বর্তমান সময়ের তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ চাকরির বাজারে টিকে থাকলে হলে যে শুধু পুথিগত বিদ্যা যথেষ্ট নয় তা আমরা অনেকেই অনুধাবন করতে পেরেছি।
পুথিগত বিদ্যা বা একাডেমিক জ্ঞানের পাশাপাশি প্রয়োজন পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা। চার্টার্ড একাউন্ট্যান্সি বা সিএ তেমনই একটা পেশাগত দক্ষতার সনদ। যা বাংলাদেশে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট অব বাংলাদেশ প্রদান করে থাকে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সিএ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি সিএ পড়ার যোগ্যতা, খরচ, সময় ও কীভাবে শুরু করবেন তার গাইডলাইন জানবো।
আপনি বাণিজ্য, মানবিক, কিংবা বিজ্ঞান যে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই পড়ালেখা করেন না কেন, যদি নিজেকে একজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট হিসেবে পরিচিত করাতে চান এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক তথ্যগত বাধা দূর করবে।
সিএ ভর্তির যোগ্যতা সিএ ভর্তির A to Z, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে চান?, হতে চাইলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট
সিএ (Chartered Accountancy) কী?
সিএ হলো হিসাববিদ্যায় পেশাগত দক্ষতার সর্বোচ্চ ডিগ্রি। বাংলাদেশে এটি প্রদান করে থাকে ICAB (Institute of Chartered Accountants of Bangladesh) ।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এই ডিগ্রিকে CA বলা হলেও আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে এই ডিগ্রিকে CPA (Certified Public Accountants) বলা হয়। যদিও CA এবং CPA একই পেশাগত ডিগ্রি।
যারা Accounting অথবা Accounting & Information Systems বিষয়ে বিবিএ, এমবিএ সম্পন্ন করেন তাদেরকে শুধু একাউন্ট্যান্ট বলা হয়। আর যারা CA বা CPA সম্পন্ন করেন তাদেরকে যথাক্রমে Chartered Accountant বা Certified Public Account বলা হয়।
সিএ পড়ার যোগ্যতা
আপনি যদি একজন সিএ হতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেকোনো একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে পড়েই সিএ করা যায়।
এছাড়া এইচএসসির পরে এবং গ্র্যাজুয়েশনের পরে যেকোনো সময় সিএ পড়া শুরু করা যায়। তবে গ্র্যাজুয়েশনের পড়ে সিএ পড়তে চাইলে যে ধরনের শর্ত মানতে হবে এইচএসসির পরে সিএ পড়তে চাইলে ভিন্ন ধরনের শর্ত মানতে হবে।
HSC এর পরে সিএ পড়ার যোগ্যতা
আপনি Science, Arts, Commerce যে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই আসেন না কেন নিচের যোগ্যতাগুলো সব ক্ষেত্রে একই থাকবে।
- এসএসসি ও এইচএসসি দুইটা মিলে সর্বমোট জিপিএ-৯.০০ হতে হবে। এছাড়া যেকোনো একটাতে জিপিএ-৫.০০ থাকতে হবে।
- ইংরেজি মাধ্যম থেকে O-level, A-level সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের জন্য A-level এ ন্যূনতম ৩৬ পয়েন্ট এবং A-level এ ন্যূনতম ১২ পয়েন্ট থাকতে হবে। আর কেউ যদি ইংরেজি মাধ্যম থেকে O-level এবং বাংলা মাধ্যম থেকে HSC শেষ করে তার জন্য O-level এ ৩৬ পয়েন্ট এবং HSC-তে ন্যূনতম জিপিএ-৪ থাকতে হবে।
এইচএসসির পরে যারা সিএ পড়তে চাইবে তাদের জন্য ৪ বছর আইসিএবি অনুমোদিত ফার্মে আর্টিকেলশীপ করতে হবে। এর পাশাপাশি আইসিএবিতে নিয়মিত ক্লাস করে নির্দিষ্ট সময় পর পর পরীক্ষায় পাশ করে সার্টিফিকেট লেভেল শেষ করতে হবে।
গ্র্যাজুয়েশনের পরে সিএ পড়ার যোগ্যতা
আপনি যদি UGC অনুমোদিত কোনো কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স বা মাস্টার্স সম্পন্ন করে থাকেন তাহলে সিএ পড়তে পারবেন। এজন্য অনার্স কিংবা মাস্টার্সে সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ন্যূনতম সিজিপিএ-২.৫ থাকতে হবে। এছাড়া কোনো পরীক্ষায় সেকেন্ড ক্লাসের নিচে পাওয়া যাবে না।
স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের পরে CA পড়তে চাইলে এর মেয়াদ হবে ৩ বছর। এজন্য ফার্মে কাজ করার পাশাপাশি আইসিএবি এর নিয়ম অনুযায়ী নিয়িমিত পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট লেভেল পাশ করতে হবে।
সিএ প্রি-আর্টিকেলশীপ প্রোগ্রাম
যারা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে স্নাতক বা স্নাতকত্তর পড়ছেন তাদের জন্য ICAB একটা বিশেষ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করেছে। সেটা হলো Pre-Articleship Program। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্নাতক বা স্নাতকত্তর পড়ার পাশাপাশি সিএ পড়তে পারবে।
প্রি-আর্টিকেলশীপ প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা মূলত সিএ পড়ার জন্য সার্টিফিকেট লেভেলটা সম্পন্ন করতে পারে। একটা উদাহরণের সাহায্যে বিষয়ে বুঝে নেওয়া যাক।
মনে করুন আপনার বয়স এখন ২২ এবং আপনি সরকার অনুমোদিত কোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (Honor’s) দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। আপনি যদি ২৪ বছর বয়সে স্নাতক শেষ করে সিএ পড়তে যান তাহলে তখন একই সাথে আপনাকে সিএ ফার্মে কাজ করতে হবে এবং আইসিএবিতে নিয়মিত ক্লাস করে সার্টিফিকেট লেভেল পাশ করতে হবে। যেটা সে সময়ে আপনার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হবে।
প্রি-আর্টিকেলশীপ প্রোগ্রাম এই সমস্যাটার সমাধান করছে। আপনি স্নাতক পড়া অবস্থায় সার্টিফিকেট লেভেল শেষ করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনাকে ফার্মে কাজ করতে হবে না। শুধু আইসিএবি কর্তৃক আয়োজিত অনলাইন ক্লাস করে পরীক্ষা দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি Certificate Level শেষ করতে পারলেন। পরবর্তীতে যখন ফার্মে যোগদান করবেন তখন মাত্র ৩ বছর ফার্মে কাজ করে সিএ সম্পন্ন করতে পারবেন।
সিএ সার্টিফিকেট লেভেলে মোট ৭টি বিষয় পড়তে হয়। আইসিএবি এর সাথে সমঝোতা স্মারকে চুক্তিবদ্ধ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে যাদের শিক্ষার্থীরা এই ৭টি বিষয়ের মধ্যে কিছু বিষয়ে ছাড় পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ তারা চাইলে সে বিষয়গুলোতে পরীক্ষা না-ও দিতে পারেন।
যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের জন্য ৫টি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের জন্য ২টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের জন্য ৩টি ইত্যাদি। এভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে একাধিক বিষয়ে ছাড় পাওয়া যায়।
কিছু স্বনামধন্য সিএ ফার্ম
সিএ পড়া শেষ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ICAB অনুমোদিত কোনো সিএ ফার্ম থেকে প্রফেশনাল লেভেল ও অ্যাডভান্স লেভেল শেষ করতে হবে। এজন্য এইচএসসি এর পরে ৪ বছর এবং গ্র্যাজুয়েশনের পরে ৩ বছর ফার্মে কাজ করতে হয়।
আপনার চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট হয়ে ওঠার জার্নিটা কেমন হবে সেটা অনেকাংশে সিএ ফার্মের উপরে নির্ভর করে। মানুষের হাতের পাঁচটা আঙ্গুল যেমন সমান নয়, তেমনি বাংলাদেশের সকল সিএ ফার্মের কাজের পরিবেশ, কাজ শেখার সুযোগ, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি সমান নয়।
নিচের অংশে বাংলাদেশের কিছু ভালো CA Firm এর তালিকা উপস্থাপন করলাম। এই নামগুলো অনেক খোঁজখবর ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা বলছি না যে এই ফার্মগুলোর বাইরে আর ভালো কোনো ফার্ম নেই কিংবা এগুলোর সবই সবক্ষেত্রে শতভাগ সেরা। আপনারা যেকোনো ফার্মে যুক্ত হওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোমতো যাচাই-বাছাই করে তবেই যুক্ত হবেন।
বাংলাদেশের কিছু ভালো সিএ ফার্মের তালিকা:
- ACNABIN
- A. Qasem & Co.
- Hoda Vasi Chowdhury & Co.
- A Wahab & Co.
- Syful Shamsul Alam & Co.
- Ahmed Mashuque & Co.
- Snehasish Mahmud & Co.
ফার্মে যুক্ত হওয়ার আগে সিএ বিষয়ক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ আছে সেগুলোতে পোস্ট করে তথ্য ও পরামর্শ জেনে নিতে পারেন।
সিএ সম্পন্ন করতে কয়টি বিষয় পড়তে হয়?
একজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট হওয়ার জন্য আপনাকে মোট ৩টি লেভেল পার করতে হবে। সার্টিফিকেট লেভেল, প্রফেশনাল লেভেল ও অ্যাডভান্স লেভেল এই ৩টি লেভেলে একাধিক বিষয় পড়তে হয়। সার্টিফিকেট লেভেলে ৭টি, প্রফেশনাল লেভেলে ৭টি এবং অ্যাডভান্স লেভেলে ৩টি বিষয় সহ মোট ১৭টি বিষয় পড়তে হবে।
সার্টিফিকেট লেভেল
বিষয় | মার্ক | পরীক্ষার সময় |
---|---|---|
একাউন্টিং | ১০০ | ২ ঘন্টা |
অ্যাস্যুরেন্স | ১০০ | ২ ঘন্টা |
বিজনেস এন্ড ফাইন্যান্স | ১০০ | ২ ঘন্টা |
প্রিন্সিপল অব ট্যাক্সেশন | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন | ১০০ | ২ ঘন্টা |
বিজনেস ল’ | ৫০ | ১.৫ ঘন্টা |
ইনফরমেশন টেকনোলজি | ৫০ | ১.৫ ঘন্টা |
প্রফেশনাল লেভেল
বিষয় | মার্ক | পরীক্ষার সময় |
---|---|---|
ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং এন্ড রিপোর্টিং | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
অডিট এন্ড অ্যাস্যুরেন্স | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
ট্যাক্স প্ল্যানিং এন্ড কমপ্লায়েন্স | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
বিজনেস স্ট্র্যাটেজি | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
করপোরেট ল’ এন্ড প্র্যাক্টিস | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
আইটি গভরন্যান্স | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
অ্যাডভান্স লেভেল
বিষয় | মার্ক | পরীক্ষার সময় |
---|---|---|
কর্পোরেট রিপোর্টিং | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
স্ট্র্যাটেজিক বিজনেস ম্যানেজমেন্ট | ১০০ | ৩ ঘন্টা |
কেস স্টাডি | ১০০ | ৪ ঘন্টা |
সিএ পড়ার খরচ
সিএ হলো একটা সার্বজনীন স্বীকৃত প্রফেশনাল ডিগ্রি। এটা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া যায় না। দেশের নির্দিষ্ট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান থেকেই সিএ পড়তে হয়।
এইচএসসি বা গ্র্যাজুয়েশনের পরে সিএ পড়তে চাইলে যে পরিমাণ খরচ হয়, গ্র্যাজুয়েশন পড়া অবস্থায় প্রি-আর্টিকেলশীপ প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে সিএ পড়তে চাইলে ভিন্ন পরিমাণ খরচ হয়। আপনি যদি ৪ বছর মেয়াদী সিএ কোর্সে ভর্তি হতে চান তাহলে নিম্নোক্ত খরচ হবে।
আর আপনি যদি গ্র্যাজুয়েশন করার পাশাপাশি Pre-Articleship প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে সার্টিফিকেট লেভেল সম্পন্ন করতে চান তাহলে ভর্তির জন্য নিম্নোক্ত খরচাবলি হবে।
সিএ অনেকটাই ব্যয়সাপেক্ষ কোর্স। তবে পাশ করে বের হলে আপনি ভালো বেতনে জব জোগাড় করতে পারবেন অনায়াসে।
এছাড়া আর্টিকেলড স্টুডেন্টদের জন্য ফার্ম থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমান ভাতা দেওয়া হয়। এতে সিএ করতে হাতখরচ উঠে আসে। আইসিএবি কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম ভাতা প্রথম বছরে ৭০০০/মাসিক, দ্বিতীয় বছরে ৮০০০/মাসিক, তৃতীয় বছরে ৯০০০/মাসিক, চতুর্থ বছরে ১০০০০/মাসিক টাকা।
তবে বেশিরভাগ সিএ ফার্ম স্টুডেন্টদের একাডেমিক রেজাল্ট, পারফরম্যান্স এর উপরে ভিত্তি করে আরো বেশি ভাতা দিয়ে থাকে।
সিএ এর বেতন
একজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট বা সিএ এর বেতন মাসিক ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা। বাংলাদেশে সিএ এর অনেক চাহিদা রয়েছে। চাহিদার তুলনায় আমাদের দেশে পর্যাপ্ত সিএ নেই। যদিও এটি পাশ করা বেশ কষ্টকর, তবে আপনি যদি সিএ পরীক্ষা পাশ করেন তাহলে ভালো বেতনের চাকরি পাবেন, এছাড়া চাইলে কয়েকজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট মিলে একাউন্টিং ফার্ম গড়ে তুলতে পারবেন।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে চান?
