বিষয়: লেখক কার কাছ থেকে দুধ রাখতেন?,‘অ-গোপাল আমার’ সম্বোধনটি লেখকের কেন ভালো লাগল?, কে লেখককে ঘর তোলার জন্য অনুরোধ করলেন?,
‘নারী রূপের অপূর্ব পরিণতি’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?,কতজন লোক বুড়ির জন্য কবর খুঁড়ছিল?
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
আজিজ সৌদি আরব থেকে ফিরে এসে দেখে তার পৈতৃক ভিটা জঙ্গলে ভরে গেছে। শেয়াল বাসা বেঁধেছে। সে অনেকক্ষণ উজাড় বাড়িটির দিকে চেয়ে রইল। মনের আয়নায় ভেসে উঠল মা-বাবার স্মৃতি- তার ছেলেবেলার অনেক কথা, অনেক ব্যথা। দুচোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোঁটা তপ্ত অশ্রু। আজিজ সিদ্ধান্ত নেয়, সে এখন থেকে পিতার ভিটায় বাস করবে।
ক. লেখক কার কাছ থেকে দুধ রাখতেন?
খ. ‘অ-গোপাল আমার’ সম্বোধনটি লেখকের কেন ভালো লাগল?
গ. উদ্দীপকের আজিজের সাথে ‘আহবান’ গল্পে কার সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়?ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করেনি”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
ক. জ্ঞান
লেখক ঘুঁটি গোয়ালিনীর কাছ থেকে দুধ রাখতেন।
খ. অনুধাবন
উক্ত সম্বোধনের মধ্যে মা-পিসিমার স্নেহের সম্বোধন প্রকাশ পাওয়ায় লেখকের ভালো লাগল।
গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে লেখক গ্রামের এক বুড়ির সাথে পরিচিত হওয়ার পর লেখক তাকে কিছু টাকা দেন। পরদিন সকালে বুড়ি লেখকের খোঁজে আসেন। তখন বুড়ি লেখককে ‘গোপাল’ বলে সম্বোধন করে। লেখক প্রথমে অবাক হলেও পরে তাঁর ভালো লাগে। কারণ উক্ত সম্বোধনের মধ্যে তিনি অনুভব করেছিলেন মা-পিসিমার স্নেহের পরশ।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের আজিজের সাথে ‘আহবান’ গল্পের লেখকের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রত্যেকেই তাঁর জন্মভূমির মাটির প্রতি টান অনুভব করে। জন্মভূমির শীতলতায় এসে সবারই তৃপ্ত আত্মা শীতল হয়। উদ্দীপকের আজিজ এবং ‘আহবান’ গল্পের লেখকের মাঝে এমন প্রশান্তি লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আজিজ অনেকদিন পর গ্রামে ফিরে আসে। এসে দেখে তার পৈতৃক বাড়িটা জঙ্গলে পরিপূর্ণ। তার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর অনেকদিন গ্রামে না আসার জন্য এই অবস্থা। অনেকদিন পর গ্রামে এসে তার খুব ভালো লাগে। ফেলে আসা অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। সে সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামে ঘর তুলে এখন থেকে মাঝে মাঝে এসে থাকবে। আজিজের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে ‘আহবান’ গল্পের লেখকের সাথে। লেখকও অনেকদিন পর গ্রামে এসে দেখেন তার বাড়ি জঙ্গলে পরিপূর্ণ। কিন্তু তিনিও সিদ্ধান্ত নেন গ্রামে ঘর তুলে মাঝে মাঝে এসে থাকবেন। উভয় চরিত্রে জন্মভূমির প্রতি মমতা ও ভালোবাসার সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করেনি।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
যে দেশের মাটিকে ভালোবাসে না, অবহেলা করে সে নরাধম। দেশকে ভালোবাসা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। উদ্দীপকের আজিজ এবং ‘আহবান’ গল্পের লেখক দেশের মাটিকে ভালোবেসে সেখানে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছে।
উদ্দীপকের চিত্রে জন্মভূমির মাটিকে ভালোবাসা ও তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় পাই। কিন্তু এ বিষয়টি ‘আহবান’ গল্পের অনেক বিষয়ের মধ্যে একটি মাত্র বিষয়। তারেকের নিজ গ্রামে প্রত্যাবর্তন এবং সেখানে বসবাসের সিদ্ধান্ত ‘আহবান’ গল্পের লেখকের জন্মভূমির মাটিতে ফিরে আশার বিষয়টি তুলে ধরেছে। কিন্তু ‘আহবান’ গল্পে এর সাথে আরও বিভিন্ন ভাবের অবতারণা ঘটেছে।
‘আহবান’ গল্পটি একটি উদার মানবিক সম্পর্কের গল্প। গ্রামে ফিরে এসে বসবাস করাটি এখানে একটি অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করেছে। গল্পে প্রকাশিত দিকগুলোতে বলা হয়েছে, মানুষের স্নেহ-মমতা-প্রীতির যে বাঁধন তা ধন-সম্পদে নয়, হৃদয়ের নিবিড় আন্তরিকতার স্পর্শেই গড়ে ওঠে। শ্রেণি-বৈষম্য, জাতিভেদ, ধর্মীয় গোঁড়ামি একসময় ঘুচে যেতে পারে নিবিড় স্নেহ ও উদার হৃদয়ের মানবীয় দৃষ্টির ফলে। লেখক যে সংকীর্ণতা ও সংস্কারমুক্ত মনোভঙ্গির প্রকাশ ঘটিয়েছেন তা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থই হয়েছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
বললাম-এসো বুধের মা, কি মনে করে? অনেকদিন পরে দেখলাম।
-আর বাবা! গাঁয়ে ঘরে থাক না, তা কি করে দেখবা? বাত হয়েছে বাবা। এখন একটু সামলেছি। তাই উঠে হেঁটে বেড়াচ্ছি।
-হাতে কি?
-গোটাকতক কাগজি লেবু। বলি, দিয়ে আসি যাই। তুমি আর আমার পঞ্চা দুমাসের ছোটবড়। তুমি হলে ভাদ্র মাসে, পঞ্চা হয়েছে আষাঢ় মাসে। তা আমায় ফেলে চলে গেল।
[তথ্যসূত্র : বুধোর মায়ের মৃত্যু-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়]
ক. কে লেখককে ঘর তোলার জন্য অনুরোধ করলেন?
খ. ‘নারী রূপের অপূর্ব পরিণতি’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকটির সাথে আহবান গল্পের কোন বিষয়ের সাদৃশ্য রয়েছে?
ঘ. “উদ্দীপকের বুধোর মা ‘আহবান’ গল্পের বুড়ি চরিত্রের প্রতিরূপ।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
ক. জ্ঞান
চক্কোত্তি মশায় লেখককে ঘর তোলার জন্য অনুরোধ করলেন।
খ. অনুধাবন
উক্ত বাক্যটি দ্বারা লেখক শ্রদ্ধার সাথে নারীর মাতৃরূপের প্রশস্তি গেয়েছেন।
কালের পরিক্রমায় মানুষের সবকিছু একটি পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। এ রকম নারী রূপেরও ক্রমশ পরিণতি পায়। মা, বোন, স্ত্রী, সবাইকে এক সময় সময়ের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়। সেখানে তারা পূর্ণতার স্বাদ অনুভব করে। তাদের সেই পরিণতি অবস্থায় দেখলে আবহমান মাতৃরূপ বারবার মনে পড়ে। এমন ভাবেই প্রকাশ ঘটেছে উক্ত বাক্যে।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের মাতৃস্নেহের বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
প্রতিটি নারীর মাঝেই লুকিয়ে থাকে মাতৃহৃদয়। উপযুক্ত পরিবেশে তার এই হৃদয়ের আকুতি প্রকাশিত হয়। যার সন্তান নেই সেও অন্যের সন্তানের প্রতি মায়ের স্নেহ প্রকাশ করতে চায়। ‘আহবান’ গল্পে এবং উদ্দীপকে এই বিষয়টি লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায় বুধোর মার হৃদয়ে মাতৃস্নেহে জেগে উঠেছে। তাই তিনি বাতের ব্যথা নিয়েও লেখককে দেখতে এসেছেন। লেখকের জন্য তিনি গোটাকতক কাগজিলেবু এনেছেন। কারণ লেখকের মধ্যে তিনি তার মৃত ছেলে পঞ্চার ছায়া দেখতে পেয়েছেন। এ বিষয়টি লক্ষ করা যায় ‘আহবান’ গল্পে। এখানে দেখা যায় বুড়ির নিজের কোনো সন্তান নেই। লেখককে তিনি সন্তানের মতো স্নেহ করেন। তাইতো তিনি লেখকের জন্য আম, শসা, দুধ নিয়ে আসেন। বসতে দেয়ার জন্য খেজুরের চাটাই বুনে রাখেন। গল্পের এই ভাবটিই উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকের বুধোর মা ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধা চরিত্রের প্রতিরূপ।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা সেটি চিরন্তন ও স্বাভাবিক। আর এই ভালোবাসা আছে বলেই সমাজ এখনো টিকে আছে। আপনজনহীন মানুষও ভালোবাসার ছোঁয়া পেলে হাত বাড়িয়ে দিতে চায়।
উদ্দীপকে বুধোর মা লেখকের প্রতি যে-ভালোবাসা ও মাতৃস্নেহের পরিচয় দিয়েছেন তাতে ঐ বিষয়টিই প্রমাণিত হয়। তিনি বাতের ব্যথাকে তুচ্ছ করে লেখকের জন্য গোটাকতক লেবু নিয়ে চলে আসেন। তার মনে হারানো ছেলের স্মৃতি জেগে ওঠে। মাতৃত্বের চরম নিদর্শন লক্ষ করা যায় এখানে। এই বুধোর মা যেন ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধা চরিত্রের প্রতিরূপ।
‘আহবান’ গল্পে বুড়ি মাতৃস্নেহের বাস্তব নিদর্শন। সন্তানহীনা বৃদ্ধা লেখককে সন্তানের স্নেহে ভালোবেসেছেন। তার জন্য কখনো আম, কখনো গাছের দুটি কচি শসা, কখনো বা এক ঘটি দুধ এনে হাজির করে। যাতে মাতৃস্নেহের চরম নিদর্শন প্রকাশিত হয়। বৃদ্ধাকে বারণ করা সত্তে¡ও কোনো না কোনো সময় কিছু নিয়ে হাজির হবেই। লেখককে তিনি ‘গোপাল’ নামে সম্বোধন করে মাতৃস্নেহের চরম প্রকাশ ঘটান। এই বৃদ্ধা চরিত্রের প্রতিরূপই উদ্দীপকের বুধোর মা। তাই বলা যায়, প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
নদীর চরে গর্ত খুঁড়িয়া অভাগীকে শোয়ান হইল। রাখালের মা কাঙালির হাতে একটা খড়ের আঁটি দিয়া তাহারই হাত ধরিয়া মায়ের মুখে স্পর্শ করাইয়া ফেলিয়া দিল। তারপরে সকলে মিলিয়া মাটি চাপা দিয়া কাঙালির মায়ের শেষ চিহ্ন বিলুপ্ত করিয়া দিল। সবাই সকল কাজে ব্যস্ত, শুধু সেই পোড়া খড়ের আঁটি হইতে যে স্বল্প ধুঁয়াটুকু ঘুরিয়া ঘুরিয়া আকাশে উঠিতেছিল, তাহারই প্রতি পলকহীন চক্ষু পাতিয়া কাঙালি ঊর্ধ্বদৃষ্টে স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া রহিল।
[তথ্যসূত্র : অভাগীর স্বর্গ-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]
ক. কতজন লোক বুড়ির জন্য কবর খুঁড়ছিল?
খ. ‘দ্যাও বাবা-তুমি দ্যাও’-কে, কেন এ কথা বলেছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের কোন বিষয়টি তুলে ধরেছে?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “ঘটনার সাথে সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের কাঙালি আর ‘আহবান’ গল্পের লেখকের অনুভূতির ভিন্নতা রয়েছে।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
ক. জ্ঞান
দুজন লোক বুড়ির জন্য কবর খুঁড়ছিল।
খ. অনুধাবন
শুকুর মিঞা বৃদ্ধার কবরে মাটি দেয়ার প্রসঙ্গে কথাটি বলেছে।
প্রাচীন একটা গাছের নিচে বৃদ্ধাকে কবর দেওয়া হচ্ছে। সেখানে উপস্থিত হয়েছেন লেখক বৃদ্ধার অনিবার্য আহবানে। সেখানে শুকুর মিঞাসহ আরও অনেকে উপস্থিত। একে একে সবার মাটি দেওয়া হলে শুকুর মিঞা বললেন, এই যে বাবা, এসো। তোমায় যে বড্ড ভালোবাসত বুড়ি। দ্যাও বাবা-তুমি দ্যাও। লেখক দিলেন এক কোদাল মাটি। এতে তিনি অনুভব করলেন, বৃদ্ধা বেঁচে থাকলে বলে উতো-অ-মোর গোপাল।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধার মৃত্যু ও কবর দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।
সন্তানের প্রতি প্রতিটি মায়েরই অকৃত্রিম ভালোবাসা থাকে। তাই মৃত্যুর মুহূর্তেও একজন মা তার সন্তানের স্পর্শ পেতে চায়। ‘আহবান’ গল্প ও উদ্দীপকে এ বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, নদীর চরে গর্ত খুঁড়ে অভাগীকে শোয়ান হলো। কাঙালির মা ছেলের হাতে একটা খড়ের আঁটি জ্বেলে মায়ের মুখাগ্নি করে। যা তার মা প্রত্যাশা করেছিল। তারপর কাঙালির মাকে শেষ সয্যায় শোয়ানো হলো। এমন একটি চিত্র দেখা যায় ‘আহবান’ গল্পে। সেখানে বৃদ্ধার মৃত্যুর পর তাঁকে কবর দেওয়ার জন্য প্রাচীন গাছের নিচে কবর দেওয়ার আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে উভয় জায়গায় সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“ঘটনার সাথে সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের কাঙালি আর ‘আহবান’ গল্পের লেখকের অনুভূতির ভিন্নতা রয়েছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
সভ্যতা একদিকে যেমন ক্ষয়িষ্ণু। মরণশীল ব্যক্তিমানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা।
উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই এক মায়ের মৃত্যুর পর তাকে অন্তিম শয়ানে শোয়ানোর জন্য কবর খোঁড়া হয়। তাকে শোয়ানো হয়। মায়ের শেষ ইচ্ছা ছেলে কাঙালি সাধ্যানুযায়ী সম্পন্ন করে। তার ভাবজগতের কোনো তল সে খুঁজে পায় না। কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়ার সাথে তার শোকস্তব্ধ চিন্তাজগৎ ঘুরতে থাকে। তার এই চেতনার সাথে, অনুভূতির সাথে ‘আহবান’ গল্পের লেখকের অনুভূতির ভিন্নতা রয়েছে, যদিও উভয় ক্ষেত্রে মৃত্যুর কথা আলোচিত হয়েছে।
‘আহবান’ গল্পের লেখকের অনুভূতি শুধু বৃদ্ধার শেষ দাবিটুকু এবং তার মাতৃস্নেহের স্মৃতিতে সীমাবদ্ধ। তার শোকের সাথে কাঙালীর শোকের তুলনা চলে না। মাকে হারিয়ে কাঙালি দিশেহারা। জগৎ মাঝে একমাত্র স্নেহের ভরসার আশ্রয় আজ অনন্তে হারিয়ে গেছে। অন্যদিকে লেখককে কিছুদিনের স্নেহের বাঁধনে বেঁধেছিলেন বৃদ্ধা। তাঁর মৃত্যুতে তিনিও শোকাহত কিন্তু কাঙালির মতো তিনি অসহায়ত্ব বোধ করেননি। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্য যথার্থ।
আরো ও সাজেশন:-
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
জাতের নামে বজ্জাতি সব
জাত জালিয়াত খেলছে জুয়া,
ছুঁলেই তোদের জাত যাবে
জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।
ক. ‘পথের পাঁচালী’ কোন ধরনের সাহিত্যকর্ম?
খ. বুড়ি কেন আহ্লাদে আটখানা হলেন?
