বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয় সমূহ আলোচনা কর,বোর্ডের সংরক্ষিত পরিধি বর্ণনা কর
বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয়সমূহ (Reserved Matters of the Board) বলতে বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের জন্য নির্ধারিত কিছু বিশেষ বিষয়কে বোঝায়, যেগুলোর ওপর বোর্ডের সরাসরি অনুমোদন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সংরক্ষিত থাকে। এই বিষয়গুলো সাধারণত কোম্পানির মূলনীতি, কৌশলগত সিদ্ধান্ত, এবং বড় আর্থিক ও নীতিগত বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকে।
বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয়সমূহ:
১. কৌশলগত পরিকল্পনা এবং নীতি নির্ধারণ:
- কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ।
- ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ বা নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত।
- কোম্পানির ভিশন, মিশন ও কোর ভ্যালু নির্ধারণ।
২. আর্থিক বিষয়াবলী:
- বার্ষিক বাজেট অনুমোদন এবং আর্থিক পরিকল্পনা।
- বড় বিনিয়োগ বা অর্থায়নের সিদ্ধান্ত।
- লোন গ্রহণ বা প্রধান আর্থিক লেনদেনের অনুমোদন।
- শেয়ার ইস্যু, বোনাস শেয়ার, এবং ডিভিডেন্ড প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত।
৩. মানবসম্পদ এবং নির্বাহী নিয়োগ:
- ব্যবস্থাপনা পরিচালক (Managing Director) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) নিয়োগ, বেতন কাঠামো এবং তাদের কাজের পরিধি নির্ধারণ।
- শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা অনুমোদন।
- কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদ নীতি অনুমোদন।
৪. অধিগ্রহণ এবং একীভবন:
- নতুন কোম্পানি অধিগ্রহণ বা একীভবনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত।
- সম্পত্তি বিক্রি, বন্ধক রাখা বা অন্য কোনো বড় আর্থিক চুক্তি।
৫. গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি অনুমোদন:
- বড় আর্থিক বা কৌশলগত চুক্তি অনুমোদন।
- অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সঙ্গে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (MoU) স্বাক্ষর।
৬. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ:
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল নির্ধারণ।
- বড় আর্থিক বা কৌশলগত ঝুঁকি অনুমোদন বা পর্যালোচনা।
- অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং নিরীক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ।
৭. আইনি এবং নিয়ন্ত্রক বিষয়ে সিদ্ধান্ত:
- গুরুত্বপূর্ণ মামলা-মোকদ্দমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত।
- কোম্পানির গোপনীয়তা, করপোরেট গভর্ন্যান্স এবং আইন মেনে চলার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা।
৮. ডিরেক্টরদের দায়িত্ব এবং আচরণ:
- বোর্ডের সদস্যদের কাজের পরিধি এবং তাদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন।
- বোর্ড সদস্য বা পরিচালকদের স্বার্থসংঘাত (Conflict of Interest) নিরসন।
৯. শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পর্ক:
- বার্ষিক সাধারণ সভা (AGM) বা বিশেষ সাধারণ সভা (EGM) আহ্বান।
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া।
১০. সংস্থার বন্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত:
- কোম্পানি লিকুইডেশন বা ব্যবসা বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
- সংশ্লিষ্ট দায় ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা।
সংরক্ষিত বিষয়গুলোর বৈশিষ্ট্য:
- বোর্ডের অনুমোদন আবশ্যক: সংরক্ষিত বিষয়গুলিতে পরিচালকদের সম্মতি বা অনুমোদন ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
- কোম্পানির স্থায়িত্ব নিশ্চিত: এই বিষয়গুলো সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো কোম্পানির স্থায়িত্ব এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করা।
- আইন এবং নিয়ন্ত্রক মান মেনে চলা: এই বিষয়গুলোতে বোর্ড নিশ্চিত করে যে কোম্পানি সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা অনুসরণ করছে।
বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয়সমূহ একটি প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য অপরিহার্য এবং এগুলো প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত দিকনির্দেশনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
উপসংহার : বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয় সমূহ আলোচনা কর,বোর্ডের সংরক্ষিত পরিধি বর্ণনা কর
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
আর্টিকেলের শেষ কথাঃ বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয় সমূহ আলোচনা কর,বোর্ডের সংরক্ষিত পরিধি বর্ণনা কর
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন
আরো পড়ুন:
- বোর্ডের সংরক্ষিত বিষয় সমূহ আলোচনা কর,বোর্ডের সংরক্ষিত পরিধি বর্ণনা কর
- ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের পদ্ধতি আলোচনা কর
- কারা কোম্পানির সদস্য হতে পারবে এবং কারা পারবে না
- একস্তর ও দ্বিস্তর বিশিষ্ট পর্ষদ কি আলোচনা করো
- ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাকে বলে, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রধান দায়িত্ব