বাতের ব্যথা নিয়েই যাদের নিত্য বসবাস, তাদের জন্য লেখাটি খুব কাজের হতে পারে। যারা দীর্ঘদিন বাতের ব্যথায় ভুগছেন–তারা অনেকেই বাতের ব্যথার উপশমের নানা উপায় খোঁজেন। এসব উপশমের উপায়গুলো অনেক সময় অপচিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসাও হয়ে থাকে।
বাতের ব্যথা উপশমে মূলত কাজে আসে বাতের ওষুধ এবং আমাদের জীবনযাত্রার কিছু বাজে অভ্যাস পরিবর্তন। এই রোগের সরাসরি কোনো চিকিৎসা নেই।
তাই শুধুমাত্র ব্যথার ওষুধের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বরং মনোযোগ দিতে হবে আমাদের লাইফস্টাইলে। বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু ঘরোয়া সমাধান নিয়ে এবার আলোচনা করা যাক।
বাতের ব্যথার ঘরোয়া সমাধান, বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি চাইছেন?, বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া টিপস
১। ব্যায়াম:
হালকা ব্যায়াম আপনার শরীরের জয়েন্টগুলোর উন্নতি করতে পারে। এছাড়াও ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশি শক্তিশালী হয়। ফলে শরীরের ওজন পেশিগুলো বহন করে আপনার গিরার ওপর থেকে কিছু চাপ কমাতে পারে।
আরো পড়ুন: পুরুষাঙ্গের বড় করার ব্যায়াম
২। পর্যাপ্ত বিশ্রাম:
বাতের ব্যথা শুরু হলে আপনার স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বিশ্রামের প্রয়োজন হতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার ব্যথার পাশাপাশি ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করবে।
৩। ঠান্ডা কিংবা গরম ছ্যাঁক দেওয়া:
আইস প্যাক দিয়ে ঠান্ডা চাপ দিলে প্রদাহ এবং ব্যথা কমতে সাহায্য করতে পারে। ব্যথার কারণে পেশিতে যদি খিঁচুনি হয় তবে ঠান্ডা চাপ দেওয়া কার্যকর। অন্যদিকে হালকা গরম পানিতে গোসল বা ব্যথাস্থানে গরম ছ্যাঁক দিলে ব্যথার সাময়িক উপশম পাওয়া যায়। গরম ছেঁক দেওয়া–হাত পায়ের গিরাগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
৪। সহায়ক যন্ত্রপাতি ব্যবহার:
স্প্লিন্ট এবং ব্রেসের মতো কিছু ডিভাইস আপনার জয়েন্টগুলোকে বিশ্রামে রাখতে পারে। ফলে এগুলোর সাহায্যে বাতের ব্যথাও কমতে পারে। তবে এগুলো একটানা পরে থাকলে “ফ্রোজেন জয়েন্ট” হতে পারে, তাই এগুলো ব্যবহারের মাঝে বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যথা অবস্থায় হাঁটাচলা বা কাজ করার জন্য প্রয়োজনে হাতের লাঠি বা ক্র্যাচ ব্যবহার করতে পারেন। এতে ব্যথার স্থানে চাপ কম পড়বে।
আরো পড়ুন: পায়খানা রাস্তায় সহবাস করলে কি হয়?,
আমাদের জীবনযাত্রার কিছু অভ্যাস পালটালেই বাতের ব্যথা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এছাড়াও প্রয়োজনে বাতের ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
১. আদা চা : ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। চিন্তা নেই। পানিতে আদা কুচি, চা পাতা দিয়ে ১৫ মিনিট ধরে ফুটিয়ে সেই চা পান করুন। দুধ দিয়েও আদা চা করে খেতে পারেন।সাময়িক ভাবে ব্যথার থেকে রেহাই পাবেন। এ ক্ষেত্রে জিনজার টি-ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন।
২. জাঙ্ক ফুড একদম নয় : যে কোন রকম ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড বা প্যাকেট জাত খাবার এড়িয়ে চলুন। সম্প্রতি এক সুইডিস গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা মশলাদার খাবার ছেড়ে বেশি পরিমাণে টাটকা সবজি, ফলমূল, মাছ, অলিভ তেল খান, তাদের বাত হওয়ার প্রবণতা অনেক কম।
আরো পড়ুন: মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়
৩. ঘরোয়া মিশ্রণ : ব্যথা কমাতে ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন একটা সহজ মিশ্রণ। কয়েক চামচ মরিচ গুড়োর সঙ্গে ২-৩ চামচ অলিভ তেল। এটা অনেক প্রাচীন দেশজ পদ্ধতি। এই মিশ্রণ লাগানোর পর প্রথমে খুব জ্বালা হবে, কিন্তু ধীরে ধীরে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা অনেক কমে যাবে।
৪. নিজের হাতে বাসন ধোবেন : হাতের ব্যথায় নাকাল হচ্ছেন? আজ থেকেই নিজের হাতে বাসন ধুতে শুরু করুন। অদ্ভুত লাগলেও, এই পদ্ধতিতে আপনার হাতের ব্যায়াম হবে। আরও ভাল হয় যদি, উষ্ণ গরম পানিতে এই কাজ করেন। এতে হাতের জড়তা অনেক কেটে যাবে।
আরো পড়ুন: সন্তান জন্মদানের পর সহবাস
৫. সাঁতার কাটুন : বাতের ব্যথায় সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম সাঁতার।পানির মধ্যে ভারশূন্যতা পেশীর চাপ কমিয়ে দেয়। তাইওয়ানের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাঁতার হাঁটু এবং নিতম্বের জোর বাড়ায়। শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্যথা অনেক কমিয়ে দেয়।
৬. গ্রিন টি : কেস ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে চার কাপ গ্রিন টি বাতের ব্যথা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। চায়ের মধ্যে রয়েছে, পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা ব্যথা ও পেশি বাত, অস্টিওআর্থারাইটিস কমাতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: মাথা ব্যথার দোয়া,মাথা ব্যথা দূর করার দোয়া
৭. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড : রুই, টুনা, স্যামন মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই ফ্যাটি অ্যাসিড পেশির শক্তি বাড়ায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, সপ্তাহে খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণ টাটকা মাছ রাখুন। এতে পেশি ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমবে।
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট