সূরা ক্বামার সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল ক্বামার আলমল ও ফজিলত, সূরা ক্বামার কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা ক্বামার নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৫৪ সূরা আল – ক্বামার

আজকের বিষয়: সূরা ক্বামার সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল ক্বামার আলমল ও ফজিলত, সূরা ক্বামার কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা ক্বামার নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৫৪ সূরা আল – ক্বামার

মদীনায় হিযরাতের ৫ বৎসর পূর্বে মক্কার কাফির ও মুশরিকদের একদল নেতা একবার মুহাম্মাদ’র কাছে আসে। তাদের মধ্যে আবু জেহেল, ওয়ালিদ বিন মুগিরাহ, আস ইবনে ওয়ায়েল, আস ইবনে হিশাম, আসওয়াদ ইবনে আবদে ইয়াগুস, আসওয়াদ ইবনে মুত্তালিব, যাম‘আহ ইবনুল আসওয়াদ, নযর ইবনে হারেস ইত্যাদি ছিল।

ঐ দিন রাতের আকাশে পূর্ণ চাঁদ দেখা যাচিছল। তারা বললো, ‘আপনার নবুওতের দাবী যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এই চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত হতে বলুন’। মুহাম্মাদ বললেন, ‘এ কাজ করলে কি তোমরা ঈমান আনবে?’ তারা বললো, ‘হ্যা।” অতঃপর মুহাম্মদ আল্লাহর কাছে এ বিষয়ে প্রার্থনা করলেন। তার প্রার্থনা কবুল হলো। অতঃপর চাঁদ স্পষ্টভাবে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেল এবং দুই খণ্ডের মাঝখানে হেরা পর্বত দৃশ্যমান হলো। দুই খণ্ডের এক খণ্ড আবী কুবাইস পাহাড় বরাবর, অপরটি কাইকা’আন বরাবর দৃশ্যমান হলো। ইবনে কাসীর সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রাথমিককালের ইসলামী ইতিহাস রচয়িতাগণ এ ঘটনাকে নির্ভুল বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এ সময় মুহাম্মাদ বলছিলেন, ‘সাক্ষী থাক ও দেখ’। কাফির ও মুশরিকরা এই অসাধারণ দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। কিন্তু তারা ঈমান না এনে বললো, ‘মনে হয়, আপনি আমাদেরকে যাদু করেছেন’। এ ঘটনাকে বলা হয় ‘শাক্কুল ক্বামার (আরবি: انشقاق القمر‎‎)) যার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা কামার (চন্দ্র) অবতীর্ণ হয়। এর প্রথম দুই আয়াত হলো: ৫৪:১-২

اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ وَإِن يَرَوْا آيَةً يُعْرِضُوا وَيَقُولُوا سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ
এর অর্থ হলো, “কেয়ামত সমাসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। তারা যদি কোনো নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে এটা তো চিরাচরিত জাদু’’।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


৫৪ . আল ক্বামার – ( الـقمـر ) | চন্দ্র
মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৫৫

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ

ইকতারাবাতিছছা-‘আতুওয়ানশাক্কাল কামার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
কিয়ামত কাছে এসে গেছে এবং চাঁদ ফেটে গেছে। ১

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
কেয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে, আর চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে,

তাফসীরঃ
১. কিয়ামতের অন্যতম একটি আলামত হল চাঁদের দু’ টুকরো হওয়া। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে এ মুজিযার প্রকাশ ঘটেছিল। ঘটনার বিবরণ এই যে, এক চাঁদনি রাতে মক্কা মুকাররমার একদল কাফের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একটি মুজিযা দাবি করল। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর হাতে এই মহা বিস্ময়কর মুজিযা প্রকাশ করলেন যে, চাঁদ দু’টুকরো হয়ে গেল। এক টুকরো চলে গেল পশ্চিম দিকে, অন্য টুকরো পূর্ব দিকে। উভয়ের মাঝখানে পাহাড়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেন, ‘দেখে নাও’। উপস্থিত সকলে খোলা চোখে এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখে নিল। তারপর আবার উভয় টুকরো আপন স্থানে এসে মিলে গেল। উপস্থিত কাফেরগণের পক্ষে তো চাক্ষুষ দেখা এ বিষয়টাকে অস্বীকার করা সম্ভব ছিল না, কিন্তু তারা এই বলে মুখ ফিরিয়ে নিল যে, এটা একটা যাদু। পরবর্তীতে বাহির থেকে যেসব কাফেলা মক্কা মুকাররমায় এসেছে, তারাও সাক্ষ্য দিয়েছে যে, তারা চাঁদকে দু’টুকরো হতে দেখেছে। ভারতের ‘তারীখণ্ডই-ফিরিশতা’ নামক গ্রন্থেও আছে যে, ‘গোয়ালিয়র’-এর রাজা নিজে চাঁদের দু’টুকরো হওয়ার ব্যাপারটা দেখেছিলেন।

وَإِن يَرَوْا آيَةً يُعْرِضُوا وَيَقُولُوا سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ

ওয়া ইয়ঁইয়ারাও আ-য়াতাইঁ ইউ‘রিদূ ওয়া ইয়াকূলূছিহরুম মুছতামির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(তাদের অবস্থা হল), তারা যখন কোন নিদর্শন দেখে, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো এক চলমান যাদু। ২

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা যদি কোন নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাগত জাদু।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরা কোন নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, ‘এটা তো চিরাচরিত জাদু।’

তাফসীরঃ
২. এর এক অর্থ হতে পারে এই যে, এ রকমের যাদু বহুকাল চালু আছে। দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, এটা এমন এক যাদু, যার প্রভাব শীঘ্রই খতম হয়ে যাবে।

وَكَذَّبُوا وَاتَّبَعُوا أَهْوَاءَهُمْ ۚ وَكُلُّ أَمْرٍ مُّسْتَقِرٌّ

ওয়াকাযযাবূওয়াত্তাবা‘ঊআহওয়াআহুম ওয়াকুল্লুআমরিম মুছতাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তারা প্রত্যাখ্যান করল এবং নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুগামী হল। প্রতিটি বিষয় শেষ পর্যন্ত এক পরিণতিতে পৌঁছবেই। ৩

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা মিথ্যারোপ করছে এবং নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করছে। প্রত্যেক কাজ যথাসময়ে স্থিরীকৃত হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজ খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে, আর প্রত্যেক ব্যাপারই লক্ষ্যে পৌঁছিবে।

তাফসীরঃ
৩. অর্থাৎ প্রতিটি কাজেরই একটা পরিণাম থাকে। সুতরাং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা-কিছু বলছেন এবং যা-কিছু বলছে কাফেরগণ, তার পরিণাম শীঘ্রই জানা যাবে।

وَلَقَدْ جَاءَهُم مِّنَ الْأَنبَاءِ مَا فِيهِ مُزْدَجَرٌ

ওয়া লাকাদ জাআহুম মিনাল আমবাই মা-ফীহি মুঝদাজার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং তাদের (অর্থাৎ অতীত জাতিসমূহের) কাছে এমন সব সংবাদ পৌঁছেছিল, যার ভেতর সতর্কবাণী ছিল

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তাদের কাছে এমন সংবাদ এসে গেছে, যাতে সাবধানবাণী রয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এদের নিকট এসেছে সুসংবাদ, যাতে আছে সাবধান বাণী;

حِكْمَةٌ بَالِغَةٌ ۖ فَمَا تُغْنِ النُّذُرُ

হিকমাতুম বা-লিগাতুন ফামা-তুগনিন নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এমন জ্ঞানগর্ভ কথা, যা হৃদয়ে পৌঁছে যায়। তা সত্ত্বেও সতর্কবাণীসমূহ তাদের কোন কাজে আসেনি।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এটা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে সতর্ককারীগণ তাদের কোন উপকারে আসে না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এটা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে এই সতর্কবাণী এদের কোন উপকারে আসে নাই।

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ ۘ يَوْمَ يَدْعُ الدَّاعِ إِلَىٰ شَيْءٍ نُّكُرٍ

ফাতাওয়াল্লা ‘আনহুম । ইয়াওমা ইয়াদ‘উদ্দা-‘ই ইলা-শাইয়িন নুকুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সুতরাং (হে রাসূল!) তুমিও তাদেরকে অগ্রাহ্য কর। ৪ যে দিন আহ্বানকারী আহ্বান করবে এক অপ্রীতিকর জিনিসের দিকে,

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে,

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
অতএব তুমি এদের উপেক্ষা কর। যেদিন আহবানকারী আহ্বান করবে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে,

তাফসীরঃ
৪. অর্থাৎ আপনি যেহেতু তাবলীগের দায়িত্ব পালন করছেন, তাই তাদের আচার-আচরণে বেশি মনঃক্ষুণ্ণ হবেন না।

خُشَّعًا أَبْصَارُهُمْ يَخْرُجُونَ مِنَ الْأَجْدَاثِ كَأَنَّهُمْ جَرَادٌ مُّنتَشِرٌ

খুশশা‘আন আবসা-রুহুম ইয়াখরুজূনা মিনাল আজদা-ছিকাআন্নাহুম জারা-দুম মুনতাশির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সে দিন তারা অবনমিত চোখে কবর থেকে এভাবে বের হয়ে আসবে, যেন চারদিকে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপাল

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা তখন অবনমিত নেত্রে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পংগপাল সদৃশ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
অপমানে অবনমিত নেত্রে সেদিন এরা কবর হতে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়,

مُّهْطِعِينَ إِلَى الدَّاعِ ۖ يَقُولُ الْكَافِرُونَ هَـٰذَا يَوْمٌ عَسِرٌ

মুহতি‘ঈনা ইলাদ্দা-‘ই ইয়াকূলুল কা-ফিরূনা হা-যা-ইয়াওমুন ‘আছির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ধাবমান থাকবে সেই আহ্বানকারীর দিকে। এই কাফেরগণই (যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করত) বলবে, এটা তো অতি কঠিন দিন।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা আহবানকারীর দিকে দৌড়াতে থাকবে। কাফেরা বলবেঃ এটা কঠিন দিন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরা আহ্বানকারীর দিকে ছুটে আসবে ভীত-বিহŸল হয়ে। কাফিররা বলবে, ‘কঠিন এই দিন।’


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


۞ كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ فَكَذَّبُوا عَبْدَنَا وَقَالُوا مَجْنُونٌ وَازْدُجِرَ

