মালভূমি কাকে বলে?, মালভূমির শ্রেণীবিভাগ করো এবং যেকোনো চার প্রকার মালভূমির সম্পর্কে আলোচনা করো।,মালভূমি কাকে বলে? মালভূমির বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ,মালভূমি কাকে বলে, বৈশিষ্ট্য, শ্রেণীবিভাগ

প্রশ্ন সমাধান: মালভূমি কাকে বলে?, মালভূমির শ্রেণীবিভাগ করো এবং যেকোনো চার প্রকার মালভূমির সম্পর্কে আলোচনা করো।,মালভূমি কাকে বলে? মালভূমির বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ,মালভূমি কাকে বলে, বৈশিষ্ট্য, শ্রেণীবিভাগ

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে প্রায় 300 মিটারের অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট, বহুদূর বিস্তৃত, চারি দিকে খাড়া ঢাল যুক্ত এবং উপরিভাগ তরঙ্গায়িত বা বন্ধুর ভূমিভাগকে মালভূমি বলে। প্রধানত ভূ-আলোড়ন ও পাত সঞ্চালন, ভূপৃষ্ঠে লাভা সঞ্চয় এবং ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়সাধন-এই তিনটি কারণে মালভূমি সৃষ্টি হয়।


মালভূমির বৈশিষ্ট্য-
১)মালভূমি হল একটি বহুদূর বিস্তৃত উচ্চভূমি।
২)মালভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাধারণত 300 থেকে 600 মিটার উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করে।
৩)মালভূমির উপরিভাগ কিছুটা তরঙ্গায়িত বা উঁচু নিচু হয়।
৪)মালভূমির চতুর্দিক খাড়া ঢাল যুক্ত হয়।
৫)মালভূমির উপরিভাগ কিছুটা তরঙ্গায়িত বা প্রায় সমতল এবং চতুর্দিক খাড়া ঢাল বিশিষ্ট বলে একে দেখতে অনেকটা টেবিলের মত হয়। তাই মালভূমিকে টেবিল ল্যান্ড বলা হয়।
৬)মালভূমির উপরিভাগে ছোট ছোট পাহাড় অবস্থান করতে পারে।
৭)মালভূমি বয়সে প্রাচীন ও নবীন উভয় ধরনের হতে পারে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


মালভূমির শ্রেণীবিভাগ-উৎপত্তি, গঠন ও ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে মালভূমিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-
১)পর্বত বেষ্টিত মালভূমি,
২) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি,
৩) লাভা মালভূমি,
৪) তরঙ্গায়িত মালভূমি,
৫) মহাদেশীয় মালভূমি,
৬) তির্যক মালভূমি,
৭) চ্যুতি মালভূমি,
৮) অধিত্যকা মালভূমি ইত্যাদি।
নিম্নে উপরিলিখিত মালভূমিগুলির মধ্যে চার প্রকারের মালভূমি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-


১)পর্বত বেষ্টিত মালভূমি-


সংজ্ঞা-যেসকল মালভূমির প্রায় চতুর্দিকই পর্বত দ্বারা বেষ্টিত বা ঘেরা থাকে, তাদের পর্বতবষ্টিত মালভূমি বলে
উৎপত্তি-প্রবল গিরিজনি আলোড়নের প্রভাবে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় দুটি সমান্তরাল ভঙ্গিল পর্বত শ্রেনীর মধ্যবর্তী অংশ পার্শ্বচাপের প্রভাবে উঁচু হয়ে গিয়ে পর্বত বেষ্টিত মালভূমি সৃষ্টি হয়। এছাড়া দুটি পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে একটি পাতের নিচে অপর একটি পাতের অনুপ্রবেশ ঘটলেও এই ধরনের মালভূমি সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য-


১)পর্বত বেষ্টিত মালভূমি চতুর্দিকে পর্বত দ্বারা বেষ্টিত বা ঘেরা থাকে।
২)এই ধরণের মালভূমির উচ্চতা অন্যান্য মালভূমির থেকে বেশি হয়।
৩)এই ধরণের মালভূমি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে।
৪)এই ধরনের মালভূমি নবীন ভঙ্গিল পর্বত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়।
৫)এই ধরনের মালভূমি পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয় এবং পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয় বলেই এই মালভূমির শিলাস্তরের জীবাশ্ম থাকতে পারে।


উদাহরণ-হিমালয় ও কুয়েনলুন পর্বতের মাঝে অবস্থিত তিব্বত মালভূমি, এলবুর্জ ও জাগ্রোস পর্বতের মাঝে অবস্থিত ইরানের মালভূমি, পন্টিক ও টরাস পর্বতের মাঝে অবস্থিত আনাতোলিয়া মালভূমি হল পর্বত বেষ্টিত মালভূমির উদাহরণ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


২)ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি-


সংজ্ঞা-কোন বিস্তীর্ণ মালভূমি অঞ্চল অনেকগুলি নদী উপত্যকা দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হলে, তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে।
উৎপত্তি-কোন সুউচ্চ ও বিস্তৃত মালভূমি কঠিন ও কোমল শিলা দ্বারা গঠিত হলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও আবহবিকারের দ্বারা কঠিন শিলা কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমির আকারে দাঁড়িয়ে থাকে এবং কোমল শিলা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয় নদী উপত্যকা সৃষ্টি করে। এইভাবে নদী উপত্যকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি সৃষ্টি হয়।


বৈশিষ্ট্য-
১)ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কঠিন ও প্রাচীন শিলা দ্বারা গঠিত।
২)এই ধরনের মালভূমির উচ্চতা অন্যান্য মালভূমির তুলনায় অনেক কম হয়।
৩)এই ধরনের মালভূমিগুলির প্রায় সমান উচ্চতা বিশিষ্ট।
৪)বিভিন্ন খরস্রোতা নদী দ্বারা এই মালভূমিগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে।
উদাহরণ-বুন্দেলখন্ড ও বাঘেলখন্ড মালভূমি, ছোটনাগপুর মালভূমি, মালনাদ মালভূমি ইত্যাদি হল ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির উদাহরণ।


৩)লাভা মালভূমি-


সংজ্ঞা-ক্রমাগত লাভা সঞ্চয়ের ফলে ভূপৃষ্ঠ উঁচু হয়ে গিয়ে যে মালভূমি সৃষ্টি হয়, তাকে লাভা মালভূমি বলে।
উৎপত্তি-ভূগর্ভের উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা কোনরকম বিস্ফোরণ ছাড়াই ভূপৃষ্ঠের কোন ফাটল বা ছিদ্রপথের মাধ্যমে ভূগর্ভের বাইরে বেরিয়ে এসে লাভা রূপে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীকালে তা শীতল ও কঠিন হয়ে জমাট বেঁধে লাভা মালভূমি সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য-
১)লাভা জমাট বেঁধে লাভা মালভূমি সৃষ্টি হয়।
২)লাভা মালভূমির উপরিভাগ সমতল টেবিলের মত বা সামান্য চ্যাপ্টা হয়।
৩)এই জাতীয় মালভূমি ব্যাসল্ট জাতীয় লাভা শিলা দ্বারা গঠিত হয়।তাই এই মালভূমির রং কালো হয়।
৪)একাধিকবার লাভা সঞ্চয়ের দ্বারা সৃষ্টি হয় বলে এই মালভূমির প্রান্তভাগে সিঁড়ির মত ধাপ দেখা যায়।
উদাহরণ-ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির ডেকান ট্র্যাপ হলো লাভা মালভূমির উদাহরণ।


৪)মহাদেশীয় মালভূমি-


সংজ্ঞা-ভূত্বকের অতি প্রাচীন অংশগুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যে মালভূমি সৃষ্টি হয়, তাকে মহাদেশীয় মালভূমি বলে।
উৎপত্তি-প্রবল ভূ-আলোড়নের প্রভাবে ভূত্বকের অতি প্রাচীন অংশগুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে ভূ-ত্বকের সুস্থিত অংশরূপে অবস্থান করে মহাদেশীয় মালভূমি সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য-
১)ভূ-আলোড়নের প্রভাবে এই ধরনের মালভূমি সৃষ্টি হয়।
২)এই ধরনের মালভূমিগুলি প্রাচীন গ্রানাইট ও নিস শিলা দ্বারা গঠিত হয়।
৩)এই ধরনের মালভূমিগুলির শিলার বয়স ১০০ কোটি বছরেরও বেশী।
৪)প্রাচীন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলায় গঠিত বলে এই মালভূমিগুলি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ।
৫)এই মালভূমিগুলি শিল্ড নামেও পরিচিত।
উদাহরণ-কানাডার শিল্ড অঞ্চল, আরবের মালভূমি ইত্যাদি।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment