বাচ্চাদের ব্যায়াম, সুস্থ থাকতে বাচ্চাদেরও নিয়মিত ব্যায়াম
বাড়ন্ত বাচ্চাদের জন্য শারীরিক গতিবিধি অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু মোবাইলমুখো হয়ে বাচ্চারা এখন অধিকাংশ সময় ঠায় এক জায়গায় বসে থাকে। অনলাইন খেলাধুলোয় মশগুল বাচ্চারা এখন মাঠে-ঘাটে গিয়ে খেলার তাগিদ অনুভব করে না। আবার অনলাইন ক্লাস চলার কারণে স্কুলে দৌড়ঝাপ করারও সুযোগও আপাতত আর নেই। এর ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হচ্ছে। তাই সন্তানকে নিয়মিত ব্যায়ামে অভ্যস্ত করুন।
একাধিক সমীক্ষা অনুযায়ী, যে বাচ্চাদের শারীরিক গতিবিধি কম, তাঁদের পরবর্তী কালে স্থূলতা, ডায়বিটিজ, হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই অল্পবয়স থেকেই সুস্থ ও ফিট থাকার বিষয়টি তাদের মনে ঢুকিয়ে দিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর তো সুস্থ থাকবেই, পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মান ও একাগ্রতাও বৃদ্ধি পাবে।
শীতে সুস্থ থাকার কিছু উপায়
নিয়মিত ব্যায়ামের উপকারিতা
১. ফিটনেসে উন্নতি
২. একাগ্রতা বৃদ্ধি
৩. শিক্ষায় মনোনিবেশ
৪. সুস্থ হৃদযন্ত্র, মজবুত হাড় এবং সুস্থ মাংসপেশীর নির্মাণ
৫. স্বাস্থ্যোন্নতি
৬. আত্মসম্মান বোধ জাগৃত হওয়া
৭. অবসাদ কম হয়
৮. রাতে ভালো ঘুম আসে
সুস্থ থাকতে প্রতিদিন খান কলা এবং জেনে নিন কলার অজানা উপকারিতা
বাচ্চাদের কী ধরনের ব্যায়াম করা উচিত
বিশেষজ্ঞদের মতে, জিম বা কঠিন ব্যায়াম বাচ্চাদের করা উচিত নয়। খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা, সাঁতার কাটা, ডান্স, জুডো-ক্যারাটে ইত্যাদিতে বাচ্চাদের ভর্তি করা উচিত। প্রতিদিন ১ ঘণ্টা খেলাধুলা করলে তা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো ।সমস্যা হলো বাচ্চারা সহজে ব্যায়াম করতে চায় না। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে তাদের ব্যায়ামে অভ্যস্ত করানো যায়। এখানে বাচ্চাদের ব্যায়াম করানোর কিছু টিপস দেওয়া রইল—
দু-তিন বছরের শিশুর ব্যায়াম
শিশু কী ধরনের ব্যায়াম করবে তা বয়স এবং শিশুর ইচ্ছার ওপরই অনেকটা নির্ভর করে। এই বয়সের বাচ্চারা সাধারণত দৌড়ানো এবং কোনো কিছু ছুড়ে মারার প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে থাকে। এসব শারীরিক শ্রমের জন্য তাদের থাকে অফুরন্ত শক্তি। সে কারণে দিনে দেড় ঘণ্টার মতো তারা অনুশীলন করতে পারে। তবে তাদের জন্য অনুশীলনের সর্বোত্তম পরিকল্পনাটি এমনই হওয়া উচিত-এক ঘণ্টা তারা ইচ্ছামতোই অনুশীলন করবে। অনেকটা যার যা খুশি। আর আধা ঘণ্টা বাঁধাধরা নিয়ম মেনে। এক ঘণ্টার অনুশীলনে পার্ক বা খেলার জায়গায় হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। মাঝে মাঝে হালকা দৌড়ও। অন্য সময়টুকু তাদের প্রিয় খেলনা নিয়ে খেলতে দেওয়া যেতে পারে। এমনকি লাফানো যেতে পারে ব্যাঙলাফ। (চলবে)
ওজন বাড়ানোর ব্যায়াম
■ অ্যারোবিক্স এক ধরণের ব্যায়াম। এর ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা দূর হয়। পাশাপাশি কোষে অক্সিজেন সঞ্চারে সাহায্য করে। বাড়িতেও অ্যারোবিক্স করা যেতে পারে এবং মা-বাবা এতে বাচ্চাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বাস্কেট বল খেলা, সাঁতার কাটা, দৌড়নো, সাইকেল চালানোর মতো ক্রিয়াকলাপ করতে পারেন। দৌড়ঝাপ ইত্যাদি যে কোনও বাচ্চাই আনন্দের সঙ্গে করে থাকে। তাই প্রথম প্রথম এমন কিছু ব্যায়াম দিয়ে শুরু করাই ভালো।
■ দুই হাত ও দুই হাঁটু মাটিতে রেখে হামাগুড়ি দেওয়ার অবস্থায় থাকতে হবে। এবার ডান হাত সামনে তুলে বাঁ পা পেছনের দিকে শূন্যে টানটান করাতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যে এ সময় পিঠ যেন সোজা থাকে। শরীরটা যেন এদিক-ওদিক বেশি না দোলে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড করার পর হাত ও পা বদল করতে হবে। অর্থাৎ এবার বাঁ হাত সামনে তুলে ডান পা পেছনের দিকে টানটান করতে হবে। এভাবে কয়েকবার করাতে হবে। এ ব্যায়ামে পিঠ ও কোমরের পেশি সুদৃঢ় হবে। তা ছাড়া ভারী ব্যাগ বহন, ঝুঁকে পড়াশোনা করার ফলে কোমরে ব্যথা হওয়ার শঙ্কা থেকে তাদের দূরে রাখবে।
six pack বানানোর ব্যায়াম
■ স্কোয়াটিং খুবই কার্যকর একটি ব্যায়াম। প্রথমে শুরু করুন চেয়ারে বসা এবং ওঠা দিয়ে। এভাবে ১০ বার করুন। শিশু দিনে দুবার এ ব্যায়াম করবে। এরপর ধীরে ধীরে চেয়ার সরিয়ে দিন। এ ক্ষেত্রে চেয়ার ছাড়াই একইভাবে হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধ বসার ও ওঠার ভঙ্গি করবে শিশু। দিনের কিছুটা সময় টয়লেট সিটিংয়ের চেষ্টাও করতে হবে।
■ শিশুকে যত বেশি বাইরে খেলাধুলায় আগ্রহী করা যায়, ততই ভালো। যেমন বল ছুড়ে দেওয়া, বাস্কেটে বল ছুড়তে বলা। এই একটি কাজই বারবার করবে। প্রতিদিন একই নিয়মে একটি কাজ করলে শিশুর মনোযোগ যেমন বাড়বে, তেমনি মাংসপেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে শিশু আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং সামাজিকভাবে অন্যদের সঙ্গে মিশতে সহজ হবে।
পরিশেষে : বাচ্চাদের ব্যায়াম, সুস্থ থাকতে বাচ্চাদেরও নিয়মিত ব্যায়াম
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট
স্বাস্থ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ঔষধি গুন গোপন সমস্যা রূপচর্চা রোগ প্রতিরোধ