সমাজকর্মীদের প্রতিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক কেন?, প্রতিবেশ সম্পর্কে সমাজকর্মীদের জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যকীয় কেন? আলোচনা কর।, “সমাজকর্মীদের প্রতিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক কি” ব্যাখ্যা কর
ভূমিকা : মানুষ, প্রাণিকুল ও তার চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান সন্নিবেশিত আছে Ecology তে। সমাজকর্মী যেহেতু মানুষের কল্যাণে কাজ করে সেহেতু তাকে মানুষের সমস্যার সমাধান করে কল্যাণৎসাধন করতে হলে অবশ্যই পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হবে। সমাজকর্মীর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধান করা। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী ব্যক্তি, দল ও সমষ্টি এমনভাবে সাহায্য করে যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পদ ও সামর্থের পূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়।
প্রতিবেশ সম্পর্কে জ্ঞানের আবশ্যকতা : প্রতিবেশ সম্পর্কে একজন সমাজকর্মীর পূর্ণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এর কারণগুলো নিম্নরূপ :
আরো ও সাজেশন:-
১. সুষ্ঠু পরিবেশ সংরক্ষণ : মানুষের সুষ্ঠু স্বাভাবিক, প্রাণোজ্জ্বল জীবনযাপনের জন্য সতেজ পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক। সুন্দর জীবনের জন্য চাই দূষণযুক্ত পানি, মাটি, বাতাস তথা যথার্থ পরিবেশ। এসব সম্পর্কে সমাজকর্মীর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে এবং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে যাতে তারা নিজের সচেতন হয়ে পরিবেশকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখে। আর এ সম্পর্কে জানার জন্য সমাজকর্মীকে প্রতিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করতে হয়।
২. পরিবেশগত পরিবর্তন এবং সমস্যা : শিল্পায়নের ফলে সামাজিক যেসব পরিবর্তন হয়েছে তা সর্বদা পরিবেশের অনুকূল নয়। তাছাড়া শিল্পায়নের ফলে পরিবেশেও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন- শিল্পায়নের অন্যতম একটি বস্তি ফল হলো বস্তি সমস্যা। কারখানায় কর্মরত লোকদের সুষ্ঠু বাসস্থানের অভাবে তারা ব্যক্তিগত বস্তি গড়ে তোলে এবং তে কোন ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকে না। ফলে বস্তি এলাকার পরিবেশ যেমন অস্বাস্থ্যকর তেমনি নগরও প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যদি নোংরা,
অপরিচ্ছন্ন হয়, সেখানে বিভিন্ন রোগ জীবন্ত জন্মে বহুমুখী রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। যেমন- ডেঙ্গুজ্বর। এ সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সমাজকর্মীকে এসিড মশা সম্পর্কে জানতে হয় যার জন্য প্রতিবেশ এর শরণাপন্ন হতে হয়। তবে
[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৩. পরিবেশের ক্ষয়িষ্ণুতা রোধ : জ্বালানি, আসবাবপত্র, বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য ব্যাপকভাবে বৃক্ষনিধন হচ্ছে যা প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সভ্যতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ কিভাবে দূষিত হচ্ছে ও কিভাবে এ দূষণ রোধ করা যায় এ সম্পর্কে Ecology বা প্রতিবেশ এর জ্ঞান নিয়ে জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সমাজকর্মীরা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, মানব হিতৈষী দর্শন ও পেশাগত দক্ষতা এবং নেপথ্যভিত্তিক জ্ঞানের আলোকে বিশেষ সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ করে যারা বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ব্যক্তিগত, দলগত ও সমষ্টিগত সমস্যা সমাধানে মানুষকে সাহায্য করে সমাজস্থ মানুষের সমাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতায় উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ করে সন্তোষজনক ব্যক্তিগত, দলগত ও সামাজিক সম্পর্ক লাভে সাহায্য করে থাকে। মানুষ তার প্রতিবন্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুতরাং, প্রতিবেশের জ্ঞান অর্জন ছাড়া সমাজকর্মী কোনভাবেই ব্যক্তির সমস্যার সঠিক সমাধান দিতে পারবে না।