সূরা জাসিয়া সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল জাসিয়া আলমল ও ফজিলত, সূরা জাসিয়া কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা জাসিয়া নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৪৫ সূরা আল – জাসিয়া

আজকের বিষয়: সূরা জাসিয়া সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল জাসিয়া আলমল ও ফজিলত, সূরা জাসিয়া কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা জাসিয়া নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৪৫ সূরা আল – জাসিয়া

নামকরণ
২৮ আয়াতের (আরবী) বাক্যাংশ থেকে এর নাম গৃহীত হয়েছে । অর্থাৎ এটি সেই সূরা যার মধ্যে ‘জাসিয়াহ’ শব্দ আছে ।

নাযিলের হওয়ার সময়-কাল
এ সূরাটির নাযিল হওয়ার সময়-কাল কোন নির্ভরযোগ্য হাদীসে বর্ণিত হয়নি । তবে এর বিষয়বস্তু থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় এটি সুরা ‘দুখান’ নাযিল হওয়ার অল্প দিন পরই নাযিল হয়েছে । এ দুটি সূরার বিষয়বস্তুতে এতটা সাদৃশ্য বর্তমান যে সূরা দুটিকে যমজ বা যুগ্ম বলে মনে হয় ।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য
এ সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে তাওহীদ ও আখেরাত সম্পর্কে মক্কার কাফেরদের সন্দেহ, সংশয় ও আপত্তির জবাব দেয়া এবং কুরআনের দাওয়াতের বিরুদ্ধে তারা যে নীতি ও আচরণ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে সতর্ক করা ।

তাওহীদের সপক্ষে যুক্তি-প্রমাণ পেশ করে বক্তব্য শুরু করা হয়েছে । এ প্রসঙ্গে মানুষের নিজের অস্তিত্ব থেকে শুরু করে আসমান ও যমীনে সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নিদর্শনের প্রতি ইংগিত দিয়ে বলা হয়েছে, যেদিকেই চোখ মেলে তাকাও না কেন তোমরা যে তাওহীদ মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছো প্রতিটি বস্তু তারই সাক্ষ্য দিচ্ছে । নানা রকমের এসব জীবন-জন্তু, এই রাতদিন, এই বৃষ্টিপাত এবং তার সাহায্যে উৎপন্ন উদ্ভিদ রাজি, এই বাতাস এবং মানুষের নিজের জন্ম এর সবগুলো জিনিসকে কোন ব্যক্তি যদি চোখ মেলে দেখে এবং কোন প্রকার গোঁড়ামি বা অন্ধ আবেগ ছাড়া নিজের বিবেক-বুদ্ধিকে সরাসরি কাজে লাগিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে তাহলে এসব নিদর্শন তার মধ্যে এই দৃঢ় বিশ্বাস সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট যে এই বিশ্ব জাহান খোদাহীন নয় বা এখানে বহু খোদায়ী চলছে না, বরং এক আল্লাহ এটি সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি একাই এর ব্যবস্থাপক ও শাসক । তবে যে ব্যক্তি মানবে না বলে শপথ করেছে কিংবা সন্দেহ-সংশয়ের মধ্যে পড়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার কথা ভিন্ন । দুনিয়ার কোন জায়গা থেকেই সে ঈমান ও ইয়াকীনের সম্পদ লাভ করতে পারবে না ।

দ্বিতীয় রুকূ’র শুরুতে বলা হয়েছে, এই পৃথিবীতে মানুষ যত জিনিসের সাহায্য গ্রহণ করছে এবং এই বিশ্ব জাহানে যে সীমাসংখ্যাহীন বস্তু ও শক্তি তার স্বার্থের সেবা করছে তা আপনা আপনি কোথাও থেকে আসেনি বা দেব-দেবীরাও তা সরবরাহ করেনি, বরং এক আল্লাহই তাঁর নিজের পক্ষ থেকে তাকে এসব দান করেছেন এবং এসবকে তার অনুগত করে দিয়েছেন । কেউ যদি সঠিকভাবে চিন্তা-ভাবনা করে তাহলে তার বিবেক-বুদ্ধিই বলে দেবে, সেই আল্লাহই মানুষের প্রতি অনুগ্রহকারী মানুষ তাঁর শোকর গোজারী করবে এটা তাঁর প্রাপ্য ।

