বাংলাদেশের শিল্পায়নের জন্য আমরা কোন কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে নিতে পারি?,শিল্পায়নে পালাবদলের পথে বাংলাদেশ কোন কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে নিতে পারি?, বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা এবং সামাজিক

ব্যবসায় স্থাপনে একজন উদ্যোক্তার কী কী ধরণের সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে?

উত্তর:

যে কোনো ব্যবসায়ও কোনো একজন ব্যাক্তি বা কয়েকজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। একটি ব্যবসায় স্থাপনের ধারণা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়টি স্থাপন ও সফলভাবে পরিচালনাই ব্যবসায় উদ্যোগ। বিশদভাবে বলতে গেলে, ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বোঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লোকসানের সস্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সাহায্য-সহযােগিতার ধরণ অনুযায়ী বাংলাদেশের শিল্পায়নের জন্য আমরা কোন কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে নিতে পারি?

উত্তর:

শিল্পায়ন এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রযুক্তিকে উৎপাদন পদ্ধতিতে প্ের য়াগ করে উন্নত ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদন, বিপণন এবং আয়ের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা হয়। শিল্পায়নের ফলে মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক ও
অথর্ ৈনতিক জীবনে ব্যাপক পরিবতর্ন সূচিত হয়। বাংলাদেশের আথর্- সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে শিল্পায়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশে শিল্পায়নের গতি বেশ মন্থর। বস্তুত প্রাচীনকাল থেকে প্রাক-ব্রিটিশ
আমল পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশের সমাজ কাঠামো ছিল কৃষিভিত্তিক এবং তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। গ্রামীণ সমাজ কাঠামোর উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র ছিল কৃষি। তাছাড়া ভূমিনির্ভর ও কৃষিভিত্তিক গ্রামগুলো ছিল স্বয়ংসম্পূণর্। ব্রিটিশ
ঔপনিবেশিক শাসক স্যার চার্লস মেটক্যাফ ভারতবর্সের এ গ্রামগুলোকে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রজাতন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন। প্ের ত্যকটি গ্রাম জীবন ধারণের প্ের য়াজনীয় উপকরণ নিজেরাই উৎপন্ন বা প্রস্তুত করত। ব্রিটিশ শাসনের মধ্য দিয়ে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম সম্প্রদায়’ ব্যবস্থা অনেকটা পরিবর্তিত হতে থাকে। এ সম্পর্কে ড. এ.কে নাজমূল করিম তাঁর ঞযব সম্পদ এবং কৃষি হচ্ছে অর্থনীতি। ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে আমাদের সমাজকাঠামোতে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক পরিবর্তন ঘটে। এ পরিবর্তনের ফলে ভারতে আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার অগ্রগতি সাধিত হয়। অর্থনৈতিক সুবিধার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে শিল্প-কল-কারখানা পরিচালনা, কাঁচামালের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ব্রিটিশ পণ্যদ্রব্য সহজে পরিবহণের জন্য ব্রিটিশরা এদেশের অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে। রেলপথ নির্মাণের
মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা করা হয়। বলা যায় যে, ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে রেল যোগাযোগের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে আধুনিক কলকারখানার সংখ্যা বাড়তে থাকে”। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে হুগলি জেলার শ্রীরামপুের প্রথম কাগজের কল স্থাপিত হয়। ১৮৭২-৭৩ সালে বোম্বাই প্ের দশে ১৮টি, বাংলায় ২টি কাপড়ের কল এবং ১৮৮২ সালের মধ্যে ভারত-বাংলায় ২০টি পাটের কল স্থাপিত হয়,
যারমধ্যে ১৮টি স্থাপিত হয়েছিল বাংলাদেশে। বস্তুতপক্ষে এসব শিল্প-কল-কারখানা গড়ে তোলার পিছনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছিল। কারণ, ১৯১৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের কোনো শিল্পনীতি ছিল না।