অডিটর
অডিটরের কাজ হলও কোম্পানির ফাইন্যান্স দেখাশুনা করা। ফাইন্যান্সের নির্ভুলতা যাচাই করার মাধ্যমে কোম্পানির অর্থনৈতিক গতিশীলতা ঠিক রাখাই তাদের কাজ। একটি কোম্পানিতে একাধিক অডিটর থাকে। এছাড়া কিছু কোম্পানি ইন্টার্নাল অডিটরও নিয়োগ করে থাকে।
অ্যাকাউন্টস ক্লার্ক
কোম্পানির আর্থিক লেনদেনের হিসাবগুলো যথাযথভাবে রাখাই অ্যাকাউন্টস ক্লার্কের কাজ। কোম্পানির লেনদেন ও কোম্পানির কোন প্রকল্পে কত বিনিয়োগ করা হবে সেটি একজন অ্যাকাউন্টস ক্লার্ক হিসাব রাখেন।
বিজনেস সার্ভিসেস অ্যাকাউন্ট্যান্ট
বিজনেস সার্ভিসেস অ্যাকাউন্ট্যান্টের মূল দায়িত্বর হলও ক্লায়েন্টকে ব্যবসা ও ট্যাক্স পরিষেবা দেওয়া। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সম্পদের অপচয় তথা মূল্য কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ তিনি করেন। একজন বিজনেস সার্ভিসেস অ্যাকাউন্ট্যান্ট কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। কোম্পানি পরিচালনায় তার ভূমিকা অনেক বেশি।
চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার
চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। কোম্পানির সাফল্য ও ব্যর্থতা তার নির্দেশের ওপরেই নির্ভর করে। একজন চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার দক্ষভাবে পরিচালনার মাধ্যমে কোম্পানির সফলতা আনেন। অন্যদেরকে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি কোম্পানি পরিচালনা করেন এবং কোম্পানিকে লাভবান করার জন্য তিনি অনেক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।
কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস
কোম্পানির নানা ধরনের ব্যয়ের হিসাব রাখা কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টসের দায়িত্ব। এছাড়া ব্যবস্থাপনা বিভাগকে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দেয়াও তার দায়িত্বের অংশ
ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার
নির্বাহী ব্যবস্থাপনা বিভাগের সঙ্গে ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলাররা সম্পৃক্ত থাকেন। এমনকি ব্যবসা সফলতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য তারা দায়িত্ব পালন করেন। একটি কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোলার। এ পদে একাধিক ব্যক্তি কর্মরত থাকতে পারে। দক্ষভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করেন তারা।
এছাড়াও, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করতে পারেন। তারা যে কোম্পানিতেই চাকরি করেন না কেন তাদের বেতন অন্যদের তুলনায় বেশিই হয়। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, সরকারি কোম্পানি, স্টক ব্রোকিং ফার্ম, ফাইন্যান্স কোম্পানি, লিগ্যাল ফার্ম, প্যাটেন্ট ফার্ম, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ আরও অনেক ধরনের কোম্পানিতে কাজ করতে পারেন একজন সিএ বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
সিএ পড়তে কেমন খরচ হয়?
সিএ কোর্সে মোট তিনটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তর নলেজ, দ্বিতীয় স্তর অ্যাপ্লিকেশন ও তৃতীয় স্তর অ্যাডভান্সড স্টেজ। নলেজ ও অ্যাপ্লিকেশন স্তরে পড়াশুনা করতে হয় সাতটি বিষয়ে আর অ্যাডভান্সড স্টেজ স্তরে পড়াশুনা করতে হয় তিনটি বিষয়ে। ভর্তি থেকে শুরু করে ফাইনাল পরীক্ষা পর্যন্ত সিএ পড়তে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়।
চাকরিতে বেতন কেমন?
বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে পেশাজীবন শুরু করার পর বেতন সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ পর্যন্ত হয়ে থাকে। উর্ধ্বতন পদে উন্নীত হওয়ার পর আরও মোট অঙ্কের বেতন হয়ে থাকে। বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পেশায় ১০ লাখ টাকা উপার্জন করা সম্ভব।