কাযযাবাত কাবলাহুম কাওমু নূহিন ফাকাযযাবূ ‘আবদানা-ওয়াকা-লূ মাজনূনুওঁ ওয়াঝদুজির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তাদের আগে নূহের সম্প্রদায়ও অবিশ্বাস করেছিল। তারা আমার বান্দাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করল এবং বলল, সে একজন উন্মাদ এবং তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছিল।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও মিথ্যারোপ করেছিল। তারা মিথ্যারোপ করেছিল আমার বান্দা নূহের প্রতি এবং বলেছিলঃ এ তো উম্মাদ। তাঁরা তাকে হুমকি প্রদর্শন করেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও অস্বীকার করেছিল-অস্বীকার করেছিল আমার বান্দাকে আর বলেছিল, ‘এ তো এক পাগল।’ আর তাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল।

১০

فَدَعَا رَبَّهُ أَنِّي مَغْلُوبٌ فَانتَصِرْ

ফাদা‘আ-রাব্বাহূআন্নী মাগলূবুন ফানতাসির ।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ফলে সে তার প্রতিপালককে ডেকে বলল, আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। এবার আপনিই ব্যবস্থা নিন।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতঃপর সে তার পালনকর্তাকে ডেকে বললঃ আমি অক্ষম, অতএব, তুমি প্রতিবিধান কর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
তখন সে তার প্রতিপালককে আহ্বান করে বলেছিল, ‘আমি তো অসহায়, অতএব তুমি প্রতিবিধান কর।’

১১

فَفَتَحْنَا أَبْوَابَ السَّمَاءِ بِمَاءٍ مُّنْهَمِرٍ

ফাফাতাহনাআবওয়া-বাছ ছামাই বিমাইম মুনহামির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সুতরাং আমি ভেঙ্গে নামা পানি দ্বারা আকাশের দুয়ার খুলে দিলাম।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারিবর্ষণের মাধ্যমে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
ফলে আমি উন্মুক্ত করে দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারি বর্ষণে,

১২

وَفَجَّرْنَا الْأَرْضَ عُيُونًا فَالْتَقَى الْمَاءُ عَلَىٰ أَمْرٍ قَدْ قُدِرَ

ওয়া ফাজ্জারনাল আরদা ‘উইঊনান ফালতাকাল মাউ ‘আলাআমরিন কাদ কুদির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং ভূমিকে ফাটিয়ে প্রস্রবণে পরিণত করলাম আর এভাবে (উভয় প্রকারের) সমুদয় পানি মিলে গেল এক স্থিরীকৃত কাজের জন্য। ৫

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এবং ভুমি থেকে প্রবাহিত করলাম প্রস্রবণ। অতঃপর সব পানি মিলিত হল এক পরিকম্পিত কাজে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এবং মৃত্তিকা হতে উৎসারিত করলাম প্রস্রবণ; এরপর সকল পানি মিলিত হল এক পরিকল্পনা অনুসারে।

তাফসীরঃ
৫. অর্থাৎ আকাশ থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি নামল এবং ভূমি ফেটেও পানি উৎসারিত হল। এভাবে উভয় রকমের পানি মিলে মহা প্লাবনের সৃষ্টি হল, যা দ্বারা সে সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত স্থিরীকৃত ছিল। তাদের বিস্তারিত বৃত্তান্তের জন্য দেখুন সূরা হুদ (১১ : ৪০) ও সূরা মুমিনূন (২৩ : ২৭)।

১৩

وَحَمَلْنَاهُ عَلَىٰ ذَاتِ أَلْوَاحٍ وَدُسُرٍ

ওয়া হামালনা-হু ‘আলা-যা-তি আলওয়া-হিওঁ ওয়াদুছুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং আমি নূহকে আরোহণ করালাম এক তক্তা ও কীলক-নির্মিত নৌকায়,

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি নূহকে আরোহণ করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
তখন নূহকে আরোহণ করালাম কাষ্ঠ ও কীলক নির্মিত এক নৌযানে,

১৪

تَجْرِي بِأَعْيُنِنَا جَزَاءً لِّمَن كَانَ كُفِرَ

তাজরী বিআ‘ইউনিনা- জাঝাআল লিমান কা-না কুফির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
যা চলছিল আমার তত্ত্বাবধানে, যার অকৃতজ্ঞতা করা হয়েছিল তার (অর্থাৎ সেই রাসূলের) পক্ষে বদলা গ্রহণের জন্য। ৬

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
যা চলত আমার দৃষ্টি সামনে। এটা তার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যখ্যান করা হয়েছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যা চলত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে; এটা পুরস্কার তার জন্যে, যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।

তাফসীরঃ
৬. অর্থাৎ হযরত নূহ (আ.) ছিলেন তাঁর কওমের জন্য আল্লাহ তাআলার এক মহা নিয়ামত। কিন্তু তারা এ নি‘আমতের কদর করেনি। তাকে প্রত্যাখ্যান করে, তাঁর দাওয়াতকে অগ্রাহ্য করে তারা চরম অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছিল, তারই বদলা নেওয়ার জন্য তাদেরকে মহাপ্লাবনে নিমজ্জিত করা হয়েছিল। -অনুবাদক

১৫

وَلَقَد تَّرَكْنَاهَا آيَةً فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়া লাকাদ তারাকনা-হাআ-য়াতান ফাহাল মিম মুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি একে বানিয়ে দিয়েছি এক নিদর্শন। আছে কি কেউ যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি একে এক নিদর্শনরূপে রেখে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি তো এটাকে রেখে দিয়েছি এক নিদর্শনরূপে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি ?

১৬

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ

ফাকাইফা কা-না ‘আযা-বী ওয়া নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সুতরাং চিন্তা করে দেখ, কেমন ছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণী।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কী কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!

১৭

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়ালাকাদ ইয়াছছারনাল কুরআ-না লিযযি করি ফাহাল মিম মুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
বস্তুত আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং আছে কি কেউ, যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্যে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?

১৮

كَذَّبَتْ عَادٌ فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ

কাযযাবাত ‘আ-দুন ফাকাইফা কা-না ‘আযা-বী ওয়া নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আদ জাতিও অবিশ্বাস করেছিল। সুতরাং দেখে নাও, কেমন ছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণী।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আদ সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কেমন কঠোর হয়েছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
‘আদ সম্প্রদায় সত্য অস্বীকার করেছিল, ফলে কিরূপ ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!

১৯

إِنَّا أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا صَرْصَرًا فِي يَوْمِ نَحْسٍ مُّسْتَمِرٍّ

ইন্নাআরছালনা-‘আলাইহিম রীহান সারসারান ফী ইয়াওমি নাহছিম মুছতামির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি তাদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া একটানা অশুভ দিনে। ৭

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্জাবায়ু এক চিরাচরিত অশুভ দিনে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এদের ওপর আমি প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু নিরবচ্ছিন্ন দুর্ভাগ্যের দিনে,

তাফসীরঃ
৭. বিস্তারিত জ্ঞাতার্থে দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৬৫)।

২০

تَنزِعُ النَّاسَ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ مُّنقَعِرٍ

তানঝি‘উন্না-ছা কাআন্নাহুম আ‘জা-ঝুনাখলিম মুনকা‘ইর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
যা মানুষকে উপড়ে ফেলে দিচ্ছিল উৎপাটিত খেজুর কাণ্ডের মত।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তা মানুষকে উৎখাত করছিল, যেন তারা উৎপাটিত খর্জুর বৃক্ষের কান্ড।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
মানুষকে তা উৎখাত করেছিল উন্মুলিত খর্জুর-কাণ্ডের ন্যায়।

২১

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ

ফাকাইফা কা-না ‘আযা-বী ওয়া নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
চিন্তা করে দেখ, কেমন ছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণী।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতঃপর কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কী কঠোর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী!

২২

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়া লাকাদ ইয়াছছারনাল কুরআ-না লিযযি করি ফাহাল মিম মুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
বস্তুত আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং আছে কি কেউ, যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্যে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


২৩

كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِالنُّذُرِ

কাযযাবাত ছামূদুবিন্নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ছামুদ জাতিও সতর্ককারীদেরকে অবিশ্বাস করেছিল।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
সামুদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
সামূদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদেরকে অস্বীকার করেছিল,

২৪

فَقَالُوا أَبَشَرًا مِّنَّا وَاحِدًا نَّتَّبِعُهُ إِنَّا إِذًا لَّفِي ضَلَالٍ وَسُعُرٍ

ফাকা-লূআবাশারাম মিন্না-ওয়া-হিদান নাত্তাবি‘উহূ ইন্নাইযাল্লাফী দালা-লিওঁ ওয়াছু‘উর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সুতরাং তারা বলতে লাগল, আমরা কি আমাদেরই মধ্যকার একা এক ব্যক্তির অনুগামী হব? এরূপ করলে নিঃসন্দেহে আমরা ঘোর বিভ্রান্তি ও উন্মাদগ্রস্ততায় নিপতিত হব।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা বলেছিলঃ আমরা কি আমাদেরই একজনের অনুসরণ করব? তবে তো আমরা বিপথগামী ও বিকার গ্রস্থরূপে গণ্য হব।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
তারা বলেছিল, ‘আমরা কি আমাদেরই এক ব্যক্তির অনুসরণ করব ? তবে তো আমরা পথভ্রষ্টতায় এবং উন্মত্ততায় পতিত হব।

২৫

أَأُلْقِيَ الذِّكْرُ عَلَيْهِ مِن بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌ

আ উলকিয়াযযিকরু ‘আলাইহি মিম বাইনিনা-বাল হুওয়া কাযযা-বুন আশির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমাদের এত লোকের মধ্যে কি কেবল তার উপর উপদেশবাণী নাযিল করা হল? না; বরং সে একজন চরম মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমাদের মধ্যে কি তারই প্রতি উপদেশ নাযিল করা হয়েছে? বরং সে একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
‘আমাদের মধ্যে কি এরই প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে ? না, সে তো একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।’

২৬

سَيَعْلَمُونَ غَدًا مَّنِ الْكَذَّابُ الْأَشِرُ

ছাইয়া‘লামূনা গাদাম মানিল কাযযা-বুল আশির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(আমি নবী সালেহ আলাইহিস সালামকে বললাম,) আগামীকালই তারা জানতে পারবে, কে চরম মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এখন আগামীকল্যই তারা জানতে পারবে কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আগামীকল্য এরা জানবে, কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

২৭

إِنَّا مُرْسِلُو النَّاقَةِ فِتْنَةً لَّهُمْ فَارْتَقِبْهُمْ وَاصْطَبِرْ

ইন্না-মুরছিলুন্না-কাতি ফিতনাতাল্লাহুম ফারতাকিবহুম ওয়াসতাবির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি তাদের পরীক্ষার্থে তাদের কাছে একটি উট পাঠাচ্ছি। সুতরাং তুমি তাদেরকে দেখতে থাক এবং সবর অবলম্বন কর।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি তাদের পরীক্ষার জন্য এক উষ্ট্রী প্রেরণ করব, অতএব, তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখ এবং সবর কর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি এদের পরীক্ষার জন্যে পাঠিয়েছি এক উষ্ট্রী, অতএব তুমি এদের আচরণ লক্ষ্য কর এবং ধৈর্যশীল হও।

২৮

وَنَبِّئْهُمْ أَنَّ الْمَاءَ قِسْمَةٌ بَيْنَهُمْ ۖ كُلُّ شِرْبٍ مُّحْتَضَرٌ

ওয়া নাব্বি’হুম আন্নাল মাআ কিছমাতুম বাইনাহুম কুল্লুশিরবিম মুহতাদার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, (কুয়ার) পানি তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। পানির প্রতি পালায় উপস্থিত হবে তার হকদার। ৮

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এবং তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের মধ্যে পানির পালা নির্ধারিত হয়েছে এবং পালাক্রমে উপস্থিত হতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এবং এদেরকে জানিয়ে দাও যে, এদের মধ্যে পানি বণ্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্যে প্রত্যেকে উপস্থিত হবে পালাক্রমে।

তাফসীরঃ
৮. এ উটনীটি সৃষ্টি করা হয়েছিল তাদেরই দাবি অনুযায়ী। অতঃপর তাদেরকে বলা হয়েছিল, মহল্লার কুয়া থেকে একদিন উটনীটি পানি পান করবে এবং একদিন মহল্লাবাসী। এভাবে পালা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, যাতে কুয়া থেকে একের পালায় অন্যে পানি পান না করে। কিন্তু ছামুদ জাতি এ নিয়ম রক্ষা করেনি। বিস্তারিত দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৭৩) ও তার টীকা।

২৯

فَنَادَوْا صَاحِبَهُمْ فَتَعَاطَىٰ فَعَقَرَ

ফানা-দাও সা-হিবাহুম ফাত‘আ-তা-ফা‘আকার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
অতঃপর তারা তাদের এক সঙ্গীকে ডাকল। সুতরাং সে হাত বাড়াল এবং (উটনীটিকে) হত্যা করল। ৯

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতঃপর তারা তাদের সঙ্গীকে ডাকল। সে তাকে ধরল এবং বধ করল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরপর এরা এদের এক সঙ্গীকে আহ্বান করল, সে একে ধরে হত্যা করল।

তাফসীরঃ
৯. বর্ণিত হয়েছে, লোকটির নাম ছিল কুদার। সে-ই উটনীটি হত্যা করেছিল।

৩০

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ

ফাকাইফা কা-না ‘আযা-বী ওয়ানুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
চিন্তা করে দেখ, কেমন ছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণী।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতঃপর কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কিরূপ কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

৩১

إِنَّا أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ صَيْحَةً وَاحِدَةً فَكَانُوا كَهَشِيمِ الْمُحْتَظِرِ

ইন্নাআরছালনা-‘আলাইহিম সাইহাতাওঁ ওয়া হিদাতান ফাকা-নূকাহাশীমিল মুহতাজির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি তাদের উপর পাঠালাম একটি মাত্র মহানাদ। ফলে তারা হয়ে গেল খোয়াড় প্রস্তুতকারীর শুষ্ক বিচূর্ণ কাঁটার মতো। ১০

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি তাদের প্রতি একটিমাত্র নিনাদ প্রেরণ করেছিলাম। এতেই তারা হয়ে গেল শুষ্ক শাখাপল্লব নির্মিত দলিত খোয়াড়ের ন্যায়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি এদেরকে আঘাত হানিয়েছিলাম এক মহানাদ দিয়ে; ফলে এরা হয়ে গেল খোঁয়াড় প্রস্তুতকারীর বিখণ্ডিত শুষ্ক শাখা-প্রশাখার ন্যায়।

তাফসীরঃ
১০. المحتظر যে ব্যক্তি খোয়াড় তৈরি করে। আরববাসী ছাগলের সুরক্ষার জন্য কাঁটাদার গাছের ডালপালা দিয়ে খোয়াড় তৈরি করত, যাতে হিংস্র পশু তা শিকার করে না নিয়ে যায়। সেই ডালপালা থেকে যা শুকিয়ে নিচে পড়ত এবং ছাগলের পায়ে দলিত হয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যেত هشيم বলে তাকেই বোঝানো হয়েছে। আল্লাহর আযাবে ছামূদ জাতি দলিত-মথিত হয়ে এরকমই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। -অনুবাদক

৩২

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়া লাকাদ ইয়াছছারনাল কুরআ-না লিযযি করি ফাহাল মিম মুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
বস্তুত আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং আছে কি কেউ, যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্যে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?

