মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর বিভিন্ন ধাপ সমূহ ব্যাখ্যা

মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর বিভিন্ন ধাপ সমূহ ব্যাখ্যা করো

মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার ডেভলপার বিভিন্ন ধাপের ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করতে হবে

উত্তর:

সফটওয়ার ডেভলাপমেন্ট লাইফসাইকেল বা সংক্ষেপে SDLC হল সফটওয়ার প্রকৌশলে কাঙ্খিত পণ্য উৎপাদনের সুপরিচিত ও সুগঠিত কার্যক্রমের ধাপসমূহ।

SDLCএর কার্যক্রমঃ SDLC কাঙ্খিত পণ্য বা সফটওয়ার ডিজাইন ও ডেভেলাপের জন্য কয়েকটি ধাপ নিশ্চিত করে, SDLC ফ্রেমওয়ার্কে কয়েকটি ধাপ থাকে যেগুলো হল,

যোগাযোগঃ এটি প্রথম ধাপ যেখানে গ্রাহক কোনও সফটওয়ারের জন্য চাহিদা প্রকাশ করে, সফটওয়ার সেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগ করে ও শর্তাবলী জানায়। সেবা প্রদানকারীর কাছে লিখিত ভাবে তার চাহিদার কথা জানাতে হয়।

চাহিদা সংবদ্ধ করাঃ সফটওয়ার ডেভেলপার টিমের জন্য এটি প্রথম কাজ, ডেভেলপার টিম গ্রাহকের সাথে যত বেশি সম্ভব সমস্যা নিয়ে কথা বলে তাদের চাহিদাটা বুঝতে চান, মূলত গ্রাহক চাহিদা, সিস্টেমের চাহিদা ও ফাংশনাল চাহিদা এসব ধরনের চাহিদা থেকে থাকে। চাহিদাগুলো কয়েকটি নিয়ম মেনে সংবদ্ধ করা হয়,

• অপ্রচলিত বা বিদ্যমান সিস্টেম ও সফটওয়ার নিরীক্ষণ করে,
• ডেভেলপার ও গ্রাহকের সাক্ষাৎকার নিয়ে,
• ডাটাবেসের সাহায্য নিয়ে,
• উদ্ভূত প্রশ্নের সমাধান করে।

সম্ভাব্যতা নিরীক্ষণ করাঃ চাহিদা সংবদ্ধ করার পর ডেভেলপার টিম সফটওয়ার প্রসেসের একটি খসড়া তৈরি করে। এরপর তারা নির্ণয় করার চেষ্টা করে সফটওয়ারটি গ্রাহকের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করবে নাকি কোনও সফটওয়ার ব্যবহারের অনুপযোগী হতে পারে। বের করা হয় সফটওয়ারটি অর্থনৈতিকভাবে, প্রযুক্তিগত ভাবে ও ব্যবহারিকভাবে উপযুক্ত কিনা। সম্ভাব্যতা নিরীক্ষণ করার জন্য অনেক এলগরিদমিক পদ্ধতি চালু আছে।

সিস্টেম এনালাইসিসঃ এ পর্যায়ে ডেভেলপার টিম তাদের রোডম্যাপ পরিকল্পনা ঠিক করে এবং প্রকল্পের জন্য সবচে উপযুক্ত মডেল নির্বাচন করে। সিস্টেম এনালাইসিসে পণ্যের সীমাবদ্ধতা, তথ্যবিষয়ক সীমাবদ্ধতা, পূর্বের মডেলের ক্রুটি, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর সফটওয়ারটি কেমন প্রভাব ফেলবে তা অনুমান করা এসব সিস্টেম এনালাইসিসের অন্তর্ভুক্ত। ডেভেলপার টিম প্রকল্পের সম্ভাব্যতা, শিডিউল ও রিসোর্স সমূহ নিখুঁতভাবে নিরূপণ করে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সফটওয়ার ডিজাইনঃ এরপর সমস্ত তথ্য ও শর্তাবলী একসাথে করে সফটওয়ারটি ডিজাইন করতে হয়। গ্রাহক চাহিদা, শর্তাবলী ও প্রয়োজনীয় তথ্য যা চাহিদা সংবদ্ধ করার সময় পাওয়া গিয়েছিল সেগুলোই এই ধাপে ইনপুট। আউটপুট দুটি ধাপে আসবে, লজিকাল ডিজাইন ও ফিজিকাল ডিজাইন। প্রকৌশলীরা কিছু মেটা ডাটা, ডাটা ডিকশনারি, লজিকাল ডায়াগ্রাম, ডাটা ফ্লো ডায়াগ্রাম এবং কিছু কেসে কিছু সিডো কোড(pseudo codes) প্রস্তুত করেন।

