আজকের বিষয়: সূরা আহকাফ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল আহকাফ আলমল ও ফজিলত, সূরা আহকাফ কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা আহকাফ নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৪৬ সূরা আল – আহকাফ
নামকরণ
২১ নম্বর আয়াতের (আরবী) বাক্যাংশ থেকে নাম গৃহীত হয়েছে ।
নাযিলের হওয়ার সময়-কাল
এ সূরা নাযিল হওয়ার সময়-কাল ২৯ থেকে ৩২ আয়াতে বর্ণিত একটি ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে নিরূপিত হয়ে যায় । এ আয়াতগুলোতে রসূলুল্লাহর (সা) কাছে এসে জিনদের ইসলাম গ্রহণ করে ফিরে যাওয়ার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে । হাদীস ও সীরাত গ্রন্থসমূহে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বর্ণিত রেওয়ায়েতসমূহ অনুসারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সময় তায়েফ থেকে মক্কায় ফিরে আসার পথে নাখলা নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করেছিলেন সেই সময় ঘটনাটি ঘটেছিলো । সমস্ত নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক বর্ণনা অণুসারে হিজরতের তিন বছর পূর্বে নবী (সা) তায়েফ গমন করেছিলেন । সুতরাং এ সূরা যে নবুওয়াতের ১০ম বছরে শেষ দিকে অথবা ১১ শ বছরের প্রথম দিকে নাযিল হয়েছিলো তা নিরূপিত হয়ে যায় ।
ঐতিহাসিক পটভূমি
নবীর (সা) পবিত্র জীবনে নবওয়াতের ১০ম বছর ছিল অত্যন্ত কঠিন বছর । তিন বছর ধরে কুরাইশদের সবগুলো গোত্র মিলে বনী হাশেম এবং মুসলমানদের পুরোপুরি বয়কট করে রেখেছিলো । নবী (সা) তাঁর খান্দানের লোকজন ও মুসলমানদের সাথে শে’বে আবি তালিব * মহল্লায় অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন । কুরাইশদের লোকজন এই মহল্লাটিকে সব দিক থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো । এ অবরোধ ডিঙিয়ে কোন প্রকার রসদ ভেতরে যেতে পারতো না । শুধু হজ্জের মওসুমে এই অবরুদ্ধ লোকগুলো বের হয়ে কিছু কেনাকাটা করতে পারতো । কিন্তু আবু লাহাব যখনই তাদের মধ্যে কাউকে বাজারের দিকে বা কোন বাণিজ্য কাফেলার দিকে যেতে দেখতো চিৎকার করে বণিকদের বলতো, ‘এরা যে জিনিস কিনতে চাইবে তার মূল্য এত অধিক চাইবে যেন এরা খরিদ করতে না পারে । আমি ঐ জিনিস তোমাদের নিকট থেকে কিনে নেব এবং তোমাদের লোকসান হতে দেব না । একাধারে তিন বছরের এই বয়কট মুসলমান ও বনী হাশেমদের কোমর ভেঙে দিয়েছিলো । তাদেরকে এমন সব কঠিন সময় পাড়ি দিতে হয়েছিলো যখন কোন কোন সময় ঘাস এবং গাছের পাত খাওয়ার মত পরিস্থিতি এসে যেতো ।
- শে’বে আবি তালিব মক্কার একটি মহল্লার নাম । এখানে বনী হাশেম গোত্রের লোকজন বসবাস করতেন । আরবী ভাষায় ——–শব্দের অর্থ উপত্যকা বা পাহাড়ের মধ্যবর্তী ক্ষুদ্র বাস যোগ্য ভূমি । মহল্লাটি যেহেতু ‘আবু কুরাইস ’ পাহাড়ের একটি উপত্যকায় অবস্থিত ছিল এবং আবু তালিব ছিলেন বনী হাশেমদের নেতা । তাই এটিকে শে’বে আবি তালিব বলা হতো। পবিত্র মক্কার যে স্থানটি বর্তমানে স্থানীয়দের বর্ণনানুসারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম স্থান হিসেবে পরিচিত তার সন্নিকটেই এই উপত্যকা অবস্থিত ছিল । বর্তমানে একে শে’বে আলী বা শে’বে বনী হাশেম বলা হয়ে থাকে ।
অনেক কষ্টের পর এ বছরই সবেমাত্র এই অবরোধ ভেঙ্গেছিলো । নবী (সা) চাচা আবু তালিব, যিনি দশ বছর ধরে তাঁর জন্য ঢাল স্বরূপ ছিলেন ঠিক এই সময় ইন্তেকাল করেন । এই দুর্ঘটনার পর এক মাস যেতে না যেতেই তাঁর জীবন সঙ্গিনী হযরত খাদীজাও ইন্তেকাল করেন যিনি নবুওয়াত জীবনের শুরু থেকে ঐ সময় পর্যন্ত নবীর (সা) জন্য প্রশান্তি ও সান্তনার কারণ হয়ে ছিলেন । একের পর এক এসব দুঃখ কষ্ট আসার কারণে নবী (সা) এ বছরটিকে (আরবী) “আমুল হুযন” বা দুঃখ বেদনার বছর বলে উল্লেখ করতেন ।
হযরত খাদীজা ও আবু তালিবের মৃত্যুরপর মক্কার কাফেররা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে আরো অধিক সাহসী হয়ে উঠলো এবং তাঁকে আগের চেয়ে বেশী উত্যক্ত করতে শুরু করলো । এমন কি তাঁর জন্য বাড়ীর বাইরে বের হওয়াও কঠিন হয়ে উঠলো । ইবনে হিশাম সেই সময়ের একটি ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, একদিন কুরাইশদের এক বখাটে লোক জনসমক্ষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাথায় ধূলা নিক্ষেপ করে ।
অবশেষে তিনি তায়েফে গমন করলেন । উদ্দেশ্য সেখানে বনী সাকীফ গোত্রকে ইসলামের দাওয়াত দেবেন । যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে অন্তত এ মর্মে তাদের সম্মত করাবেন যেন তাঁকে তাদের কাছে শান্তিতে থেকে তারা ইসলামের কাজ করার সুযোগ দেবে । সেই সময় তাঁর কাছে কোন সওয়ারীর জন্তু পর্যন্ত ছিল না । মক্কা থেকে তায়েফ পর্যন্ত গোটা পথ তিনি পায়ে হেঁটে অতিক্রম করলেন । কোন কোন বর্ণনা অনুসারে তিনি একাই তায়েফ গিয়েছিলেন এবং কোন কোন বর্ণনা অনুসারে শুধু যায়েদ ইবনে হারেস তাঁর সাথে ছিলেন । সেখানে পৌঁছার পর তিনি কয়েক দিন সেখানে অবস্থান করলেন এবং সাকীফের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে আলাপ করলেন । কিন্তু তারা তাঁর কোন কথা যে মানলো না শুধু তাই নয়, বরং স্পষ্ট ভাষায় তাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার হুকুম শুনিয়ে দিল । কেননা তারা শংকিত হয়ে পড়েছিলো তাঁর প্রচার তাদের যুবক শ্রেণীকে বিগড়ে না দেয় । সুতরাং বাধ্য হয়েই তাঁকে তায়েফ ত্যাগ করতে হলো । তিনি তায়েফ ত্যাগ করার সময় সাকীফ গোত্রের নেতারা তাদের বখাটে ও পাণ্ডাদের তাঁর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিল । তারা পথের দুই পাশ দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত তাঁর প্রতি বিদ্রূপবাণ নিক্ষেপ, গালিবর্ষণ এবং পাথর ছুঁড়ে মারতে মারতে অগ্রসর হতে থাকলো । শেষ পর্যন্ত তিনি আহত হয়ে অবসন্ন হয়ে পড়লেন এবং তাঁর জুতা রক্তে ভরে গেলো । এ অবস্থায় তিনি তায়েফের বাইরে একটি বাগানের প্রাচীরের ছায়ায় বসে পড়লেন এবং আল্লাহর কাছে এই বলে ফরিয়াদ করলেনঃ
হে আল্লাহ! আমি শুধু তোমার কাছে আমার অসহায়ত্ব ও অক্ষমতা এবং মানুষের দৃষ্টিতে নিজের অমর্যাদা ও মূল্যহীনতার অভিযোগ করছি । হে সর্বাধিক দয়ালু ও করুণাময়! তুমি সকল দুর্বলদের রব । আমার রবও তুমিই । তুমি আমাকে কার হাতে ছেড়ে দিচ্ছ? এমন কোন অপরিচিতের হাতে কি যে আমার সাথে কঠোর আচরণ করবে? কিংবা এমন কোন দুশমনের হাতে কি যে আমার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করবে? তুমি যদি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট না হও তাহলে আমি কোন বিপদের পারোয়া করি না । তবে তোমার নিরাপত্তা ও কল্যাণ লাভ করলে সেটা হবে আমার জন্য অনেক বেশী প্রশস্ততা । আমি আশ্রয় চাই তোমার সত্তার সেই নূরের যা অন্ধকারকে আলোচিত এবং দুনিয়া ও আখেরাতের ব্যাপারসমূহের পরিশুদ্ধ করে । তোমার গযব যেন আমার ওপর নাযিল না হয় তা থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করো এবং আমি যেন তোমার ক্রোধ ও তিরস্কারের যোগ্য না হই । তোমার মর্জিতেই আমি সন্তুষ্ট যেন তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাও । তুমি ছাড়া আর কোন জোর বা শক্তি নেই । ” (ইবনে হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬২)
ভগ্ন হৃদয় ও দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ফিরে যাওয়ার পথে যখন তিনি “কারনুল মানাযিল” নামক স্থানের নিকটবর্তী হলেন তখন মাথার ওপর মেঘের ছায়ার মত অনুভব করলেন । দৃষ্টি তুলে চেয়ে দেখলেন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম সামনেই হাজির । জিবরাঈল ডেকে বললেনঃ “আপনার কওম আপনাকে যে জবাব দিয়েছে আল্লাহ তা শুনেছেন । এই তো আল্লাহ পাহাড়ের ব্যবস্থাপক ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন । আপনি যা ইচ্ছা তাকে নির্দেশ দিতে পারেন । ” এরপর পাহাড়ের ব্যবস্থাপক ফেরেশতা তাঁকে সালাম দিয়ে আরজ করলেনঃ আপনি যদি আদেশ দেন তাহলে দুই দিকের পাহাড় এই সব লোকদের ওপর চাপিয়ে দেই । ” তিনি বললেনঃ না, আমি আশা করি আল্লাহ তাদের বংশ এমন সব লোক সৃষ্টি করবেন যারা এক ও লা-শরীক আল্লাহর দাসত্ব করবে । ” (বুখারী, বাদউল খালক, যিকরুল মালাইকা, মুসলিম, কিতাবুল মাগাযী, নাসায়ী, আলবু’য়স) ।
এরপর তিনি নাখালা নামক স্থানে গিয়ে কয়েক দিনের জন্য অবস্থান করলেন । এখন কিভাবে মক্কায় ফিরে যাবেন সে কথা ভাবছিলেন ।
তায়েফে যা কিছু ঘটেছে সে খবর হয়তো সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে । এখন তো কাফেররা আগের চেয়েও দুঃসাহসী হয়ে উঠবে । এই সময়ে একদিন রাতের বেলা যখন তিনি নামাযে কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করছিলেন সেই সময় জিনদের একটি দল সেখানে এসে হাজির হলো । তারা কুরআন শুনলো, তার প্রতি ঈমান আনলো এবং ফিরে গিয়ে নিজ জাতির মধ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করলো । আল্লাহ তাঁর নবীকে এই সুসংবাদ দান করলেন যে, আপনার দাওয়াত শুনে মানুষ যদিও দূরে সরে যাচ্ছে, কিন্তু বহু জিন তার ভক্ত অনুরক্ত হয়ে পড়েছে এবং তারা একে স্বজাতির মধ্যে প্রচার করছে ।
আলোচ্য বিষয় ও মূল বক্তব্য
এই পরিস্থিতিতে সূরাটি নাযিল হয় । যে ব্যক্তি একদিকে নাযিল হওয়ার এই পরিস্থিতি সামেন রাখবে এবং অন্য দিকে গভীর মনোনিবেশ সহকারে সূরাটি পড়বে তার মনে এ বিষয়ে আর কোন সন্দেহ থাকবে না যে এটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী নয় । বরং “এটি মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত । ” কেননা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গোটা সূরার মধ্যে কোথাও সেই ধরনের মানবিক আবেগ ও প্রতিক্রিয়ার সামান্য লেশ মাত্র নেই যা সাধারণত এরূপ পরিস্থিতির শিকার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্টি হয় । এটা যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী হতো যাকে একের পর এক বড় বড় দুঃখ বেদনা ও মুসিবত এবং তায়েফের সাম্প্রতিক আগাত দুর্দশার চরমে পৌঁছিয়ে দিয়েছিলো-তাহলে এই পরিস্থিতির কারণে তাঁর মনের যে অবস্থা ছিল সূরার মধ্যে কোথাও না কোথাও তার চিত্র দৃষ্টিগোচর হতো । উপরের আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে দোয়া উদ্বৃত করেছি তার প্রতি একটু লক্ষ্য করুন । সেটা তাঁর নিজের বাণী । ঐ বাণীর প্রতিটি শব্দ সেই পরিস্থিতিরই চিত্রায়ন । কিন্তু এই সূরাটি সেই একই সময়ে একই পরিস্থিতিতে তাঁরই মুখ থেকে বেরিয়েছে, অথচ সেই পরিস্থিতি জনিত প্রভাব থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ।
কাফেররা বহুবিধ গোমরাহীর মধ্যে শুধু ডুবেই ছিল না বরং প্রচণ্ড জিদ, গর্ব ও অহংকারের সাথে তা আঁকড়ে ধরে ছিল । আর যে ব্যক্তি এসব গোমরাহী থেকে তাদেরকে উদ্ধার করতে সচেষ্ট ছিল তাকে তারা তিরস্কার ও সমালোচনার লক্ষ্য বানিয়ে নিয়েছিলো । এই সব গোমরাহীর ফলাফল সম্পর্কে কাফেরদের সাবধান করাই সূরার মূল আলোচ্য বিষয় । তাদের কাছে দুনিয়াটা ছিল একটা উদ্দেশ্যহীন খেলার বস্তু । তারা এখানে নিজেদেরকে দায়িত্বহীন সৃষ্টি মনে করতো । তাদের মতে তাওহীদের দাওয়াত ছিল মিথ্যা তাদের উপাস্য আল্লাহর অংশীদার, তাদের এ দাবীর ব্যাপারে তারা ছিল একগুঁয়ে ও আপোষহীন । কুরআন আল্লাহর বাণী একথা মানতে তারা মোটেই প্রস্তুত ছিল না । রিসালাত সম্পর্কে তাদের মন-মগজে ছিল একটি অদ্ভুত জাহেলী ধারণা এবং সেই ধারণার ভিত্তিতে তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের দাবী পরখ করার জন্য নানা ধরনের অদ্ভুত মানদণ্ড পেশ করছিলো । তাদের মতে ইসলামের সত্য না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ ছিল এই যে, তাদের নেতৃবৃন্দ, বড় বড় গোত্রীয় সর্দার এবং তাদের কওমের গবুচন্দ্ররা তা মেনে নিচ্ছিলো না এবং শুধু কতিপয় যুবক, কিছু সংখ্যক দরিদ্র লোক এবং কতিপয় ক্রীতদাস তার ওপর ঈমান এনেছিলো । তারা কিয়মাত, মৃত্যুর পরের জীবন এবং শাস্তি ও পুরস্কারের বিষয়কে মনগড়া কাহিনী বলে মনে করতো তাদের ধারণা ছিল, বাস্তবে এসব ঘটা একেবারেই অসম্ভব ।
এ সূরায় এসব গোমরাহীর প্রত্যেকটিকে সংক্ষেপে যুক্তি-প্রমাণসহ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং কাফেরদের এই বলে সাবধান করা হয়েছে যে, তোমরা বিবেক-বুদ্ধি ও যুক্তি-প্রমাণের সাহায্য সত্য ও বাস্তবতা বুঝার চেষ্টা করার পরিবর্তে যদি গোড়ামি ও হঠকারিতার মাধ্যমে কুরআনের দাওয়াত ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতকে প্রত্যাখ্যান করো তাহলে নিজেদের ভবিষ্যত নিজেরাই ধ্বংস করবে ।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
حم46.1
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১। হা-মী-ম্ ।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১ হা-মীম।
تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ46.2
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২। তান্যীলুল্ কিতা-বি মিনাল্লা-হিল্ ‘আযীযিল্ হাকীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২ এই কিতাব মহা পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট থেকে নাযিলকৃত।
مَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَجَلٍ مُسَمًّى وَالَّذِينَ كَفَرُوا عَمَّا أُنْذِرُوا مُعْرِضُونَ46.3
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩। মা-খলাক্ব নাস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বোয়া অমা- বাইনাহুমা য় ইল্লা-বিল্ হাকক্বি অআজ্বালিম্ মুছাম্মান্ অল্লাযীনা কাফারূ ‘আম্মা য় উন্যিরূ মু’রিদ্বূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩ আমি আসমানসমূহ, যমীন ও এতদোভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তা যথাযথভাবে ও একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছি। আর যারা কুফরী করে, তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা থেকে তারা বিমুখ।
قُلْ أَرَأَيْتُمْ مَا تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُوا مِنَ الْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِي السَّمَاوَاتِ اِئْتُونِي بِكِتَابٍ مِنْ قَبْلِ هَذَا أَوْ أَثَارَةٍ مِنْ عِلْمٍ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ 46.4
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৪। কুল্ আরয়াইতুম্ মা- তাদ্‘ঊনা মিন্ দূনিল্লা-হি আরূনী মা-যা-খলাকু মিনাল্ র্আদ্বি আম্ লাহুম্ শিরকুন্ ফিস্ সামা-ওয়া-ত্; ঈতূনী বিকিতা-বিম্ মিন্ ক্বব্লি হা-যা য় আও আছা-রাতিম্ মিন্ ‘ইল্মিন্ ইন্ কুন্তুম্ ছোয়া-দিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৪ বল, ‘তোমরা আমাকে সংবাদ দাও তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক আমাকে দেখাও তো তারা যমীনে কী সৃষ্টি করেছে? অথবা আসমানসমূহে তাদের কোন অংশীদারিত্ব আছে কি? এর পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরম্পরাগত কোন জ্ঞান তোমরা আমার কাছে নিয়ে এসো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ46.5