৩৩

كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍ بِالنُّذُرِ

কাযযাবাত কাওমুলূতিম বিননুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
লূতের সম্প্রদায়(ও) সতর্ককারীদেরকে অস্বীকার করল।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
লূত-সম্প্রদায় সতর্ককারীদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
লূত সম্প্রদায় অস্বীকার করেছিল সতর্ককারীদেরকে,

৩৪

إِنَّا أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ حَاصِبًا إِلَّا آلَ لُوطٍ ۖ نَّجَّيْنَاهُم بِسَحَرٍ

ইন্নাআরছালনা-‘আলাইহিম হা-সিবান ইল্লাআ-লা লূতিন নাজ্জাইনা-হুম বিছাহার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি তাদের উপর বর্ষণ করলাম পাথরের বৃষ্টি, লূতের পরিবারবর্গ ছাড়া, যাদেরকে আমি সাহরীর সময় রক্ষা করেছিলাম।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিবায়ু; কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়। আমি তাদেরকে রাতের শেষপ্রহরে উদ্ধার করেছিলাম।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি এদের ওপর প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বহনকারী প্রচণ্ড ঝটিকা, কিন্তু লূত পরিবারের ওপর নয় ; তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছিলাম রাত্রির শেষাংশে

৩৫

نِّعْمَةً مِّنْ عِندِنَا ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِي مَن شَكَرَ

নি‘মাতাম মিন ‘ইনদিনা- কাযা-লিকা নাজঝী মান শাকার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এটা ছিল আমার পক্ষ থেকে এক নি‘আমত। যারা কৃতজ্ঞতা অবলম্বন করে আমি তাদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করি।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ। যারা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে, আমি তাদেরকে এভাবে পুরস্কৃত করে থকি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমার বিশেষ অনুগ্রহস্বরূপ; যারা কৃতজ্ঞ, আমি এইভাবেই তাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।

৩৬

وَلَقَدْ أَنذَرَهُم بَطْشَتَنَا فَتَمَارَوْا بِالنُّذُرِ

ওয়ালা-কাদ আনযারাহুম বাতশাতানা-ফাতামা-রাও বিননুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
লূত তাদেরকে আমার শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছিল, কিন্তু তারা সব রকম সতর্কবাণী নিয়ে বিতণ্ডা করতে থাকল,

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
লূত (আঃ) তাদেরকে আমার প্রচন্ড পাকড়াও সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। অতঃপর তারা সতর্কবাণী সম্পর্কে বাকবিতন্ডা করেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
লূত এদেরকে সতর্ক করেছিল আমার কঠোর শাস্তি সম্পর্কে; কিন্তু এরা সতর্কবাণী সম্বন্ধে বিতণ্ডা শুরু করল।

৩৭

وَلَقَدْ رَاوَدُوهُ عَن ضَيْفِهِ فَطَمَسْنَا أَعْيُنَهُمْ فَذُوقُوا عَذَابِي وَنُذُرِ

ওয়া লাকাদ রা-ওয়াদূহু‘আনদাইফিহী ফাতামাছনাআ‘ইউনাহুম ফাযূকূ‘আযা-বী ওয়া নুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তারা লূতকে তার অতিথিদের ব্যাপারে ফুসলানোর চেষ্টা করল। ১১ ফলে আমি তাদের চোখ অন্ধ করে দিলাম। ‘আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণীর স্বাদ গ্রহণ কর।’

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা লূতের (আঃ) কাছে তার মেহমানদেরকে দাবী করেছিল। তখন আমি তাদের চক্ষু লোপ করে দিলাম। অতএব, আস্বাদন কর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরা লূতের নিকট হতে তার মেহমানদেরকে অসৎ উদ্দেশ্যে দাবি করল, তখন আমি এদের দৃষ্টিশক্তি লোপ করে দিলাম এবং আমি বললাম, ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্ক-বাণীর পরিণাম।

তাফসীরঃ
১১. এটা বিস্তারিতভাবে সূরা হুদে (১১ : ৭৮) গত হয়েছে। হযরত লূত আলাইহিস সালামের কাছে কয়েকজন ফেরেশতা এসেছিলেন সুদর্শন কিশোর বেশে। তাঁর সম্প্রদায় সমকামের ব্যাধিতে লিপ্ত ছিল। তাই তারা হযরত লূত আলাইহিস সালামের কাছে দাবি করল, তিনি যেন অতিথিদেরকে তাদের হাতে ছেড়ে দেন, যাতে তারা তাদের বদ চাহিদা পূরণ করতে পারে। এখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাদের চোখে পর্দা ফেলে দিয়েছিলেন। ফলে তারা অতিথিদের পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি (আদ-দুররুল মানছুর)।

৩৮

وَلَقَدْ صَبَّحَهُم بُكْرَةً عَذَابٌ مُّسْتَقِرٌّ

ওয়া লাকাদ সাব্বাহাহুম বুকরাতান ‘আযা-বুমমুছতাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ভোরবেলা তাদেরকে আঘাত করল, (একটানা) স্থায়ী শাস্তি।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তাদেরকে প্রত্যুষে নির্ধারিত শাস্তি আঘাত হেনেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
প্রত্যূষে বিরামহীন শাস্তি তাদেরকে আঘাত করল।

৩৯

فَذُوقُوا عَذَابِي وَنُذُرِ

ফাযূকূ‘আযা-বী ওয়ানুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ভোগ কর আমার শাস্তি ও আমার সতর্কবাণীর মজা।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতএব, আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী আস্বাদন কর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এবং আমি বললাম, ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম।’

৪০

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়ালাকাদ ইয়াছছারনাল কুরআ-না লিযযি করি ফাহাল মিমমুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
বস্তুত আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং আছে কি এমন কেউ, যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি কোরআনকে বোঝবার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্যে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?

৪১

وَلَقَدْ جَاءَ آلَ فِرْعَوْنَ النُّذُرُ

ওয়া লাকাদ জাআ আ-লা ফির‘আওনাননুযুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
ফির‘আউনের খান্দানের কাছেও সতর্কবাণী এসেছিল।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
ফেরাউন সম্প্রদায়ের কাছেও সতর্ককারীগণ আগমন করেছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
ফির‘আওন সম্প্রদায়ের নিকটও এসেছিল সতর্ককারী;

৪২

كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذْنَاهُمْ أَخْذَ عَزِيزٍ مُّقْتَدِرٍ

কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-কুল্লিহা-ফাআখযনা -হুম আখযা ‘আঝীঝিমমুকতাদির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তারা আমার সমস্ত নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করল। ফলে আমি তাদেরকে ধরলাম, যেমনটা হয়ে থাকে এক প্রচণ্ড শক্তিমানের ধরা। ১২

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা আমার সকল নিদর্শনের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। অতঃপর আমি পরাভূতকারী, পরাক্রমশালীর ন্যায় তাদেরকে পাকড়াও করলাম।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কিন্তু এরা আমার সকল নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করল, এরপর পরাক্রম-শালী ও সর্বশক্তিমানরূপে আমি এদেরকে সুকঠিন শাস্তি দিলাম।

তাফসীরঃ
১২. সূরা হুদে বলা হয়েছে, তাদের গোটা জনপদকে উল্টিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

৪৩

أَكُفَّارُكُمْ خَيْرٌ مِّنْ أُولَـٰئِكُمْ أَمْ لَكُم بَرَاءَةٌ فِي الزُّبُرِ

আকুফফা-রুকুম খাইরুম মিন উলাইকুম আম লাকুম বারাআতুন ফিঝঝুবুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তোমাদের মধ্যকার কাফেরগণ কি তাদের চেয়ে উত্তম, নাকি তোমাদের জন্য (আল্লাহর) কিতাবসমূহে কোন ছাড়পত্র লেখা আছে? ১৩

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তোমাদের মধ্যকার কাফেররা কি তাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ ? না তোমাদের মুক্তির সনদপত্র রয়েছে কিতাবসমূহে?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
তোমাদের মধ্যকার কাফিররা কি এদের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ? না কি তোমাদের অব্যাহতির কোন সনদ রয়েছে পূর্ববর্তী কিতাবে ?

তাফসীরঃ
১৩. অতীত জাতিসমূহের বৃত্তান্ত উল্লেখ করার পর মক্কাবাসী কাফেরদেরকে বলা হচ্ছে, যেসব জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে, তোমাদের মধ্যে তাদের চেয়ে ভালো কোন দিক আছে, যার প্রতি লক্ষ করে তোমাদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করা হবে? নাকি তোমাদের সম্পর্কে কোন আসমানী কিতাবে ছাড়পত্র লিখে দেওয়া হয়েছে কিংবা ওয়াদা করা হয়েছে যে, তোমাদের কোন কাজকে অপরাধ গণ্য করা হবে না?

৪৪

أَمْ يَقُولُونَ نَحْنُ جَمِيعٌ مُّنتَصِرٌ

আম ইয়াকূলূনা নাহনুজামী‘উমমুনতাসির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
নাকি তারা বলে, আমরা আত্মরক্ষায় সমর্থ এক সংঘবদ্ধ দল? ১৪

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
না তারা বলে যে, আমারা এক অপরাজেয় দল?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এরা কি বলে, ‘আমরা এক সঙ্ঘবদ্ধ অপরাজেয় দল ?’

তাফসীরঃ
১৪. মক্কা মুকাররমার কাফেরদেরকে যখন আল্লাহ তাআলার আযাব সম্পর্কে ভয় দেখানো হত, তখন তারা বলত, আমাদের দল বড় শক্তিশালী। কেউ আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

৪৫

سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّونَ الدُّبُرَ

ছাইউহঝামুল জাম‘উ ওয়া ইউওয়াললূনাদ্দুবুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(সত্য কথা এই যে,) এই দল অচিরেই পরাস্ত হবে এবং তারা পিছন ফিরে পালাবে। ১৫

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এ দল তো সত্ত্বরই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এই দল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে,

তাফসীরঃ
১৫. এ ভবিষ্যদ্বাণীটি এমন এক সময় করা হয়েছিল, যখন কাফেরদের বিপরীতে মুমিনগণ খুবই কমজোর ছিল। এমনকি নিজেরা কাফেরদের অত্যাচার থেকে আত্মরক্ষা পর্যন্ত করতে পারত না, কিন্তু জগত দেখতে পেয়েছে, কিভাবে আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যদ্বাণী বদরের রণাঙ্গনে অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণ হয়েছে। এ সময় মক্কা মুকাররমার বড়-বড় কাফের ও কাফেরদের সর্দারগণ মুমিনদের হাতে কতল হয়েছে, তাদের সত্তরজন গ্রেফতার হয়েছে এবং বাকিরা জান নিয়ে পালিয়েছে।