১৯১৭ সালে ভারতে সর্বপ্রথম শিল্প বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ সরকারের তত্ত্বাবধানে শিল্পায়নের ফলে রপ্তানীমুখী দেশীয় কুটির শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পাকিস্তানী আমলে বাংলাদেশে পাটকলের সম্প্রসারণ ঘটে। যদিও শোষণ, বৈষম্য
এবং অব্যবস্থাপনার কারণে পাট এবং পাটজাত পণ্য রপ্তানী থেকে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান খুব বেশি লাভবান হয়নি। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বাংলাদেশে শিল্পায়নের নতুন যুগের সূচনা হয়। প্রথমদিকে সব কল-কারখানা জাতীয়করণ করা
হলেও পরবর্তীতে বিশেষ করে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমানকে নৃসংশভাবে হত্যার পর এগুলো আবার বেসরকারীকরণ করা হয়। বেসরকারী এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগেও নতুন নতুন অনেক শিল্প-কল-কারখানা প্রতিষ্টিত
হয়। এক্ষেত্রে পোশাক শিল্প, বস্ত্রকল, পাটকল, চিনিকল, চাশিল্প, চামড়াশিল্প, সার কারখানা, প্লাস্টিক, সিরামিক, নির্মাণশিল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের শিল্পায়নে আরো গতি এবং উন্নতি সাধিত হয়

শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ শ্রমশক্তি ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক্স, হিমায়িত খাদ্য, ডেইরি-পোল্ট্রিসহ বিভিন্ন শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করে। সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সফ্টওয়্যার উন্নয়ন, ই-বিজনেস, ই-কমার্স প্রভৃতি শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উšে§াচন করেছে। দেশের জিডিপিতে এখন কৃষি অপেক্ষা শিল্পের অবদান অনেক বেশি। মোট শ্রমশক্তির একটি বড় অংশই শিল্পে নিয়োজিত। তবে বাংলাদেশের শিল্পায়নে কিছুপ্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতা রয়েছে। যোগাযোগ, অবকাঠামোগত দুর্বলতার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কট বিনিয়োগের বড় বাধা বলে চিহ্নিত। এ ছাড়া অব্যবস্থাপনা এবং নানা ধরনের বাহ্যিক প্রভাব ও কর্তৃত্ব শিল্পায়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। দক্ষ শ্রমশক্তি এবং দেশীয় শিল্পকে পৃষ্ঠপোশকতা প্রদানের অভাবও শিল্পায়নের বড় অন্তরায়। আমদানি-রপ্তানীতে বিরাট ভারসাম্যহীনতা, কার্যকর নীতিমালার অভাবও শিল্পায়নকে কঠিন করে তোলে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর হলে বাংলাদেশে শিল্পায়নের গতি এবং মান দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশে উদ্যোক্তা ধারণার উৎস ও সংজ্ঞা (define sources of venture ideas in Bangladesh)
উদ্যোক্তা ধারণার গুরুত্বঃ

একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে সফল করতে চাইলে ব্যবসা সম্পর্কে জানতে হয় নানাবিধ কৌশল। ধারণা থাকতে হয় বর্তমান বাজার, চাহিদা, পণ্য, উপযোগ ও সম্পদ সহ আরও অনেক বিষয়ে। আর এসব বিষয়ে জানতে হলে দরকার প্রচুর পড়াশুনার। সঠিক তথ্য সহকারে উদ্যোক্তা ধারনার উৎস সংক্রান্ত বই বাংলাদেশে তেমন পাওয়া যায় না। কিন্তু এটি হচ্ছে একজন উদ্যোক্তার সফলতার পেছনের মূল চাবিকাঠি। একটি সফল ব্যবসায় বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তনের চাবিকাঠি হলো বাস্তবসম্মত ধারণা, সঠিক জনবলের যোগার ও প্রাথমিক প্রয়োজনীয় মূলধন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে একক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সঠিক শিল্প ধারণার সূত্রপাত করা। যেখান থেকে একজন সম্ভাব্য উদ্যোক্তা একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ধারণা গ্রহণ করতে পারেন তাকে উদ্যোক্তা ধারণার উৎস বা সূত্র বলে। মনে রাখবেন – একটি দুর্বল ও অবাস্তব ব্যবসার ধারণা উদ্যোগের সফলতাকে সীমিত করে। তবে শুধু চলনসই ধারণাই একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ – ধারণা হলো এক ধরণের মূলধন যা একজন মেধাবীর হাতেই সফলতার আলো ছড়ায়।
ধারণা কেন রাখবেন (প্রয়োজনীয়তা)

প্রত্যেক উদ্যোক্তারই জানার স্পৃহা থাকে অসীম। তাই বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নতুন উদ্যোক্তাদের এই ধারণাসমূহের উৎস সম্পর্কে আগ্রহী হতে হবে।নিজেদের উদ্যোগে নতুন ধারণা না থাকলে এখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসায় নতুন কিছু প্রয়োগ করতে পারবেন এবং অন্যেরা তাদের ব্যবসায় যে ধারণা প্রয়োগ করছেন তার সাথে আপনার ধারণা যাচাই করতে পারবেন। মনে রাখবেন – ব্যবসায়িক তখনই যখন উদ্যোক্তাগণের সামনে কতগুলো বাস্তবসম্মত ধারণা থাকে। কারণ এগুলো তাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে এবং যার ফলে ব্যবসাতে আসে সফলতা।
বাংলাদেশে উদ্যোক্তাদের জন্য নানা উৎস রয়েছে যেখান থেকে তারা উদ্যোক্তা সংক্রান্ত ধারণা বা শিল্প ধারণা গ্রহণ করতে পারেন।এসব উৎস দুধরণের হয়ে থাকে।

যেমনঃ
১) আনুষ্ঠানিক (formal)
২) অনানুষ্ঠানিক (Non-formal)

যে সমস্ত আনুষ্ঠানিক উৎস হতে উদ্যোক্তা বা শিল্প সংক্রান্ত ধারণা গ্রহণ করা যাবে তার বর্ণনা নিচে দেওয়া হলোঃ
আনুষ্ঠানিক (formal) উৎস

১) বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়:
দেশের সার্বিক শিল্পোন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপর। দেশের বিনিয়োগ তালিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব এ মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত রয়েছে।

(ক) শিল্পনীতিঃ নতুন শিল্প উদ্যোগ ধারণার এক প্রধান উৎস। এটি সরকারের অগ্রাধিকার সম্বন্ধে ধারণা দেয়। সরকারের শিল্পনীতি ঐ সব শিল্পসমূহকে আর্থিক ও অন্যান্য উৎসাহ প্রদান করে যেগুলো হলোঃ

i) রপ্তানি বৃদ্ধি করে

ii) লাভজনক আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপন্ন করে

iii) দেশীয় উপাদান, কৌশল ও কারিগরি দক্ষতা ব্যাবহার করে ইত্যাদি।

(খ) বিনিয়োগ তফসিলঃ বিনিয়োগ তফসিল একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ধারণার উৎস যেখানে ব্যক্তি মালিকানায় শিল্প স্থাপনের জন্য উন্মুক্ত শিল্পসমূহের তালিকা দেওয়া হয়। এসব বিনিয়োগ তালিকায় বিনিয়োগ ক্ষমতার ব্যাবহার, পরিকল্পনাকালে আর্থিক বরাদ্দ ইত্যাদি বহুবিধ প্রয়োজনীয় তথ্যাদির উল্লেখ থাকে। যেখান থেকে একজন উদ্যোক্তা সহজেই নতুন ব্যবসায় ধারনা পেতে পারেন।

২) শিল্প বিভাগঃ শিল্প মন্ত্রণালয়ের শিল্প বিভাগ ব্যক্তি মালিকানায় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে উৎসাহ প্রদান ও বর্তমান শিল্পসমূহের উন্নয়নে দায়িত্বে নিয়জিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ বিভাগ নতুন শিল্প ধারনা সরবরাহ ছারাও দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ শিল্পের জন্য জমি পাওয়ার পদ্ধতি বিনিয়োগ সহায়ক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য দেয়।

৩) সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও তাদের নীতিমালা সংক্রান্ত দলিল সমূহ:
ব্যবসা ও শিল্পোন্নয়নে সমন্বিত অগ্রগতির জন্য বিশেষ করে সরকারের শিল্পনীতি ও উদ্দেশ্যসমূহের মধ্যে সমন্বয় করার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সরকারের অগ্রাধিকার প্রতিফলিত করে বার্ষিক আমদানি ও রপ্তানি নীতি প্রণয়ন করে থাকে। একইভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় আয় ও ব্যয়ের খাত সমূহ উল্লেখ করে বার্ষিক রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট ঘোষণা করে থাকে। আবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার দলিল সামগ্রিকভাবে সরকারের বৃহত্তর উদ্দেশ্যাবলীর প্রতিফলন ঘটায়। তাই ব্যবসায় নতুন ধারণার সূত্রপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উল্লেখিত নীতিমালা সংক্রান্ত দলিলসমূহ প্রয়োজনীয় অবদান রাখতে পারে।

৪) বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা ( বিএসসিআইসি )
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পসমূহ প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটি গঠিত হয়েছিল। উদ্যোক্তাদেরকে আর্থিক,কারিগরি,ও আইনগত তথ্য সংবলিত শিল্প ধারনা দিয়ে সেবা প্রদান করে থাকে। তাছাড়া উদ্যোক্তাগণ কোন শিল্পে অর্থ বিনিয়োগ করবে এ প্রশ্নের উত্তর দানে সহায়তা করে থাকে। তাই নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি অন্যতম ধারণার উৎস এবং সার্বিক সহযোগী হিসেবে কাজ করবে নিশ্চয়।

৫) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উপদেষ্টা কেন্দ্র ( আই এ সি বি )
বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা বা শিল্প ধারণার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উপদেষ্টা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। কারণ এ কেন্দ্রের কাজই হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্পে বিনিয়োগ সুবিধা বিচার করা। এই কেন্দ্রটি বাস্তবসম্মত অনেক শিল্প ও ব্যবসার ধারণা তৈরি করছে।

৬) বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক (Bangladesh shilpa bank)
বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক একটি উন্নয়ন ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ৩১ এ অক্টোবর এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।শিল্প ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্যাবলীর মধ্যে আছে নতুন ব্যবসা বা শিল্পের জন্য ঋণ প্রদান,শিল্পের উন্নয়ন,আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে ঋণ এবং পরামর্শ সেবা প্রদান করা। তাই নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম।

৭) বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা ( Bangladesh shilpa rin sangstha,BSRS )
শিল্প ঋণ সংস্থা আদেশ ১৯৭২ এর রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১২৮, ১৯৭২ এর ক্ষমতা বলে তৎকালীন পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্রেডিট এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন (PICIC) ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (ICB) এবং ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট লিমিটেড এর সম্পত্তি ও দায় নিয়ে এই ব্যাংক গঠিত হয়।
*) বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা গঠনের উদ্দেশ্য ( objectives )
(ক) শিল্প প্রকল্প মেয়াদি ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সহযোগিতা দান
(খ) ব্যবসা বা শিল্প স্থাপনের জন্য পরামর্শ প্রদান
(গ) বিনিয়োগে উৎসাহ প্রদান
(ঘ) প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানা ধরণের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিল্প স্থাপন করে শিল্পোন্নয়নের ভারসাম্য রক্ষা
(ঙ) দেশি-বিদেশি তহবিল থেকে মূলধন গঠন
বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ( BSB ) এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা ( BSRS ) এর একীভূত ব্যাংক বাংলাদেশ ডেভলাপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ( BDBL ) এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি হতে এবং বিলুপ্ত হয় বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা।
এই সংস্থার তথ্যাদি ঘাঁটলে একজন উদ্যোক্তা তার ব্যবসায় নলেজের চরম উন্নতি সাধন হবে।

৮) বাংলাদেশ পুঁজি বিনিয়োগ সংস্থা ( ICB )
ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (ICB) অধ্যাদেশ নং ৪০, ১৯৭৬ বলে এ প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়।দেশের দ্রুত শিল্পোন্নয়নের এবং সুষম পুঁজি বাজার বিশেষ করে সিকিউরিটি বাজার উন্নয়নে সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
*) বাংলাদেশ পুঁজি বিনিয়োগ সংস্থা ( ICB ) এর উদ্দেশ্যঃ
(ক) বিনিয়োগ ক্ষেত্র সম্প্রসারণ ও উৎসাহ প্রদান
(খ) পুঁজি বাজার উন্নয়নে সহায়তা
(গ) সঞ্চয় বৃদ্ধি ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা
(ঘ) বিনিয়োগ সংক্রান্ত সহায়তা দান করা
এখান থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায় সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে যা থেকে একজন উদ্যোক্তা তার ব্যবসায় সফলতা সহজেই আনয়ন করতে পারেন।

৯) রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ( nationalized commercial banks )
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ক্ষুদ্র শিল্পের অর্থ সংস্থানের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এসব ব্যাংক সমূহ যেমনঃ সোনালী ব্যাংক,অগ্রণী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংক স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী ঋণ প্রদান করে। এরা শেয়ার ডিবেঞ্চার সিকিউরিটি ক্রয় করে ও মূলধন সরবরাহ নিশ্চিত করে। আবার কখনো কখনো দেশের স্বার্থে দীর্ঘমেয়াদী ঋণও প্রদান করে থাকে।
এসব ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ রাখলে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সহজেই জানা যায়। যেখান থেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এই মুহূর্তে আপনার কি ধরণের পলিসি নিয়ে ব্যবসায় নামা উচিৎ।

১০) বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ( Bangladesh export promotion bureau )
রপ্তানি বৃদ্ধি এবং রপ্তানি বাণিজ্য উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো গঠিত হয়। বৈদেশিক বাণিজ্যে অনুকূল ভারসাম্য আনয়ন তথ্য বিশ্ববাজারে স্বদেশী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করার লক্ষ্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে।
(ক) রপ্তানি নীতি প্রণয়ন ও কর্মসূচি নির্ধারণ
(খ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান ও রপ্তানিকারকদের তথ্য সরবরাহ করা
(গ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করা
(ঘ) রপ্তানি পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ,ডিজাইন ও মোড়কীকরণে উন্নয়নে সহায়তা দান করা
(ঙ) রপ্তানি ও আমদানিকারীর মধ্যস্থ বিরোধ নিষ্পত্তি করা
(চ) রাষ্ট্রপতির রপ্তানি ট্রফি প্রদান।
এসব থেকে রপ্তানি উন্নয়ন কৌশল হিসেবেই নতুন নতুন ব্যবসায় বিনিয়োগ ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়। তাছাড়া দেশের এবং বিদেশের আমদানি ও রপ্তানি বিষয়ক সকল তথ্য এখানে সহজেই পাওয়ায় দেশের ব্যবসায় বাজার, কোন পণ্যের চাহিদা বিশ্ববাজারে বর্তমানে বেশি আছে এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যায় যা একজন এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসায় আগ্রহী উদ্যোক্তার জন্য খুবই কার্যকরী।

১১) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ( Bangladesh Krishi bank )
১৯৭৩ সনের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অধ্যাদেশ ২৭ বলে এই ব্যাংক গঠিত হয়। এটি তৎকালীন পাকিস্তান কৃষি ব্যাংকের পূর্ব পাকিস্তান কার্যালয় এবং শাখার সম্পত্তি ও দায় নিয়ে যাত্রা আরম্ভ করে। তারপর এটি কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন সহায়ক কার্যাবলী গ্রহণ করে থাকে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment