মহিলারাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ?, মহিলাদের ঈদের নামাজে উপস্থিত থাকার গুরুত্ব , মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, মহিলাদের ঈদের নামাজ জামাতে পড়া

আজকের বিষয়: মহিলারাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ?, মহিলাদের ঈদের নামাজে উপস্থিত থাকার গুরুত্ব , মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, মহিলাদের ঈদের নামাজ জামাতে পড়া, মহিলাদের ঈদ ও অন্যান্য নামায জামাতে পড়া জরুরী মাসাইল,মহিলারা জামাত করে ঈদের নামাজ পড়তে পারবে

হিজরী দ্বিতীয় বর্ষে যখন ঈদের নামায পড়ার বিধান নাযিল হয়, তখন মুসলমানদের জামাত ও তাদের সংখ্যাধিক্য প্রকাশ করার জন্য হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে মহিলাদেরও উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এই মর্মে হযরত উম্মে আতিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন আমাদেরকে বের হওয়ার আদেশ দেওয়া হতো, আমরা কুমারী মেয়েদেরকে, এমনকি ঋতুবতী মহিলাদেরকেও ঘর থেকে বের করতাম।

অতঃপর পুরুষদের পিছেনে থেকে তাদের তাকবীরের সাথে সাথে তাকবীর পড়তাম এবং তাদের দোয়ার সাথে সাথে আমরাও ঐ দিনের বরকত ও পবিত্রতা লাভের দোয়া করতাম।’, (সহিহ বুখারী, হাদীস: ৯৭১)।

এ হাদীস এবং অন্যান্য আরও হাদীস শরীফে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, ঋতুবতী মহিলাগণও ঈদগাহে উপস্থিত হতো। অথচ শরীয়তে ঋতুবতী মহিলাদের জন্য নামায পড়া সম্পূর্ণ হারাম। সুতরাং তাদের ঈদগাহে বা জামাতে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি যদি শুধুমাত্র নামাযের জন্য হতো, তবে ঋতুবতী মহিলাগণ ঈদগাহে উপস্থিত হতোনা। মূলতঃ প্রথম যুগে নামাযসহ সকল অনুষ্ঠানাদিতে মহিলাদের উপস্থিত হওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানদের জনসংখ্যা ও জনশক্তি বৃদ্ধি করা এবং তালীম গ্রহন করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিত্যনতুন আদেশ নিষেধ নাযিল হতো তা যেন পুরুষ মহিলা সকলে সমভাবে জানতে পারে সে কারণে তাদেরও উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ছিল।

এপ্রসংঙ্গে লক্ষণীয়, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে মহিলাদেরও যথারীতি মসজিদে এসে জামাতের মাধ্যমে নামায পড়ার ব্যবস্থা ছিল। তখন প্রথমে পুরুষ এরপর বাচ্চা ছেলেরা ও এরপর মহিলারা নামায পড়তে দাঁড়াতেন। পরবর্তীতে পর্দার হুকুম নাযিল হয় এবং মহিলাদের জামাতে আসতে নিরূৎসাহিত করা হয়। তাই দেখা যায় রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর দাসীদের মসজিদে আসতে বাঁধা দিওনা তবে তাদের জন্য নিজ ঘর বাড়িই উত্তম স্থান’, (আবু দাউদ, হাদীস: ৫৬৭)।

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘হে মহিলারা! তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান কর’, অর্থাৎ পর্দায় থাক। অতঃপর এক হাদীসে রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মহিলাদের জন্য ঘরের আঙ্গিনায় নামায আদায়ের চেয়ে তার গৃহে নামায আদায় করা উত্তম। আর নারীদের জন্য গৃহের অন্য কোন স্থানে নামায আদায়ের চেয়ে তার গোপন কামরায় নামায আদায় করা অধিক উত্তম।’, (আবু দাউদ, হাদীস: ৫৭০)।

