সিকিউরিটি বিশ্লেষণের হাতিয়ার হিসেবে কৌশলগত বিশ্লেষণের সুবিধাগুলো আলোচনা কর
যদিও কৌশলগত বিশ্লেষকরা মৌলিক বিশ্লেষণের যুক্তি সম্পর্কে অবগত তবুও তারা তাদের প্রক্রিয়ায় কিছু সুবিধা খুঁজে পান। বেশিরভাগ কৌশলগত বিশ্লেষকরা মনে করেন যে মৌলিক বিশ্লেষকদের যারা ভালো তথ্য সমৃদ্ধ, দক্ষ বিশ্লেষণ ক্ষমতা যাদের আছে এবং বাজারে তথ্যের প্রভাব সম্পর্কে যারা পরিপূর্ণ ওয়াকিবহাল তাদের গড় আয়ের তুলনায় অধিক প্রত্যাশা করা উচিত।
উপরিউক্ত বক্তব্যের যথাযথ উপলব্ধির দরকার। কৌশলগত বিশ্লেষকদের মতে এটা হৃদয়ঙ্গম করা দরকার যে মৌল বিশ্লেষকরা তখনই অধিক আয় আশা করতে পারেন যখন অন্য বিনিয়োগকারীদের আগেই তারা তথ্য পান এবং তার যথার্থ ও দ্রুত বিশ্লেষণ করতে পারেন।
কৌশলগত বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন না যে বেশিরভাব বিনিয়োগকারী অন্যদের আগে সঠিকভাবে তথ্য প্রাপ্ত হন এবং তার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন। তাছাড়া, কৌশলগত বিশ্লেষকগণ দাবি করেন যে,
তাদের পদ্ধতি একটা বড় সুবিধা হলো এটা আর্থিক হিসাব লিপির উপর অধিক নির্ভরশীল নয় যা কিনা একটি ফার্ম বা শিল্পের অতীত দক্ষতার তথ্যের প্রধান উৎস। মৌল বিশ্লেষকরা এসব বিবরণী মূল্যায়ন করে প্রকল্পের ভবিষ্যত আয় এবং শিল্প ও স্বতন্ত্র সিকিউরিটির ঝুঁকি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে চান।
কৌশলগত বিশ্লেষকগণ মনে করেন যে, হিসাব বিবরণীর কতিপয় বড় সমস্যা আছে, যেমন-
১. সিকিউরিটি বিশ্লেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাব এক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়, যেমন- বিক্রয়, আয় এবং পণ্য লাইন ও ভোক্তাদের দ্বারা ব্যবহৃত মূলধন সম্পর্কিত তথ্য।
২. GAAP (Generally Accepted Accounting Principles ) অনুযায়ী কর্পোরেশন ব্যয়, সম্পদ বা দায় সম্পর্কে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে ৰাছাই করতে পারে। এ ধরনের বিকল্প পদ্ধতির কারণে ব্যয়, আয়, সম্পদের উপর আয় ইক্যুইটির উপর আয়ের বিভিন্ন ধরনের মূল্য ফার্ম কি রক্ষণাত্মক না কি আক্রমণাত্মক অবস্থায় আছে তার উপর নির্ভর করে । ফলশ্রুতিতে, একজন বিনিয়োগকারী একই শিল্পের অন্তর্গত দুটি ফার্মের বিবরনী তুলনা করতে সমস্যায় পড়বে।
৩. অনেক মনস্তাত্ত্বিক বিষয় এবং অন্যান্য অপরিমাপযোগ্য চালক এসব বিবরণীতে প্রদর্শিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ এর আনুগত্য, ভোক্তার নিকট সুনাম শিল্পের প্রতি বিনিয়োগকারীরা কোনো নিষেধাজ্ঞা অথবা তামাক বা মাদক জাতীয় পণ্যের উপর কর সম্পর্কিত ঝুঁকি বা এমন কোনো ফার্মের সাথে জড়িত যা এমন দেশে ব্যবসা করছে যেখানে রাজনৈতিক ঝুঁকি বিদ্যমান এসব ক্ষেত্রে এক ধরনের বিনিয়োগকারীদের আচরণ মূল্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যেহেতু, কৌশলগত বিশ্লেষকগণ এসব আর্থিক বিবরণী সম্পর্কে সন্দিহান তাই তারা এগুলোর উপর নির্ভর না করাকেই সুবিধাজনক বলে মনে করেন। এ ধরনের বিশ্লেষকগণ ধরনের বিশ্লেষকগণ সিকিউরিটি, মূল্য, লেনদেনের পরিমাণ এবং অন্যান্য লেনদেন সম্পর্কিত তথ্য ব্যবহার করেন যেগুলো স্টক বাজার হতে সংগৃহীত হয়।
একজন মৌলিক বিশ্লেষক অবশ্যই নতুন তথ্য যথাযথভাবে এবং দ্রুত প্রক্রিয়াজাত করবেন স্টক বা বন্ডের একটি নতুন অন্তর্নিহিত মূল্যের জন্য। অন্যান্য বিনিয়োগকারী এটা পারার আগেই তারা তা করে। অপরদিকে কৌশলকারীরা শুধুমাত্র একটি নতুন ভারসাম্য মূল্যে স্থানান্তর দ্রুত অনুধাবন করেন সেটা যে কারণে হোক না কেন । তারা কোনো নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে জানতে চান না, তরা শুধু ফার্ম ও তার স্টক মূল্যের উপর এর প্রভাব নির্ধারণ করেন ।
পরিশেষে, মনেকরি, একজন মৌল বিশ্লেষক নির্ধারণ করলেন যে একটি সিকিউরিটি অব বা অতি মূল্যায়িত অবস্থায় আছে। কিন্তু তাকে অবশ্যই এটাও নির্ধারণ করতে হবে যে কখন ক্রয় বা বিক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে আদর্শ ধারণা হলো তখনই সর্বোচ্চ আয় পাওয়া যাবে যখন ঠিক বাজার মূল্য পরিবর্তনের আগ মুহূর্তে লেনদেন করা হবে। যেমন ধরা যাক ফেব্রুয়ারিতে বিশ্লেষণ করে দেখা গেলো যে একটি ফার্ম জুনে অধিক মুনাফা দিতে পারে। যদিও ফেব্রুয়ারিতেই স্টক ক্রয় রক্ষা তবুও এটা
ভালো হবে কিছু সময় অপেক্ষা করে মে মাসের দিকে স্টক ক্রয় করা, এর ফলে তহবিল আটকা থাকবে না। যেহেতু বেশিরভাগ কৌশলীরা ততক্ষণ পর্যন্ত বিনিয়োগ করেন না যতক্ষণ না নতুন ভারসাম্য মূল্যে স্থানাস্তর প্রক্রিয়াগত হয় এবং এর দ্বারা তারা মনে করেন মৌল বিশ্লেষকগণের তুলনায় তারা আদর্শগত দিক হতে উপরে অবস্থান করেন।
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।