এরপর মক্কার কাফেররা হঠকারিতা, অহংকার, ঠাট্টা-বিদ্রূপ এবং কুফরকে আঁকড়ে ধরে থেকে কুরআনের দাওয়াতের যে বিরোধিতা করছিলো । সে জন্য তাদেরকে কঠোরভাবে তিরস্কার করা হয়েছে এবং সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, এ কুরআন সেই নিয়ামত নিয়ে এসেছে যা ইতিপর্বে বনী-ইসরাঈলদের দেয়া হয়েছিলো যার কল্যাণে বনী ইসরাঈলরা গোটা বিশ্বের সমস্ত জাতির ওপর মর্যাদার অধিকারী হয়েছিলো । কিন্তু তারা এই নিয়ামতের অমর্যাদা করেছে এবং দীনের ব্যাপারে মতভেদ সৃষ্টি করে তা হারিয়ে ফেলেছে । তাই এখন তা তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে । এটা এমন একটি হিদায়তনামা যা মানুষের দীনের পরিষ্কার রাজপথ দেখিয়ে দেয় । নিজেদের অজ্ঞতা ও বোকামির কারণে যারা তা প্রত্যাখ্যান করবে তারা নিজেদেরই ধ্বংসের আয়োজন করবে । আর আল্লাহর সাহায্য ও রহমতের উপযুক্ত বিবেচিত হবে কেবল তারাই যারা এর আনুগত্য করে তাকওয়ার নীতি ও আচরণের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে ।

এ ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসারীদের বলা হয়েছে, এসব লোক আল্লাহকে ভয় করে না । এরা তোমাদের সাথে যে অশোভন আচরণ করছে তা উপেক্ষা করো এবং সহিষ্ণুতা অবলম্বন করো । তোমরা ধৈর্য অবলম্বন করলে আল্লাহ নিজেই এদের সাথে বুঝাপড়া করবেন এবং তোমাদের এই ধৈর্যের প্রতিদান দিবেন ।

তারপর আখেরাত বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত কাফেরদের জাহেলী ধ্যান-ধারণা আলোচনা করা হয়েছে । কাফেররা বলতোঃ এই দুনিয়ার জীবনই সব । এরপর আর কোন জীবন নেই । যুগের বিবর্তনে আমরা ঠিক তেমনি মরে যাব যেমন একটি ঘড়ি চলতে চলতে বন্ধ হয়ে যায় । মৃত্যুর পরে রূহের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না যে, তা কবজ করা হবে এবং পুনরায় কোন এক সময় এনে দেহে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হবে । তোমরা যদি এ ধরনের দাবী করো তাহলে আমাদের মৃত বাপ দাদাদের জীবিত করে দেখাও । এর জবাবে আল্লাহ একের পর এক কয়েকটি যুক্তি পেশ করেছেনঃ

একঃ কোন জ্ঞান ও যুক্তির ভিত্তিতে তোমরা একথা বলছো না, বরং শুধু ধারণার ভিত্তিতে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছ । সত্যিই কি তোমাদের জানা আছে যে, মৃত্যুর পরে আর কোন জীবন নেই এবং রূহ কবজ করা হয় না, বরং ধ্বংস হয়ে যায়?

দুইঃ তোমাদের এই দাবীর ভিত্তি বড় জোর এই যে, তোমরা কোন মৃত ব্যক্তিকে জীবিত হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতে দেখোনি । এতটুকু বিষয়ই কি এতবড় দাবী করার জন্য যথেষ্ট যে মৃতরা আর কখনো জীবিত হবে না? তোমাদের অভিজ্ঞতায় ও পর্যবেক্ষণে কোন জিনিস ধরা না পড়ার অর্থ কি এই যে, তোমরা তার অস্তিত্বহীন হওয়ার জ্ঞান লাভ করছো?

তিনঃ এ কথা সরাসরি বিবেক-বুদ্ধি ও ইনসাফের পরিপন্থী যে ভাল ও মন্দ, অনুগত ও অবাধ্য এবং জালেম ও মজলুম সবাইকে শেষ পর্যন্ত একই পর্যায়ভুক্ত করে দেয়া হবে । কোন ভাল কাজের ভাল ফল এবং মন্দ কাজের মন্দ কাজের মন্দ ফল দেখা দেবে না । কোন মজলুমের আর্তনাদ শোনা হবে না কিংবা কোন জালেক তার কৃতকর্মের শাস্তি পাবে না । বরং সবাই একই পরিণাম ভোগ করবে । আল্লাহর সৃষ্টি এই বিশ্ব জাহান সম্পর্কে যে এই ধারণা পোষণ করে সে অত্যন্ত ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে । জালেম ও দুষ্কর্মশীল লোকদের এ ধারণা পোষণ করার কারণ হলো এই যে, তারা তাদের কাজ-কর্মের মন্দ ফলাফল দেখতে চায় না । কিন্তু আল্লাহর এই সার্বভৌম কর্তৃত্ব কোন অনিয়মের রাজত্ব নয় । এটি একটি ন্যায় ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা, যেখানে সৎ ও অসৎকে এক পর্যায়ভুক্ত করে দেয়ার মত জুলুম কখনো হবে না ।

চারঃ আখেরাত অস্বীকৃতির এই আকীদা নৈতিকতার জন্য অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক । এই আকীদা তারাই গ্রহণ করে যারা প্রবৃত্তির দাস হয়ে আছে । তারা এ আকীদা গ্রহণ করে এ জন্য, যাতে প্রবৃত্তির দাসত্ব করার অবাধ সুযোগ লাভ করতে পারে । কাজেই তারা যখন এ আকীদা গ্রহণ করে তখন তা তাদেরকে চরমতম গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করতে থাকে । এমনকি তাদের নৈতিক অনুভূতি একেবারেই মরে যায় এবং হিদায়াত লাভের সকল দরজা বন্ধ হয়ে যায় ।

এসব যুক্তি-প্রমাণ পেশ করার পর আল্লাহ অত্যন্ত জোর দিয়ে বলেছেন, যেভাবে তোমরা নিজে নিজেই জীবন লাভ করোনি, আমি জীবন দিয়েছি বলে জীবন লাভ করছো, তেমনি নিজে নিজেই মরে যাবে না, বরং আমি মৃত্যু দেই বলে মারা যাও এবং এমন একটি সময় অবশ্যই আসবে যখন তোমাদের সবাইকে যুগপৎ একত্র করা হবে । আজ যদি মূর্খতা ও অজ্ঞতার কারণে তোমরা একথা না মানতে চাও তাহলে মেনো না । কিন্তু সে সময়টি যখন আসবে তখন নিজের চোখেই তোমরা দেখতে পাবে যে, তোমরা তোমাদের আল্লাহর সামনে হাজির আছো এবং কোন প্রকার কমবেশী ছাড়াই তোমাদের পুরো আমলনামা প্রস্তুত আছে, যা তোমাদের প্রতিটি কাজের সাক্ষ্য দিচ্ছে । সে সময় তোমরা জানতে পারবে আখেরাতের আকীদার এই অস্বীকৃতি এবং এ নিয়ে যে ঠাট্টা-বিদ্রূপ তোমরা করছো এর কত চড়া মূল্য তোমাদের দিতে হচ্ছে ।

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ



আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
حم45.1

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১। হা-মী-ম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১ হা-মীম।

تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ45.2

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২। তান্যীলুল্ কিতা-বি মিনাল্লা-হিল্ ‘আযীযিল্ হাকীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২ মহাপরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে এ কিতাব নাযিলকৃত।

إِنَّ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِلْمُؤْمِنِينَ45.3

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩। ইন্না ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বি লাআ-ইয়া-তিল্লিল্ মু’মিনীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩ নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনে মুমিনদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।

وَفِي خَلْقِكُمْ وَمَا يَبُثُّ مِنْ دَابَّةٍ آيَاتٌ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ45.4

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৪। অফী খল্ক্বিকুম্ অমা-ইয়াবুছ্ছু মিন্ দা-ব্বাতিন্ আ-ইয়া-তুল্ লিক্বওমিঁ ইয়ূক্বিনূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৪ আর তোমাদের সৃষ্টিতে এবং যে জীব জন্তু ছড়িয়ে রয়েছে তাতে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা নিশ্চিত বিশ্বাস স্থাপন করে।

وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ رِزْقٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ آيَاتٌ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ 45.5

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৫। অখ্তিলা-ফিল্লাইলি ওয়া ন্নাহা-রি অমা য় আন্যালা ল্লা-হু মিনাস্ সামা-য়ি র্মি রিয্ক্বিন্ ফাআহ্ইয়া-বিহিল্ র্আদ্বোয়া বা’দা মাওতিহা-অ তাছ্রী র্ফি রিয়া-হি আ-ইয়া-তু ল্লিক্বাওমিঁই ইয়া’ক্বিলূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৫ আর রাত ও দিনের পরিবর্তনে, আল্লাহ আসমান থেকে যে পানি বর্ষণ করেন তারপর তা দ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাতে এবং বাতাসের পরিবর্তনে সে কওমের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে যারা বোঝে।

تِلْكَ آيَاتُ اللَّهِ نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِالْحَقِّ فَبِأَيِّ حَدِيثٍ بَعْدَ اللَّهِ وَآيَاتِهِ يُؤْمِنُونَ45.6

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৬। তিল্কা আ-ইয়া-তু ল্লা-হি নাত্লূহা-‘আলাইকা বিল্ হাক্ব ক্বি ফাবি আইয়্যি হাদীছিম্ বা’দা ল্লা-হি আ-ইয়া -তিহী ইয়ুমিনূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৬ এগুলো আল্লাহর আয়াত, আমি তা যথাযথভাবেই তোমার কাছে তিলাওয়াত করছি। অতএব তারা আল্লাহ ও তাঁর আয়াতের পর আর কোন্ কথায় বিশ্বাস করবে?

وَيْلٌ لِكُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ45.7

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৭। অইলুল্লিকুল্লি আফ্ফা-কিন্ আছীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৭ দুর্ভোগ প্রত্যেক চরম মিথ্যুক পাপাচারীর জন্য!

يَسْمَعُ آيَاتِ اللَّهِ تُتْلَى عَلَيْهِ ثُمَّ يُصِرُّ مُسْتَكْبِرًا كَأَنْ لَمْ يَسْمَعْهَا فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ45.8

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৮। ইয়াস্মা‘উ আ-ইয়া-তি ল্লা-হি তুত্লা- ‘আলাইহি ছুম্মা ইয়ুর্ছিরু মুস্তাক্বিরন্ কায়াল্লাম্ ইয়াস্মা’হা-ফাবার্শ্শিহু বি‘আযা-বিন্ আলীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৮ সে শোনে আল্লাহর আয়াতসমূহ যা তার সামনে তিলাওয়াত করা হচ্ছে, তারপর সে ঔদ্ধত্যের সাথে অবিচল থাকে, যেন সে তা শুনতে পায়নি। অতএব তুমি তাকে এক যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।

وَإِذَا عَلِمَ مِنْ آيَاتِنَا شَيْئًا اتَّخَذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ45.9

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৯। অ ইযা-‘আলিমা মিন্ আ-ইয়া-তিনা-শাইয়া খযাহা- হুযুওয়া-; উলা-য়িকা লাহুম্ ‘আযা-বুম্ মুহীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৯ আর যখন সে আমার আয়াতসমূহের কিছু জানতে পারে, তখন সে এটাকে পরিহাসের পাত্ররূপে গ্রহণ করে। এদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক আযাব।

مِنْ وَرَائِهِمْ جَهَنَّمُ وَلَا يُغْنِي عَنْهُمْ مَا كَسَبُوا شَيْئًا وَلَا مَا اتَّخَذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ أَوْلِيَاءَ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ 45.10

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১০। মিওঁ অরা-য়িহিম্ জ্বাহান্নামু অলা-ইয়ুগ্নী আ’ন্হুম্ মা-কাসাবূ শাইয়াঁও অলা-মাত্তাখাযূ মিন্ দূনিল্লা-হি আওলিয়া-য়া অলাহুম্ ‘আযা-বুন্ ‘আজীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১০ তাদের সামনে রয়েছে জাহান্নাম। তারা যা উপার্জন করেছে অথবা আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেছে, এসব তাদের কোন কাজে আসবে না। তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব।

هَذَا هُدًى وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ لَهُمْ عَذَابٌ مِنْ رِجْزٍ أَلِيمٌ45.11

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১১। হা-যা-হুদান্ অল্লাযীনা কাফারূ বিআ-ইয়া-তি রব্বিহিম্ লাহুম্ ‘আযা-বুম্ র্মি রিজ্ব্যিন্ আলীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১১ এই (কুরআন) হিদায়াত দানকারী। আর যারা তাদের রবের আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে অতিশয় যন্ত্রণাদায়ক আযাব।

اللَّهُ الَّذِي سَخَّرَ لَكُمُ الْبَحْرَ لِتَجْرِيَ الْفُلْكُ فِيهِ بِأَمْرِهِ وَلِتَبْتَغُوا مِنْ فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ45.12

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১২। আল্লা-হুল্লাযী সাখ্খর লাকুমুল্ বাহ্র লিতাজ্ব রিয়াল্ ফুল্কু ফীহি বিআম্রিহী অলিতাব্তাগূ মিন্ ফাদ্ব্লিহী অলা‘আল্লাকুম্ তাশ্কুরূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১২ আল্লাহ, যিনি সমুদ্রকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন যাতে তাঁরই আদেশক্রমে তাতে নৌযানসমূহ চলাচল করতে পারে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করে বেড়াতে পার এবং যাতে তোমরা শোকর আদায় করতে পার।

وَسَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مِنْهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ45.13

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৩। অসাখ্খর লাকুম্ মা-ফিস্ সামা-ওয়া-তি অমা-ফিল্ র্আদ্বি জ্বামী‘আম্ মিন্হ্; ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-ইয়া-তি ল্লিক্বওমিঁই ইয়াতাফাক্কারূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৩ আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, তার সবই তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। চিন্তাশীল কওমের জন্য নিশ্চয় এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে।

قُلْ لِلَّذِينَ آمَنُوا يَغْفِرُوا لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ اللَّهِ لِيَجْزِيَ قَوْمًا بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ 45.14

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৪। কুল্ লিল্লাযীনা আ-মানূ ইয়াগ্ফিরূ লিল্লাযীনা লা-ইর্য়াজুনা আইয়্যামা ল্লা -হি লিইয়াজ্ব্যিয়া ক্বওমাম্ বিমা- কা-নূ ইয়াক্সিবূ ন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৪ যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে বল, ‘যারা আল্লাহর দিবসসমূহ প্রত্যাশা করে না, এরা যেন তাদের ক্ষমা করে দেয়, যাতে আল্লাহ প্রত্যেক কওমকে তাদের কৃতকর্মের জন্য প্রতিদান দিতে পারেন।

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ أَسَاءَ فَعَلَيْهَا ثُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ45.15

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৫। মান্ ‘আমিলা ছোয়া-লিহান্ ফালিনাফ্সিহী অমান্ আসা-য়া ফা ‘আলাইহা ছুম্মা ইলা-রব্বিকুম্ র্তুজ্বা‘ঊন্

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৫ যে সৎকর্ম করে, সে তার নিজের জন্যই তা করে এবং যে মন্দকর্ম করে তা তার উপর বর্তাবে। তারপর তোমরা তোমাদের রবের প্রতি প্রত্যাবর্তিত হবে।

وَلَقَدْ آتَيْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ الْكِتَابَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ45.16

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৬। অলাক্বদ্ আ-তাইনা-বানী য় ইসর-ঈ লাল্ কিতা-বা অল্ হুক্মা অ ন্নুবুওয়্যাতা অ রাযাক্ব ্না-হুম্ মিনাত্ব ত্বোয়াইয়্যিবা -তি অফাদ্ব্দ্বোয়াল্না-হুম্ ‘আলাল্ ‘আ-লামীন্ ।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৬ আর আমি বনী ইসরাঈলকে কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুওয়াত দান করেছিলাম এবং তাদের রিয্ক প্রদান করেছিলাম উত্তম বস্তু থেকে এবং দিয়েছিলাম তাদেরকে সকল সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব।

وَآتَيْنَاهُمْ بَيِّنَاتٍ مِنَ الْأَمْرِ فَمَا اخْتَلَفُوا إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ45.17

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৭। অ আ-তাইনা-হুম্ বাইয়্যিনা-তিম্ মিনাল্ আম্রি ফামাখ্ তালাফূ য় ইল্লা-মিম্ বা’দি মা-জ্বা-য়া হুমুল্ ‘ইল্মু বাগ্ইয়াম্ বাইনাহুম্; ইন্না রব্বাকা ইয়াক্ব দ্বী বাইনাহুম্ ইয়াওমাল্ ক্বিয়া-মাতি ফীমা-কা-নূ ফীহি ইয়াখ্তালিফূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৭ আর আমি তাদেরকে দীনের যাবতীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি দিয়েছিলাম। তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরও কেবল পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষবশত তারা মতবিরোধ করেছিল। তারা যে সব বিষয়ে মতবিরোধ করত তোমার রব কিয়ামতের দিনে সে সব বিষয়ে মীমাংসা করে দেবেন।

ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ 45.18

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৮। ছুম্মা জ্বা‘আল্না-কা ‘আলা-শারী ‘আতিম্ মিনাল্ আম্রি ফাত্তাবি’হা-অলা-তাত্তাবি ‘আহ্ওয়া-য়াল্লাযীনা লা-ইয়া’লামূ ন্ ।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৮ তারপর আমি তোমাকে দীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল- খুশীর অনুসরণ করো না।

إِنَّهُمْ لَنْ يُغْنُوا عَنْكَ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَإِنَّ الظَّالِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ45.19