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৫। অমান্ আদ্বোয়াল্লু মিম্মাইঁ ইয়াদ্‘ঊমিন্ দূনিল্লা-হি মাল্ লা-ইয়াস্তাজ্বীবু লাহূ য় ইলা-ইয়াওমিল্ ক্বিয়া-মাতি অহুম্ ‘আন্ দু‘আ-য়িহিম্ গাফিলূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৫ তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের আহ্বান সম্পর্কে উদাসীন।
وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوا لَهُمْ أَعْدَاءً وَكَانُوا بِعِبَادَتِهِمْ كَافِرِينَ46.6
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৬। অ ইযা-হুশিরান্না-সু কা-নূ লাহুম্ আ‘দা-য়াঁও অকা-নূ বি‘ইবা-দাতিহিম্ কা-ফিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৬ আর যখন মানুষকে একত্র করা হবে, তখন এ উপাস্যগুলো তাদের শত্র“ হবে এবং তারা তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে।
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ هَذَا سِحْرٌ مُبِينٌ46.7
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৭। অ ইযা-তুত্লা-‘আলাইহিম্ আ-ইয়া-তুনা- বাইয়ি-না-তিন্ ক্ব-লাল্লাযীনা কাফারূ লিল্হাকক্বি লাম্মা-জ্বা-য়াহুম্ হা-যা-সিহ্রুম্ মুবীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৭ যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়। তখন যারা কুফরী করে তাদের নিকট সত্য আসার পর বলে, ‘এটাতো প্রকাশ্য যাদু’।
أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ إِنِ افْتَرَيْتُهُ فَلَا تَمْلِكُونَ لِي مِنَ اللَّهِ شَيْئًا هُوَ أَعْلَمُ بِمَا تُفِيضُونَ فِيهِ هُوَ أَعْلَمُ بِمَا تُفِيضُونَ فِيهِ كَفَى بِهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ46.8
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৮। আম্ ইয়াকু লূনাফ্তার-হ্; কুল্ ইনিফ্ তারইতুহূ ফালা- তাম্লিকূনা লী মিনাল্লা-হি শাইয়া-; হুওয়া আ’লামু বিমা-তুফীদুনা ফীহ্; কাফা-বিহী শাহীদাম্ বাইনী অ-বাইনাকুম্; অহুওয়াল্ গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৮ তবে কি তারা বলে যে, ‘সে এটা নিজে উদ্ভাবন করেছে’? বল, ‘যদি আমি এটা উদ্ভাবন করে থাকি, তবে তোমরা আমাকে আল্লাহর (আযাব) থেকে বাঁচাতে সামান্য কিছুরও মালিক নও। তোমরা যে বিষয়ে আলোচনায় মত্ত আছ, তিনি সে বিষয়ে সম্যক অবগত। আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে তিনিই যথেষ্ট। আর তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُبِينٌ46.9
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৯। কুল্ মা-কুন্তু বিদ্আ’ম্ মির্না রুসুলি অমা য় আদ্রী মা-ইয়ুফ্‘আলু বী অলা-বিকুম্; ইন্ আত্তাবি‘উ ইল্লা-মা-ইয়ূহা য় ইলাইয়্যা অমা য় আনা ইল্লা-নাযীরুম্ মুবীন্ ।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৯ বল, ‘আমি রাসূলদের মধ্যে নতুন নই। আর আমি জানি না আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কী করা হবে। আমার প্রতি যা ওহী করা হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আর আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ كَانَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَكَفَرْتُمْ بِهِ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى مِثْلِهِ فَآمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ 46.10
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১০। কুল্ আরয়াইতুম্ ইন্ কা-না মিন্ ‘ইন্দিল্লা-হি অকার্ফাতুম্ বিহী অশাহিদা শা-হিদুম্ মিম্ বানী য় ইস্র-ঈলা ‘আলা-মিছ্লিহী ফাআ-মানা অস্তার্ক্বাতুম্; ইন্নাল্লা-হা লা-ইয়াহ্দিল্ ক্বওমাজ্ জোয়া-লিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১০ বল, তোমরা আমাকে জানাও, যদি এ কুরআন আল্লাহর কাছ থেকে এসে থাকে, আর তোমরা এটাকে অস্বীকার করলে, অথচ বনী ইসরাঈলের একজন সাক্ষী এ ব্যাপারে অনুরূপ সাক্ষ্য দিল। অতঃপর সে ঈমান আনল আর তোমরা অহঙ্কার করলে। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হেদায়াত করেন না।
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا لَوْ كَانَ خَيْرًا مَا سَبَقُونَا إِلَيْهِ وَإِذْ لَمْ يَهْتَدُوا بِهِ فَسَيَقُولُونَ هَذَا إِفْكٌ قَدِيمٌ46.11
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১১। অক্ব-লাল্লাযীনা কাফারূ লিল্লাযীনা আ-মানূ লাও কা-না খাইরাম্ মা-সাবাকুনা য় ইলাইহ্;অ ইয্ লাম্ ইয়াহ্তাদূ বিহী ফাসাইয়াকু লূনা হা-যা য় ইফ্কুন্ ক্বদীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১১ আর যারা কুফরী করেছে তারা যারা ঈমান এনেছে তাদের সম্পর্কে বলে, ‘যদি এটা ভাল হত তবে তারা আমাদের থেকে অগ্রণী হতে পারত না’। আর যখন তারা এর দ্বারা হেদায়াত প্রাপ্ত হয়নি, তখন তারা অচিরেই বলবে, ‘এটা তো এক পুরাতন মিথ্যা’।
وَمِنْ قَبْلِهِ كِتَابُ مُوسَى إِمَامًا وَرَحْمَةً وَهَذَا كِتَابٌ مُصَدِّقٌ لِسَانًا عَرَبِيًّا لِيُنْذِرَ الَّذِينَ ظَلَمُوا وَبُشْرَى لِلْمُحْسِنِينَ46.12
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১২। অমিন্ ক্বব্লিহী কিতা-বু মূসা য় ইমা-মাওঁ অরহ্মাহ্; অহা-যা-কিতা-বুম্ মুছোয়াদ্দিকুল্ লিসা-নান্ আ’রাবিয়্যাল্ লিইয়ুন্যিরাল্ লাযীনা জোয়ালামূ অবুশ্রা-লিল্মুহ্সিনীন।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১২ আর এর পূর্বে এসেছিল মূসার কিতাব পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এটি তার সত্যায়নকারী কিতাব, আরবী ভাষায়; যাতে এটা যালিমদেরকে সতর্ক করতে পারে এবং তা ইনসাফকারীদের জন্য এক সুসংবাদ।
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ46.13
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৩। ইন্নাল্লাযীনা ক্ব-লূ রব্বুনাল্লা-হু ছুম্মাস তাক্ব-মূ ফালা-খাওফুন্ ‘আলাইহিম্ অলা-হুম্ ইয়াহ্যানূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৩ নিশ্চয় যারা বলে, ‘আমাদের রব আল্লাহ’ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।
أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ خَالِدِينَ فِيهَا جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ 46.14
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৪। উলা-য়িকা আছ্হা-বুল্ জান্নাতি খ-লিদীনা ফী হা জ্বাযা-য়াম্ বিমা- কা-নূ ইয়া’মালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৪ তারাই জান্নাতের অধিবাসী, তাতে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে, তারা যা আমল করত তার পুরস্কারস্বরূপ।
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا حَتَّى إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ46.15
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৫। অ ওয়াছ্ছোয়াইনাল্ ইন্সা-না বিওয়া-লিদাইহি ইহ্সা-না-; হামালাত্হু উম্মুহূ র্কুহাঁও অ অদ্বোয়া আ’ত্হু র্কুহা; অ হাম্লুহূ অফিছোয়া-লুহূ ছালা-ছূনা শাহ্রা-; হাত্তা য় ইযা-বালাগা আশুদ্দাহূ অ বালাগা র্আবা‘ঈনা সানাতান্ ক্ব-লা রব্বি আওযি’নী য় আন্ আশ্কুরা নি’মাতাকাল্লাতী য় আন্‘আম্তা ‘আলাইয়্যা অ‘আলা-ওয়া-লিদাইয়্যা অআন্ ‘আমালা ছোয়া-লিহান র্তাদ্বোয়া-হু অআছ্লিহ্ লী ফী র্যুরিয়্যাতী; ইন্নী তুব্তু ইলাইকা অইন্নী মিনাল্ মুস্লিমীন্।
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৫ আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, ‘হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার উপর ও আমার মাতা-পিতার উপর যে নিআমত দান করেছ, তোমার সে নিআমতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’।
أُولَئِكَ الَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَنَتَجاوَزُ عَنْ سَيِّئَاتِهِمْ وَنَتَجاوَزُ عَنْ سَيِّئَاتِهِمْ فِي أَصْحَابِ الْجَنَّةِ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ46.16
আরবি উচ্চারণ ৪৬. ১৬। উলা-য়িকাল্লাযীনা নাতাক্বাব্বালু ‘আন্হুম্ আহ্সানা মা-‘আমিলূ অ নাতাজ্বা-ওয়াযু ‘আন্ সায়িয়া-তিহিম্ ফী আছ্হা-বিল্ জ্বান্নাহ্; ওয়া’দাছ্ ছিদ্ক্বিল্ লাযী কা-নূ ইয়ূ‘আদূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৬ এরাই, যাদের উৎকৃষ্ট আমলগুলো আমি কবূল করি এবং তাদের মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করে দেই। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তা সত্য ওয়াদা।
وَالَّذِي قَالَ لِوَالِدَيْهِ أُفٍّ لَكُمَا أَتَعِدَانِنِي أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتِ الْقُرُونُ مِنْ قَبْلِي وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ اللَّهَ وَيْلَكَ آمِنْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ فَيَقُولُ مَا هَذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ46.17
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৭। অল্লাযী ক্ব-লা লিওয়া-লিদাইহি উফ্ফিল্ লাকুমা য় আতাই’দা-নিনী য় আন্ উখ্রজ্বা অক্বদ্ খলাতিল্ কুরূনু মিন্ ক্বব্লী অহুমা-ইয়াস্তাগীছানি ল্লা-হা অইলাকা আ-মিন্ইন্না ওয়া’দাল্লা-হি হাককুন্ ফাইয়াকুলু মা- হা-যা য় ইল্লা য় আসা-ত্বীরুল্ আউয়্যালীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৭ আর যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতাকে বলে, ‘তোমাদের জন্য আফসোস’! তোমরা কি আমাকে এই প্রতিশ্র“তি দাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব’ অথচ আমার পূর্বে অনেক প্রজন্ম গত হয়ে গেছে’? আর তারা দু’জন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলে, ‘দুর্ভোগ তোমার জন্য! তুমি ঈমান আন। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য’। তখন সে বলে, ‘এটা কেবল অতীতকালের কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়’।
أُولَئِكَ الَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ فِي أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِمْ مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنَّهُمْ كَانُوا خَاسِرِينَ 46.18
