মাগরিবের নামাজের ফজিলত ,মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
মাগরিবের নামাজ তিন রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত নফল। মোট সাত রাকাত নামাজ মাগরিবের।
যখন সূর্য অস্ত যায় তখনই মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। আকাশে লানিমা ঢাকা পর্যন্ত মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে। মাগরিবের ওয়াক্ত খুবই কম সময় পর্যন্ত থাকে।
আপনার জন্য: আল কোরআনের অনুবাদ ও প্রতিটি সূরার ফজিলত ও তরজমা
তিন রাকাত ফরজ:
জায়নামাজের দোয়া পাঠ করতে হবে। এরপর তিন রাকাত ফরজের নিয়ত বাঁধতে হবে। নিয়ত বাধা শেষ হলে ছানা পড়তে হবে। অতঃপর সুরা ফাতেহার সাথে অন্য যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এরপর সুবহানা রাব্বি আল আজিম যে কোন বিজোড় সংখ্যক বার বলতে হবে। এরপর সামিয়াল হুলিমান হামিদা রাব্বানা লাকাত হামদ বলেই সিজদায় লুটিয়ে পড়তে হবে।
সিজদায় গিয়ে সুবহানা রাব্বিয়াল আলা যে কোন বিজোড় সংখ্যক বার বলতে হবে। এভাবে দুইবার সিজদা দিতে হবে। দুই সিজদার মাঝখানে আল্লাহু আকবার বলতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতের নিয়ত করতে হবে না। সূরা ফাতিহার পরে অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। প্রক্রিয়াগুলো এভাবে চলতেথাকবে। ব্যতিক্রম শুধু সিজদার পর তাশাহুদ পাঠ করতে হবে।
মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
এভাবে দ্বিতীয় রাকাত শেষ করতে হবে। তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোন সূরা মিলাতে হবে না। সিজদার পর তাশাহুদ, দরুদ শরীফ পড়তে হবে্ এগুলো পড়া শেষ হলে প্রথমে ডান পাশে এবং পরে বাম পাশে সালাম ফেরাতে হবে। সবশেষে মোনাজাত ধরতে হবে্ এভাবে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ আদায় করা হয়।
দুই রাকাত সুন্নত:
প্রথমে দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত করতে হবে। নিয়ত শেষ হলে ছানা পাঠ করে সূরা ফাতিহার পর অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। সূরা পড়া শেষ হলে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম যে কোন বিজোড় সংখ্যাক বার বলতে হবে। অতঃপর সামিয়া লিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ বলে সিজদা দিতে হবে ।
সেজদায় সুবহানা রাব্বিয়াল আলা যে কোন বিজোড় সংখ্যক বার বলতে হবে। আল্লাহু আকবার বলে সেজদা দিতে হবে। সেজদা দেওয়া শেষ হলে তাশাহুদ, দরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে্ অতঃপর ডান পাশে এবং বাম পাশে সালাম ফেরাতে হবে। সবশেষে মনে তার ধরতে হবে্ এভাবে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায়।
মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব
মাগরিবের দুই রাকাত নফল নামাজ:
মাগরিবের মোট পাঁচ রাকাত নামাজ তিন রাকাত ফরজ দুই রাকাত সুন্নত আবার কেউ নামাজ শেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকে ।ইহা বাধ্যতামূলক নয়।
নফল নামাজ হলো নফল ইবাদত। মুসলিমগণের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে নফল নামাজ। কেউ কেউ মোট সাত রাকাত নামাজ আদায় করে, আবার কেউ কেউ পাস রাকাত নামাজ আদায় করে।
মাগরিবের নামাজের ফজিলত:
হযরত হুযাইফা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন মহানবী (সা:) এরশাদ করেছেন, মাগরিবের পর দুই রাকাত সুন্নত অবিলম্বে আদায় করবেন। কেননা তা ফরজের সাথে উপরে উঠানো হয়। উচ্চ হাদিসে বিলম্ব না করা বলতে অধিক বিলম্ব না করাকে বোঝানো হয়েছে। মহানবী (সা:) নামাজ নিজ গৃহে আদায় করতেন।অবশ্য মহানবী (সা:) এর ঘর মসজিদ সংলগ্ন ছিল।
মাগরিবের নামাজের আমল
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আপনি অধিকহারে আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন। আর সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৪১)
তাফসিরবিদরা বলেন, এই আয়াতে পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে নামাজ আদায় করা। এই আয়াতে ফজর ও মাগরিবের নামাজের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ এ দুই সময়ে প্রকৃতিতে বড় দুটো পরিবর্তন হয়। দিন ও রাতের পালাবদল ঘটে।
মাগরিবের নামাজের ইতিহাস
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল এবং সন্ধ্যায় নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায় এবং যতবার যায় আল্লাহ তায়ালা ততবারই তার জন্য জান্নাতের মধ্যে মেহমানদারির উপকরণ প্রস্তুত করেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬২২)
মাগরিবের নামাজের সুন্নতের ফজিলত
বর্ণিত আয়াত ও হাদিস থেকে সকাল-সন্ধ্যার ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলতের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। এমনকি উল্লিখিত হাদিস থেকে এ-ও বোঝা যায়, মাগরিবের নামাজ অতি বরকতময়।
মাগরিবের ফরজ নামাজের পর সুন্নত নামাজের কথা হাদিসে বিদ্যমান রয়েছে। এমনকি এর ফজিলতও অপরিসীম। যে ব্যক্তি গুরুত্বের সঙ্গে মাগরিবের পরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৩৬২)
আওয়াবিনের নামাজের ফজিলত
মাগরিবের নামাজের পর আরেকটি ফজিলতময় নামাজের কথা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। সেই নামাজ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ৬ রাকাত পড়বে, তাকে ১২ বছর নফল ইবাদতের সওয়াব দান করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪৩৭)
আপনার জন্য: আল কোরআনের অনুবাদ ও প্রতিটি সূরার ফজিলত ও তরজমা
পরিভাষায় যাকে আওয়াবিন নামাজ বলা হয়। আওয়াবিন সম্পর্কে দুটি ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। একটি হলো, মাগরিবের ফরজের পর সুন্নতসহ ৬ রাকাত নামাজ পড়লেই তা আওয়াবিন বলে গণ্য হবে। অন্য বর্ণনায় সুন্নতের পর ৬ রাকাতের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা যেকোনো বর্ণনার ওপর আমল করলেই তা আদায় হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের নেক আমলগুলো কবুল করুন। আমিন।