গ. উদ্দীপকে ‘আহবান’ গল্পের কোন ভাবটি উঠে এসেছে?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাব ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।”-মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
ক. জ্ঞান
‘পথের পাঁচালী’ বিভূতিভূষণের কালজয়ী উপন্যাস।
খ. অনুধাবন
বুড়ির অনুরোধে লেখক অসুস্থ বুড়িকে তার বাড়িতে দেখতে গেলে বুড়ি আহ্লাদে আটখানা হয়ে গেলেন।
বুড়ির পাতানো মেয়ের কাছে লেখক শুনলেন বুড়ি অসুস্থ। তখন লেখক একদিন বিকেলে গেলেন বুড়িকে দেখতে। গিয়ে দেখেন বুড়ি শুয়ে আছে মাদুরের উপর। তিনি কাছে দাঁড়াতেই বুড়ি চোখ মেলে চাইলেন। পরে লেখককে চিনে ধড়ফড় করে বিছানা ছেড়ে উটে আহ্লাদে আটখানা হয়ে বলল, ‘ভালো আছ অ মোর গোপাল?’
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকে ‘আহবান’ গল্পের জাতি-ধর্মের বিভেদের অসারতার বিষয়টি উঠে এসেছে।
এ পৃথিবীতে সকল মানুষই সমান। এ ধরণীর স্নেহ ছায়াতেই সকলে বেঁচে থাকে, বেড়ে ওঠে। অথচ মানুষ মিথ্যা জাতপাতের বড়াই করে একে-অন্যের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। এমনই জাতপাতের অসারতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে উদ্দীপকে ও ‘আহবান’ গল্পে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সমাজের কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ জাতের নামে জুয়া খেলতে বসেছে। তাদের কাছে জাত ধর্মই যেন সব। অন্য জাতের কেউ যদি ছুঁয়ে দেয় তখন যেন তাদের জাতি-ধর্ম সব ধুয়ে-মুছে যায়। এ যেন ছেলের হাতের মোয়া। কিন্তু কবি এ সবের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। এমন ভাব পরিলক্ষিত হয় ‘আহবান’ গল্পে। এখানে লেখক কোনো জাতিভেদ মানেন না। এজন্য বৃদ্ধাকে তিনি মায়ের মতো ভালোবাসতেন। তার অপাত্য স্নেহের দান অকুণ্ঠচিত্তে গ্রহণ করেছেন। বৃদ্ধার শেষ চাওয়াটুকুও তিনি মিটিয়েছেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ ইত্যাদির পার্থক্যকে ধুলায় মিশিয়ে মানব ধর্মের জয়গানে মুখর করে তুলেছেন।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাব ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
মানুষ আজ জাতিভেদ, গোত্রভেদ, বর্ণভেদের কৃত্রিম পরিচয়ে নিজের পরিচয়কে সংকীর্ণ করেছে। কিন্তু এ মহাবিশ্বের সকল কিছু একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। তাই মানুষের আসল পরিচয় মানুষ হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, এ সমাজ জাতের নামে বজ্জাতিই করে চলেছে। জাত ছেলের হাতের মোয়া নয় যে, কারো ছোঁয়ায় জাত যাবে। সকল মানুষের একটাই পরিচয় হওয়া উচিত, সেটা হলো মানুষ জাতি। এ বিষয়টি ‘আহবান’ গল্পের অন্যতম মুখ্য বিষয় হলেও একমাত্র বিষয় নয়।
‘আহবান’ গল্পটি একটি উদার মানবিক সম্পর্কের গল্প। এখানে জাতপাতের বৈষম্যের অসারতার বিষয়টির সাথে সাথে আরও অনেক বিষয় উঠে এসেছে। মানুষের মধ্যে জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা গল্পের অন্যতম একটি বিষয়। আরও রয়েছে মানুষের স্নেহ-মায়া-মমতার যে বাঁধন সেটাকে কিছুতেই অস্বীকার করা যায় না। লেখক মুসলমান বৃদ্ধাকে মাতৃজ্ঞানে ভালোবেসে তাঁর মাতৃস্নেহেকে অকপটে গ্রহণ করেছেন। মাতৃহৃদয়ের অতৃপ্ত অনুভূতি গল্পের অন্যতম প্রধান দিক, যা বৃদ্ধার মৃত্যুর মাঝে আরও মহিমাময় হয়ে উঠেছে। এসব বিষয় উদ্দীপকে আলোচিত হয়নি। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
দেশ ছেড়ে চলে গেলাম ম্যাট্রিক পাস করে। পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে চাকরি করে বোমার তাড়ায় সেবার আবার এসে গ্রামে ঘর-বাড়ি সারিয়ে বাস করতে শুরু করলাম।
কাকে জিজ্ঞেস করলাম-বলি, সেই বুধোর মা বেঁচে আছে।
-খুব। কাল ঘাটে দেখলে না?
-না।
-আজ দেখো এখন। তার মাথায় চুল পেকে গিয়েছে বলে চিনতে পারনি।
দু-একদিনের মধ্যে বুধোর মাকে দেখলাম। চেহারা ঠিক তেমনই আছে, যেমন দেখেছিলা বাল্যে। মুখশ্রী বিশেষ বদলায়নি। শুধু মাথার চুলগুলো সাদা হয়ে গিয়েছে মাত্র। অনেকে হয়তো ভাববেন, সত্তর-বাহাত্তর বছর বয়সে মুখের চেহারা বদলায়নি তাঁরা বুধোর মাকে দেখেননি। নিজের চোখে না দেখলে আমিও বিশ্বাস করতাম না।
[তথ্যসূত্র : বুধোর মায়ের মৃত্যু-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়]
ক. বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম কত সালে?
খ. ‘আজ্ঞে সামান্য মাইনে পাই’-লেখকের এই বক্তব্যে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের বুধোর মায়ের সাথে ‘আহবান’ গল্পের বুড়ির অমিল কোথায়?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের লেখকের এবং ‘আহবান’ গল্পের লেখকের গ্রামে ফেরার উদ্দেশ্য এক নয়।”-মন্তব্যটি আলোচনা কর।
ক. জ্ঞান
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৪ সালে।
খ. অনুধাবন
প্রশ্নোক্ত বক্তব্যে লেখকের আর্থিক দীনতা প্রকাশিত হয়েছে।
অনেকদিন পরে লেখক গ্রামে এসেছেন পৈতৃক ভিটায়। এসে দেখেন ঘরবাড়ি যা ছিল ভেঙেচুড়ে ভিটিতে জঙ্গল গজিয়েছে। তাঁর সাথে দেখা হয় বাবার পুরাতন বন্ধু চক্কোত্তি মশায়ের। তিনি লেখককে দেখে খুশি হলেন এবং বললেন কতদিন পর গ্রামে আসলে এখন বাড়িঘর কর। জবাবে লেখক উক্ত উক্তিটি করেন। যাতে তাঁর আর্থিক দৈন্যকে প্রকাশ করে।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের বুধোর মায়ের সাথে ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধার বয়সের ভারসাম্য এবং আর্থিক সচ্ছলতার সাথে অমিল রয়েছে।
দারিদ্র্য সমাজের একটি অভিশাপ। এর কশাঘাতে অনেক সম্ভাবনাময় জীবন তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়। এর তীব্র ছোবলে মানুষ মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি নৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির মুখে পড়ে।
উদ্দীপকের বুধোর মায়ের সাথে ‘আহবান’ গল্পের বুড়ির বয়সের সাথে স্বার্থগত ভারসাম্য এবং অর্থনৈতিক সচ্ছলতার অমিল রয়েছে। বুধোর মায়ের বয়স ৭০ বছর হলেও তার মুখের চেহারা বদলায়নি। কিন্তু ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধার শরীর-মন সবই বিধ্বস্ত হয়েছে অভাব নামক দানবের ছোবলে। বৃদ্ধা চোখেও ঠিকমতো দেখতে পায় না। গল্পের বৃদ্ধার মতো বুধোর মায়ের স্বাস্থ্যগত ভাঙন অতটা ধরেনি । দুজনের মধ্যে অস্তিত্বের বিষয়ের মিল থাকলেও আলোকিত বিষয়ের অমিল রয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকের লেখকের এবং ‘আহবান’ গল্পের লেখকের গ্রামে ফেরার উদ্দেশ্য এক নয়।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রতিটি মানুষই তার জন্মভূমিকে ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, জন্মভূমি প্রতি হৃদয়ের টান অনুভব করে। এজন্য যত দীনহীন পরিবেশই জন্মভূমি থাক না কেন তাকে কেউ ভালো না বেসে পারে না। এর প্রতি কেমন যেন নাড়ির টান অনুভূত হয়।
উদ্দীপকের লেখককে ভূমিতে মাটিতে ফিরে আসতে দেখা যায়। কিন্তু তিনি যতটা না গ্রামকে ভালোবেসে ফিরে এসেছেন তার চেয়ে বাধ্য হয়েছেন বেশি। উদ্দীপকে লেখক বলেছেন, পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে চাকরি করতে গিয়েছিলেন। অবশেষে বোমার তাড়া খেয়ে তিনি গ্রামে এসে ঘরবাড়ি সারিয়ে বাস করতে শুরু করলেন। কিন্তু এই একই উদ্দেশ্যে ‘আহবান’ গল্পের লেখক গ্রামে প্রত্যাবর্তন করেননি।
‘আহবান’ গল্পে দেখা যায়-লেখক একদিন একটা ছুটিতে গ্রামে প্রত্যাবর্তন করেন। গ্রামে এসে তাঁর বাবার পুরাতন বন্ধু চক্কোত্তি মশায়ের সাথে দেখা হলে তিনি অনুরোধ করেন বাবার ভিটায় বাড়িঘর তোলার জন্য। এক পর্যায়ে লেখক গ্রামে বাড়িঘর তুলে ছুটিতে এসে বসবাস শুরু করেন। গ্রামের লোকজনের সাথে হৃদ্যতা গড়ে তোলেন। পুরাতন বন্ধুদের খোঁজখবর নেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের লেখক যে, উদ্দেশ্যে গ্রামে প্রত্যাবর্তন করেন ‘আহবান’ গল্পের লেখকের গ্রামে প্রত্যাবর্তনের কারণ বা উদ্দেশ্য এক নয়। তাই বলা যায় প্রশ্নের মন্তব্যটি যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
সভ্যতা একদিকে যেমন ক্ষয়িষ্ণু অন্যদিকে চলে তার বিনির্মাণ। মরণশীল ব্যক্তিমানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা। মাঠে থাকে চঞ্চলতা, চালতাফুলে পড়ে শীতের শিশির, লক্ষীপেঁচার কণ্ঠে ধ্বনিত হয় মঙ্গলবার্তা, খেয়া নৌকা চলে নালানদীতে অর্থাৎ কোথাও থাকে না সেই মৃত্যুর রেশ। ফলে মৃত্যুতেই সব শেষ নয়, পৃথিবীর বহমানতা মানুষের সাধারণ মৃত্যু রহিত করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে মানুষের মৃত্যু আছে কিন্তু এ জগৎ সৌন্দর্যের মৃত্যু নেই, মানুষের স্বপ্নেও মরণ নেই।
ক. বিভূতিভূষণ কত সালে বিএ পাস করেন?
খ. বুড়ি লেখককে বসার জন্য কেন খেজুরের চটখানা পেতে দিতে বললেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের কোন দিকটি তুলে ধরেছে?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “মৃত্যুর কথা উলেখ থাকলেও উদ্দীপকের ভাবটি ‘আহবান’ গল্পের লেখকের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটি বিচার কর।
ক. জ্ঞান
বিভূতিভূষণ ১৯১৮ সালে বিএ পাস করেন।
খ. অনুধাবন
বৃদ্ধার গোপাল লেখক আসবে বলে বৃদ্ধা নিজের হাতে খেজুরের চাটাই বুনেছিলেন লেখকের বসতে দেয়ার জন্য।
বৃদ্ধার অসুস্থতার খবর শুনে লেখক গেলেন তাকে দেখতে। গিয়ে দেখলেন বুড়ি শুয়ে আছে একটা মাদুরের উপর। বুড়ি লেখককে চিনতে পেরে আহ্লাদে আটখানা হয়ে তার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। বুড়ি বলেন, ভালো আছ অ-মোর গোপাল। বসতে দে গোপালকে বসতে দে। গোপালেরে ঐ খাজুরের চটখানা পেতে দে। বুড়ি অনুরোধের সুরে লেখককে বলেন, তোর জন্যি খাজুরের চাটাই বুনে রেখেছিলাম। ওখানা পুরনো হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। তুই একদিনও এলি না গোপাল?’ এখানে লেখকের প্রতি বৃদ্ধার মাতৃস্নেহের প্রকাশ ঘটেছে।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকটি ‘আহবান’ গল্পের বৃদ্ধার মৃত্যুর দিকটি তুলে ধরেছে।
মানুষ মরণশীল, কথাটি চিরন্তন সত্য। কিন্তু এ সত্যকে সহজে কেউ মেনে নিতে পারে না, এ পৃথিবী ছেড়ে কেউই বিদায় নিতে চায় না। তারপরও মরণশীল মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই অনিবার্য মৃত্যু থেকে কেউ রেহাই পায় না।