মহিলাদের আগমনে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে তা প্রতিরোধ করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশ জারী হয় যে, কোন মহিলা মসজিদে আসতে চাইলে সে যেন সুগন্ধির নিকটেও না যায়। অপর এক নিদের্শে বলা হয়, যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করেছে সে যেন আমাদের সাথে এশার নামায না পড়ে, (সহিহ মুসলিম, হাদীস :৪৪৩ ও ৪৪৪, আবু দাউদ, হাদীস: ৫৬৫)।

পরবর্তী সময়ে হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফতকালে পর্দার গুরুত্ব ও মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার উৎসাহ ও ফদ্বীলতপূর্ণ হাদীস শরীফের দিকে লক্ষ্য রেখে আমীরুল মো’মেনীন হযরত ওমর (রাঃ) ইজতেহাদ করতঃ মহিলাদেরকে মসজিদে এসে জামাতে নামায পড়তে নিষেধ করে দেন। তখন তাতে কোন ছাহাবীই আপত্তি করেননি। এতে প্রমাণিত হয় যে, ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এই নিষেধাজ্ঞায় সম্পূর্ণ একমত ছিলেন। মহিলারা হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন, তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘যদি হুযুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের এ অবস্থায় পেতেন, তবে অবশ্যই তিনিও তোমাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করতেন।’, (সহিহ বুখারী, হাদীস: ৮৬৯, মুসলিম, হাদীস: ৪৪৫, আবূ দাউদ, হাদীস: ৫৬৯)।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও দেখা যায় ছাহাবীগণের অনেকেই মহিলাদের মসজিদে আসার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতির আলোকে হযরত উরওয়া (রহ:), হযরত কাছিম (রহ:), হযরত ইব্রাহীম নাখয়ী (রহ:) প্রমুখ বিশিষ্ট তাবিঈ নিষেধের পক্ষে চলে যান। ইমাম ও মুজতাহিদগণ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কোন কোন নামাযে আসতে মত প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে শুধু বয়স্কা বৃদ্ধা মহিলাদের জন্য অনুমতি ব্যক্ত করেন। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পরবর্তী উলামায়ে কেরাম সকল মহিলাদের জন্য সকল নামাযে আসার নিষেধ বার্তা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখিত অবস্থা ও সিদ্ধান্তের আলোকে উলামায়ে কেরাম মত প্রকাশ করেছেন যে, মহিলাদের জন্য ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। উপরন্তু ঈদের দিনে মহিলারা অলংকারাবৃতা ও সুসজ্জিতা হয়ে থাকবে, তাই তাতে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা বিদ্যমান। তাই মহিলাদের ঈদের জামাতে শামিল হওয়ার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে তা থেকে নিরূৎসাহিত করাকেই উত্তম বলে অভিজ্ঞ আলিম সমাজ অভিমত ব্যক্ত করেছেন, (ফাতওয়া ও মাছাইল ৩য় খ: ৪০২।)

গায়াতুল আওতার কিতাবের মর্মে জানা যায় যে, পরবর্তী যুগের উলামাগণ স্ত্রীলোকের জামাতে হাজির হতে মাকরূহে তাহরীমীর দলীল পেশ করেছেন। চাই ঈদের জামাত হোক বা জুম্মার জামাত হোক। বৃদ্ধা স্ত্রীলোকেরও ঐ হুকুম। কিন্তু বৃদ্ধা স্ত্রীলোক সম্বন্ধে কেহ কেহ মতভেদ করে থাকলেও দুররুল মুখতার কিতাবে আছে বর্তমান যামানায় ফিৎনা প্রকাশ পাওয়ার দরূন বৃদ্ধা স্ত্রীলোকদেরও জামাতে যাওয়া মাকরূহে তাহরীমী।

হযরত উম্মে হুমাইদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা একবার হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খিদমতে হাজির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার সাথে নামায পড়ার আমার খুবই ইচ্ছে হয়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, আমি জানি, আপনি আমার সাথে নামায পড়তে ভালো বাসেন। কিন্তু মনে রাখবেন, বন্ধ ঘরে আপনার নামায পড়া খোলা ঘরে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর খোলা ঘরের নামায বারান্দার নামাযের চেয়ে উত্তম। আর বারান্দার নামায মহল্লার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম। আর মহল্লার মসজিদের নামায আমার মসজিদে (মসজিদে নববী শরীফ) নামাযের চেয়ে উত্তম। এই ইরশাদ শ্রবণের পর হযরত উম্মে হুমাইদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা স্বীয় ঘরের সবচেয়ে নির্জন কোণে বিশেষভাবে নামাযের জায়গা তৈরি করেন এবং ইনতিকাল পর্যন্ত সেখানেই নামায পড়তে থাকেন, (মুসনাদে আহমদ, সহিহ ইবনে খুযাইমা ১৬৮৯, সহিহ ইবনে হিব্বান, সূত্র: আত তারগীব- ১/১৩৫)।

ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহিকে মহিলাদের মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যুবতী মহিলাগণ কোন নামাযেই যে কোন সময়েই হোক না কেন বের হতে পারবে না। (অর্থাৎ মসজিদে জামাতে উপস্থিত হতে পারবে না) আর বৃদ্ধা মহিলাগণ ফজর ও ইশার নামায ব্যতীত কোন নামাযেই উপস্থিত হতে পারবে না। হযরত ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, বৃদ্ধা মহিলাগণ প্রত্যেক নামাযের জামাতে উপস্থিত হতে পারবে। কিন্তু উলামায়ে মুতাআখখেরীনদের (পরবর্তী) ফতওয়া হলো, বর্তমানে যুবতী হোক অথবা বৃদ্ধা উভয়ের জন্যই প্রত্যেক নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহ তাহরীমী, ফিৎনা প্রকাশ পাওয়ার কারণে, (তাতার খানিয়া ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-৬২৮, খুলাছাতুল ফতওয়া ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-১৫৫, বাদায়েউস সানায়ে ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-১৫৭)।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


হেদায়ার লেখক বলেন, যুবতী মহিলাদের জামাতে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী। তিনি আরো বলেন, জামায়াত বলতে এখানে (পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুম্মা, ঈদাইন, কুসূফ, ইস্তিস্কা ইত্যাদি সবই অন্তর্ভুক্ত, (উমদাতুল ক্বারী শরহে বোখারী ৫ম জিলদ ১৫৬ পৃষ্ঠা)।

উলামায়ে মুতাআখখিরীন (পরবর্তী) মহিলাদের জামাতের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ বলে মত প্রকাশ করেন। কেননা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে মরফূ হাদীস শরীফ বর্ণিত রয়েছে যে, ‘মহিলাদের মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া উত্তম এবং ঘরের সবচেয়ে গোপন জায়গায় সর্বোত্তম।’ উপরোক্ত হাদীস শরীফ-এর আলোকে শরীয়ত এই মতই ব্যক্ত করে যে, মহিলাগণ জামাতের জন্য মসজিদে যাবে না। (ফায়দ্বুল বারী শরহে বোখারী ২য় জিলদ ৩২২ পৃষ্ঠা)
মহিলাদের মসজিদে জামাতে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে একা নামায পড়লে ২৫ গুণ বেশী ফদ্বীলত পাওয়া যায়, (দায়লমী ২য় জিঃ পৃঃ ৩৮৯)। হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মহিলাদের ইসলামের প্রথম যুগে জামাতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করার কারণ হলো বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানদের জনসংখ্যা ও জনশক্তি বৃদ্ধি দেখানো। হযরত আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সে যুগ ফিতনা ফাসাদ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা একেবারেই বিপরীত, (শরহে তিরমিযী ৮ম জিলদ ১০৮ পৃষ্ঠা)।

হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহিলাদের জন্য উত্তম মসজিদ হলো, তাদের ঘরের গোপন প্রকোষ্ঠ।’ (সুনানুল কোবরা, আহমদ, মুয়াত্তা ইমাম মালেক)।

হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত সাইয়্যিদুল মুরছালীন হুযুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহিলাদের অন্ধকার কুঠরীর নামায আল্লাহ্ পাকের নিকট অধিক প্রিয়।’ (সুনানুল কোবরা লিল বায়হাকী)।

হযরত আবু ওমর শায়বানী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, তিনি দেখেছেন হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) জুম্মার দিন মহিলাদেরকে মসজিদ হতে একথা বলে বের করে দিতেন যে, ‘হে মহিলারা, তোমরা তোমাদের ঘরে চলে যাও, কারণ তোমাদের নামাযের জন্য তোমাদের ঘরই উত্তম।’ (তিবরানী)।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে নামায পড়া মাকরূহে তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারে উম্মতদের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (ইমদাদুল আহকাম ১ম জিঃ, পৃঃ ৪২৫)।
মহিলাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায, জুম্মা ও ঈদের নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহে তাহরীমী, যদিও প্রাপ্তা বয়স্কা ও বৃদ্বা হোক, ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার আশংকায়। তাই পরবর্তী ফকীহগণ ফতওয়া দেন যে, মহিলাদের জামাতের জন্য বের হওয়া মাকরূহে তাহরীমী। অনুরূপভাবে তাহতাবী কিতাবেও উল্লেখ রয়েছে (গায়াতুল আওতার ১ম জিঃ পৃঃ ২৬৩)।

মহিলাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ ঈদ ও জুম্মার নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহে তাহরীমী।”(দোররুল মোখতার, ১ম জিঃ পৃঃ ৩৮৩)। মহিলাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায, জুম্মা ও ঈদের নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহ তাহরীমী, যদিও প্রাপ্তা বয়স্কা ও বৃদ্ধা হোক সময়ের পরিবর্তনের কারণে। তাই উলামায়ে মুতাআখখেরীনগণ ফতওয়া দেন যে, মহিলাদের জামাতে উপস্থিত হওয়া মাকরূহ তাহরীমী (গায়াতুল আওতার ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-২৬৩, দুররুল মুখতার ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-৩৮৩, তাহতাবী, শামী, রদ্দুল মোহতার ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-৫২৯, শরহে তানবীর)।

মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় মহিলাদের মসজিদে আসা এবং পরবর্তীতে তা নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। এর প্রতি দুররুল মুখতার কিতাবে ইঙ্গিত রয়েছে (আযীযুল ফতওয়া ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-২১৩, ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ৩য় জিলদ, পৃষ্ঠা-৪৯, মাশারিকুল আনওয়ার পৃষ্ঠা-১৩৭, ইমদাদুল আহকাম ১ম জিলদ, পৃষ্ঠা-৪২৫)।
প্রাপ্তা বয়স্কা মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। বৃদ্ধা মহিলাদের রাত্রে হলেও জামাতে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী। (আহসানুল ফতওয়া ৩য় জিলদ, পৃষ্ঠা-২৮৩, কিফায়াতুল মুফতী ৩য় জিলদ, পৃষ্ঠা-২৪৪, বেহেস্তী জিওর ৭ম জিলদ, পৃষ্ঠা-২৯)।



বর্তমান যামানার ফতওয়া হলো মহিলাদের জামাতের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ, যদিও বৃদ্ধা হোক না কেন। রাত্রে হোক অথবা দিনে (প্রত্যেক অবস্থায়ই) ফিৎনার আশঙ্কায় মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে মাহমূদিয়াহ্ ২য় জিলদ, পৃষ্ঠা-২৩৯)।

নিম্নের কিতাব সমূহে মহিলাদেরকে জামাতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহে তাহরীমী বলে উল্লেখ আছে। যেমনঃ ১)উমদাতুল ক্বারী শরহে বোখারী, ২)ফায়দ্বুল বারী শরহে বোখারী, ৩)ফাতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম, ৪)বযলুল মাযহুদ শরহে আবু দাউদ, ৫)মেরকাত শরহে মিশকাত, ৬) মুয়াত্তা ইমাম মালেক, ৭) সুনানুল কোবরা, ৮)শরহে তিরমিযী, ৯)দুররুল মুখতার, ১০)ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১১)তাতার খানিয়া, ১২)বাদায়েউস সনায়ে, ১৩)বাহরুর রায়েক, ১৪)আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ, ১৫)আইনী শরহে হেদায়া, ১৬)শামী, ১৭)রদ্দুল মোহতার, ১৮)মারাকিউল ফালাহ, ১৯)খোলাছাতুল ফতওয়া, ২০)শরহে বেকায়া, ২১)এলাউস সুনান, ২২)হেদায়া, ২৩)আইনুল হেদায়া, ২৪)কুদুরী, ২৫) ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ, ২৬)আহসানুল ফতওয়া, ২৭)তাহতাবী, ২৮)আহসানুল মাসায়েল, ২৯)কেফায়াতুল মুফতী, ৩০)ফতওয়ায়ে রহিমিয়া, ৩১)ইমদাদুল আহকাম, ৩২)মাশারিকুল আনওয়ার, ৩৩)ইমদাদুল ফিকহ, ৩৪)আলমগীরী, ৩৫)ফাতহুল কদীর, ৩৫)কবীরী, ৩৬)ফতওয়ায়ে রশীদিয়া, ৩৭)মাসনাদুল ফিরদাউস, ৩৮)শরহুত্তানবীর, ৩৯)নাছবুররায়া ৪০)বেহেস্তী জেওর, ৪১)আযীযুল ফতওয়া, ৪২)গায়াতুল আওতার, ৪৩)তাবারানী, ৪৪)দায়লমী, ৪৫)ফতওয়ায়ে মাহমূদিয়াহ্, ৪৬)শরহে তানবীর, ৪৭)আত তারগীব, ৪৮)মিশকাত, ৪৯)আদ্দুরার, ৫০)আল মাজমাউযযাওয়াইদ, ৫১)এনায়া শরহে হেদায়া, ৫২)তাবঈনুল হাক্বাইক, ৫৩)গুনিয়া, ৫৪)মোযাহেরে হক, ৫৫) আশয়্যাতুল লোময়াত, ৫৬)দায়লমী, ও ৫৭)ফতওয়ায়ে নঈমিয়া ইত্যাদি।

হাদীস শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, মহিলাদের জন্য নামাযের উত্তম স্থান হচ্ছে নিজ গৃহের গোপন প্রকোষ্ঠ। শরীয়ত মহিলাদের জন্য যেরূপ জুম্মা ও ঈদের নামায আবশ্যকীয় করেনি তদ্রুপ জুম্মা, ঈদ, পাঁচ ওয়াক্ত ও তারাবীহ নামাযের জামাতে শরীক হওয়ার নির্দেশও দেয়নি।

সুতরাং উপরোক্ত নির্ভযোগ্য, অকাট্য ও বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, (১) কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজমা ও কিয়াসের বাইরে কোন কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। (২) প্রথম যুগে মহিলাদের মসজিদে যাওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানদের জনসংখ্যা ও জনশক্তি বৃদ্ধি দেখানো এবং তালীম গ্রহন করা। (৩) মহিলাদের জন্য ঘরে নামায পড়া অধিক ফদ্বিলত। (৪) হযরত উমর ইবনুল খত্তাব (রাঃ) মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করেন ও উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা (রাঃ) তা সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করেন। (৫) পরবর্তিতে ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বিনা শর্তে মহিলাদের জামাতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী ফতওয়া দেন এবং এর উপর উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। কাজেই মহান আল্লাহ পাক যেন আমাদের সকলকে হক্ব মত ও হক্ব পথে কায়েম রাখেন এবং উক্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খাছ মারেফত এবং মহব্বত হাছিল করার তৌফিক দান করেন। (আমীন)।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  

আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড

Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !! 

Leave a Comment