প্রশ্ন সমাধান: শঙ্করের মতে প্রমাণ কত প্রকার ও কী কী,প্রমাণের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখপূর্বক এ সম্পর্কে শঙ্করের অভিমত লেখ
ভূমিকা : মহর্ষি বাদ্রায়ন বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। বাদরায়ন বেদান্ত দর্শনের যে সূত্রগুলো ব্যাখ্যা করেছেন তা খুবই সংক্ষিপ্ত বলে বিভিন্ন ভাষ্যকর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ সকল ব্যাখ্যার মধ্যে শঙ্করাচার্য ও রামানুজ প্রদত্ত ব্যাখ্যা প্রাধান্য লাভ করেছে। অন্যান্য মতবাদের ন্যায় জ্ঞানতত্ত্বেও শঙ্করাচার্য ও রামানুজ নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়ে আলোচনা করেছেন। শঙ্কর তাঁর জ্ঞানতত্ত্বে জ্ঞানের চারটি উৎসের কথা বলেছেন। যথা : (ক) প্রমাণ; (খ) পরাবিদ্যা ও অপরাবিদ্যা; (গ) সত্যতা ও (ঘ) ভ্রম।
প্রমাণ : শঙ্করাচার্যের জ্ঞানতত্ত্বে তাঁর অদ্বৈতবাদী মত প্রকাশ পায়। প্রমাণ সম্পর্কে শঙ্করের মতবাদ ভাট্ট- মীমাংসকদের মতবাদেরই অনুরূপ। শঙ্কর বলেন, প্রমাণ হলো যথার্থ জ্ঞানের উপায়। তিনি ছয় প্রকার প্রমাণের কথা স্বীকার করেন, যথা : ১. প্রত্যক্ষ, ২. অনুমান, ৩. শব্দ, ৪. উপমান, ৫. অর্থাপত্তি এবং ৬. অনুপলব্ধি ।
১. প্রত্যক্ষ : কোন সৎ বস্তুর সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের সংযোগ ঘটলে যে জ্ঞান হয় তাই প্রত্যক্ষ জ্ঞান। অর্থাৎ ইদ্রিয়ের সাহায্যে যে অপরোক্ষ জ্ঞান লাভ হয় তার নাম প্রত্যক্ষ।
২. অনুমান : যে জ্ঞাত বিষয়ের উপর নির্ভর করে এবং তার দ্বারা সমর্থিত হয়ে যদি কোন অজ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ হয় তাকে অনুমান বলে । অর্থাৎ হেতুপদ ও মধ্যপদের ব্যাপ্তি সম্বন্ধের জ্ঞান থেকে অনুমান হয়। অনুমান দুই রকম- স্বার্থানুমান ও পরার্থানুমান। স্বার্থানুমানে ব্যাপ্তি জ্ঞানই যথেষ্ট। পরার্থানুমানে তিনটি অবয়ব প্রয়োজন। যথা- প্রতিজ্ঞা, হেতু ও উদাহরণ ।
আরো ও সাজেশন:-
৩. শব্দ : বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তির বচনের উপর নির্ভর করে যে জ্ঞান লাভ তাকে শব্দ বলে।
৪. উপমান : সাদৃশ্যের ভিত্তিতে একটি জিনিস থেকে অপর একটি জিনিসের জ্ঞানকে উপমান বলে।
৫. অর্থাপত্তি : কোন বিষয়কে যখন জ্ঞাত কোন কারণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা না যায় তখন অন্য কোন অজ্ঞাত কারণকে কল্পনা।করা হয়। এ অজ্ঞাত কারণকে কল্পনা করার নাম অর্থাপত্তি। অর্থাৎ যা স্বীকার না করলে কোন একটি অপ্রত্যক্ষ বিষয়ের ব্যাখ্যা হয় না এবং যে প্রকল্প কেবল ঐ অপ্রত্যক্ষ ঘটনার ব্যাখ্যা করার পক্ষে অপরিহার্য তার স্বীকৃতিকে অর্থাপত্তি বলে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৬. অনুপলব্ধি : কোন বস্তুর অভাবের অনস্তিত্ব বা অব্যবহিত ও তাৎক্ষণিক জ্ঞান লাভের জন্য অনুপব্ধি নামক একটি স্বতন্ত্র প্রমাণকে শঙ্কর স্বীকার করেন। উল্লেখ্য, উক্ত ছয়টি প্রমাণকে শঙ্কর স্বীকার করলেও তাঁর মতে প্রমাণ মূলত তিন প্রকার, যথা- প্রত্যক্ষ, অনুমান ও আগম বা শব্দ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শঙ্কর বেদান্ত দর্শনের ভাষ্যকার হিসেবে যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য। তাইতো শঙ্করাচার্যের জ্ঞানতত্ত্ব দর্শনের আলোচনায় প্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- ইজারা অর্থায়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা কর
- লিভারেজ ইজারার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ
- লিভারেজ ইজারা বলতে কি বুঝ বিস্তারিত আলোচনা করো
- IAS 17 ও IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 vs IFRS 16 পার্থক্য, IAS 17 ও IFRS 16 মধ্যে পার্থক্য আলোচনা
- আইএফআরএস ১৬ ও আইএসি ১৭ পার্থক্য । আইএফআরএস ১৬ vs আইএসি ১৭ পার্থক্য
- আই এ এস (IAS) অনুযায়ী ইজারা গ্রহীতার হিসাববিজ্ঞানের নীতিসমূহ লেখ