দেশে প্রতি বছর অনেক মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। বিশেষ করে বন্যার সময় এ আশঙ্কা বাড়ে। এ সময় নানা রকম বিষধর সাপের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। সাপের কামড়ে যেসব মানুষ মারা যায়, তাদের বেশির ভাগই কর্মক্ষম এবং ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। একটু সচেতন হলেই এ মৃত্যু আমরা অনায়াসেই প্রতিরোধ করতে পারি। সাপে কামড়ালে করণীয়
বর্ষাকাল এলেই বাড়ে বিষধর সাপের উপদ্রব। এতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। অনেক সময় শিশুরাও বাইরে খেলতে গিয়ে সাপের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। বর্ষা এলেই সাপ নিয়ে অনেকের মধ্যে ছড়ায়। আগে জানা জরুরি কামড়ালে প্রথমে কি করতে হবে। এছাড়া সাপে কামড়ের লক্ষণগুলো কী কী।
সাপে কামড়ালে করণীয়, বিষধর সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা
সাপে কামড়ের চিহ্ন কীভাবে সনাক্ত করতে হয় এবং শনাক্তের পর চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে প্রাথমিক চিকিৎসা কীভাবে করা উচিত তাও জানা প্রয়োজন।
সামাজিক মাধ্যমে সাপের কামড় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেন ওপার বাংলার চিকিৎসক ডা. বিকাশ কুমার (নিউরো এবং স্পাইন সার্জন, ন্যাশনাল চিফ অ্যাডভাইজার)। তিনি জানান, সাধারণত একটি বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুটি ছোট ছোট চিহ্ন তৈরি হয়। যদি অনেকগুলো ছোট চিহ্ন থাকে তবে বুঝতে হবে এটি বিষাক্ত সাপের কামড় নয়।
দক্ষিণ এশিয়ায় কয়েক শতাধিক প্রজাতির সাপ রয়েছে, এর মধ্যে ৪টি সবচেয়ে মারাত্মক। এগুলো হলো, সাধারণ কোবরা, স’-স্কেলড ভাইপার, সাধারণ ক্রেইট এবং রাসেলস ভাইপার। বিষাক্ত সাপের উপরের অংশটি ত্রিভুজাকার হয়, অন্য দিকে, যে সব সাপের বিষ নেই সেটি স্বাভাবিক থাকে।
সাপে কামড়ালে কী করা উচিত?
সাপের কামড় সনাক্ত করার পর অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা উচিত এবং ওই ব্যক্তিকে সাপ থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া উচিত। যদি সাপটি হার্টের নিচের অংশে কামড়ায় তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিতে হবে। বিষের বিস্তার রোধ করতে, ব্যক্তিকে শান্ত রাখতে হবে। এরপর একটি পরিষ্কার ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষত স্থানটি ঢেকে এর চারপাশে আঁটোসাঁটো করে সুতো দিয়ে বাঁধতে হবে। যদি কোনও সাপ পায়ে কামড় দেয় তবে জুতো খুলে ফেলতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
আরো পড়ুন: রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক কী সত্যিই উদ্বেগের নাকি অহেতুক
সাপের কামড়ে যা করা উচিত নয়
» যতক্ষণ না ডাক্তার কিছু ওষুধ দিতে বলেন ততক্ষণ কোনও ওষুধ না দেওয়া
» ক্ষত হৃৎপিণ্ডের উপরের অংশে থাকলে সেটিকে কাটার চেষ্টা না করা।
» বিষ চুষে নেওয়ার চেষ্টা না করা।
» ক্ষতস্থানে বরফ না ঘষা।
» ব্যক্তিকে ক্যাফিন বা অ্যালকোহলযুক্ত জিনিস না দেওয়া।
» ভুক্তভোগীকে হাঁটতে না দেওয়া।
» গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
সাপের কামড়ের লক্ষণ
» বিষ ছড়িয়ে পড়লে বমি হওয়া।
» শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া বা কাঁপুনি আসা।
» অ্যালার্জি, চোখের পাতা ঝরে যাওয়া।
» ক্ষতস্থানের চারপাশে ফুলে যাওয়া।
» জ্বালাপোড়া ও লাল হয়ে যাওয়া।
» ত্বকের রঙ পরিবর্তন, ডায়রিয়া, জ্বর, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি-বমি ভাব, পক্ষাঘাত, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, ক্লান্তি, পেশিতে দুর্বলতা, তৃষ্ণা বোধ, নিম্ন রক্তচাপ।
ঝাড়ফুঁক করলে কি সাপে কামড়ানো রোগী ভালো হয়?
দেশের বেশির ভাগ সাপই অবিষাক্ত। এ ছাড়াও সাপে কাটা রোগীর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশের শরীরে বিষক্রিয়া হয়। তাই যেসব রোগীর শরীরে সাপের বিষক্রিয়া হয় না, তাদের কবিরাজি চিকিৎসা দিলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু যে রোগীর শরীরে বিষক্রিয়া হয়েছে, তাকে বিষ নিষ্ক্রিয় করার ওষুধ না দিলে মৃত্যু অবধারিত। সাপে কামড়ালে করণীয়
পরিশেষে : সাপে কামড়ালে করণীয়, বিষধর সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা, বিষধর সাপে কামড়ালে প্রাথমিকভাবে যা যা করবেন,সাপে কাটলে কী করবেন, সাপে কাটলে কী করবেন না, বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বাঁচতে করণীয় কী, সাপে কাটলে কী করবেন,সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে যা করতে হবে |
আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট