বাংলা আনন্দপাঠ বইয়ের ‘আদু ভাই’ গল্পে মার্বেল পাথরের উল্লেখ আছে

গোলাকৃতির ছোট ছোট মার্বেল আর এমনি মার্বেল পাথর একই মনে হলেও তারা কোনোদিক দিয়েই একরকম নয় যেটা আগে আমি মনে করতাম। খেলার মার্বেল হলো কৃত্রিম যেখানে মার্বেল পাথর সম্পূর্ণই প্রাকৃতিক।

মার্বেল খেলার ব্যবহৃত মার্বেল হলো কাচের তৈরি। সাধারণত বিভিন্ন রঙের কাচ গলিয়ে একত্রে মিশ্রিত করে তারপর ছাঁচে ঢেলে এই গোল গোল রঙ-বেরঙের মার্বেল তৈরি করা হয়। এছাড়া আরো নানা পদ্ধতি অবলম্বনে বিভিন্ন ধরনের মার্বেল তৈরি করা হয়ে থাকে।

মার্বেল পাথর হলো এক ধরনের ক্রিসটালাইন মেটামরফিক পাথর, যা বহুযুগ ধরে মাটির তলায় তৈরি হয়। খেলার মার্বেল আর মার্বেল পাথর এক জিনিস নয়। সাধারণত খেলার মার্বেল হয় কাচের, বিভিন্ন রঙের কাচ গলিয়ে বানানো হয়। অন্যদিকে মার্বেল পাথর হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি।

গ্রিক শব্দ মারমারোজ থেকে মার্বেল কথার উত্পত্তি, যার অর্থ উজ্জ্বল পাথর। এই পাথর এক ধরনের রূপান্তরিত শিলা। আগ্নেয় পাললিক শিলা অনেক তাপ ও চাপে নতুন যে শিলার গঠন করে, তাকেই বলে রূপান্তরিত শিলা। একই রকম রূপান্তরিত শিলার আরেকটি উদাহরণ হলো স্লেট।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মার্বেল পাথরের রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম কার্বনেট। শামুক ও ঝিনুকের খোলসও ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে তৈরি। এর সংকেত CaCO3। মার্বেল সাধারণত হালকা রঙের একটি শিলা। যখন এই পাথর বিশুদ্ধ থাকে, তখন সাদা রঙের হয়। বিভিন্ন খনিজ উপাদানের মিশ্রণের ফলে এর রং নীল, ধূসর, গোলাপি, হলুদ, সবুজ বা কালো রঙের হতে পারে।

যে সব দেশে মার্বেল পাথর বেশি পাওয়া যায় সেসব দেশগুলোর মধ্যে ইতালি, চীন, ভারত ও স্পেন উল্লেখযোগ্য। অতীতে যখন টাইলস ছিল না, তখন বাড়িতে এবং বড় স্থাপত্যে মার্বেলের ব্যবহার অনেক বেশি ছিল। প্রাচীনকালে মার্বেল ভাস্কর্য নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল। ভাস্কর্য নির্মাণে সাদা মার্বেল পাথরের কদর সবচেয়ে বেশি। গ্রিক ও রোমানদের অনেক দেব-দেবী ও ফারাওদের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে মার্বেল পাথর দিয়ে। ভারতের উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত রাজকীয় সমাধি তাজমহল নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মাকরানা নামের হোয়াইট মার্বেল। এ ছাড়া সৌদি আরবে অবস্থিত  মসজিদুল হারামের অভ্যন্তরে মূল কাবা শরিফের চারপাশে তাওয়াফ চত্বরের দেড় শ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে আছে মার্বেল পাথরের টাইলস।

মোজাইক তৈরিতেও মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়। কংক্রিটের ফ্লোরের ওপর মার্বেল পাথরকুচি (৬ মিমির ছোট), সিমেন্ট, সাদা পাউডার, পানি নিরোধক এজেন্ট ইত্যাদি আনুপাতিক হারে মিশিয়ে যে ফ্লোর ফিনিশ তৈরি করা হয় তাকে মোজাইক বলে। মার্বেল পাথর অতিরিক্ত আলো ও তাপ শোষণ করতে পারে। তাই শোবারঘরে মার্বেল পাথরের টাইলস ব্যবহার করলে অতিরিক্ত গরম থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।                

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment