বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা,সড়ক রেল ও নৌপথে কি,অর্থনৈতিক উন্নয়নের রেলপথের ভূমিকা

২.বাংলাদেশের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের জন্য রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই স্বপক্ষে তোমার যুক্তি তুলে ধরো ।

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কি কি ধরনের লিখবে।
সড়ক রেল ও নৌপথে কি লিখবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের রেলপথের ভূমিকা।

উত্তর সমুহ:

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কি কি ধরনের লিখবে।

উত্তর:

যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে সড়ক যোগাযোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।এ ধারা, অবশ্য, বৈশ্বিকও বটে।এর একাধিক কারণ রয়েছে।মানুষ মাটিতে স্বচ্ছন্দ, ও নিরাপদ। সড়কপথে দোর গোড়ায় পৌছনো যায়; ভিন্নতর বাহন (নৌ, রেল বা বিমান ) ব্যবহার করলে শুরুতে ও শেষে সড়ক যান ব্যবহার করতে হয়। বিশ্বব্যপি সডকযান প্রস্তুতকারিরা সুসংবদ্ধ ও অভিযাত্রিক।তাদের লবি নৌ-রেল লবির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিধর ও সম্পদশালি।

সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রত্যেক দেশের জন্যই মঙ্গলকর। বাংলাদেশ নদীমাতৃক হবার কারণে এদেশে নৌপরিবহনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভুতল পরিবহনগুলোর মধ্যে নৌপরিবহনই সবচেয়ে ব্যয়সাশ্রয়ি । নৌপরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রকৃতি প্রদত্ত দানকে অবহেলা করেছে। এর আশু সংশোধন প্রয়োজন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

বাংলাদেশে ৭০০টি ছোটবড় নদনদী রয়েছে।এগুলো প্রায় সবই উত্তর হতে দক্ষিণে প্রবহমান।প্রধান সড়কগুলো উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত হওয়া বাংলাদেশের জন্য ভৌগলকবান্ধব।প্রধান সড়কগুলোর সাথে যথাসংখ্যক প্রশস্ত পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা আবশ্যক। এবং সেক্ষেত্রে নদী অতিক্রম করতে হবে, ও সেতু নির্মাণ করতে হবে। এগুলি নির্মাণে নদীর নাব্যতা বিষয়টিকে যথাগুরুক্ত প্রদান করা উচিত। নদীপৃষ্টে সেতু নির্মাণকালে ঐ নদীর পরিবহন তথ্য যাচাই করে সেতুর উচ্চতা ও spanগুলোর দৈর্ঘ নির্ধারণ করা প্রয়োজন। নদীর স্রোতধারা নীরিক্ষা করে সেতুর স্থান ও অবস্থান ঠিক করতে হবে। বাংলাদেশে অনেক সড়কেই তা করা হয়নি। নদীগুলোর নাব্যতা ক্ষুন্ন হয়েছে, ও নৌপরিবহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।নৌপথগুলো সংস্কার করে নাব্যতা সংরক্ষণের জন্য নিয়মিত ব্যবস্থা নিতে হবে।

1

বাংলাদেশে সডক নির্মাণ ব্যয় অত্যধিক। এদেশ জলজ পলিবাহিত মাটির দেশ। এখানে পাথর ও পাথুরি মাটি নেই। বন্যা নিত্য সহচর। নদীভাঙন সমস্যা রয়েছে।জমির অপ্রতুলতার কারণে বাংলাদেশে প্রশস্ত ও প্রচুর সড়ক নির্মাণ কঠিন ও ব্যয়বহুল কর্ম। বহুতল সড়কের প্রয়োজন।

সড়ক নির্মাণে কৌশলি, দক্ষ, ব্যয়সাশ্রয়ি , সুশৃঙ্খল ও সৎ হতে হবে। এক্ষেত্রেও বাংলাদেশের নজরকাডা ঘাটতি রয়েছে। ইন্জিনিয়ারিং এ’ বাংলাদেশের সেরা ভাল ছাত্ররা পড়ে; অথচ এই ভাল ছাত্ররা সৎ -সুশৃঙ্খল সডক প্রকৌশলি হয়না। কি বিচিত্র!

সড়ক নির্মাণে specification মেনে কাজ হয়না। এটি সম্পন্ন করার জন্য সমাজ-সচেতন জনব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।মান সম্মত কাজ না হলে অল্পকালের মধ্যেই সড়ক চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তখন, কালক্ষেপ না করে, জবাবদিহিতার সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।এটা হয়না।কাজ দেয়ার বর্তমান পদ্ধতিতে কোথায় শৃঙ্খলার ব্যত্যয় ঘটছে সেটার নৈর্ব্যক্তিক নিরীক্ষণ সদা সর্বদা দরকার। সেটা করতে হবে।

বাংলাদেশের সমাজচেতনায় সরকারি সম্পত্তির প্রতি জনগণের দরদের অভাব সুপরিলক্ষিত।এটি উপনিবেশোত্তর দেশগুলো্তে ও নব্য উপনিবেশের দেশে সাধারণভাবে বিদ্যমান। ( প্রবচন: “কোম্পানিকা মাল দরিয়ামে ঢাল”)।স্বাধীন দেশে ‘সরকার জনগণের, -সরকারি সম্পত্তি জনগণের সম্পত্তি’ ,- এ বার্তার ব্যপক প্রচার প্রয়োজন। সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ অতি নিম্নপর্যায়ের; কেন? রক্ষণাবেক্ষণ বাজেট আছে; কর্মিদল আছে, উপকরণ আছে। কিন্তু রাস্তা মেরামত সময়মত হয়না। সময়ের ‘ একফোডের’ জায়গায় বিলম্বের ‘নয় ফোড’ প্রয়োজন হয়।কেন?

মাত্রাতিরিক্ত ভার বহন করে বাংলাদেশের ট্রাকগুলো। সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ওজন স্টেশনগুলো টিকিয়ে রাখতে পারেনি সরকার। কেন? এর উত্তর খুঁজে বের করতে হবে।

রেল পরিবহনে ১৯৪৭ পরবর্তি বছরগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় অত্যল্প বিনিয়োগ করা হয়েছে। ফলে রেল সেক্টর দিনেদিনে দৈন্যদশায় পড়েছে। রেলে পণ্য পরিবহন, সড়কে পণ্য পরিবহনের তুলনায়, উল্লেখযোগ্য হারে সাশ্রয়ি ও অধিকতর নিরাপদ।

পণ্য পরিবহনে ব্যয়মিতির জন্য রেল ও নৌপরিবহনকে গুরুত্বসহকারে দ্রুত পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পে অগ্রাধিকার দিয়ে অন্তর্ভূক্তে করতে হবে।নৌ, রেল ও সড়ক, – এই তিন সেক্টরের পরিবহনব্যবস্থাপনাকেই একে অপরের পরিপূরক রূপে উন্নীত করতে হবে।

বাংলাদেশের নগরিগুলোতে যানযট ব্যপক।ঢাকা নগরি পৃথিবির নিকৃষ্টতম মালথুশিয়ান নগরি।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

যানযট কমাতে হলে নগরিগুলোতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবন নির্মাণ বিধিবিধান ও ব্যবস্থাপনা ট্রাফিক বান্ধব হতে হবে।ঢাকা নগরীতেই পাঁচটি রিং রোড নির্মাণ করতে হবে।বৃত্তাকার রেলপথ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ যোগান দিতে হবে।

বাংলাদেশের বিমান পথ বিমানপথ বাংলাদেশের পরিবহণ ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। আধুনিক যুগে পরিবহণের গুরুত্ব অপরিসীম। দ্রুত যাত্রী ও পণ্য চলাচলের জন্য বিমানই সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর ও বন্দরগুলির মধ্যে দ্রুত পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমান পরিবহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ জন্য দেশের বিমানপথকে দেশের অন্যান্য পরিবহণের চেয়ে কোনক্রমেই ছোট করে দেখা যায় না।


সড়ক রেল ও নৌপথে কি লিখবে।

উত্তর:

নৌপথে

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। তাই বাংলাদেশের প্রাচীনতম যাতায়াত পথ হিসেবে গণ্য করা হয় নৌপথ বা জলপথকে। নৌপথের নদীপথ এবং সমুদ্রপথ উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। নদিমাতৃক দেশ হিসেবে অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ব্যবস্থায় নদীপথ গুরুত্বপূর্ণ, তবে বহির্বিশ্বের সাথে যাতায়াত ব্যবস্থায় সমুদ্রপথ ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৮৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ নাব্য জলপথ রয়েছে। এর মধ্যে ৫৪০০ কিলোমিটার সারা বছর নৌচলাচলের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

অবশিষ্ট প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার শুধু বর্ষাকালে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের নদীগুলো নৌচলাচলের জন্য বেশি উপযোগী। এ অঞ্চলেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দরগুলো অবস্থিত: ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, খুলনা প্রভৃতি। নদীপথে চলাচলকারী যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই (৯৪%)নৌকা ও লঞ্চে এবং বাকিরা (৬%) স্টীমারে যাতায়াত করেন। দেশের সমুদ্রপথ মূলত ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের প্রধান দুইটি সমুদ্র বন্দর, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর এবংমংলা সমুদ্র বন্দর একাজে ব্যবহৃত হয়।

সড়ক ও রেল

বাংলাদেশের স্থল যোগাযোগের মধ্যে সড়কপথ উল্লেখযোগ্য। সড়কপথের অবকাঠামো নির্মাণ এদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও ভৌগোলিক অবকাঠামোর মধ্যে বেশ ব্যয়বহুল। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশে পাকা রাস্তার পরিমাণ ছিলো ১৯৩১.১৭ কিলোমিটার, ১৯৯৬-১৯৯৭ সালের দিকে তা দাঁড়ায় ১৭৮৮৫৯ কিলোমিটারে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে দেশের জাতীয় মহাসড়ক ৩৪৭৮ কিলোমিটার, আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪২২২ কিলোমিটার এবং ফিডার/জেলা রোড ১৩২৪৮ কিলোমিটার। দেশের সড়কপথের উন্নয়নের জন্য “বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন” (BRTC) নামে একটি সংস্থা গঠন করা হয়েছে। সড়কপথে প্রায় সব জেলার সাথে যোগাযোগ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো (ব্রিজ, কালভার্ট) নির্মিত না হওয়ায় ফেরি পারাপারের প্রয়োজন পরে।

সড়কপথে জেলাভিত্তিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় বড় যানবাহন যেমন: ট্রাক, বাস ব্যবহৃত হলেও আঞ্চলিক বা স্থানীয় পর্যায়ে ট্যাক্সি, সিএনজি, মিনিবাস, ট্রাক ইত্যাদি যান্ত্রিক বাহন ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বহু পুরাতন আমলের অযান্ত্রিক বাহন যেমন: রিকশা, গরুর গাড়ি, ঠেলাগাড়িও ব্যবহৃত হয়।

স্থলভাগে রেলপথ সবচেয়ে নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা হিসেবে ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের সময় বাংলাদেশে রেলপথ ছিলো ২৮৫৭ কিলোমিটার। ২০০৮-২০০৯ সালের হিসাবমতে, বাংলাদেশে রেলপথ রয়েছে ২৮৩৫ কিলোমিটার।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

এদেশে মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ -দুধরণের রেলপথ রয়েছে। রেলপথ, রেলস্টেশনের দ্বারা পরিচালিত হয় এছাড়া বিভিন্ন স্টেশনকে জংশন হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। রেলপথকে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে নামে একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে বাংলাদেশে আকাশপথে বা বিমানপথে যাতায়াতের ব্যবস্থাও রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিমান যাতায়াত ব্যবস্থায় দেশের ভিতরকার বিভিন্ন বিমানবন্দরে যাতায়াত করা যায়, আর আন্তর্জাতিক বিমান যাতায়াত ব্যবস্থায় শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বহির্দেশে গমনাগমন করা যায়।

ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এছাড়াও চট্টগ্রাম এবং সিলেটেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা হলোবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।


বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা মূলত ছিলো ডাক আদান-প্রদানভিত্তিক। কিন্তু কালের আবর্তনে টেলিগ্রাফ, টেলিফোন এবং পরবর্তিতে মোবাইল ফোনের প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন সংঘটিত হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 


বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের রেলপথের ভূমিকা।

উত্তর:

রেলপথ এবং এর গুরুত্ব
পরিবহণ যোগাযোগ ব্যবস্থার রেল পথের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেল পথ কতটুকু ভূমিকা রাখছে? আর বর্তমানে রেল পথের অবস্থা কি? আসুন আমরা এ পাঠ থেকে এ বিষয় গুলো স¤পর্কে জানার চেষ্টা করি।

বাংলাদেশের রেলপথ

ভারত বিভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তানে (১৯৪৭) মাত্র ২,৭০৬ কিঃ মিঃ রেলপথ ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের রেলপথের দৈর্ঘ্য ২৭০৬ কিঃ মিঃ (১৯৯৭)। এ পরিসংখ্যান হতে প্রতীয়মান হয় যে, ১৯৪৭ সাল হতে বর্তমান পর্যন্ত দেশের রেলপথের সম্প্রসারণ ঘটে নাই। বাংলাদেশে রেলপথের পরিমান অল্প হলেও ইহা দেশের অন্যতম প্রধান স্থল পরিবহণ মাধ্যম এবং ঐতিহ্যগতভাবে স্থল পরিবহনের ক্ষেত্রে এবং সার্বিক
অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ রেলওয়ে এখনও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ইহা দেশের প্রধান প্রধান শহর, বন্দর, বাণিজ্য ও শিল্পকেন্দ্রের সঙ্গে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংযোগ সাধন করছে। ফলে নূতন শিল্প স্থাপন, বাণিজ্যের সম্প্রসারণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে রেলপথের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

তবে, বর্তমানে সড়ক পথের দ্রুত সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিবহনের ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিযোগিতার স¤মুখীন। বাংলাদেশের রেলপথের বিবরণ

বর্তমানে বাংলাদেশে যে পরিমান রেলপথ আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম রেলপথের সূচনা হয় ১৮৬২ সালের ১৫ই নভেম্বর। দর্শনা হতে জগতী পর্যন্ত ৫৩ কি.মি.। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় অবিভক্ত ভারতে ৯টি
প্রধান রেলপথ ছিল। বাংলাদেশে উহার একটি আংশিকভাবে লাভ করে।

ঐ সময় বাংলাদেশ রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ২৭০৬ কি.মি. যা আসাম বেঙ্গল রেলপথের অংশ বিশেষ ছিল। এর মধ্যে ব্রডগেজ ৮৭৫ কি.মি., মিটারগেজ ১৮০০ কি.মি. এবং ন্যারোগেজ ৩১ কি. মি. রেলপথ ছিল। ১৯৭২-৭৩ সালে দেশে মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২,৮৭৪.৩ কি.মি., যা ১৯৭৯-৮০ সালে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২,৮৮৩.৯
কি.মি. হলেও তা ১৯৮২-৮৩ সালে হ্রাস পেয়ে ২,৮৬৬.১ কি. মিঃ হয়। পরবর্তীতে এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ক্রমান্বয়ে আরও হ্রাস পেয়ে ১৯৯২-৯৩ সালে ২,৭০৬ কি.মি. হয়েছে, যা এখনও অপরিবর্তিত আছে। এর মধ্যে ব্রডগেজ ৮৮৪ কি.মি. ও মিটারগেজ ১,৮২২ কি.মি.।

১. পণ্য পরিবহণ ঃ পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ রেলপথ দেশের প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ শহর, বন্দর, শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় কৃষি দ্রব্য ও শিল্পজাত দ্রব্য এক স্থান হতে অন্যস্থানে অতি সহজে রেলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। এ ছাড়াও দেশের বৃহত্তম বন্দরের সঙ্গে রেল পথের সংযোগ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান হতে রপ্তানিযোগ্য পণ্য সামগ্রী বন্দরে পৌঁছানো সুবিধা হয়। পরিসংখ্যানে দেখা যায় প্রতি বছর বাংলাদেশ রেলপথের মাধ্যমে প্রায় ২৬ লক্ষ টন পণ্যদ্রব্য পরিবাহিত হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

২. যাত্রী পরিবহণ ঃ যাত্রী পরিবহনে রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী রেলপথের মাধ্যমে এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকে। অবশ্য এ পথে শ্রেণী ভিত্তিতে লোকজন যাতায়াত করে। এ পথে বাংলাদেশের রেল পথকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? শ্রেণীভিত্তিতে বসবার আসন বরাদ্দ করা থাকে। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কামরা, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কামরা প্রভৃতির ভাড়া নির্ধারণ করা থাকে। এ পথে প্রতি বছর প্রায় ১১ কোটি যাত্রী যাতায়াত করে।

৩. কৃষি উপকরণ ঃ কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম। এ পথে কৃষি উপকরণ সমূহ বিশেষ করে বীজ, সার, কীটনাশক, ঔষধ, ট্রাক্টর, পানি সেচ যন্ত্রপাতি প্রভৃতি গ্রামাঞ্চলে পরিবাহিত হয়। আবার গ্রামাঞ্চল হতে কৃষিজাত পণ্য শহর ও বন্দরের বাজারে এ পথের মাধ্যমে পাঠান সম্ভব হয়। ইহাকে কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পায়। ফলে কৃষির উন্নয়ন সাধন ঘটে।

৪. শিল্পোন্নয়ন ঃ দেশের শিল্পোন্নয়নে রেলপথ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ পথের সাহায্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে শিল্পের কাঁচামাল শিল্পকেন্দ্রে আনয়ন করা যায়। আবার শিল্প কেন্দ্র হতে উৎপাদিত শিল্পজাত দ্রব্য দেশের বিভিন্ন অংশে রেলপথের মাধ্যমে পৌঁছানো হয়। ফলে দ্রুত শিল্পের উন্নয়ন ঘটে।

৫. বাজারের বিস্তৃতি ঃ বাজারের বিস্তৃতি ঘটাতে রেলপথের গুরুত্ব যথেষ্ট। কৃষি ও শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার প্রসারে এ পথ সাহায্য করে। কারণ এপথে দেশের বড় বড় বাণিজ্য ও শিল্প কেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে।

৬. শ্রমের গতিশীলতা ঃ রেলপথে দেশে শ্রমের গতি শীলতা বৃদ্ধি করে। এ পথে খুব সূলভে একস্থান হতে অন্য স্থানে শ্রমিকেরা কাজের সন্ধানে যাতায়াত করতে পারে। ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমিক পেতে অসুবিধা হয় না। আবার শ্রমিকদের ও কর্ম নিয়োগের পথ বৃদ্ধি পায়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

৭. দ্রব্যমূল্যের সমতা ঃ দেশের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের সমতা রক্ষার্থে রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম। রেলপথের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষিজ ও শিল্পজাত দ্রব্য অল্প খরচে বিতরণ করা যায়। ফলে কোথাও পণ্যের অভাব থাকে না পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকে।

৮. শহর ও গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ ঃ রেলপথ শহর ও গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ও সাহায্য করে। এ পথের মাধ্যমে শহর ও গ্রামের পণ্য বিনিময়ের সাথে সাথে শহর ও গ্রামের জনসাধারণের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদানের সুযোগ ঘটে।

৯. রাজস্ব আদায় ঃ রেলপথ এ দেশের রাজস্ব আদায়ের অন্যতম প্রধান উৎস। এ খাত হতে সরকার প্রচুর রাজস্ব আদায় করে থাকে।

১০. কর্মসংস্থান ঃ রেলপথে অসংখ্য শ্রমিক ও কর্মকর্তা নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অর্থাৎ রেলপথ কর্মসংস্থানের জন্য একটি উত্তম মাধ্যম।

১১. জরুরী অবস্থার মোকাবেলা ঃ এ ক্ষেত্রে রেলপথের অবদান অবর্ণনীয়। দুর্ভিক্ষ, মহামারি, বন্যা, ঘৃর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি দূর্যোগের সময় রেলপথের মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করা যায়। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

১২. আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ঃ এ ক্ষেত্রেও রেল পথের গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক সময় দেশের মধ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। সেই সময় রেলপথের মাধ্যমে সামরিক, আধাসামরিক ও পুলিশ বাহিনী প্রেরণ করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করা যায়।

অতএব, উপরের আলোচনা হতে বলা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পরিবহণ মাধ্যম হিসাবে রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

শিক্ষা

2 thoughts on “বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা,সড়ক রেল ও নৌপথে কি,অর্থনৈতিক উন্নয়নের রেলপথের ভূমিকা”

Leave a Comment