দ্রুত বীর্যপাত(premature ejaculation) পুরুষদের একটি সাধারণ যৌন সমস্যা। এক থেকে দেড় মিনিটের আগে যদি পুরুষের বীর্যপাত বা ইজাকুলেশন হয়ে যায়, একে আমরা সাধারণত দ্রুত বীর্যপাত বা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলি। দ্রুত বীর্যপাতের কারণ ও প্রতিকার, দ্রুত বীর্যপাত কেন হয়,দ্রুত বীর্যপাত সমাধান করা যায়?
পুরুষ বা তার সঙ্গীনী যতটুকু সঙ্গমের আশা করে তার চেয়ে অনেক দ্রুত যদি বীর্যপাত ঘটে সেটা মোটেও কাম্য নয় এবং এতে একজন বা উভয়েরই কষ্ট হয়।
রতিকাজ(foreplay) শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছু পুরুষের বীর্যপাত হয়। অনেকে সঙ্গীর ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, আবার কারো কারো অনুপ্রবেশের পরে খুব দ্রুত বীর্যপাত হয়।
যা-ই হোক না কেন, অকাল বীর্যপাত হতাশা সৃষ্টি করতে পারে এবং একজন পুরুষ এবং তার সঙ্গীনীর মধ্যে মন কষাকষি সৃষ্টি করতে পারে।
সহবাসের সময় কীভাবে দ্রুত বীর্যপাত নিয়ন্ত্রন করা যায়
Table of Contents
দ্রুত বীর্যপাত কি?
দ্রুত বীর্যপাত হলো যৌনসঙ্গম-এর সময়ে পুরুষের দ্রুত বা নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই স্পার্ম বা বীর্য বের হয়ে যাওয়া। এটি একটি অন্যতম যৌনগত সমস্যা।
গবেষনা অনুযায়ী প্রতি ৩জন পুরুষের মধেই এই সমস্যা দেখা যায়। মূলত, যৌনসঙ্গমের সময়ে স্ত্রীর যৌনঙ্গে পুরুষাঙ্গ প্রবেশের পর পর ই বা এর পূর্বেই বীর্যপাত হয়ে যাওয়াকে অর্থাৎ যৌনকার্য সম্পন্ন হওয়ার আগেই বীর্যপাত হওয়াকেই দ্রুত বীর্যপাত বা প্রিম্যাচিউর-ইজাকুলেশন (premature ejaculation) বলা হয়।
দ্রুত বীর্যপাতের কারন কী?
১। সাইকোলজিক্যাল কারন
আমাদের মনে হতেই পারে যে এই প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের এর সাথে সাইকোলজির কি সম্পর্ক থাকতে পারে? আমাদের শারীরিক অনেক সমস্যার সাথেই মানসিক স্বাস্থ্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত। সাইকোলজিক্যাল সমস্যার কারনে যৌনকার্যের সময় মনযোগ থাকেনা, দ্রুত যৌনকার্যের মনোভাব চলে আসে ইত্যাদি। কারন যৌনকার্যের সফলতাই নিমিত্ত থাকে এতেই যে, উভয় যৌনসঙ্গী এই কার্যক্রম টা-কে কতটা উপভোগ করছে। যা মানসিক পীড়া নিয়ে সম্ভব যেসকল কারনে এই সাইকোলজিক্যাল সমস্যা হতে পারে সেগুলো হলোঃ
- মানসিক চাপ
- দুশ্চিন্তা
- অপরিমিত ঘুম
- যৌনশিক্ষার অভাব
- কম বয়সে হওয়া কোনো সেক্সুয়াল ট্রমা
- পারিবারিক কলহ
- সঙ্গীনীর সাথে মানসিক সম্পর্ক ভালো না থাকা
- নিজের উপর কনফিডেন্ট না হওয়া
- অতিরিক্ত প্রত্যাশা থাকা
- পূর্বে ঘটে যাওয়া কোনো প্রকার সেক্সুয়াল এবিউজ
আরো পড়ুন: পুরুষাঙ্গের বড় করার ব্যায়াম
২। শারীরিক কারন
- শারীরিক দূর্বলতা
- মাদকাসক্ত
- হরমোন জনিত সমস্যা
- হার্টের সমস্যা (এতে করে রক্তচাপ কমে যায় এবং পুরুষাঙ্গের শক্তি কমে যায়।)
- মূত্রনালীতে হওয়া কোনো সংক্রমন
- কোন আঘাত পেয়ে স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে
- অনিয়মিত হস্তমৈথুন
- থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা
- অনেকদিন পর পর শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ পাওয়া
এছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারনেও এই সমস্যা হতে পারে। সেগুলো হলোঃ
- ডায়াবেটিস
- সিফিলিস
- গনোরিয়া
- হৃদরোগ
- টেস্টোস্টেরন হরমনের ইমব্যালান্স
আরো পড়ুন: সন্তান জন্মদানের পর সহবাস
দ্রুত বীর্যপাত রোধের উপায়
এটি একটি অন্যতম গোপন এবং গুরতর রোগ হলেও এর থেকে মুক্তির উপায় আমাদের নিজের হাতেই থাকে। শুধুমাত্র নিজেরদের কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন এবং কিছু নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমেই এই রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া নিজের খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমেও এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিচে উপায় গুলো বর্ননা করা হলোঃ
শারীরিক সমস্যা গুলোর সমাধান
শারীরিক কোনো সমস্যার কারনে প্রিম্যাচিউর ইজাক্যুলেশন হলে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার বা এই সমস্যা হওয়ার থেকে প্রথম ধাপ-ই হলো নিজের শারিরীক স্বাস্থের দিকে খেয়াল রাখা। যেসকল কাজ করে আমরা আমাদের এই শারীরিক দূর্বলতা থেকে রক্ষা পেতে পারি সেগুলো হলোঃ
১। কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার বর্জন করুন
এধরনের খাবার হার্টের জন্য ক্ষতিকর। এতে করে হৃদরোগ হতে পারে যার ফলে রক্ত চলাচলে সমস্যা দেখা দিলে তার ইফেক্ট আপনার যৌন স্বাস্থের উপর পড়বে।
২। নিয়মিত দুধ পান করা
প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় অন্তত এক কাপ করে দুধ পান করার অভ্যাস তৈরি করুন। উত্তম হয় যদি দুধের সাথে পুর্বেই ভিজিয়ে রাখা কয়েকটি কাজু-বাদাম খেতে পারেন। তাছাড়া, জাফরান, আদা ও এলাচ এক চিমটি করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি অবশ্যই আপনার যৌন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
আরো পড়ুন: শরীরের ভেতর কনডম আটকে গেলে কী করবেন?
৩। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
এতে করে আপনার যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে যা আপনাকে প্রিম্যাচিউর ইজাক্যুলেশন থেকে রক্ষা করবে।
৪। কনডম ব্যাবহার
যৌনসঙ্গমের সময় স্ত্রী যোনীতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে যখন স্ট্রোক দিতে থাকে, তখন উভয় লিঙ্গের মাঝে ঘর্ষনের ফলে যোনির ভিতর গরম হয়ে উঠে। এই ঘর্ষন ও গরমের ফলে পুরুষের জলদি ইজাকুলেশন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে কনডম ব্যাবহার করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কনডমের লুব্রিক্যান্ট এই ঘর্ষন এর হার কমিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে মোটা কনডম ব্যাবহার করা উত্তম।
৫। হস্তমৈথুন
আমরা অনেকেই মনেকরি হস্তমৈথুন স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। বিষয়টা শতভাগ ঠিক নয়। অনিয়মিত হস্তমৈথুন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন পর পর যৌনসঙ্গম করতে গেলে তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যায়। অনেকদিন ধরে ইজাক্যুলেশন না হওয়ার ফলে অণ্ডকোষ বীর্যে ভরে থাকী এবং কয়েকটা স্ট্রোক দিলেই ইজাক্যুলেশন হয়ে যায়। এজন্য নিয়ম করে কিছুদিন পর পর যথাযথ নিয়ম মেনে হস্তমৈথুন করা এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৬। মাদক-দ্রব্য বর্জন করা