উদ্দীপকে ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, মরণশীল ব্যক্তিমানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা। ফলে মৃত্যুতেই সব শেষ হয়ে যায় না। পৃথিবীর বহমানতা মানুষের সাধারণ মৃত্যু রহিত করতে পারে না। ‘আহবান’ গল্পও এই মৃত্যুর মাঝে শেষ হলেও সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। লেখকের অনুভূতিতে বেদনার আভাস থাকলেও তার স্বাভাবিক জীবন থেমে থাকেনি। তার বেদনাজড়িত স্মৃতির উলেখ করেছেন একটি কথায়- বেঁচে থাকলে হয়তো বলে উঠতো-অ মোর গোপাল। এতে আমাদের মনে বেদনাজড়িত স্মৃতি মনে পড়লেও জগৎ ঠিকই সামনে এগিয়ে চলে। উদ্দীপকটি গল্পের এ বিষটিকেই তুলে ধরেছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“মৃত্যুর কথা উলেখ থাকলেও উদ্দীপকের ভাবটি ‘আহবান’ গল্পের লেখকের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করতে পারেনি।” – মন্তব্যটি যথার্থ।
পৃথিবীতে জন্ম-মৃত্যুর খেলাটি চিরন্তন। জন্ম যেমন এখানে নতুন কিছু সৃষ্টি করে তেমনি মৃত্যু ঘটায় শূন্যতা। তারপরও পৃথিবী এগিয়ে চলে তার আপন নিয়মেই। প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা। উদ্দীপকে এই জন্ম-মৃত্যুর বিষয়টি অর্থাৎ পৃথিবীর ভাঙা-গড়ার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, সভ্যতার একদিকে যেমন ক্ষয় হচ্ছে অন্যদিকে চলছে তার বিনির্মাণ। মরণশীল ব্যক্তি-মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা, থাকে চঞ্চলতা। ফলে এখানে মৃত্যুই সব শেষ নয়। পৃথিবীর বহমানতা মানুষের সাধারণ মৃত্যু রহিত করতে পারে না। উদ্দীপকের এ ভাবটি ‘আহবান’ গল্পের লেখকের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধারণ করতে পারেনি।
‘আহবান’ গল্পে বৃদ্ধার মৃত্যু নিতান্ত স্বাভাবিক একটা ঘটনা। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলে উদ্দীপকের ভাবের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যাবে। কিন্তু বৃদ্ধার মৃত্যুতে লেখকের মনোজাগতিক যে পরিবর্তন ঘটেছে, সেটাকে সম্পূর্ণভাবে উদ্দীপকের ভাবটি তুলে ধরতে পারেনি। বৃদ্ধার সাথে লেখকের সম্পর্ক ছিল উদার মানবিক স্নেহের সম্পর্ক। বৃদ্ধাকে তিনি মায়ের মতো মনে করতেন। তার মৃত্যুতে লেখকের মনে মা-হারানোর বেদনা অনুভূত হয়েছে।
একটা অসহায়, সহায়-সম্বলহীন মানুষ পৃথিবী থেকে চলে গেলে কারো কোনো ক্ষতি হবে না, এমনকি পৃথিবীর এতটুকু পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে না তবু বৃদ্ধার মৃত্যুতে লেখকের হৃদয়ের যে রক্তক্ষরণ, আবেগের গভীরতা, সেটা কোনো নীতি বা জ্ঞানের দ্বারা বিচার করা যাবে না। তাই বলা যায়, মৃত্যুর কথা উলেখ থাকলেও উদ্দীপকের ভাবটি লেখকের সম্পূর্ণ চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও
- hsc result 2024
- hsc/এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র সংক্ষিপ্ত সাজেশন, ফাইনাল সাজেশন এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র, hsc logic 1st paper suggestion 100% common guaranty, special short suggestion hsc suggestion logic 1st paper
- আলিম ইসলামের ইতিহাস সাজেশন ১০০% নিশ্চিত কমন,আলিম পরীক্ষা ইসলামের ইতিহাস সাজেশন,A+ 100% Sure আলিম/Alim ইসলামের ইতিহাস সাজেশন