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৮। উলা-য়িকাল্ লাযীনা হাক্বক্বা ‘আলাইহিমুল্ ক্বওলু ফী য় উমামিন্ ক্বদ্ খলাত্ মিন্ ক্বব্লিহিম্ মিনাল্ জ্বিন্নি অল্ইন্স্;ইন্নাহুম্ কা-নূ খ-সিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৮ তাদের পূর্বে যে জিন ও মানবজাতি গত হয়ে গেছে, তাদের মত এদের প্রতিও আল্লাহর বাণী সত্য হয়েছে। নিশ্চয় এরা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।
وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِمَّا عَمِلُوا وَلِيُوَفِّيَهُمْ أَعْمَالَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ46.19
আরবি উচ্চারণ ৪৬.১৯। অলিকুল্লিন্ দারজ্বা-তুম্ মিম্মা- ‘আমিলূ অলিইয়ুওয়াফ্ফিয়াহুম্ ‘আমা-লাহুম্ অহুম্ লা-ইয়ুজ্লামূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.১৯ আর সকলের জন্যই তাদের আমল অনুসারে মর্যাদা রয়েছে। আর আল্লাহ যেন তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন। আর তাদের প্রতি কোন যুলম করা হবে না।
وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَاتِكُمْ فِي حَيَاتِكُمُ الدُّنْيَا وَاسْتَمْتَعْتُمْ بِهَا فَالْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنْتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنْتُمْ تَفْسُقُونَ46.20
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২০। অইয়াওমা ইয়ু’রাদুল্লাযীনা কাফারূ ‘আলা ন্নার্-; আয্হাব্তুম্ ত্বোয়াইয়িবা- তিকুম্ ফী হা-ইয়া-তিকুমুদ্ দুন্ইয়া-অস্তাম্তা’তুম্ বিহা-ফাল্ইয়াওমা তুজযাওনা ‘আযা-বাল্ হূনি বিমা- কুন্তুম্ তাস্তাক্বিরূনা ফিল্ র্আদ্বি বিগইরিল্ হাক্ক্বি অ বিমা- কুন্তুম্ তাফ্সুকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২০ আর যেদিন কাফিরদেরকে জাহান্নামের সামনে পেশ করা হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা তোমাদের দুনিয়ার জীবনে তোমাদের সুখ সামগ্রীগুলো নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ। তোমরা যেহেতু অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করতে এবং তোমরা যেহেতু নাফরমানী করতে, সেহেতু তার প্রতিফলস্বরূপ আজ তোমাদেরকে অপমানজনক আযাব প্রদান করা হবে’।
وَاذْكُرْ أَخَا عَادٍ إِذْ أَنْذَرَ قَوْمَهُ بِالْأَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتِ النُّذُرُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّهَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّهَ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ46.21
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২১। অর্য্কু অখ-‘আদ্;-ইয্ আন্যার ক্বওমাহূ বিল্আহ্ক্ব-ফি অ ক্বদ্ খলাতিননুযুরু মিম্ বাইনি ইয়াদাইহি অমিন্ খল্ফিহী য় আল্লা-তা’বুদূ য় ইল্লাল্লা-হ্; ইন্নী য় আখ-ফু ‘আলাইকুম্ ‘আযা-বা ইয়াওমিন্ ‘আজীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২১ আর স্মরণ কর ‘আ’দ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা, যখন সে আহকাফের স্বীয় সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছিল। আর এমন সতর্ককারীরা তার পূর্বে এবং তার পরেও গত হয়েছে যে, ‘তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করো না। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর এক ভয়াবহ দিনের আযাবের আশঙ্কা করছি’।
قَالُوا أَجِئْتَنَا لِتَأْفِكَنَا عَنْ آلِهَتِنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَا إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ46.22
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২২। ক্ব-লূ য় আজ্বিতানা- লিতা’ফিকানা-‘আন্ আ-লিহাতিনা-ফাতিনা-বিমা-তা‘ইদুনা য় ইন্ কুন্তা মিনাছ্ ছোয়া-দিক্বীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২২ তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্যদের থেকে নিবৃত্ত করতে আমাদের নিকট এসেছ? তুমি যদি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও, তাহলে আমাদেরকে যার ভয় দেখাচ্ছ তা নিয়ে এসো’।
قَالَ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَأُبَلِّغُكُمْ مَا أُرْسِلْتُ بِهِ وَلَكِنِّي أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ46.23
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৩। ক্ব-লা ইন্নামাল্ ‘ইল্মু ‘ইন্দা ল্লা-হি অ উবাল্লিগুকুম্ মা য় র্উসিল্তু বিহী অলা-কিন্নী য় অর-কুম্ ক্বওমান্ তাজহালূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৩ সে বলল, ‘এ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছে। আর যা দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়েছে, আমি তোমাদের কাছে তা-ই প্রচার করি, কিন্তু আমি দেখছি, তোমরা এক মূর্খ সম্প্রদায়’।
فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُمْطِرُنَا بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُمْ بِهِ رِيحٌ فِيهَا عَذَابٌ أَلِيمٌ 46.24
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৪। ফালাম্মা রয়াওহু ‘আ-রিদোয়াম্ মুস্তাক্বিবলা আও দিয়াতিহিম্ ক্ব-লূ হা-যা ‘আ-রিদুম্ মুম্ত্বিরুনা-; বাল্ হুওয়া মাস্তা’জ্বাল্তুম্ বিহ্; রীহুন্ ফীহা-‘আযা-বুন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৪ অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে মেঘমালা দেখল তখন তারা বলল, ‘এ মেঘমালা আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে’। (হূদ বলল,) বরং এটি তা-ই যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলে। এ এক ঝড়, যাতে যন্ত্রণাদায়ক আযাব রয়েছে’।
تُدَمِّرُ كُلَّ شَيْءٍ بِأَمْرِ رَبِّهَا فَأَصْبَحُوا لَا يُرَى إِلَّا مَسَاكِنُهُمْ كَذَلِكَ نَجْزِي الْقَوْمَ الْمُجْرِمِينَ46.25
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৫। তুদাম্মিরু কুল্লা শাইয়িম্ বিআম্রি রব্বিহা-ফাআছ্বাহূ লা-ইয়ূর য় ইল্লা-মাসা-কিনুহুম্; কাযা-লিকা নাজযিল্ ক্বওমাল্ মুজুরিমীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৫ এটা তার রবের নির্দেশে সব কিছু ধ্বংস করে দেবে’। ফলে তারা এমন (ধ্বংস) হয়ে গেল যে, তাদের আবাসস্থল ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এভাবেই আমি অপরাধী কওমকে প্রতিফল দিয়ে থাকি।
وَلَقَدْ مَكَّنَّاهُمْ فِيمَا إِنْ مَكَّنَّاكُمْ فِيهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَأَبْصَارًا وَأَفْئِدَةً فَمَا أَغْنَى عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَلَا أَبْصَارُهُمْ وَلَا أَفْئِدَتُهُمْ مِنْ شَيْءٍ إِذْ كَانُوا يَجْحَدُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَحَاقَ بِهِمْ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ46.26
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৬। অলাক্বদ্ মাক্কান্না-হুম্ ফীমা য় ইঁম্মাক্কান্না-কুম্ ফীহি অজ্বা‘আল্না-লাহুম্ সাম্‘আওঁ অ আব্ছোয়া-রঁও অআফ্য়িদাতান্ ফামা য় আগ্না ‘আন্হুম্ সাম্উ’হুম্ অলা য় আব্ছোয়া-রুহুম্ অলা য় আফ্য়িদাতুহুম্ মিন্ শাইয়িন্ ইয্ কা-নূ ইয়াজহাদূনা বিআ-ইয়া-তিল্লা-হি অহা-ক্বা বিহিম্ মা-কা-নূ বিহী ইয়াস্তাহ্যিয়ূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৬ আর আমি অবশ্যই তাদেরকে যাতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, তোমাদেরকে তাতে প্রতিষ্ঠিত করিনি। আর আমি তাদেরকে কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা যখন আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের হৃদয়সমূহ তাদের কোন উপকারে আসেনি। আর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত তা-ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল।
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُمْ مِنَ الْقُرَى وَصَرَّفْنَا الْآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ 46.27
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৭। অ লাক্বদ্ আহ্লাক্না-মা-হাওলাকুম্ মিনাল্ কুরা-অছোর্য়ারফ্নাল্ আ-ইয়া-তি লা‘আল্লাহুম্ ইয়ারজ্বি‘ঊন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৭ আর অবশ্যই আমি তোমাদের পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ ধ্বংস করেছিলাম। আর আমি বিভিন্নভাবে আয়াতসমূহকে বর্ণনা করেছিলাম যাতে তারা ফিরে আসে।
فَلَوْلَا نَصَرَهُمُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ قُرْبَانًا آلِهَةً بَلْ ضَلُّوا عَنْهُمْ وَذَلِكَ إِفْكُهُمْ وَمَا كَانُوا يَفْتَرُونَ46.28
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৮। ফালাওলা নাছোয়ার হুমুল্লাযী নাত্ তাখাযূ মিন্ দূনিল্লা-হি কুরবা-নান্ আ-লিহাহ্; বাল্ দ্বোয়াল্লূ ‘আন্হুম্ অযা-লিকা ইফ্কুহুম্ অমা- কা-নূ ইয়াফ্তারূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৮ অতঃপর তারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, তারা কেন তাদেরকে সাহায্য করল না? বরং তারা তাদের থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল, আর এটা তাদের মিথ্যাচার এবং তাদের মনগড়া উদ্ভাবন।
وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنْصِتُوا فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَى قَوْمِهِمْ مُنْذِرِينَ46.29
আরবি উচ্চারণ ৪৬.২৯। অইয্ ছোয়ারফ্না য় ইলাইকা নাফারম্ মিনাল্ জ্বিন্নি ইয়াস্ তামি‘ঊনাল্ কুরআ-না ফালাম্মা- হাদ্বোয়ারূহু ক্ব-লূ য় আন্ছিতূ ফালাম্মা-কুদ্বিয়া অল্লাওঁ ইলা-ক্বওমিহিম্ মুন্যিরীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.২৯ আর স্মরণ কর, যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তারা কুরআন পাঠ শুনছিল। যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল, তখণ তারা বলল, ‘চুপ করে শোন। তারপর যখন পাঠ শেষ হল তখন তারা তাদের কওমের কাছে সতর্ককারী হিসেবে ফিরে গেল।
قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنْزِلَ مِنْ بَعْدِ مُوسَى مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَى طَرِيقٍ مُسْتَقِيمٍ 46.30
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩০। ক্ব-লূ ইয়া-ক্বওমানা য় ইন্না-সামি’না-কিতা-বান্ উন্যিলা মিম্ বা’দি মূসা- মুছোয়াদ্দিক্বাল্ লিমা-বাইনা ইয়াদাইহি ইয়াহ্দী য় ইলাল্ হাকক্বি অইলা-ত্বোয়ারী ক্বিম্ মুস্তাক্বীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩০ তারা বলল, ‘হে আমাদের কওম, আমরা তো এক কিতাবের বাণী শুনেছি, যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাবকে সত্যায়ন করে আর সত্য ও সরল পথের প্রতি হিদায়াত করে’।
يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ46.31
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩১। ইয়া-ক্বওমানা য় আজ্বীবূ দা-ইয়াল্লা-হি অ আ-মিনূ বিহী ইয়াগ্ফিরলাকুম্ মিন্ যুনূবিকুম্ অ ইয়ুর্জ্বিকুম্ মিন্ আযা-বিন্ আলীম্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩১ ‘হে আমাদের কওম, আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবেন’।
وَمَنْ لَا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِنْ دُونِهِ أَولِيَاءُ أُولَئِكَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ46.32
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩২। অ মাল্ লা-ইয়ুজ্বিদা-‘ইয়াল্লা-হি ফালাইসা বিমু’জ্বিযিন্ ফিল্ র্আদ্বি অলাইসা লাহূ মিন্ দূনিহী য় আওলিয়া-য়্; উলা য় য়িকা ফী দ্বোয়ালা-লিম্ মুবীন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩২ আর যে আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না সে যমীনে তাকে অপারগকারী নয়। আর আল্লাহ ছাড়া তার কোন অভিভাবক নেই। এরাই স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَى بَلَى إِنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ 46.33
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩৩। আওয়ালাম্ ইয়ারও আন্না ল্লা-হাল্ লাযী খলাক্বস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বোয়া অলাম্ ইয়া’ইয়া বিখল্ক্বিহিন্না বিক্ব-দিরিন্ ‘আলা য় আইঁ ইয়ুহ্ ইয়িইয়াল্ মাউতা- বালা য় ইন্নাহূ ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বার্দী।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩৩ তারা কি দেখে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন আর এগুলোর সৃষ্টিতে তিনি ক্লান্ত হননি, তিনি মৃতদেরকে জীবন দিতে সক্ষম? অবশ্যই হ্যাঁ, নিশ্চয় তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَلَيْسَ هَذَا بِالْحَقِّ قَالُوا بَلَى وَرَبِّنَا قَالَ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ46.34
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩৪। অইয়াওমা ইয়ু’রাদুল্ লাযীনা কাফারূ ‘আলান্নার্-; আলাইসা হা-যা-বিল্হাক্ব্ ;ক্ব-লূ বালা-অ রব্বিনা-; ক্ব-লা ফাযূ কুল্ ‘আযা-বা বিমা-কুন্তুম্ তাক্ফুরূন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩৪ আর যেদিন কাফিরদেরকে জাহান্নামের কাছে পেশ করা হবে (বলা হবে), ‘এটা কি সত্য নয়’? তারা বলবে, ‘অবশ্যই হ্যাঁ, আমাদের রবের কসম তিনি বলবেন, ‘তাহলে আযাব আস্বাদন কর, যেহেতু তোমরা কুফরী করছিলে’।
فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُولُو الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِلْ لَهُمْ كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوعَدُونَ لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ بَلَاغٌ فَهَلْ يُهْلَكُ إِلَّا الْقَوْمُ الْفَاسِقُونَ 46.35
আরবি উচ্চারণ ৪৬.৩৫। ফার্ছ্বি কামা-ছোয়াবারা উলুল্ ‘আয্মি মির্না রুসুলি অলা-তাস্তা’জ্বিল্ লাহুম্; কায়ান্নাহুম্ ইয়াওমা ইয়ারওনা মা-ইয়ূ‘আদূনা লাম্ ইয়াল্বাছূ য় ইল্লা-সা-‘আতাম্ মিন্ নাহার্-; বালা-গুন্ ফাহাল্ ইয়ুহ্লাকু ইল্লাল্ ক্বওমুল্ ফা-সিকুন্।
বাংলা অনুবাদ ৪৬.৩৫ অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের অধিকারী রাসূলগণ। আর তাদের জন্য তাড়াহুড়া করো না। তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল, যেদিন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে, মনে হবে তারা পৃথিবীতে এক দিনের কিছু সময় অবস্থান করেছে। সুতরাং এটা এক ঘোষণা, তাই পাপাচারী কওমকেই ধ্বংস করা হবে। গ্রন্থনা : মওলানা মিরাজ রহমান
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
- নামাজে আমরা যা বলি তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল
- বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,বাসর রাতের নামাজ
- তাসবিহ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, তাসবিহ সালাতের ফজিলত