মদ্যপান বা ধুমপান আমাদের হৃদ-যন্ত্রকে বাজে ভাবে ক্ষতি করে। এতে করে বিভিন্ন হৃদরোগ হয় এবং তা আমাদের যৌনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
৭। দ্রুত বীর্যপাত রোধে সঠিক সেক্স পজিশন
কিছু সেক্স পজিশন আছে, যেগুলো ফলো করে যৌনসঙ্গম করলে দ্রুত ইজাক্যুলেশন হয়ে যায়। মিশনারি পজিশন এর মধ্যে অন্যতম একটি। এই পদ্ধতিতে স্ত্রী তার দুই পা ছড়িয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে এবং পুরুষ তার উপরে শুয়ে যৌন মিলন করেন। এতে করে বীর্যপাত ঠেকানো সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে কাউগার্ল পদ্ধতি একটি সমাধান হতে পারে। এই পদ্ধতিতে পুরুষ নিচে শুয়ে থাকেন এবং নারী তার উপরে বসে যৌনকার্যে লিপ্ত হন। তাছাড়া, ‘ফেস অফ’ এবং ‘স্পুন’ এই দুই পদ্ধতিতেও ধীরে ধীরে দীর্ঘসময় ধরে যৌনকার্য করা যায়।
ফেস অফ পজিশনে চেয়ার, বিছানা বা টেবিলে পুরুষের কোলে নারী মুখোমুখি হয়ে বসে যৌনকার্যে লিপ্ত হন আর স্পুন পজিশনে নারী কাত হয়ে শুয়ে থাকে আর পুরুষ তার পেছনে কাত হয়ে শুয়ে যৌনমিলন করেন।
মানসিক সমস্যার সমাধান
মানসিক সমস্যার ফলে যৌনসঙ্গমের সময় যৌনকার্যে মনযোগ থাকে না, যার ফলে ইরেক্টাইল ডিসফাংসন এবং প্রিম্যাচিউর ইজাক্যুলেশনের মতো সমস্যা দেখা যায়। এক্ষেত্রে সমস্যা না লুকিয়ে সঠিক কাউন্সিলিং করার মাধ্যমে এর সমাধান করে নেয়া উচিত।
আরো পড়ুন: মাথা ব্যথার দোয়া,মাথা ব্যথা দূর করার দোয়া
১। মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা
মানসিক দুশ্চিন্তা আমাদেরকে মানসিক ও শারীরিক দুই ভাবেই দূর্বল করে দেয়। এতে করে যৌনসঙ্গমের সময় সঠিক মনযোগ থাকে না তাছাড়া এতে করে যত দ্রুত সম্ভব যৌনকার্য শেষ করার মনোভাব চলে আসে। এজন্য সবসময় নিজেকে মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখতে হবে। রিফ্রেশমেন্টের জন্য মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক কোনো স্থানে ঘুরতে যেতে পারেন।
২। সঙ্গীনীর সাথে ভালো সম্পর্ক না থাকা
আপনার সাথে যদি আপনার যৌনসঙ্গীর সম্পর্ক ঠিক না থাকে তবে যৌনসঙ্গমের সময় প্রিম্যাচিউর ইজাক্যুলেশনের মতো সমস্যা হয়ে থাকে। যৌনসম্পর্ক বিষাদময় হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, শান্ত মনে আপনার সঙ্গীনীর সাথে আলোচনা করুন সমস্যা গুলো নিয়ে। কিভাবে/কোন পজিশনে কমফর্ট ফিল করেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। এতে করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
৩। আরো কিছু সমস্যা
নিজের উপর আস্থা না থাকা, সেক্সুয়াল এবিউজ, পুর্বের কোনো সেক্সুয়াল ব্যার্থতা বার বার মনে করা। এই সবগুলো জিনিস-ই আপনার কনফিডেন্স কমিয়ে দিবে এবং আপনাকে সেক্স বিমুখী করবে। এই সমস্যা গুলো থেকে যথাযথ কাউন্সিলিং গ্রহন করুন।
দ্রুত বীর্যপাতের চিকিৎসা ও ঔষধ
দ্রুত বীর্যপাত রোধের প্রাথমিক চিকিৎসা আমাদের নিজের কাছেই। উপরে বর্নিত কাজ গুলো যেমন, কম কোলস্টেরল ও কম চিনি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, যৌনসঙ্গমের সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া, বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার যেমন পেয়ারা, খেজুর, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, মধু ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা, নিয়মিত বাদাম সহ দুধ পান করা ইত্যাদি।
এই রোগের জন্য এই প্রাথমিক লেভেলের চিকিৎসা সমূহ ছাড়াও আরো অনেক চিকিৎসা রয়েছে। এই চিকিৎসার ধরন ও পদ্ধতি গুলো হলোঃ
সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা
পূর্বের কোনো ট্রমা থাকলে বা সেক্সুয়াল এবিউজ এর ঘটনা ঘটে থাকলে বা পারিবারিক কলহ থাকলেও তা যৌনকার্যে সমস্যা করতে পারে। এক্ষেত্রে সাইকোলজিস্ট বা যৌনসম্পর্ক বিশেষজ্ঞের কাছে যথাযথ কাউন্সিলিং করা উচিত। লজ্জা পেয়ে সমস্যা লুকালে তার সমাধান কখনোই পাওয়া যাবেনা।
এলোপ্যাথিক চিকিৎসা
এই রোগের কোনো সার্জারি হয়না। নিজের অভ্যাস এবং কিছু নির্দিষ্ট ঔষধ সেবনের মাধ্যমেই এই রোগ থেকে সাময়িক এবং পূর্ন নিরাময় পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ক্রীম জেল ও স্প্রে বিশেষ ভাবে কার্যকর। তবে, ঔষধ সেবনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন। কারন এটি খুবই সেন্সেটিভ ব্যাপার, তাই নিজের থেকে বা অনলাইনে দেখেই ঔষধ সেবন করতে যাবেন না।
দ্রুত বীর্যপাতের অন্যান্য ওষুধ
ওষুধের ধরন | ওষুধের নাম |
দ্রুত বীর্যপাতের হোমিও চিকিৎসা | সালিক্স নায়াগ্রাকোনিয়ামএসিড ফসটার্নেরালাইকোপোডিয়াম |
দ্রুত বীর্যপাতের ভেষজ / প্রাকৃতিক চিকিৎসা | মধুরসুনইসুপগুলের ভুসিশতমূলীরামতুলসী |
বীর্য দেরিতে ফেলার ঔষধ | কোনিয়ামসোবাল সেরুলেটাসেলিনিয়াম |
দ্রুত বীর্যপাতের হোমিও চিকিৎসা
এই রোগের জন্য হোমিও পদ্ধতিতে অনেকগুলো চিকিৎসা রয়েছে নিচে এই ঔষধ গুলোর নাম ও কাজ ব্যাখা করা হলোঃ
- সালিক্স নায়াগ্রা
যেসকল পুরুষের খুব বেশি পরিমানে যৌনসঙ্গম করার ইচ্ছা থাকল লিঙ্গ শক্ত হতে চায়না, সেসকল মানুষের জন্য ডাক্তার রা এই ঔষুধ প্রেস্ক্রাইব করে থাকেন।
আরো পড়ুন: মেয়েদের যৌন চাহিদা বাড়ানোর ওষুধ
- কোনিয়াম
যৌন কার্য শুর করার পর পর ই বা যোনীতে লিঙ্গ প্রবেশ করানোর আগেই বীর্যপাত হয় যাদের তাদের জন্য এই ঔষুধ।
- এসিড ফস
যৌন মিলনের পর পর ই শরীর দুর্বল হয়ে যায়, মাথা ঘুরানো, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা যাদের আছে তাদের জন্য এই ঔষুধ।
- টার্নেরা
যাদের বীর্য পাতলা বা পরিমানে কম তাদের জন্য এই ঔষুধ কার্যকরী।
- লাইকোপোডিয়াম
অতিরিক্ত সঙ্গম বা হস্তমৈথুনের ফলে ধ্বজভঙ্গ রোগ হয় অনেকের। সেক্ষেত্রে এই ঔষধ কার্যকরী ফলাফল দিতে পারব
আরো পড়ুন: ধাতু দূর্বলতার সমস্যা ও সমাধান
দ্রুত বীর্যপাতের ভেষজ / প্রাকৃতিক চিকিৎসা
১। মধু
যাদের পাতলা বীর্য জনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য বীর্য ঘন করার অন্যতম ভেষজ উপায় হচ্ছে মধু খাওয়া। প্রতিদিন ৩বেলা করে এক চা-চামচ বা তার কিছু কম খাবেন। ৩দিনের মধ্যে ফলাফল না পেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
২। রসুন
যারা বয়সের কারনে ধীরে ধীরে যৌনক্ষমতা হারিয়ে ফেলছেন তারা প্রতিদিন দু-কোয়া রসুন গাওয়া ঘি-এ ভেজে তারপর মাখন দিয়ে খেতে পারেন এবং খাওয়ার পর একটু গরম পানি বা দুধ খাওয়া উত্তম।
৩। ইসুপগুলের ভুসি
রাতে শোয়ার আগে ইসুপগুলের ভুসি ভেজানো পানি খাবেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার যৌনস্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
৪। শতমূলী
এই গাছের রস ৫০ মিলি লিটার পরিমানে নিয়ে ১০০ মিলি লিটার গাওয়া ঘি দিয়ে হালকা আচে সিদ্ধ করতে হবে। তারপর এই ঘি প্রতিদিন সকালে ও বিকালে আধা কাপ দুধের সাথে ৩ গ্রাম পরিমান মিশিয়ে খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে ও বীর্য ঘন হবে। তবে এই সময়ে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।
৬। রামতুলসী
যেসকল পুরুষের ধ্বজভঙ্গ রোগ রয়েছে তারা দুই সপ্তাহ এই রামতুলসীর রস নিয়মিত খেলে তাদের রোগমুক্তি মিলতে পারে।
আরো পড়ুন: সকাল বেলার প্রসাবের সাথে বীর্য যাচ্ছে
বীর্য দেরিতে ফেলার ঔষধ
- কোনিয়াম : এটি একটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। যাদের সঙ্গমের পুর্বেই বীর্যপাত হয়ে যায় তাদের জন্য এই ঔষধ।
- সোবাল সেরুলেটা : যৌনশক্তি বৃদ্ধি ও যৌন সঙ্গম করার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়ীত করতে এটি একটি অন্যতম ঔষধ। তাছাড়া, এটি সেবনের ফলে ঘুম, শারীরিক শক্তি, হজমশক্তি ও ওজন বৃদ্ধি পায়।
- সেলিনিয়াম : যৌনগত বিভিন্ন সমস্যা যেমন, স্বপ্নদোষ হওয়া, মাথার চুল পড়া, দ্রুত বীর্য বের হয়ে যাওয়া ইত্যাদি যৌনগত এবং হরমোন জনিত সমস্যায় সেলিনিয়াম একটি অন্যতম সমাধান। এটি বিশেষ করে কোষ্টকাঠিন্য রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।
বীর্যপাতের খাবার
১। শতমূলী ও রামতুলসীর রস
দীর্ঘ সময় ধরে যৌন মিলন চালিয়ে যাওয়া, বীর্য গাঢ় করা ইত্যাদি সমস্যায় শতমূলী ও রামতূলসীর রস অন্যতম ভেষজ ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
২। বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার
- ছাগলের দুধ
আমাদের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যৌনস্বাস্থ্যকে উন্নত রাখতে দুধের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ছাগলের দুধ বিশেষভাবে কাজে আসে। ছাগলে দুধ দেহে বীর্য সৃষ্টি করে ও শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ডিম
ডিম আমাদের দেহের জন্য গুরত্বপূর্ন অন্যতম একটি খাদ্য। ডিমে প্রচুর পরিমানে ভিটামন বি-৫ ও বি-৬ রয়েছে। এই উপাদান গুলো দেহে হরমোন উৎপাদন ও এর প্রবাহ ঠিক রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়। এতে করে দেহের শারীরিক শক্তি ও যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- অন্যান্য
এছাড়াও অন্যান্য খাবার যেমন, কুমড়ার বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, আঙুর, কমলা, চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম, তরমুজ, পিচ, কলা ইত্যাদি খাবার দেহের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে অতুলনীয়।
কী খেলে বীর্য উৎপাদন হয়?