কোডিংঃ এই ধাপও প্রোগ্রামিং ধাপ হিসেবে ধরা হয়। সঠিকভাবে উপযুক্ত প্রোগ্রামিং ভাষায় নির্ভুলভাবে প্রোগ্রাম কোড লেখার মাধ্যমে সফটওয়ার ডিজাইনের কার্যক্রম বাস্তব রূপ লাভ করে।

নিরীক্ষণঃ একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫০ % সফটওয়ার ডেভলাপমেন্ট নিরীক্ষণ করা হয়। সামান্য ভুলের জন্য সফটওয়ারের ক্ষতি এমনকি বাতিলও হতে পারে। ডেভলপাররা কোডিঙের সময় মডিউল টেস্টিং, প্রোগ্রাম টেস্টিং, অভ্যন্তরীণ টেস্টিং, গ্রাহক ভিত্তিক টেস্টিং ইত্যাদি নিরীক্ষণ করেন, প্রারম্ভিক পর্যায়ে ভুল ধরা পরা নির্ভরযোগ্য সফটওয়ারের জন্য দরকারি।

মৌলিকতাঃ লাইব্রেরী, ডাটাবেস ও অন্যান্য প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে সফটওয়ারের মৌলিকতা থাকতে হবে। SDLC এর এই বৈশিষ্ট্যই বিশ্ব বাজারে এর স্বাতন্ত্র্য নিশ্চিত করবে।
প্রয়োগঃ গ্রাহকের যন্ত্রে সফটওয়ার ইন্সটল করতে হবে, ইন্সটল করার পরে কনফিগার করতে হয়, এরপর বহনযোগ্যতা, অভিযোজন ও মৌলিকতা নির্ণয় করে দেখা হয়।

কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণঃ এ পর্যায়ে অধিক দক্ষতা ও কম ভুলের মাধ্যমে কার্যক্রম চলে, প্রয়োজনে ব্যবহারকারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয় যাতে ভাল ভাবে সফটওয়ার চালানো যায় ও কার্যক্রম ঠিক রাখা যায়। গ্রাহক পর্যায়ে পরিবেশ বা প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অনুসারে কোড আপডেট করে সফটওয়ার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যার মাধ্যমে লুকোনো ক্ষতিকর বিষয় ও বাস্তব জীবনের অপ্রত্যাশিত সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়।

প্রবণতাঃ সময়ের সাথে সাথে সফটওয়ারের সক্ষমতা কমতে থাকে, এটি একদম অকেজো হয়ে পরে, বা আপডেটের দরকার হয়। কোনও বড় অংশ বাছাই করার দরকার হতে পারে। ডাটা ও সফটওয়ারের কোনও অংশ একসাথে রাখা, সিস্টেম বন্ধ করা, প্রবনতার পরিকল্পনা, কাজ শেষে সিস্টেম ত্যাগ করা ইত্যাদি এই ধাপের অন্তর্গত।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সফটওয়ারের ডেভলাপমেন্ট মডেলঃ সফটওয়ারের ডেভলাপমেন্ট মডেল ডেভলাপারকে কোনও সফটওয়ারের পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করে। সফটওয়ারের ডেভলাপমেন্ট মডেলের নিজস্ব যন্ত্রপাতি, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া আছে যা স্পষ্টভাবে নির্দেশিত ও সফটওয়ার ডেভলাপমেন্ট লাইফসাইকেল সংজ্ঞায়িত করে। সফটওয়ারের ডেভলাপমেন্ট মডেলের অল্প কিছু ধাপ নিচে দেখানো হল।

ওয়াটারফল মডেলঃ সফটওয়ারের ডেভলাপমেন্ট মডেলের মধ্যে সবচেয়ে সহজ মডেল, রৈখিক নিয়ম মেনে চলে, এ মডেল অনুসারে, SDLC প্রক্রিয়ার এক পর্ব শেষ হলে তবেই অন্য আরেক পর্ব শুরু হয়। এই মডেল সকল ধাপ সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে, এখনের পর্বের কাজ চলার সময় পূর্ববর্তী কোনও পর্বের কথা মাথায় রাখার দরকার থাকে না। তবে এই মডেলে সকল ধাপ নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে হয়। পূর্বের কোনও কাজ অসমাপ্ত রাখা এই মডেলে সম্ভব নয়।