৪৬

بَلِ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهَىٰ وَأَمَرُّ

বালিছ ছা-‘আতুমাও‘ইদুহুম ওয়াছছা-‘আতুআদহা-ওয়া আমার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(এতটুকুই নয়); বরং তাদের প্রকৃত প্রতিশ্রুত কাল তো কিয়ামত। কিয়ামত তো আরও বেশি কঠিন, অনেক বেশি তিক্ত।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
বরং কেয়ামত তাদের প্রতিশ্রুত সময় এবং কেয়ামত ঘোরতর বিপদ ও তিক্ততর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
অধিকন্তু কিয়ামত এদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামত হবে কঠিনতর ও তিক্ততর;

৪৭

إِنَّ الْمُجْرِمِينَ فِي ضَلَالٍ وَسُعُرٍ

ইন্নাল মুজরিমীনা ফী দালা-লিওঁ ওয়াছু‘উর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
বস্তুত এসব অপরাধী বিভ্রান্তি ও বিকারগ্রস্ততায় ১৬ পতিত রয়েছে।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
নিশ্চয় অপরাধীরা পথভ্রষ্ট ও বিকারগ্রস্ত।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
নিশ্চয়ই অপরাধীরা বিভ্রান্ত ও বিকারগ্রস্ত।

তাফসীরঃ
১৬. পূর্বে ২৪ নং আয়াতে ছামূদ জাতির যে কথা উদ্ধৃত হয়েছে, এটা তার উত্তর। মক্কা মুকাররমার কাফেরগণও তাদের মত কথা বলত। তাই তাদের সম্পর্কে একথা ইরশাদ হয়েছে।

৪৮

يَوْمَ يُسْحَبُونَ فِي النَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ ذُوقُوا مَسَّ سَقَرَ

ইয়াওমা ইউছহাবূনা ফিন্না-রি ‘আলা-উজূহিহিম যূকূমাছছা ছাকার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
যে দিন তাদেরকে উপুড় করে আগুনের দিকে টেনে নেওয়া হবে (সে দিন তাদের চৈতন্য হবে এবং তাদেরকে বলা হবে), জাহান্নামের স্পর্শ-স্বাদ ভোগ কর।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
যেদিন তাদেরকে মুখ হিঁচড়ে টেনে নেয়া হবে জাহান্নামে, বলা হবেঃ অগ্নির খাদ্য আস্বাদন কর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যেদিন এদের উপুড় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের দিকে ; সেদিন বলা হবে, ‘জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন কর।’

৪৯

إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ

ইন্না-কুল্লা শাইয়িন খালাকনা-হু বিকাদার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমি প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করেছি মাপজোপের সাথে। ১৭

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি সকল কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে,

তাফসীরঃ
১৭. অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রতিটি জিনিসের পরিমাপ ও প্রতিটি কাজের একটা সময় নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। সুতরাং কিয়ামতও তার জন্য স্থিরীকৃত সময়েই আসবে।

৫০

وَمَا أَمْرُنَا إِلَّا وَاحِدَةٌ كَلَمْحٍ بِالْبَصَرِ

ওয়ামাআমরুনাইল্লা-ওয়া-হিদাতুন কালাম হিম বিলবাসার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
আমার আদেশ একবার মাত্র চোখের পাতা ফেলার মত (মুহূর্তের মধ্যে পূর্ণ) হয়ে যায়।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমার কাজ তো এক মুহূর্তে চোখের পলকের মত।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমার আদেশ তো একটি কথায় নিষ্পন্ন, চোখের পলকের মত।

৫১

وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا أَشْيَاعَكُمْ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ

ওয়া লাকাদ আহলাকনাআশইয়া-‘আকুম ফাহাল মিমমুদ্দাকির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তোমাদের সহমত পোষণকারীদের আমি আগেই ধ্বংস করেছি। সুতরাং আছে কি কেউ, যে উপদেশ গ্রহণ করবে?

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
আমি তোমাদের সমমনা লোকদেরকে ধ্বংস করেছি, অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আমি ধ্বংস করেছি তোমাদের মত দলগুলিকে; অতএব তা হতে উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি ?

৫২

وَكُلُّ شَيْءٍ فَعَلُوهُ فِي الزُّبُرِ

ওয়া কুল্লুশাইয়িন ফা‘আলূহু ফিঝ ঝুবুর।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তারা যা-কিছু করেছে, সবই আমলনামায় আছে।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা যা কিছু করেছে, সবই আমলনামায় লিপিবদ্ধ আছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এদের সমস্ত কার্যকলাপ আছে আমলনামায়,

৫৩

وَكُلُّ صَغِيرٍ وَكَبِيرٍ مُّسْتَطَرٌ

ওয়া কুল্লুসাগীরিওঁ ওয়া কাবীরিমমুছতাতার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং প্রতিটি ছোট ও বড় বিষয় লিপিবদ্ধ আছে।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
ছোট ও বড় সবই লিপিবদ্ধ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সমস্ত কিছুই লিপিবদ্ধ।

৫৪

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَنَهَرٍ

ইন্নাল মুত্তাকীনা ফী জান্না-তিওঁ ওয়া নাহার।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তবে যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
মুত্তাকীরা থাকবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে,

৫৫

فِي مَقْعَدِ صِدْقٍ عِندَ مَلِيكٍ مُّقْتَدِرٍ

ফী মাক‘আদি সিদকিন ‘ইনদা মালীকিমমুকতাদির।

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
যোগ্য আসনে, সর্বাধিপতি সম্রাটের সান্নিধ্যে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যোগ্য আসনে, সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী আল্লাহ্ র সান্নিধ্যে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  

আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড

Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !! 

Leave a Comment