টার্নেরা নামক একটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বীর্য উৎপাদন ও বৃদ্ধিতে অন্যতম কার্যকর। এছাড়াও, গরম দুধের সাথে বাদাম ভিজিয়ে খাওয়া ও শতমূলীর রস উপরে বর্নিত উপায়ে যথাযথ ভাবে খেলে বীর্য ঘন হয় ও পরিমানে বৃদ্ধি পায়।
Frequently Asked Questions (FAQs)
১। হস্তমৈথুন কি
উত্তরঃ হস্তমৈথুন বা স্বমোহন একপ্রকার ক্রিয়া যাতে যৌন ক্রিয়া না করে নিজের হাতের দ্বারা নিজে নিজে যৌন সুখ পাওয়া। এটি ছেলে মেয়ে উভয়েই করে থাকে।
২। হস্তমৈথুন করলে কি লিঙ্গের কোনো সমস্যা হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, হস্তমৈথুন ছেলে এবং মেয়ে দুজনের যৌনাঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। হস্তমৈথুনের ফলে যৌনশক্তি কমে যাওয়া, শরীর দূর্বল হয়ে যাওয়া সহ সিফিলিস ও গনোরিয়া জাতীয় রোগ হতে পারে। ছেলেদের পুরুষাঙ্গে কোনো হাড় থাকে না, এটি শক্ত হওয়া ও এই অবস্থা বজায় থাকে লিঙ্গের নার্ভ গুলোর শক্তির উপর যা মস্তিস্ককে সিগনাল দেয় এবং এতে করে ব্লাড পাম্প হয়ে লিঙ্গ শক্ত থাকে।
কিন্তু, হস্তমৈথুনের ফলে হাতের প্রেশারে এই নার্ভ/স্নায়ু কোষ গুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে লিঙ্গ শক্ত হতে সময় নেয় বা পুরোপুরি হয়না। আবার মেয়েদের ক্ষেত্রে হস্তমৈথুনের ফলে যোনীতে ঘা হওয়া, রক্তক্ষরন ও প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে।
৩। সহবাস শুরুর কত মিনিট পরে বীর্যপাত হলে সেটা দ্রুত বীর্যপাত হিসেবে ধরা হয়?
উত্তরঃ এমন কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে সহবাস শুরুর সাথে সাথেই বা ২-৫ মিনিটের মধ্যেই যদি পুরুষ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বীর্য ফেলে দেয় তবে তাকে দ্রুত বীর্যপাত হিসেবে ধরা হয়। তাছাড়া, আপনি যদি এর কিছুক্ষন পর আবারো যৌন কার্য করার অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন, তবে এই অবস্থা কে সাধারন হিসেবেই ধরা যাবে।
৪। যৌনশক্তি বর্ধক ওষুধের কোনো সাইড এফেক্ট আছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, বেশিরভাগ যৌনশক্তি বর্ধক ঔষুধের-ই সাইড এফেক্ট আছে। এর মধ্যে কিডনির ক্ষতি হওয়া অন্যতম। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ভেষজ ঔষুধ এবং যৌনশক্তি বর্ধক খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে ফলাফল সাথে সাথে না আসলেও নির্দিষ্ট সময় পর ঠিকই ফলাফল পাবেন এবং শরীরের কোনো ক্ষতি হবেনা।
৫। যৌনউত্তেজক ওষুধের কোনো সাইড এফেক্ট আছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, যৌনশক্তি বর্ধক ঔষুধের মতোই যৌনউত্তেজক ওষুধের ও সাইড এফেক্ট আছে। বরং, যৌনউত্তেজক ঔষুধ বেশি ক্ষতিকর।
৬। মেয়েদের দ্রুত বীর্যপাত করানোর উপায় কি?
