সঊদিয়ার রাজধানী রিয়ায শহরের এক ভদ্র মহিলা, দেশে যাঁর সামাজিক এক প্রকার প্রভাব আছে।
তিনি বলেন, আমার ঘরে একজন অমুসলিম দাসী কাজ করত। তাকে আমি ইসলামের দাওয়াত দিলাম। সে খুশীর সাথে ইসলাম গ্রহণ ক’রে নিল। সে অর্থ ও তফসীর-সহ কুরআন মাজীদ অধ্যয়ন করতে লাগল।
তার উপর কুরআনের বড় প্রভাব পড়ল। কিছুদিন পর আমি লক্ষ্য করলাম, এখন সে খুশী নয়। তার মেজাজে সেই স্ফূর্তিভাব আর নেই, যা পূর্বে ছিল। মনে হল, সে কোন দুশ্চিন্তার শিকার হয়েছে।
তাকে নিজের মধ্যে হারিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। পরিশেষে একদিন আমি তাকে জিজ্ঞাসাই ক’রে ফেললাম এবং তার দুশ্চিন্তার কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। জিজ্ঞাসার পর সে প্রকৃত ঘটনার পর্দা উন্মোচন করল এবং বলল, ‘আমার বাড়িতে কিছু এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, আমার বাড়ি ফেরা জরুরী হয়ে গেছে।
কিন্তু আমার ও আপনার মাঝে যে কর্মচুক্তি আছে, তা পুরো হবে না। কুরআনে নির্দেশ রয়েছে,
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَوْفُواْ بِالْعُقُودِ} (1) سورة المائدة
“হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা অঙ্গীকার (ও চুক্তিসমূহ) পূর্ণ কর।” (মায়িদাহঃ ১)
এই জন্য আমি আপনার কাছে আমার স্বদেশে ফিরে যাওয়ার দাবি করতে পারছি না।
ভাববার কথা যে, একজন নও মুসলিম দাসীর উপর কুরআনের কী প্রভাব পড়ল এবং কুরআনের উক্ত আয়াত তার মধ্যে কেমন ইস্তিক্বামাত সৃষ্টি করল?
আমি এ কথা লিখছি ও ভাবছি যে, বর্তমানে মুসলিমরা কী পরিমাণ কুরআন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে?
এমনকি যারা কুরআন পঠন-পাঠনে যত্নবান, তারাও আপোসের কৃত চুক্তিপূরণের কথা খেয়ালে রাখে না! বহু মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে এই অভিযোগ আসে যে, অমুক ইমাম সাহেব বা অমুক মুদার্রিস সাহেব এখানে তাঁর অনেক প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও তিনি (চুক্তি ভঙ্গ ক’রে) কাজ ছেড়ে অন্য কোন জায়গায় চলে গেছেন।
বরং নিকটবর্তী অতীতে আমি মহারাষ্ট্রের কিছু জেলাতে দাওয়াতী সফরে গিয়েছিলাম। সেখানে লোকেরা একটি মসজিদের ইমাম ও মসজিদে চালু মক্তবের মুদার্রিসের (পালিয়ে যাওয়ার) ব্যাপারে আমাকে নানা সমস্যার কথা খুলে বলল।
প্রথমতঃ এখানে আমাদের জামাআত নব্য-নতুন। এখানে লোকেরা দ্বীন-শিক্ষার কঠিন মুখাপেক্ষী।
দ্বিতীয়তঃ এই মসজিদ ও মক্তবে কোন দ্বিতীয় মুদার্রিসও নেই। তাই মক্তব বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
তৃতীয়তঃ এই এলাকার হিসাবে তাঁকে যথেষ্ট পরিমাণ বেতনও দেওয়া হতো। কিন্তু কোন প্রতিবেশী শহরে কিছু টাকা বেশি বেতনের লোভে তিনি বাড়ি ও বাড়ির লোকেদের প্রয়োজনের বাহানা বানিয়ে জবাব দিয়ে দিলেন এবং বছর পুরো হওয়ারও অপেক্ষা করলেন না।
আবার মসীবত এই যে, লোকেরা তাঁকে বিদায়ের জন্য স্টেশন পর্যন্তও গিয়েছিল। কিন্তু ঐ সাহেব (বাড়ি না গিয়ে) স্টেশনের অপর দিক থেকে বের হয়ে অন্য শহরে গিয়ে চাকরি করতে শুরু করলেন!
(তার মানে অতিরিক্ত অর্থলোভে একই সাথে দুটি মুনাফিকী গুণের প্রয়োগ করলেনঃ চুক্তি ভঙ্গ ও মিথ্যাবাদিতা।)
এটি একটি উদাহরণ মাত্র। পাঠকবর্গ খুব ভালোরূপে জানেন যে, অনুরূপ শত-শত উদাহরণ আমাদের সমাজে বর্তমান।
(বইঃ সরল পথের অটল পথিক)
শায়খ মাকসূদুল হাসান ফাইযী (হাফিযাহুল্লাহ), অনুবাদঃ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
- অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা কী?
- OECD কি বিস্তারিত আলোচনা কর
- কোম্পানি সচিবের কী?, কোম্পানি সচিবের বলতে কী বুঝ?
- কোম্পানি সচিবের ক্ষমতা ও অধিকার
- কোম্পানি সচিবের গুরুত্ব লেখ, কোম্পানি সচিবের উদ্দেশ্য সমূহ আলোচনা কর