বিষয়:মদ্যপান করলে কি কমে যায় শুক্রাণু?, মদ খেলে কি কমে যায় শুক্রাণু?,ধূমপান করলে কি কমে যায় বীর্য, অ্যালকোহল কি কমে যায় শুক্রাণু?
সুস্থ দেহের জন্য আমাদের প্রতিদিনের খাবার, খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাপন পদ্ধতি কিন্তু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কী খাচ্ছেন, কতটা পরিমাণ খাচ্ছেন, তার উপরে আপনার সুস্থতার পুরোটাই নির্ভর করে।
পুরুষদের শারীরিক গঠন, পেশি ও হাড়ের দৃঢ়তা, সুস্থতা, অনুভূতির প্রকাশের মতো বিষয়গুলো। কিন্তু মূলত নির্ভর করে টেস্টোস্টেরন নামের এক হরমোনের উপরে। এই হরমোনই সুস্থ শুক্রাণুর বিকাশ ঘটায়।
কিন্তু, এই হরমোনের মাত্রায় কোনো রকমের গোলোযোগ দেখা দিলে সেখান থেকে জন্ম নেয় গুরুতর সমস্যার। অনিয়মিত জীবনযাত্রা এবং অস্বাস্থ্যকর ডায়েট এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। তার উপরে কর্মজীবনের অসম্ভব স্ট্রেস। এই মুহূর্তে সুস্থ থাকাটাই কিন্তু একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ভুল ডায়েটের কারণেই আমাদের শরীরে একাধিক রোগ বাসা বাঁধে। অনিয়মিত জীবনযাত্রা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার দাবার পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি ঘটাতে পারে। এরফলে সময়ের আগেই কমে যেতে পারে শুক্রাণুর সংখ্যা। কী কী খেলে প্রভাব পড়ে টেস্টোস্টেরনে, আসুন জেনে নেই।
২০২১ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, যে সমস্ত পুরুষ পেস্ট্রি, কিছু বিশেষ ধরনের পাউরুটি, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, পিৎজার মতো রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বেশি খান, তাঁদের শরীরে মোট টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায়।
এছাড়া, কুকিজ, কেক, মাখন ইত্যাদির মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে। এছাড়া, ট্রান্স ফ্যাট, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবারও এক্ষেত্রে বর্জনীয়।
বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া কেক, কুকিজ, পাইয়ের মতো বেকড ফুড, মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন বা অন্যান্য ফ্রায়েড খাবার, মার্জারিন, এই সবের মধ্যেই ট্রান্স ফ্যাট থাকে।
কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সয়-বেসড ফুড, যেমন, সয়মিল্ক, সয়নাটস, স্প্রাউট ইত্যাদি খাবারও টেস্টোস্টেরন কমায়।
পেপারমিন্ট বা মিন্ট জাতীয় খাবার পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে বলে কিছু কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে। সেই কারণে অতিরিক্ত পুদিনা খাওয়াও পুরুষদের পক্ষে ঠিক নয় বলে জানান অনেকেই।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অল্প মদ্যপানে বিশেষ ক্ষতিবৃদ্ধি নেই। কিন্তু, যারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত মদ্যপান করেন তাদের শরীরে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম টেস্টোস্টেরন থাকে। এরফলে তাদের শুক্রাণুর সংখ্যাও কম হয়।
২০০৪ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩০-৪০ গ্রাম মদ্যপান তিন সপ্তাহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ৬.৮ শতাংশ কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত সোডা, কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়াও পুরুষদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত বাইরের ভাজা খাবার, অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপানের ফলে স্থূলতাও বাড়ে। আর ওজন বাড়লে তা শরীরের হরমোনের উপরেও প্রভাব ফেলে। এরফলেও পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায় এবং পাশাপাশি শুক্রাণুর সংখ্যাও কমে।