উত্তরঃ সহবাসের আগের কিছুক্ষন নিজেদের মধ্যে কাটান, একে অপরকে চুমু দেয়া সব এসব কার্যক্রম করে নিন।
এতে করে দুজনের মাঝেই যৌন উত্তেজনা সম্পুর্নভাবে জেগে উঠবে। মেয়েদের যোনী-তে ক্লিটোরিস নামের একটি অঙ্গ আছে যা অনেকটা ছেলেদের পুরুষাঙ্গের মতোই তবে আকারে অনেক ছোট।
এটি যোনির উপরের দিকে প্রথম যোনি পর্দার নিচে থাকে। এটি মেয়েদের অন্যতম সেন্সেটিভ অঙ্গ। এতে হাতে আদর করা বা চুমু দেয়ার মাধ্যমে মেয়েদের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি ও অরগাজম দ্রুত করানো যায়।
৭। সহবাসের সময় কীভাবে দ্রুত বীর্যপাত নিয়ন্ত্রন করা যায়?
উত্তরঃ সহবাসের সময় যথাযথ সেক্স পজিশন ফলো করার মাধ্যমে দ্রুত বীর্যপাত নিয়ন্ত্রন করা যায়। তাছাড়া স্কুইজ পদ্ধতির মাধ্যমেও দ্রুত স্থলন থামানো যায়। এই পদ্ধতিতে বীর্যপাত হয়ে যাবে মনে হলে লিঙ্গের গোড়ায় চেপে ধরুন। এভাবে কিছুক্ষন রাখার পর আবার যৌনকার্য শুরু করতে পারবেন।
৮। পর্ন আসক্তি কি দ্রুত বীর্যপাত রোগ সৃষ্টি করে?
উত্তরঃ এটা ডিপেন্ড করে ব্যাক্তির উপর। সাধারনত পর্ন আসক্তরা তাদের যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য হস্তমৈথুনের পথ বেছে নেয়। এতে করে লিঙ্গের ক্ষতি সাধন হয় এবং দ্রুতবীর্যপাতের মতো সমস্যা দেখা দেয়। তবে, অনেক কাপল ও পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত থাকে, তাদের ক্ষেত্রে সাধারনত এই সমস্যা হয়না।
৯। কবিরাজি বা হারবাল ওষুধ খেলে কি দ্রুত বীর্যপাত ভালো হয়?
উত্তরঃ হারবাল ঔষুধ গুলো আপনাকে সাময়িক ভাবে শক্তিশালী করলেও আপনার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। আর, বর্তমানের বেশিরভাগ কবিরাজ-ই ভুয়া। তবে, কিছু কবিরাজ আছেন যারা সঠিক উপায়ে ভেষজ চিকিৎসা করে থাকেন। এমন অভিজ্ঞ কারো চিকিৎসা নিতে পারলে রোগমুক্তির সম্ভাবনা থাকে।
১০। সহবাসের সময় টেনশন কমানোর উপায় কি?
উত্তরঃ সঙ্গমের পূর্বে সঙ্গনীর সাথে কথা বলুন, খোশগল্প করুন। নিজেদের ভালো মোমেন্ট গুলো শেয়ার করুন। এতে করে মন হালকা হবে এবং টেনশন কমবে।