রোজার ফজিলত ও রমজান মাসের গুরুত্ব মাহে রমজান

রমজান মাসের ৯টি ফজিলতঃ


.
রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :—
.
ﻗُﻞْ ﺑِﻔَﻀْﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻪِ ﻓَﺒِﺬَﻟِﻚَ ﻓَﻠْﻴَﻔْﺮَﺣُﻮﺍ ﻫُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻤَّﺎ ﻳَﺠْﻤَﻌُﻮﻥَ ‏( ﻳﻮﻧﺲ : 58 )
.
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮]
.
.
পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন :—
.
ﺃﺗﺎﻛﻢ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺷﻬﺮ ﻣﺒﺎﺭﻙ
.
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন :—
.
ﻓﺮﺽ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺻﻴﺎﻣﻪ، ﺗﻔﺘﺢ ﻓﻴﻪ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ، ﻭﺗﻐﻠﻖ ﻓﻴﻪ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﺤﻴﻢ، ﻭﺗﻐﻞ ﻓﻴﻪ ﻣﺮﺩﺓ ﺍﻟﺸﻴﺎﻃﻴﻦ، ﻟﻠﻪ ﻓﻴﻪ ﻟﻴﻠﺔ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺃﻟﻒ ﺷﻬﺮ، ﻣﻦ ﺣﺮﻡ ﺧﻴﺮﻫﺎ ﻓﻘﺪ ﺣﺮﻡ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ
.
আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। বর্ণনায় : নাসায়ী
.
.
❏ আমাদের কর্তব্য : আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।
.
.
এ মাসের যে সকল ফজিলত রয়েছে তা হল :


.
❏ এক. এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে ; আর তা হলে সিয়াম পালন।
.
হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :—
.
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁَﻣَﻨُﻮﺍ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻜُﻢْ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ . ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 183
.
হে মোমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। [সূরা বাকারা : ১৮৩]
.
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদিসে এসেছে :—
.
ﻣﻦ ﺁﻣﻦ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟـﻪ، ﻭﺃﻗﺎﻡ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﻭﺁﺗﻰ ﺍﻟﺰﻛﺎﺓ، ﻭﺻﺎﻡ ﺭﻣﻀﺎﻥ، ﻛﺎﻥ ﺣﻘﺎً ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﺪﺧﻠﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ … ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ
.
যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো…। বোখারি
.
.
❏ দুই. রমজান হল কোরআন নাজিলের মাস : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন –
.
ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁَﻥُ ﻫُﺪًﻯ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﻭَﺑَﻴِّﻨَﺎﺕٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻬُﺪَﻯ ﻭَﺍﻟْﻔُﺮْﻗَﺎﻥِ : ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 184
.
রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কোরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। [সূরা বাকারা : ১৮৪]
.
.
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কোরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে।
শুধু আল-কোরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সহি আল-জামে)
.
এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তাকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন।
আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কোরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহি মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত।

❏ তিন. রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
.
ﺇﺫﺍ ﺟﺎﺀ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻓﺘﺤﺖ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ، ﻭﺃﻏﻠﻘﺖ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﻨﺎﺭ، ﻭﺻﻔﺪﺕ ﺍﻟﺸﻴﺎﻃﻴﻦ . ﻭﻓﻲ ﻟﻔﻆ : ‏( ﻭﺳﻠﺴﻠﺖ ﺍﻟﺸﻴﺎﻃﻴﻦ ‏) ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
.
যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-শয়তানের শিকল পড়ানো হয়। (মুসলিম)
.
তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।
.
.
❏ চার. রমজান মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা বলেন :—
.
ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻟْﻒِ ﺷَﻬْﺮٍ ﴿ 3 ﴾ ﺗَﻨَﺰَّﻝُ ﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔُ ﻭَﺍﻟﺮُّﻭﺡُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺃَﻣْﺮٍ ﴿ 4 ﴾ ﺳَﻠَﺎﻡٌ ﻫِﻲَ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﻄْﻠَﻊِ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ ﴿ 5 ﴾ ‏( ﺍﻟﻘﺪﺭ : 5-3 )
.
লাইলাতুল কদর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। [সূরা আল-কদর : ৩-৫]
.
.
❏ পাঁচ. রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :—
.
ﻟﻜﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﺩﻋﻮﺓ ﻣﺴﺘﺠﺎﺑﺔ، ﻳﺪﻋﻮ ﺑـﻬﺎ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ . ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ
.
রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। (মুসনাদ আহমদ)
.
অন্য হাদিসে এসেছে –
.
ﺇﻥ ﻟﻠﻪ ﺗﺒﺎﺭﻙ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﺘﻘﺎﺀ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﻭﻟﻴﻠﺔ، ‏( ﻳﻌﻨﻲ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ‏) ﻭﺇﻥ ﻟﻜﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺩﻋﻮﺓ ﻣﺴﺘﺠﺎﺑﺔ . ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻏﻴﺐ ﻭﺍﻟﺘﺮﻫﻴﺐ .
.
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। (সহি আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
.
তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে।
.
.
❏ ছয়. রমজান পাপ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :—
.
.. ﺭﻏﻢ ﺃﻧﻒ ﺭﺟﻞ، ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻴﻪ ﺭﻣﻀﺎﻥ، ﺛﻢ ﺍﻧﺴﻠﺦ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﻳﻐﻔﺮ ﻟﻪ . . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ
.
ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। (তিরমিজি)
.
সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল।
.
.
❏ সাত. রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির লাভের মাস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
.
ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺃﻭﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺻﻔﺪﺕ ﺍﻟﺸﻴﺎﻃﻴﻦ ﻭﻣﺮﺩﺓ ﺍﻟﺠﻦ، ﻭﻏﻠﻘﺖ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﻨﺎﺭ، ﻓﻠﻢ ﻳﻔﺘﺢ ﻣﻨﻬﺎ ﺑﺎﺏ، ﻭﻓﺘﺤﺖ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻓﻠﻢ ﻳﻐﻠﻖ ﻣﻨﻬﺎ ﺑﺎﺏ، ﻭﻳﻨﺎﺩﻱ ﻣﻨﺎﺩ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ : ﻳﺎ ﺑﺎﻏﻲ ﺍﻟﺨﻴﺮ ﺃﻗﺒﻞ ! ﻭﻳﺎ ﺑﺎﻏﻲ ﺍﻟﺸﺮ ﺃﻗﺼﺮ ! ﻭﻟﻠﻪ ﻋﺘﻘﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺭ، ﻭﺫﻟﻚ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ
.
রমজান মাসের প্রথম রজনির যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে আর তা খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও ! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও ! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। (তিরমিজি)
.
.
❏ আট. রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যেমন হাদিসে এসেছে যে, রমজান মাসে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বরং, রমজান মাসে ওমরাহ করা আল্লাহর রাসূলের সাথে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। এমনিভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল সৎকাজের প্রতিদান কয়েক গুণ বেশি দেয়া হয়।
.
.
❏ নয়. রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস। এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে যে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন :—
.
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﻮَﻓَّﻰ ﺍﻟﺼَّﺎﺑِﺮُﻭﻥَ ﺃَﺟْﺮَﻫُﻢْ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ . ﺍﻟﺰﻣﺮ : 10
.
ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। [সূরা যুমার : ১০]।

Leave a Comment