আরবি উচ্চারণ ৪৫.১৯। ইন্নাহুম্ লাইঁ ইয়ুগ্নূ ‘আন্কা মিনাল্লা-হি শাইয়া-; অ ইন্নাজ্ জোয়া-লিমীনা বা’দ্বুহুম্ আওলিয়া-য়ু বা’দ্বিন্ অল্লা-হু অলিয়্যুল্ মুত্তাক্বীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.১৯ তারা আল্লাহর মুকাবিলায় তোমার কোন কাজে আসবে না। আর নিশ্চয় যালিমরা মূলত একে অপরের বন্ধু এবং আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু।

هَذَا بَصَائِرُ لِلنَّاسِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ45.20

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২০। হা-যা-বাছোয়া-য়িরু লিন্না-সি অ হুদাঁও অ রহ্মাতুল লিক্বওমিঁই ইয়ূক্বিনূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২০ এ কুরআন মানবজাতির জন্য আলোকবর্তিকা এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য হিদায়াত ও রহমত।

أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ اجْتَرَحُوا السَّيِّئَاتِ أَنْ نَجْعَلَهُمْ كَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَوَاءً مَحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ45.21

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২১। আম্ হাসিবাল্ লাযী নাজ্ব তারহুস্ সাইয়িয়া-তি আন্ নাজ্ব ‘আলাহুম্ কাল্লাযীনা আ-মানূ অ‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি সাওয়া-য়াম্ মাহ্ইয়া-হুম্ অ মামা-তুহুম্; সা-য়া মা-ইয়াহ্কুমূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২১ যারা দুষ্কর্ম করেছে তারা কি মনে করে যে, জীবন ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে আমি তাদেরকে এ সব লোকের সমান গণ্য করব, যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে? তাদের বিচার কতইনা মন্দ!

وَخَلَقَ اللَّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ وَلِتُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ 45.22

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২২। অ খলাক্ব ল্লা-হুস্ সামা-ওয়া-তি অল্ র্আদ্বোয়া বিল্ হাক্ব ক্বি অলিতুজ্ব যা -কুল্লু নাফ্সিম্ বিমা-কাসাবাত্ অহুম্ লা-ইয়ুজ্লামূন্।

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২২ আর আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনকে যথার্থভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি সে যা উপার্জন করেছে তদনুযায়ী প্রতিদানপ্রাপ্ত হয়, আর তারা সামান্যতমও যুলমের শিকার না হয়।

أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ45.23

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৩। আফারয়াইতা মানিত্তাখযা ইলা-হাহূ হাওয়া-হু অআদ্বোয়াল্লাহু ল্লা-হু ‘আলা-‘ইল্মিঁও অখতামা ‘আলা-সাম্‘ইহী অ ক্বাল্বিহী অ জ্বা‘আলা ‘আলা-বাছোয়ারিহী গিশা-ওয়াহ্; ফামাইঁইয়াহ্দীহি মিম্ বা’দিল্লা-হ্; আফালা- তাযাক্কারূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৩ তবে তুমি কি তাকে লক্ষ্য করেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে আপন ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? তার কাছে জ্ঞান আসার পর আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন এবং তিনি তার কান ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। আর তার চোখের উপর স্থাপন করেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে হিদায়াত করবে? তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?

وَقَالُوا مَا هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَا إِلَّا الدَّهْرُ وَمَا لَهُمْ بِذَلِكَ مِنْ عِلْمٍ إِنْ هُمْ إِلَّا يَظُنُّونَ45.24

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৪। অ ক্ব-লূ মা-হিয়া ইল্লা- হাইয়া-তুনাদ্ দুন্ইয়া-নামূতু অনাহ্ইয়া-অমা-ইয়ুহ্লিকুনা য় ইল্লাদ্ দাহ্রু অমা-লাহুম্ বিযা-লিকা মিন্ ‘ইল্মিন্ ইন্ হুম্ ইল্লা-ইয়াজুন্নুন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৪ আর তারা বলে, ‘দুনিয়ার জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন। আমরা মরি ও বাঁচি এখানেই। আর কাল-ই কেবল আমাদেরকে ধ্বংস করে।’ বস্তুত এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা শুধু ধারণাই করে।

وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ مَا كَانَ حُجَّتَهُمْ إِلَّا أَنْ قَالُوا ائْتُوا بِآبَائِنَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ 45.25

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৫। অ ইযা-তুত্লা-‘আলাইহিম্ আ -ইয়া-তুনা- বাইয়্যিনা-তিম্ মা-কা-না হুজ্জ্বাতাহুম্ ইল্লা য় আন্ ক্বা-লু’তূ বিআ-বা-য়িনা য় ইন্ কুন্তুম্ ছোয়া-দিক্বীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৫ আর তাদের কাছে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের এ কথা বলা ছাড়া আর কোন যুক্তি থাকে না যে, ‘তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকলে আমাদের পিতৃপুরুষদের জীবিত করে নিয়ে এসো’।

قُلِ اللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ45.26

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৬। ক্বুলিল্লা- হু ইয়ুহ্য়ীকুম্ ছুম্মা ইয়ুমীতুকুম্ ছুম্মা ইয়াজ্ব মাউ’কুম্ ইলা-ইয়াওমিল্ ক্বিয়া-মাতি লা-রইবা ফীহি অলা-কিন্না আক্ছারা ন্না-সি লা-ইয়া’লামূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৬ বল, ‘আল্লাহই তোমাদের জীবন দেন তারপর তোমাদের মৃত্যু ঘটান। তারপর তিনি তোমাদেরকে কিয়ামতের দিনে একত্র করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই; কিন্তু অধিকাংশ লোকই জানে না।

وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ يَوْمَئِذٍ يَخْسَرُ الْمُبْطِلُونَ45.27

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৭। অলিল্লা- হি মুল্কুস্ সামা-ওয়া-তি অল্ আরদ্ব্; অ ইয়াওমা তাক্বুমুস্ সা-‘আতু ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াখ্সারুল্ মুব্ত্বিলূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৭ আর আসমানসমূহ ও যমীনের মালিকানা আল্লাহরই এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন বাতিলপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

وَتَرَى كُلَّ أُمَّةٍ جَاثِيَةً كُلُّ أُمَّةٍ تُدْعَى إِلَى كِتَابِهَا الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ45.28

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৮। অতারা- কুল্লা উম্মাতিন্ জ্বা-ছিয়াতান্ কুল্লু উম্মাতিন্ তুদ্‘আ য় ইলা-কিতা-বিহা-; আল্ইওয়ামা তুজ্ব যাওনা মা-কুন্তুম্ তা’মালূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৮ আর তুমি প্রতিটি জাতিকে দেখবে ভয়ে নতজানু; প্রত্যেক জাতিকে স্বীয় আমলনামার দিকে আহবান করা হবে। (এবং বলা হবে) ‘তোমরা যে আমল করতে আজ তার প্রতিদান দেয়া হবে’।

هَذَا كِتَابُنَا يَنْطِقُ عَلَيْكُمْ بِالْحَقِّ إِنَّا كُنَّا نَسْتَنْسِخُ مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ 45.29

আরবি উচ্চারণ ৪৫.২৯। হা-যা- কিতা-বুনা-ইয়ান্ ত্বিক্ব ‘আলাইকুম্ বিল্ হাক্ব ; ইন্না কুন্না-নাস্তান্সিখু মা-কুন্তুম্ তা’মালূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.২৯ ‘এটি আমার লেখনী, যা তোমাদের ব্যাপারে সত্য সহকারে কথা বলবে; নিশ্চয় তোমরা যা করতে আমি তা লিখে রাখতাম’।

فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِي رَحْمَتِهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْمُبِينُ45.30

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩০। ফাআম্মাল্লাযীনা আ-মানূ অ আ’মিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি ফাইয়ুদ্খিলুহুম্ রব্বুহুম্ ফী রহ্মাতিহ্; যা- লিকা হুওয়াল্ ফাওযুল্ মুবীন্ ।



বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩০ অতঃপর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের রব পরিণামে তাদেরকে স্বীয় রহমতে প্রবেশ করাবেন। এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য।

وَأَمَّا الَّذِينَ كَفَرُوا أَفَلَمْ تَكُنْ آيَاتِي تُتْلَى عَلَيْكُمْ فَاسْتَكْبَرْتُمْ وَكُنْتُمْ قَوْمًا مُجْرِمِينَ45.31

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩১। অ আম্মাল্ লাযীনা কাফারূ আফালাম্ তাকুন্ আ-ইয়া-তী তুত্লা ‘আলাইকুম্ ফাস্তার্ক্বা তুম্ অকুন্তুম্ ক্বওমাম্ মুজ্ব রিমীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩১ আর যারা কুফরী করেছে (তাদেরকে বলা হবে), ‘তোমাদের কাছে কি আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়নি? অতঃপর তোমরা অহঙ্কার করেছিলে। আর তোমরা ছিলে এক অপরাধী কওম’।

وَإِذَا قِيلَ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ لَا رَيْبَ فِيهَا قُلْتُمْ مَا نَدْرِي مَا السَّاعَةُ إِنْ نَظُنُّ إِلَّا ظَنًّا وَمَا نَحْنُ بِمُسْتَيْقِنِينَ45.32

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩২। অ ইযা-ক্বীলা ইন্না ওয়া’দা ল্লা-হি হাক্ব ক্বঁ ও অস্সা-‘আতু লা-রইবা ফীহা-ক্ব ল্তুম্ মা-নাদ্রী মাস্সা- ‘আতু ইন্ নাজুন্নু ইল্লা-জোয়ায়ান্নাঁও অমা-নাহ্নু বিমুস্তাইক্বিনীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩২ আর যখন বলা হয়, ‘আল্লাহর ওয়াদা সত্য, আর কিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই’। তখন তোমরা বলে থাক, ‘আমরা জানি না কিয়ামত কি? আমরা কেবল অনুমান করি এবং আমরা তো দৃঢ় বিশ্বাসী নই।’

وَبَدَا لَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا عَمِلُوا وَحَاقَ بِهِمْ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ 45.33

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩৩। অবাদা লাহুম্ সাইয়িয়া-তু মা-‘আমিলূ অ হা-ক্ব বিহিম্ মা-কা-নূ বিহী ইয়াস্তাহ্যিয়ূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩৩ আর তাদের কৃতকর্মের কুফল তাদের জন্য প্রকাশিত হবে, আর তারা যা নিয়ে বিদ্রুপ করত তা তাদেরকে ঘিরে রাখবে।

وَقِيلَ الْيَوْمَ نَنْسَاكُمْ كَمَا نَسِيتُمْ لِقَاءَ يَوْمِكُمْ هَذَا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ نَاصِرِينَ45.34

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩৪। অক্বীলাল্ ইয়াওমা নান্সা-কুম্ কামা-নাসীতুম্ লিক্ব-য়া ইয়াওমিকুম্ হা-যা- অমাওয়া কুমুন্না-রু অমা-লাকুম্ মিন না-ছিরীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩৪ আর বলা হবে, ‘আজ আমি তোমাদেরকে ছেড়ে যাব যেমন তোমরা তোমাদের এ দিনের সাক্ষাতের বিষয়টি ছেড়ে গিয়েছিলে। আর তোমাদের নিবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারীও থাকবে না’।

ذَلِكُمْ بِأَنَّكُمُ اتَّخَذْتُمْ آيَاتِ اللَّهِ هُزُوًا وَغَرَّتْكُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فَالْيَوْمَ لَا يُخْرَجُونَ مِنْهَا وَلَا هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ45.35

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩৫। যা -লিকুম্ বিআন্নাকু মুত্তাখায্তুম্ আ-ইয়া-তিল্ লা-হি হুযুওয়াওঁ ওয়া র্গরত্কুমুল্ হাইয়া-তুদ্ দুন্ইয়া-ফাল্ইয়াওমা লা-ইয়ুখ্রজ্ব না মিন্হা-অলা-হুম্ ইয়ুস্তা’তাবূন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩৫ এটা এজন্যই যে, তোমরা আল্লাহর আয়াতকে ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র বানিয়েছিলে এবং দুনিয়ার জীবন তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল’। সুতরাং আজ তাদেরকে তা (জাহান্নাম) থেকে বের করা হবে না এবং তাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ দেয়া হবে না।

فَلِلَّهِ الْحَمْدُ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَرَبِّ الْأَرْضِ رَبِّ الْعَالَمِينَ45.36

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩৬। ফালিল্লা-হিল্ হাম্দু রব্বিস্ সামা-ওয়া-তি অরব্বিল্ র্আদ্বি রব্বিল্ ‘আ-লামীন্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩৬ অতএব আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা, যিনি আসমানসমূহের রব, যমীনের রব ও সকল সৃষ্টির রব।

وَلَهُ الْكِبْرِيَاءُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ 45.37

আরবি উচ্চারণ ৪৫.৩৭। অলাহুল্ কিব্রিয়া-য়ু ফিস্ সামা-অ-তি অল্ র্আদ্বি অহুঅল্ ‘আযীযুল্, হাকীম্।

বাংলা অনুবাদ ৪৫.৩৭ আর আসমানসমূহ ও যমীনের সকল অহঙ্কার তাঁর; তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ

    প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

    আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

    Leave a Comment