ডেভলাপার একই ধরনের সফটওয়ারে পূর্বে কাজ করেছে এরকম ক্ষেত্রে ওয়াটারফল মডেল অনুসরণ করা যায় কারণ এটির সব ধরনের ডোমেইন সম্পর্কে তার ধারণা থাকে।

পুনরাবৃত্তিক মডেলঃ SDLC প্রক্রিয়ার ধাপগুলো পুনরাবৃত্তিক ভাবে চাক্রিকভাবে সম্পন্ন হয়, প্রথমে সফটওয়ারটি ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি করা হয়, এবং যৌক্তিক সকল পন্থা অনুসরণ করা হয়, এরপর পরবর্তী সকল চক্রে নতুন অনেক ফিচার ও মডিউলকে ডিজাইন, কোড ও টেস্ট করা হয়, তারপর সফটওয়ারে যোগ করা হয়।

প্রতি চক্রের পরে ব্যবস্থাপনা টিম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও পরবর্তী চক্রের জন্য তৈরি হতে পারে, যেহেতু প্রতিটি চক্র ছোট ছোট অনেক ভাগে বিভক্ত তাই ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত সহজ, যদিও বেশি রিসোর্সের প্রয়োজন হয়।

স্পাইরাল মডেলঃ পুনরাবৃত্তিক মডেল ও SDLC প্রক্রিয়ার অন্য কোনও মডেল সমন্বয় করতে স্পাইরাল মডেল ব্যবহার করা হয়। এই মডেলে ঝুঁকি বিষয়ে বেশি লক্ষ্য রাখা হয় যা অন্য অনেক মডেলে উপেক্ষিত থাকে। পুনরাবৃত্তিক মডেল শুরু হয় লক্ষ্য ও সীমাবদ্ধতা পরিমাপ করে, এরপর প্রোটোটাইপিং করা হয় যা ঝুঁকিও বিশ্লেষণ করে থাকে। এরপর কোনও আদর্শ SDLC প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় সফটওয়ারটি তৈরি করতে। পরবর্তী ধাপে পরবর্তী চক্রের জন্য প্রস্তুত হতে হয়।

ভি মডেলঃ ওয়াটারফল মডেলে SDLC প্রক্রিয়ার এক পর্ব শেষ হলে তবেই অন্য আরেক পর্ব শুরু হয়, এক পর্বে অন্য পর্বের কোনও বিশ্লেষণ হয় না, ভি মডেলে সম্পূর্ণ উলটোটি হয় অর্থাৎ সকল ধাপেই সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করতে হয়। সকল ধাপে প্রদত্ত চাহিদা অনুসারে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করতে হয় সফটওয়ারটিকে, সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে গেলে শর্তাবলীর সাথে মিলিয়ে দেখা হয়। এ মডেলে নিরীক্ষা ও বৈধতা পরস্পরের পরিপূরক তাই একে নিরীক্ষা ও বৈধতা মডেলও বলা হয়।

বিগ ব্যাং মডেলঃ এ ধরনের মডেল সরল, এতে অল্প পরিকল্পনা ও বেশি কোডিং, বেশি অর্থ লাগে। বিজ্ঞানীরা যেমনটি বলেন, বিগ ব্যাংএর পরে গ্রহ নক্ষত্র সব মিলিয়ে ব্যপারটা যেমন হয়েছিল তেমনি আমরা যদি বেশি অর্থ ও বেশি প্রোগ্রামিং কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা সবচেয়ে ভাল সফটওয়ার পণ্য তৈরি করতে পারব।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

এ প্রক্রিয়ায় অল্প পরিকল্পনা প্রয়োজন হয়,কোনও নিয়মতান্ত্রিক অনুসরণ করা হয় না, নির্ধারিত কোনও সময় থাকে না বা চাহিদার কোনও সীমাবদ্ধতা থাকে না, তাই প্রারম্ভিক ইনপুট তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। বড় প্রকল্প নয় বরং শিক্ষামূলক ও গবেষণামূলক ক্ষেত্রে এই মডেল বেশি উপযোগী।

H.S.C

গ্রাফিক্স, টেক্সট, অডিও, ভিডিও এবং এনিমেশন। মূলত এই পাঁচটি বিভাগের সমন্বিত রুপই হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া। আর যারা এই সবগুলো বিভাগেই সমানভাবে পারদর্শী তাদেরকেই বলা হয় মাল্টিমিডিয়া ডেভেলপার। মাল্টিমিডিয়া ডেভেলপারের সংজ্ঞাটা অনেকটা এরকমই। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচুর তরুন-তরুনী আগ্রহী হচ্ছেন মাল্টিমিডিয়ার প্রতি। অনেকের কাছে এটা একটা স্বপ্নের জগৎ। আসলে ব্যপারটা অনেকটা স্বপ্নের মতই। মনের ভেতর রঙ তুলি নিয়ে আপনি যে স্বপ্ন আকঁছেন তারই ডিজিটাল পরিস্ফুটন ঘটাতে পারেন এই মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে। কারণ মাল্টিমিডিয়া সম্পূর্ণই আপনার ক্রিয়েটিভিটির উপর নির্ভর করে। এই জগত চেষ্টা করবে আপনার সুপ্ত প্রতিভা এবং সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে। সুতরাং যদি আপনি আপনার ক্রিয়েটিভিটি সম্পর্কে যথেষ্ট আস্থাশীল হন, তবে আর দেরি না করে নেমে পড়ুন মাল্টিমিডিয়ার জগতে। আজকে আমরা আলোচনা করব মাল্টিমিডিয়ার বিভিন্ন বিভাগ এবং সেই সাথে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলো নিয়ে।

গ্রাফিক্স

মাল্টিমিডিয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে এটি। স্থির ইমেজ সংক্রান্ত যেকোনো কাজ আমরা সারব এই বিভাগে। যেমন ধরুন, প্রিন্ট সংক্রান্ত যেকোন কাজ (যেমনঃ সংবাদপত্র, একটি সম্পূর্ণ প্রিন্ট ম্যাগাজিন, পলি সাইন বোর্ড ইত্যাদি) কিংবা কার্টুন এনিমেশনের ক্যারেক্টার তৈরি (ভেক্টর গ্রাফিক্স) । এই বিভাগের জন্য যে যে সফটওয়্যার শেখা প্রয়োজন।

এডোবি ফটোশপ

গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য একটি অপরিহার্য সফটওয়্যার এডোবি ফটোশপ। ইমেজ এডিট, রিটাচ কিংবা ইমেজ ক্রিয়েট মূলত ইমেজ সংক্রান্ত যেকোন কিছু আপনি করতে পারেন এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে। বিভিন্ন অপশন, ফিল্টার, লেয়ার স্টাইল ব্যবহার করে চমৎকার সব ইমেজ কিংবা টেক্সট ইফেক্টও খুব সহজে তৈরী করা যায় এই সফটওয়্যারটি দিয়ে ব্যবহার করে। গ্রাফিক্স, এনিমেশন কিংবা ভিডিও এডিটিং যেকোন বিভাগের জন্যই এই সফটওয়্যারটি অপরিহার্য।

এডোবি ইলাস্ট্রেটর

এটি একটি ভেক্টর গ্রাফিক্স সফটওয়্যার। আমাদের দেশে এটির সর্বাধিক ব্যবহার হচ্ছে ম্যাগাজিন কভার, বুক কভার, ব্রুসিয়ার, যেকোন প্রডাক্টের কভার, প্যাকেট ইত্যাদি ডিজাইন করতে। আর যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনার তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার। আমাদের দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য এই সফটওয়্যারটির ব্যবহার বর্তমানে সবচেয়ে বেশী। টুডি কার্টুন ক্যারেক্টার ডিজাইন করতেও ইলাষ্ট্রেটর ব্যবহার করা হয়।

কোয়ার্ক এক্সপ্রেস

এটি একটি পেজ মেকয়াপ সফটওয়্যার। ম্যাগাজিন কভার ডিজাইন করতে যেমন এডোবি ইলাস্ট্রেটর প্রয়োজন তেমনি ম্যাগাজিনের ভেতরকার পেজ ডিজাইনের জন্য দরকার কোয়ার্ক এক্সপ্রেস। বুঝতেই পারছেন আমরা যে ম্যাগাজিনটা পড়ছি কিংবা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যে সংবাদপত্রে চোখ বুলাই তাতে টেক্সট আর ইমেজের অপূর্ব সমন্বয় ঘটানো হয় তা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেই। মূলত এই তিনটি সফটওয়্যার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে আপনি নিজেকে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। তবে এর সাথে এডোবি ইন ডিজাইন, কোরেল ড্র, এডোবি পেইজমেকার ইত্যাদি সফটওয়্যার সম্পর্কেও মোটামুটি ধারণা রাখা প্রয়োজন।

এনিমেশন

এনিমেশন কি? এককথায় বলা যায়, কতগুলো স্থির ইমেজের পর্যায়ক্রমিক মুভমেন্টই হচ্ছে এনিমেশন। মূলত দু-ধরনের এনিমেশন আমরা দেখে থাকি, একটি হচ্ছে টুডি এনিমেশন এবং অপরটি থ্রি-ডি এনিমেশন। এজন্য যা যা জানা জরুরী …

টু-ডি এনিমেশন

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ম্যাক্রোমিডিয়া ফ্লাশ

সম্পূর্ণ এনিমেটেড ওয়েবপেইজ ডিজাইন করতে কিংবা ছোট ছোট ওয়েব এনিমেশন তৈরীতে ফ্লাশ সফটওয়্যারটির ব্যবহার প্রচুর। এর আরেকটি ব্যবহার হচ্ছে কার্টুন এনিমেশন তৈরীতে। আমরা প্রায়ই ফান সফটওয়্যার নামে এক ধরনের কার্টুন এনিমেশন দেখে থাকি যার বেশিরভাগই তৈরী করা হয় ফ্লাশ ব্যবহার করে। ইদানিং ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া সিডি, ডিজিটাল ব্রুসিয়ার ইত্যাদিতে তৈরীতেও এই সফটওয়্যারটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যার সফল উদাহরন হতে পারে আমাদের দেশের ডিজিটাল ম্যাগাজিন ডিজিটাল বিনোদন, আইকন আইটি, আইটি –কম, ডিজি বাংলার মত প্রকাশনাগুলো। মূলতঃ ইউজার ফ্রেন্ডলি, প্রিন্ট সুবিধা এবং যেকোন ডেস্কটপ রেজ্যুলেশনে ফুল স্ক্রীন শো করার সুবিধা থাকায় ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া সিডি তৈরীতে এই সফটওয়্যারটি দিনে দিনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

ম্যাক্রোমিডিয়া ডিরেক্টর

মাল্টিমিডিয়া সিডি, ডিজিটাল ব্রুসিয়ার, মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন, টু-ডি কার্টুন ইতায়দি তৈরীতে এই সফটওয়্যারটিরও ব্যবহার প্রচুর। তবে কার্টুন এনিমেশন তৈরীর ক্ষেত্রে ফ্লাশের চেয়ে ম্যাক্রোমিডিয়া ডিরেক্টর বেশী সুবিধাজনক। সুতরাং টু-ডি এনিমেশন এবং সিডি অথরিংয়ের জন্য একই সাথে এই দুটি সফটওয়্যার জানা অপরিহার্য।

থ্রি-ডি এনিমেশন

থ্রি-ডি স্টুডিও ম্যাক্স

থ্রি-ডি এনিমেশন, থ্রিডি মডেল, গেমস লেভেল কিংবা থ্রিডি ক্যারেক্টার ডিজাইন করতে একটি অনন্য সফটওয়্যার থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স। বাংলাদেশের প্রথম থ্রিডি রেসিং গেম “ঢাকা রেসিং”- এর লেভেল ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে এই সফটওয়্যারটি। জনপ্রিয় বাংলা থ্রিডি কার্টুন “মন্টু মিয়ার অভিযান” তৈরীতেও ব্যবহৃত হয়েছে থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স। সুতরাং এটুকু বলা যায় অন্যান্য থ্রিডি সফটওয়্যারের চেয়ে আমাদের দেশে থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্সের চাহিদা বেশী।

মায়া

থ্রিডি মডেল, থ্রিডি ক্যারেক্টার এবং মুভিতে স্পেশাল ইফেক্ট তৈরীতে এই সফটওয়্যারটির ব্যবহার প্রচুর। সবচেয়ে বড় কথা মিডিয়ার কল্যাণে মায়া বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় থ্রিডি সফটওয়্যার। মায়া সফটওয়্যার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে “ফাইনাল ফ্যান্টাসি” মুভিটি। এর ক্যারেক্টারগুলো এতোটাই রিয়েলস্টিক ছিল যে স্বাভাবিকভাবে বোঝা কষ্টকর ছিল এগুলো কম্পিউটার জেনারেটেড। আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে থ্রিডি এনিমেটর হতে হলে মায়া এবং ম্যাক্স দুই সফটওয়্যারই সেখা জরুরী। এই সফটওয়্যার দুটির পাশাপাশি আরো কিছু থ্রিডি সফটওয়্যার যেমনঃ পোজার, থ্রিডি কুল এডিট ইত্যাদি সফটওয়্যারগুলোও শিখে নিতে পারেন যা বিভিন্ন সময় আপনাকে সাপোর্ট দিবে।

অডিও এডিটিং

মাল্টিমিডিয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে অডিও এডিটিং। সাধারণ সাউন্ড থেকে শুরু করে বড় বড় মিউজিক কম্পোজেও বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া। আগে যেখানে মিউজিক্যাল ইনষ্ট্রুমেন্টের তালে তালে শিল্পীকে গাইতে হত সেখানে এখন মাল্টিমিডিয়ার কল্যাণে শিল্পীর খালি গলায় গাওয়া গানে পরবর্তীতে মিউজিক যোগ করা হচ্ছে। অডিও এডিটিং্যের জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন ইউলিড মিডিয়া স্টুডিও প্রো, কুল এডিট কিংবা সাউন্ড ফার্জের মত সফটওয়্যারগুলো।

ভিডিও এডিটিং

মনে করুন আপনি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির টিভি সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। তো সাক্ষাৎকার দিতে দিতে হঠাৎ তিনি নাক চুলকালেন কিংবা তার ধবধবে টাকে হাত দিলেন, যেগুলো একেবারেই অনাকাংখিত। এবং এই দৃশ্যগুলো আপনি চুড়ান্ত সম্প্রচারের সময় রাখতে চাচ্ছেন না। তখনই আপনার দরকার পড়বে ভিডিও এডিটিং এর। আবার থ্রিডি ম্যাক্স বা অন্যকোন সফটওয়্যারে তৈরী এনিমেশন Randering-এর পর আপনি চুড়ান্ত ভিডিও আউটপুট নিবেন। সেক্ষেত্রেও আপনাকে ভিডিও এডিটিংয়ের সাহায্য নিতে হবে।

এডোবি প্রিমিয়ার

ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য এই সফটওয়্যারটির ব্যবহার সবচেয়ে বেশী। ভিডিও সংক্রান্ত যেকোন এডিটিং কিংবা টুডি/থ্রিডি এনিমেশন রেন্ডারের পর স্টিল ইমেজের সিকোয়েন্স অনুসারে ভিডিওতে কনভার্ট করতে অথবা ভিডিও ফ্লিম তৈরী (অর্থাৎ অডিও এবং ভিডিওর সমন্বয়) করতে ইত্যাদি সবক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এডোবি প্রিমিয়ার। সুতরাং ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য নিশ্চিন্তে এই সফটওয়্যারটি শিখতে পারেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

এডোবি আফটার ইফেক্টস

ভিডিও এডিটিংয়ের পর এর উপরে বিভিন্ন ইফেক্ট দিতে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা হয়। সুতরাং মুভিতে ইফেক্ট যোগ করার জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।

প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য দরকার হয় হাই রিকোয়ারমেন্ট পিসি এবং সেই সাথে দামি ক্যাপচার/এডিটিং কার্ডের। এডোবি প্রিমিয়ার বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যার হলেও অনেক সময় দামি ক্যাপচার কার্ডের সঙ্গে দেয়া বিল্টইন সফটওয়্যারটিকেও আপনার ব্যবহার করা প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও ছোট ছোট সফটওয়্যার যেমনঃ হিরো সফট, আই-ফ্লিম এডিট কিংবা ভিসিডি কাটারের মত সফটওয়্যারগুলোও শিখে নিতে পারেন যা অনেক ছোটখাট কাজের সময় প্রয়োজন হতে পারে।

উপরের সফটওয়্যারগুলো মোটামুটিভাবে মাল্টিমিডিয়ার কাজের জন্য অপরিহার্য। মনে রাখবেন প্রযুক্তি খুব দ্রুত আপডেট হচ্ছে সুতরাং প্রতিযোগিতার এই বাজার টিকে থাকতে চাইলে প্রযুক্তির সাথে সাথে নিজেকেও যথাসম্ভব আপডেট করে নিন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Assignment

Leave a Comment