখন্ড, কাঁকর, নুড়ি ও বালুকণা প্রভৃতি পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়। নদী দ্বারা এভাবে অবক্ষেপণের ফলে পর্বতের পাদদেশে সমভূমির সৃষ্টি হয়। একে পাদদেশীয় সমভূমি বলে। যেমন- বাংলাদেশের দিনাজপুর এবং রংপুর জেলার অধিকাংশই পাদদেশীয় সমভূমি।
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা প্লাবন সমভূমি: এটিই বাংলাদেশের মূল প্লাবন সমভূমি। বৃহত্তর ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, পাবনা ও রাজশাহী অঞ্চলের অংশবিশেষ নিয়ে এ সমভূমি গঠিত।
বদ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি: দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সমভূমিকে সাধারণত বদ্বীপ বলা হয়। বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল. পটুয়াখালী অঞ্চল এবং রাজশাহী, পাবনা ও ঢাকা অঞ্চলের কিছু অংশ জুড়ু এ অঞ্চল বিস্তৃত।
আরও তথ্য
- বাংলাদেশের আয়তন: ১,৪৭,৬১০ বর্গ কিলোমিটার বা ৫৬, ৯৯২.৫৪ বর্গ মাইল (বিশ্বের ৯৩ বা স্বাধীন হিসেবে ৯২ তম)।
- সর্ব উত্তরে – পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা (জায়গীরজোত)।
- সর্ব দক্ষিণে – কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ।
- সর্ব পূর্বে – বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার আখাইনঠং।
- সর্ব পশ্চিমে – চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকশা।
- সর্ববৃহৎ দ্বীপ: ভোলা। একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী।
- সবচেয়ে উঁচু পাহাড় – গারো পাহাড় (ময়মনসিংহ)
- সর্বচ্চ পর্বত শৃঙ্গ – তাজিনডং (বিজয়)। উচ্চতা – ১২৩১ মিটার। দ্বিতীয় সর্বচ্চ ক্রেওক্রাডং (১২৩০ মিটার)।
- সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে বিভিন্ন স্থানের উচ্চতা –
- দিনাজপুর- ৩৭.৫০ মিটার
- বগুড়া – ২০ মিটার
- ময়মনসিংহ – ১৮ মিটার
- নারায়নগঞ্জ ও যশোর – ৮ মিটার
- কুমিল্লার দুঃখ – গোমতি নদী
- প্রাচ্যের ডান্ড – নারায়নগঞ্জ
- বাংলার ভেনিস ও শস্যভাণ্ডার – বরিশাল
- বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী -ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- বাংলাদেশের সময় গ্রীনিচের মান সময়ের (Greenwich Mean Time or GMT) চেয়ে ৬ ঘন্টা আগে/বেশি।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান | বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম হলেও প্রাচীনকাল থেকেই এটির অবস্থান ছিল। এদেশটির রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে।
বাংলাদেশ অসংখ্য নদীবেষ্টিত নিম্ন উচ্চতার ব-দ্বীপ এলাকা। বাংলাদেশ ২০°৩৪´ উত্তর থেকে ২৬°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে এবং ৮৮°০১´ থেকে ৯২°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। তিন দিক থেকে ভারত দ্বারা বেষ্টিত বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য, পূর্ব ও পূর্ব দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্য এবং মায়ানমার, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য:
নদীমাতৃক দেশ: বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে ৫৮ টি আন্তর্জাতিক নদীসহ সর্বত্র ছিটিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী। এসব নদ-নদী একদিকে যেমন শহর, নগর, বন্দর গড়ে তুলতে সহায়তা করছে তেমনি অন্যদিকে এদেশের সংস্কৃতিকেও নিয়ন্ত্রণ করছে।
মৌসুমি জলবায়ুর অন্তর্গত: বাংলাদেশ মৌসুমি জলবায়ুর আন্তর্গত হওয়ায় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে আসার সময় প্রচুর জলীয় বাষ্প সাথে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালার অবস্থান হওয়ায় মৌসুমি বায়ু সেখানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান | প্রাকৃতিকভাবে নির্ধারিত সীমা: বাংলাদেশের উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম এই তিন দিক পাহাড়, পর্বত, উচ্চভূমি, নদী-নালা ও গহীন অরণ্য দ্বারা বেষ্টিত। এছাড়া বাংলাদেশের দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর, যা বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক বেষ্টনীতে আবদ্ধ করে রেখেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ:
পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। গঙ্গেয় ব-দ্বীপ, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ব-দ্বীপ এবং পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ব-দ্বীপের সমন্বয়ে বাংলাদেশ গঠিত। এই ব-দ্বীপ অঞ্চলটি বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালি অঞ্চলের সমুদয় অংশ এবং রাজশাহী, পাবনা ও ঢাকা অঞ্চলের কিছু অংশ জুড়ে বিস্তৃত।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান | উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, ভৌগোলিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী দেশ। আবহমান কাল থেকে বাংলার ভৌগোলিক সীমানা অনেকবার পরিবর্তিত হলেও পাহাড়, পর্বত, অরণ্য, বনাঞ্চল ও সমুদ্র বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- লিভারেজ ইজারা বলতে কি বুঝ বিস্তারিত আলোচনা করো
- IAS 17 ও IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 vs IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 ও IFRS 16 মধ্যে পার্থক্য আলোচনা
- আইএফআরএস ১৬ ও আইএসি ১৭ পার্থক্য । আইএফআরএস ১৬ vs আইএসি ১৭ পার্থক্য
- আই এ এস (IAS) অনুযায়ী ইজারা গ্রহীতার হিসাববিজ্ঞানের নীতিসমূহ লেখ
- এসি কারেন্ট ও ডিসি কারেন্ট